মানুষ গড়ার কারিগর

 

মানুষ গড়ার কারিগর

– শিক্ষক

মানুষ গড়ার কারখানা হল

– শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

শিক্ষাদান করাটা শুধুই একটা চাকরী বা পেশা নয়, এটা একটা আবেগের বিষয়। একজন প্রকৃত শিক্ষক-শিক্ষিকার পরিচয় শুধু পাঠদানেই সীমাবদ্ধ নয়। একজন প্রকৃত শিক্ষক হলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি পাঠ্য পুস্তক থেকে কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের শেখাবে সেটুকু যে জানবে তা নয় বরং শিক্ষার্থীদের সেই বিষয়গুলিকে ভালবাসতে শেখানোর ক্ষমতাও তার মধ্যে থাকতে হবে। পাঠদানের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীর মানসিক বিকাশ, মানবিক দিকগুলোকে জাগিয়ে তোলা, সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধের শিক্ষাটাও দেওয়া উচিত।

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন অভিভাবকরা নিজ সন্তানকে স্কুল শিক্ষকদের হাতে তুলে দিয়ে বলতেন, ’আমার সন্তান যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তবে ওর হাড্ডিগুলো শুধু ফেরত দেবেন, বাকি সবই আপনার।’ শিক্ষকও অভিভাবকের দেওয়া দায়িত্বকে তথাস্থ মনে করে সাধ্যমত চেষ্টা করতেন কিন্তু শিক্ষকরা খুব কম ক্ষেত্রেই নির্দয়ভাবে পেটাতেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তার পুত্রের শিক্ষকের কাছে লেখা পত্রে বলেছিলেন ”আমার পুত্রকে জ্ঞানার্জনের জন্য আপনার কাছে পাঠালাম। তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন – এটাই আপনার কাছে আমার বিশেষ দাবি।” জগৎ বিখ্যাত বীর আলেকজান্ডার তার শিক্ষক এরিস্টটলের প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বলেছিলেন, ÕTo my father, I own my life; to Aristotle, the knowledge to live worthily’.

পিতামাতা হচ্ছে শিশুর জন্মদাতা ও জন্মদাত্রী । পিতামাতা সন্তানদের লালন পালন করে মানুষের মত মানুষ করে তোলার স্বপ্ন দেখতে পারে। কিন্তু একজন শিক্ষক এই বৈচিত্রময় পৃথিবী সম্পর্কে শিশুকে সম্যক ধারণা দেয়। মানুষের জীবনে পিতামাতার পরই শিক্ষকের অবস্থান। তাকে নবজন্ম দিতে পারে। পিতামাতার হাত ধরে একটি শিশু যেমন জীবনে চলতে শিখে, তেমনি শিক্ষক শিক্ষিকার হাত ধরে জীবনে সম্ভাবনা আর সাফল্যের দুয়ারে পৌছাতে শিখে। শিক্ষক যে পড়াশুনার ক্ষেত্রেই হবে, তা নয়। জীবনের যে কোন ক্ষেত্রেই তার অবদান থাকতে পারে যেমন- জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেওয়া আর সাফল্যের নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেওয়া। শিক্ষকেরা হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর। জীবনের উন্নয়নের প্রধান সোপনই হল শিক্ষা। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষকরা অন্য যে কোন পেশার মানুষের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান দখল করে আছে।

একজন সফল মানুষের পিছনে শিক্ষকের যে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা থাকে, তা নতুন করে বলার কিছু নাই। তিনি তাকে শুধু সফল নয়, একজন ভাল মানুষ হতে শেখায়। একজন ভাল শিক্ষক একজন ছাত্রের জীবন আমূল বদলে দিতে পারে।

ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষকের সম্পর্ক মধুর, স্বতঃস্ফূর্ত আবার কখনও গাম্ভীর্যপূর্ণ। শিক্ষক প্রয়োজনে শিক্ষার্থীর ওপর অভিভাবকসুলভ আচরণ করবে আবার কখনও বা বন্ধুর মত ভালবাসা, পরামর্শ, উৎসাহ দিয়ে সব সময়ই পাশে থাকবে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করবে আর শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের  করবে। সন্তানের মতো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আচরণ করবে। শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রের সম্পর্ক পথ প্রদর্শকের মত। শিক্ষক পথ দেখায়, ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা দেন। আর শিক্ষার্থীরা সেই নির্দেশনা মেনে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষকরা প্রথমে হবেন অভিভাবক, তারপর বন্ধু। শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে অভিভাবকের মতো সম্মান করবে, আদেশ উপদেশ মেনে চলবে, শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

, ভালবাসা আর শ্রদ্ধা সম্মানে যে সম্পর্ক রচিত হয় সেই সম্পর্ক যেন সর্বদাই অটুট থাকে। ছাত্র শিক্ষকের পবিত্র সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখা সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব। সম্পর্কটা শ্রদ্ধা, ভালবাসা, আন্তরিকতার বন্ধনে মজবুত হওয়া ছাত্রের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনা করে। তিনি গুরু, পিতৃতুল্য এই অনুভুতি একজন ছাত্রের ভেতরে থাকা দরকার। এই সম্পর্ক যেখানে দৃঢ়, সেখানেই শিক্ষা তথা সমাজের অগ্রগতি অপ্রতিরোধ্য।

একটি ছাত্রের জীবনে একজন শিক্ষকের ভ‚মিকা অপরিসীম। শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ রূপরেখা গড়ে তোলার পথপ্রদর্শকের কাজ করেন এবং ছাত্রদের জন্য তারা যা কিছু করে থাকেন, সেই সকল অবদানের কথা কখনই ভোলার নয়।

শিক্ষকতাকে শুধুমাত্র মহান পেশা হিসেবে স্বীকৃত দিলেই হবে না বরং তা সামাজিকভাবেই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

“প্রতি বছর ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৫ সাল থেকে এই দিবসটি শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়। ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালন করা হয়। বিশ্বের ১০০টি দেশে এই দিবসটি পালিত করা হয়। এই দিবসটি পালনে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল ও তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন মূল ভ‚মিকা রাখে। দিবসটি উপলক্ষ্যে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রতি বছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করে থাকে যা জনসচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষকতা পেশার অবদানকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

জাপানের একটা প্রচলিত প্রবাদ হলো: Better than a thousand days of diligent study is one day with a great teacher.

দেশের অগণিত শিক্ষকদের আদর্শগত মহান কর্মকান্ডের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাদের পেশাগত অবদানকে স্মরণে – বরণে শ্রদ্ধায় পালন করার জন্য সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মহান শিক্ষক দিবস পালন করার রীতি রয়েছে।

গল্প থেকে শেখা, পর্ব – ১০ একজন রাজার গল্প

গল্পের নাম : একজন রাজার গল্প

 

একদা একসময় একটা রাজত্ব ছিল। সেখানকার রাজার কেবল একটি পা এবং একটি চোখ ছিল, তবে তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও সদয় ছিলেন। তাঁর রাজ্যের প্রত্যেকেই তাদের রাজার কারণে সুখী ও ভালোভাবে জীবন যাপন করতো। একদিন রাজা রাজ বাড়ির হলওয়ে দিয়ে হেঁটে তাঁর পূর্বপুরুষদের চিত্র দেখতে পেলেন। তিনি ভেবেছিলেন যে একদিন তার বাচ্চারা একই হলওয়েতে হাঁটবে এবং এই চিত্রর মাধ্যমে সমস্ত পূর্বপুরুষদের স্মরণ করবে। 

 কিন্তু রাজার কোন চিত্র অঙ্কন করা ছিল না। শারীরিক অক্ষমতার কারণে, তিনি বুঝতে পারছিলেন না যে সে কিভাবে তার চিত্র অঙ্কন শুরু করবেন। এরপরে রাজা ঘোষণা করলেন যে তিনি নিজের তৈরি একটি সুন্দর চিএ টি প্রাসাদে স্থাপন করতে চান। যারয চিত্র অঙ্কন করতে পারেন তাদের এগিয়ে আসা উচিৎ এবং চিত্র অনুযায়ী তাদের পুরুস্কৃত করা হবে।  চিত্রশিল্পী সকলেই ভাবতে লাগলেন যে রাজার কেবল একটি পা এবং একটি চোখ রয়েছে। কীভাবে তার ছবি খুব সুন্দর করা যায়? এটি সম্ভব নয় এবং যদি ছবিটি দেখতে সুন্দর দেখা না যায় তবে রাজা রাগান্বিত হয়ে তাদের শাস্তি দেবেন। তাই একে একে সবাই অজুহাত দেখাতে শুরু করে এবং বিনয়ের সাথে রাজার চিত্র আঁকতে অস্বীকৃতি করে। তবে হঠাৎ একজন চিত্রশিল্পী তাঁর হাত তুলে বললে, যে আমি আপনার একটি খুব সুন্দর চিত্র তৈরি করব যা আপনি অবশ্যই পছন্দ করবেন।   

সমস্ত সভার লোকজন, অন্যান্য চিত্রশিল্পী কৌতূহলী এবং নার্ভাস চিন্তাভাবনা করেছিলেন, রাজা শারীরিকভাবে অক্ষম থাকায় চিত্রকর কীভাবে রাজার প্রতিকৃতিকে সুন্দর করে তুলতে পারেন? রাজা যদি চিত্রকর্মটি পছন্দ না করেন এবং রাগান্বিত হন তবে কী হবে? কিন্তু চিত্রশিল্পী প্রতিকৃতি উপস্থাপন করার সময় বাদশাহসহ দরবারে সকলেই হতবাক হয়ে গেলেন।

 

চিত্রশিল্পী একটি চিত্র তৈরি করেছিলেন যাতে রাজা এক পায়ে ঘোড়ার উপর বসে ছিলেন, তাঁর ধনুকটি ধরেছিলেন এবং একটি চোখ বন্ধ করে তীরটি লক্ষ্য করেছিলেন। রাজা খুব সন্তুষ্ট হয়ে দেখলেন যে চিত্রশিল্পী চতুরতার সাথে রাজার অক্ষমতা লুকিয়ে একটি সুন্দর প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। রাজা তাকে একটি মহান পুরষ্কার দিয়েছিলেন।

 

গল্পের নীতিকথা: আমাদের সর্বদা অন্যের ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করা উচিত এবং তাদের ঘাটতিগুলি উপেক্ষা করা উচিত। আমাদের দুর্বলতাগুলি আড়াল করার পরিবর্তে ভাল জিনিসে মনোনিবেশ করা শিখানো উচিত। যদি আমরা একটি নেতিবাচক পরিস্থিতিতেও ইতিবাচকভাবে চিন্তা করি এবং কাছে যাই তবে আমরা আমাদের সমস্যাগুলি আরও দক্ষতার সাথে সমাধান করতে সক্ষম হব।

যান্ত্রিক শব্দ

যান্ত্রিক শব্দ

একদিন হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি তখন আমার কানে একটি গানের শব্দ শুনতে পেলাম, অথচ ওই গানটি আমি আমার বাসায় শুনেছি অনেকবার তবে তখন এতো ভালো লাগেনি, আর ভাবলাম এখন এত ভালো লাগছে কেন? তখন বুঝতে পারলাম, যে ভালো লাগার কারণ হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেমের আধুনিকরণ, যার মূল উপকরণ হচ্ছে স্পিকার। স্পিকার বর্তমান বিনোদন জগতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, পিকনিক, বিয়ে এবং জন্মদিনে, যেকোনো উৎসবেই লাউড স্পিকার এর ভূমিকা অনেক।তাই আগ্রহের সাথে জানা উচিত স্পিকার সর্ম্পকে ।

লাউডস্পিকারের পরিচয় :

লাউডস্পিকার একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র,যার সাহায্যে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ থেকে শব্দ তরঙ্গে রূপান্তরিত হয়। ১৯২৫ সালে অ্যাডওয়ার্ড ডাব্লু কেলোগ এবং চেস্টার ডব্লু রাইস লাউডস্পিকার আবিষ্কার করেছিলেন।

 

ক্রমবিকাশ

১৯৩০ এর দশকে শব্দের প্রাবল্য বৃদ্ধি করার জন্য দুই বা তিনটি ব্যান্ডপ্যাসের ড্রাইভার একত্রিত করা হয়। ১৯৩৭ সালে মেট্রো-গোল্ডউইন-মায়ার দ্বারা প্রথম চলচ্চিত্রে থিয়েটারের জন্য শিয়ের হর্ন সিস্টেম” চালু করা হয়েছিল। ১৯৩৯ সালের নিউ ইয়র্ক ওয়ার্ল্ড ফেয়ারে ফ্লাশিং মৃডোয় একটি টাওয়ারে একটি খুব বড় দ্বিমুখী পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম লাগানো হয়েছিল।

১৯৪৫ সালে বাজারে আলটেকের “ভয়েস অফ থিয়েটার” লাউডস্পিকার সিস্টেম পৌঁছেছিল , এটি সিনেমা থিয়েটারগুলিতে প্রয়োজনীয় উচ্চ শব্দ উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল । 1954 সালে, এডগার ভিলচুর ম্যাসাচুসেটস কেমব্রিজে লাউডস্পিকারের নকশার শাব্দিক বিলম্বন (সাসপেনশন)নীতিটি তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীকালে উন্নত স্থায়ী চৌম্বক উপকরণ, উন্নত পরিমাপ কৌশল, উন্নত নকশা প্রয়োগ ফলে শ্রুতিমধুর উন্নতি হয়েছে।

বর্তমান দিনে লাউডস্পিকার গুলির গঠনগত ও আকৃতিগত পরিবর্তন হয়েছে। বৈদ্যুতিক তারের সাহায্যে লাউডস্পিকার গুলি এমপ্লিফায়ার এর সঙ্গে যুক্ত থাকে, তবে বর্তমান দিনে ব্লুটুথ এর মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়।শব্দ দূষণের কথা মাথায় রেখে লাউডস্পিকার গুলির সর্বোচ্চ নিরাপদ শব্দের প্রাবল্যের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

গঠন:

১- স্থায়ী চুম্বক

২- তারের কুন্ডলীর বা ভয়েস কয়েল।

৩- বিলম্বন

৪- মধ্যচ্ছদা পর্দা

৫-  ফ্রেম

বিদ্যুৎ থেকে যেভাবে শব্দ তৈরি:

লাউড স্বীকারে শক্তিশালী স্তায়ী চুম্বক, পোলপিস, পেপার কোণ, ভয়েস কয়েল,এদেরকে আব্ধকরে রাখার জন্য স্পাইডার ও ধাতব ফ্রেম থাকে । ভয়েস কয়েলের মধ্যে চুম্বক অবস্থান করে, তাই কয়েলটা সবসময় চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থান করে।

যখন অ্যামপ্লিফায়ার থেকে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ (অডিও সিগন্যাল) এসে ভয়েস কয়েলে প্রবেশ করে, তখন ভয়েস কয়েল কাঁপতে থাকে। ভয়েস কয়েলের সাথে পেপার কোণ যুক্ত থাকায় পেপার কোণ কাঁপতে থাকে এবং এর সামনের বাতাসও কাঁপতে থাকে। বাতাসের এই কম্পন হচ্ছে মাইক্রোফোনের সামনে সৃষ্ট শব্দের কম্পনের একেবারে অবিকল প্রতিরূপ। অর্থাৎ মাইক্রোফোনের সামনে যে আওয়াজ করা হয়, লাউড স্পীকার থেকে সেই একই আওয়াজ শোনা যায়।

 

রচনায় –

আব্দুল্লহ আল মামুন

ইন্সট্রাক্টর

টেলিকমিউনিকেশন ডির্পাটমেন্ট

ড্যাফডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

১৯ শের গল্প, পর্ব-৫

১৯ শের গল্প, পর্ব-৫

শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করে দিতে পারলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনেই চমৎকার সব কাজ করতে পারে। ভাবতে পারে তার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে। উদ্ভাবনী মনোভাব, নতুন কিছু শেখার প্রবল আগ্রহ তৈরি করে দিতে পারলে আর তাদের যথাযথ দিকনির্দেশনা দিতে পারলে বাস্তবিক ভাবেই তার চিন্তাগুলো পুর্নরুপ দিতে সক্ষম হয়।
আজ আমার কথা বলব “দুর্জয় সরকার” কে নিয়ে। সে বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল ৫ম পর্বে অধ্যয়নরত। বর্তমানে সে আইপিএস ইউপিএস তৈরি করে সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছে।
পড়াশুনা করার উদ্দেশ্য শুধু চাকুরী এ ভুল ধারনা থেকে বের হয়ে এসে আজ নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। তার এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তার এই প্রচেষ্টা অনেক শিক্ষার্থীকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখাবে।

দুর্জয়ের এই স্বপ্ন আর সাফল্যের কিছু কথা শুনে আসি তার কাছে থেকেই

আমি দূর্জয় সরকার , ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনিস্টিউট এর ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ৫ম পর্বের একজন শিক্ষার্থী। আজ আমি আমার জীবনের কিছু স্বপ্ন আর অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে চাই। জীবন আমাকে একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা দিয়েছে,তা হছে, অর্থ ছাড়া পৃথিবীটাই যেন অচল, কাছের মানুষগুলো যেন পিছু ফেলে চলে যায়। পৃথিবীটা গতিশীল। আর গতির সাথে চলতে হলে, আমাকে কিছু করতে হবে। সেখান থেকেই শুরু, তবে এখন ভাবতে শিখেছি শুধু নিজের জন্য নয় দেশের জন্যও কিছু করা উচিৎ। আমার কর্ম বা পেশা হওয়া উচিৎ সম্ভাবনাময়, সময়োপযোগী, কল্যাণকর। আমি যেহেতু একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থী, তাই আমি শুরু থেকেই আমার চিন্তাকে ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ক ক্যারিয়ারকে কেন্দ্র করে ভাবতে শুরু করি। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়তে এসে ইলেকট্রিক্যাল এর বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত ইউটিউব লিংক স্যারেরা উনাদের লেসন প্লান এ দিয়ে দেন। এই লিংকগুলোর মাধ্যমে আমার জন্য ইউটিউব হয়ে উঠে শেখার অন্যতম একটি প্লাটফরম।
সময়টা এপ্রিল 2020, তখন দেশব্যাপী লকডাউন চলতেছিল। আর তখন পারিবারিক অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল। হঠাৎ এর মাঝে আমার এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যাও বেড়ে যায়। এতে করে বাবার ব্যবসায় এক ধরনের প্রভাব পড়ে। তখন আমি চিন্তা করি যে কিভাবে কম খরচে একটা IPS তৈরি করা যায়। এরপর কিছু Equipment নিয়ে দীর্ঘ ৩-৪ মাস গবেষণা করি। আর এর মাঝে আমাকে অনেক রকম সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়, যেমন গবেষণা করতে গিয়ে অনেক সরঞ্জাম পুরে যায়, সার্কিট এবং তার এর অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, এমন কি আমি আমার নিজের নিরাপত্তা সংকটে পড়তে হয়। একেতু অর্থনৈতিক সংকট তার সাথে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এ সব সমস্যা সমাধান জন্য সব চেয়ে সহায়তা করেছে ইন্টারনেট, ইউটিউব, এবং আমার বড় ভাই (কাজিন)।

সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে আমার বাবা, বাবার সহযোগীতায় আমি আজ এ পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি ।
অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার ডিপার্টমেন্টের নাহিদুল ইসলাম (নাহিদ) স্যারকে। স্যারের কাছে অনেক আগেই একবার বলেছিলাম আমি উদ্যোক্তা হতে চাই, স্যার আমার এ আগ্রহকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিলেন, জানতে চাইলেন আমার স্বপ্নের কথা। অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম স্যার এর কিছু কথার দ্বারা, আমার ক্ষুদ্র চিন্তা থেকে অনেক বড় কিছু করা সম্ভব হতে পারে তা ভাবতে শুরু করেছিলাম। পৃথিবীর অনেক বড় বড় সফল মানুষের শুরুটা ক্ষুদ্রই ছিল। যা পরবর্তীতে অনেক বড় সাফল্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে।
যাই হোক, অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়েই অবশেষে আমি এ বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে প্রত্যাশিত ফলাফল পাই, সফল হলাম IPS তৈরিতে, যা 1000w-5000w AC এনার্জি সাপ্লাই দিতে সক্ষম। নিজে ব্যাবহার করেছি আর পাশাপাশি কিছু IPS আমার বাবার সহযোগীতায়, পরিচিতদের কাছে নাম মাত্র দাম নিয়ে বিক্রিও করেছি। বর্তমানে আমি বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদনের জন্য লাইসেন্সের জন্য চেষ্টা করতেছি। আশা করছি আমার তৈরি এসব আইপিএস বাজারের অন্যান্য আইপিএস এর তুলনায় কমদামে গুনগত মানসম্পন্ন হবে। যা ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষন করবে। মার্কেটিং হবে কোয়ালিটি এবং দামের বিষয় মাথায় রেখে। যেহেতু যুগ এখন অনলাইনের তাই ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এর অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমেও।
আর এ সবকিছুর এর জন্য আমার অর্থের প্রয়োজন। তাই পাশাপাশি আমি ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিক একটি গ্রুপ তৈরি করি। সেখানে ট্রেনিং করানো হয়.
All Support.
IP Sell.
$ Buy/Sell.
Any Gift card (Google Play Store /Amazon/ Walmart )
U.S. Bank Support.
Dally Work System update .
এই সোর্স থেকে monthly 200-300$ অর্থ আয় করা সম্ভব।
আমার মুল স্বপ্ন ইলেকট্রিক্যাল রিলেটেড ক্যারিয়ার গঠন। এখান থেকে আমি আমার উৎপাদনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভবিষ্যৎতে আমি ব্যবসার উন্নয়ন ঘটিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাই। নিজে উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে দিতে চাই হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান।

— দূর্জয় সরকার
ছাত্রঃ ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
ইলেকট্রিক্যাল, ৫ম পর্ব

বিদ্যুৎ আবিস্কারের ইতিহাস?

বিদ্যুৎ আবিস্কারের ইতিহাস?

আমরা সকলে জানি যে বিদ্যুৎ শক্তি হচ্ছে অন্য কোন প্রাথমিক শক্তির উৎস থেকে নেওয়া। অনেকের মাথায় একটি প্রশ্ন থাকে যে এই বিদ্যুৎ কে আবিষ্কার করেছেন। কিভাবে এর শুরুটা হয়েছিল। এই লেখাটিতে বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ইতিহাস ( History of Electricity) নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হবে।

প্রথমেই বলে রাখি বিদ্যুৎ শক্তি কোন একজন ব্যক্তি আবিষ্কার করেন নি। এই বিদ্যুৎ আবিষ্কারের পিছনে অনেক মহান ব্যক্তিদের অবদান রয়েছে।

History Of Electricity

বিদ্যুৎ শক্তির একটি ফর্ম এবং এটি প্রকৃতিতে ঘটে, তাই এটি “উদ্ভাবিত” ছিল না। কারা এটি আবিষ্কার করেছিল তা নিয়ে অনেকের মাঝে অনেক ধরনের ভুল ধারণা রয়েছে। কেউ কেউ বিদ্যুৎ আবিষ্কারের জন্য Benjamin Franklin কে দাবি করেছেন, তবে তার পরীক্ষাগুলি কেবল বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎ এর মাঝে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে আর কিছুই না।

বিদ্যুৎ আবিষ্কারের সত্যতা সঠিকভাবে যাচাই করা একটু জটিল। এটি আসলে দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে উদ্ভাবিত হয়েছিল।

প্রায় ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, প্রাচীন গ্রিকরা আবিস্কার করেছিলেন যে অ্যাম্বার (ফসিলাইজড বৃক্ষ রজন) উপর পশম পেষণ করে দুটি মাধ্যে একটি আকর্ষণ সৃষ্টি করেছেন এবং গ্রিকদের আবিস্কার বিষয়টি আসলে স্ট্যাটিক বিদ্যুৎ ছিল?  উপরন্তু, গবেষকরা এবং প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিকেরা ১৯৩০-এ একটি পাএের আবিস্কার করেন যার ভিতরে কপারের শীট ছিল, তারা যেটি বিশ্বাস করেন যে এটি প্রাচীন রোমান সাইটগুলিতে হালকা আলো উৎপাদন করার জন্য ব্যবহারিত প্রাচীন ব্যাটারী হতে পারে।

বাগদাদে অবস্থিত প্রত্নতাত্ত্বিক খননগুলিতে অনুরূপ ডিভাইসগুলি পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়। এটি প্রাচীন পারস্যরাও প্রাথমিকভাবে ব্যাটারির আকারে ব্যবহার করেছিল। কিন্তু ১৭তম শতাব্দীর, বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত অনেক আবিষ্কারগুলি তৈরি করা হয়েছিল যেমন একটি প্রাথমিক ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক জেনারেটরের আবিষ্কার, positive ও negative কারেন্টের মধ্যে পার্থক্য এবং কন্ডাক্টর বা অন্তরক হিসাবে পদার্থের শ্রেণীবিভাগ।

১৬০০ খ্রিস্টাব্দে, ইংরেজ চিকিৎসক William Gilbert নির্দিস্ট কিছু বস্তুর ওপর ঘর্ষণ এর ফলে সৃষ্ঠ বলকে প্রকাশের জন্য “electricus” ল্যাটিন শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। কয়েক বছর পর আরেকজন ইংরেজ বিজ্ঞানী Thomas Browne বেশ কয়েকটি বই লিখেছিলেন এবং তিনি গিলবার্টের কাজের উপর ভিত্তি করে তার তদন্ত বর্ণনা করার জন্য “electricity” শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

Benjamin Franklin তখনকার সময়ের অন্যতম বৈঙ্গানিক ছিল। তিনি বিঙ্গানের অনেক শাখার আগ্রাহী ছিলেন, অনেক আবিষ্কার করেছেন এবং Bifocal Glasses সহ অনেক কিছু আবিস্কার করেছেন।

১৭০০ এর মাঝামাঝি সময়ে, তিনি বিদ্যুৎ সম্পর্কে আগ্রহী হন। সেই সময় পর্যন্ত, বিঙ্গানীরা মূলত স্ট্যাটিক বিদ্যুৎ এর সাথে পরিচিত এবং পরীক্ষামূলকভাবে আবিস্কার করেছিলেন।

Benjamin Franklin কিছুটা বড় পদক্ষেপে এগিয়ে নিয়েছে। তিনি ধারণাটি নিয়ে আসেন যে বিদ্যুৎ এর positive ও negative উপাদান রয়েছে এবং এই উপাদানগুলির মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে বাজ হচ্ছে এই প্রবাহিত বিদ্যুৎ এর একটি রুপ।

১৭২৫ সালে ফ্র্যাংকলিন তার বিখ্যাত একটি পরীক্ষা পরিচালনা করেন। বাজ হলো বিদ্যুৎ তা দেখানোর জন্য তিনি একটি বজ্রধ্বনির সময় একটি ঘুড়ি উড়িয়ে যাচ্ছিলেন।

বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের জন্য তিনি কিট স্ট্রিংয়ের একটি মেটাল কী বেঁধে দেয়। তিনি যেমন ভাবেন তেমনি হলো, মেঘ থেকে বিদ্যুৎ নিচে প্রবাহিত হয়ে তাকে শক দেওয়া হয়। তিনি ভাগ্যবান যে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হননি কিন্তু তিনি তার ধারণা প্রমাণিত করেন যে বাজ তথা বজ্রপাত এবং ক্ষুদ্র ইলেকট্রিক স্পার্ক একই জিনিস।

ফ্র্যাংকলিন এর এ কাজ হতে অন্যান্য অনেক বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ অধ্যয়ন করেছেন এবং এটি কিভাবে কাজ করে তা সম্পর্কে আরও বুঝতে শুরু করেন। উদাহরণস্বরূপ ১৮৭৯ সালে টামস এডিসন বৈদ্যুতিক হালকা বাল্ব উদ্ভাবন করে এবং আমাদের বিশ্ব এখন পর্যন্ত উজ্জ্বল হয়ে আছে।

ইতালির পদার্থবিদ Alessandro Volta আবিস্কার করেন যে বিশেষ রাসায়নিক প্রতিক্রিয়াগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে এবং ১৮০০ সালে তিনি ভোল্টাইক পিল (একটি প্রাথমিক বিদ্যুৎ ব্যাটারি) নির্মাণ করেন যা একটি ধীর গতির বিদ্যুৎ উৎপাদনের সৃষ্টি করে এবং তাই তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি বৈদ্যুতিক চার্জের ধারাবাহিক প্রবাহ তৈরি করেন।

ভোল্টা তাদের মাধ্যমে positive চার্জ এবং negative চার্জ সংযোগ করে এবং বৈদ্যুতিক চার্জ, বা ভোল্টেজ ড্রাইভিং করে বিদ্যুৎ এর প্রথম ট্রান্সমিশন তৈরি করে।

১৯৩১ সালে Michael Faraday ইলেকট্রিক ডায়নামো (একটি অশোধিত বিদ্যুৎ জেনারেটর) তৈরি করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যা চলমান ও বাস্তব উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সমস্যা সমাধান করেছে।

Michael Faraday এর অশোধিত বিদ্যুৎ জেনারেটরে একটি চুম্বক ব্যবহার করতেন যা তামার তারের কুণ্ডের ভিতরে নাড়ানো হতো, যার মাধ্যমে প্রবাহিত একটি ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের সৃষ্টি করেছিল।

এটি আমেরিকান Thomas Edison এবং ব্রিটিশ বিঙ্গানী Joseph Swan অগ্রযাএার দরজা খুলে দেয় যারা প্রত্যেকে ১৮৭৮ সালে তাদের নিজ নিজ দেশ incandescent filament light bulb উদ্ভাবন করে।

পূর্বে আলোর বাল্বগুলি অন্যদের দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল, কিন্তু incandescent filament light bulb প্রথম ব্যবহারিক বাল্ব ছিল যা ঘন্টাখানেক ধরে জ্বলত।

পরে Sawn এবং Edison প্রথম যৌথ সংস্থার প্রতিষ্ঠা করেন যা প্রথম ব্যবহারিক ফিলামেন্ট বাতি তৈরি করে এবং 1882 সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম নিউ ইয়র্কের রাস্তা বৈদ্যুতিক আলোকে উজ্জ্বল করার ক্ষমতা প্রদানের জন্য Edison তার সরাসরি-ডিরেক্ট সিস্টেম (ডিসি) ব্যবহার করেন।

পরে 1800 এর দশকে এবং 1900 সালের প্রথমার্ধে আমেরিকান প্রকৌশলী Serbian আবিষ্কারক Nikola Tesla বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি এডিসনের সাথে কাজ করেন এবং পরবর্তীতে Electro-magnetism এর অনেক বিপ্লবী উন্নয়ন ঘটান এবং রেডিও আবিষ্কার এর জন্য মার্কোনি সঙ্গে প্রতিযোগিতার পেটেন্ট ছিল। তিনি তার আবিষ্কার বর্তমান এসি, এসি মোটর এবং পলিফেস ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের জন্য সুপরিচিত।

আমেরিকান আবিষ্কর্তা ও শিল্পপতি George Westinghouse, Alternating current উৎপাদনের জন্য টেসলা এর পেটেন্ট মোটর কিনেছিলেন এবং অন্যদের কাজ ধীরে ধীরে আমেরিকান সমাজকে বিশ্বাস করলেন যে, বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ ডিসি এর পরিবর্তে এসি এর উপর বেশি নির্ভরশীল হবে।

অন্যদের মধ্যে যারা আজ বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে কাজ করেছিল তারা হচ্ছেন স্কটিশ অন্বেষক  James Watt, ফ্রেঞ্চ গণিতবিদ Andre Ampere এবং জার্মান গণিতবিদ ও পদার্থবিদ George Ohm।

তাই বলা যায় বিদ্যুৎ আবিষ্কার (History of electricity) কেবল একজন ব্যক্তি করেন নি। যদিও বিদ্যুতের ধারণা হাজার হাজার বছর ধরে পরিচিত ছিল কিন্তু যখন এটি বাণিজ্যিকভাবে এবং বৈজ্ঞানিক ভাবে বিকশিত করার সময় এসেছিল তখন একই সময়ে সমস্যাটি সমাধানে বেশ কিছু মহান ব্যক্তির অবদান ছিল।

 

 

মো: আল মামুন রশিদ

ইন্সট্রাকটর,

ডিপার্টমেন্ট অব ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

বৈদ্যুতিক পাখার গতি এবং বিদ্যুৎ বিলের সম্পর্ক

 

উপরের এই বিষয়টি পরিস্কার ভাবে বোঝার জন্য কয়েকটি বিষয়ে আমাদেরকে সামগ্রিক ধারণা থাকতে হবে আমি প্রথমে এই বিষয়গুলো ধারনা দেবার চেষ্টা করছি।

বিদ্যুৎ কী?

বিদ্যুৎ  এক প্রকার শক্তি যেটা আমাদের কাজ করার সামর্থ্য যোগায়।শক্তির এসআই ইউনিট ওয়াট যা প্রতি সেকেন্ডে জোলস। কখনও কখনও মোটর গাড়ি এবং অন্যান্য মেশিনের শক্তি হর্স পাওয়ার (এইচপি) এর ক্ষেত্রে দেওয়া হয়, যা প্রায় 745.7 ওয়াটের সমান।

 

ইলেকট্রিক রেগুলেটর

ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রক, কোনও বৈদ্যুতিক ডিভাইস যা গ্রহণযোগ্য সীমাতে কোনও পাওয়ার উত্সের ভোল্টেজ বজায় রাখে। ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রকের নির্ধারিত পরিসরের মধ্যে ভোল্টেজগুলি রাখতে প্রয়োজন যা সেই ভোল্টেজ ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলি সহ্য করতে পারে।

https://www.youtube.com/watch?v=F4PRLXTsyrY

 

ইলেকট্রিক ফ্যান

ইলেকট্রিক ফ্যান হলো এমন একটি যন্ত্র যা ইলেকট্রিক্যাল এনার্জি গ্রহণ করে আমাদেরকে মেকানিক্যাল এনার্জি প্রদান করে।আরও সহজভাবে যদি আমি বলি তাহলে বলতে পারি ফ্যান বিদ্যুৎ শক্তি গ্রহণ করে আমাদেরকে বাতাস প্রদান করে।

বৈদ্যুতিক ফ্যান এর গতি

একটি দৃশ্যপট কল্পনা করুন ।মনে করুন আপনি রাস্তায় দৌড়াবেন ।এখন দৌড়াতে গেলে আপনার এনার্জি প্রয়োজন হবে ।তাই আপনি এনার্জি ডিংক খেয়ে নিলেন ।এনার্জি ড্রিংক খেয়ে আপনি সহ জোরে দৌড়াতে লাগলেন ।এখানে বলে রাখি রাস্তাটা কিন্তু মসৃণ নয়।এক্ষেত্রে আপনার গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে রাস্তার প্রকৃতি।বৈদ্যুতিক ফ্যান বিদ্যুৎ ও রেগুলেটরের সম্পর্কটাও এরকমই।

 

একটি পাখায় একটি বৈদ্যুতিক মোটর এবং কয়েকটি ধাতব প্লেট সাধারণত তিনটি সংযুক্ত থাকে ।যখন আমরা একটি পাখার সুইচ অন করি তখন ভোল্টেজের পার্থক্যের জন্য মটরির মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ যায় এবং তার ফলে পাকাটি ঘুরতে থাকে ।যেমনটি এনার্জি ড্রিংক খেয়ে আপনি সজোরে দৌড়াচ্ছিলেন ।নিয়ন্ত্রক বা রেগুলেটর মোটরের ভোল্টেজ এর নিয়ন্ত্রণ করে এবং মটর এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুৎ এর পরিমাণ কমিয়ে বা বাড়িয়ে দেয় ।ঠিক যেভাবে অমসৃণ রাস্তার প্রকৃতির কারণে গতি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছিল ।সুতরাং একটু পাখার ভোল্টেজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণরূপে তার নিয়ন্ত্রক ভোল্টেজ রেগুলেটর এর উপর নির্ভরশীল ।একটি পাখার ভোল্টেজের পরিমাণ তার ঘূর্ণন গতির সমানুপাতিক অর্থাৎ অর্থাৎ ভোল্টের যত বাড়বে পাখার গতি তত বাড়বে।গল্পের ছন্দে যদি বলি এনার্জি ডিংক যত খাবেনা আপনার দৌড়ানোর শক্তি ততো বাড়বে।

এবার মুল আলোচনায় আসা যাক। অনেকেই মনে করেন যে ফ্যান এর গতি বাড়ালে বিদ্যুৎ বিল বাড়ে আর গতি কমালে বিদ্যুৎ বিল কমে।আপনি গভীরভাবে ভাবেন তো যা আপনি যখন এনার্জি ড্রিংকে রাস্তায় দৌড়াচ্ছিলেন তখন কি এনার্জি ড্রিংক খাওয়ার পরিমাণ উপরে আপনার গতিবেগ কম ছিল নাকি রাস্তার বাধার কারণে?আপনি অবশ্যই বলবেন রাস্তার প্রকৃতির কারণে বাধার কারণে তাহলে এনার্জি ড্রিংকের উপর কোন কিছু নির্ভর করে নি।তেমনি ভাবে বৈদ্যুতিক পাখা ঘোরার জন্য যতটুকু শক্তি সরবরাহ দেওয়া হচ্ছিল ততটুকুই নিবে শুধু বাধা দিবে ভোল্টেজকে কমিয়ে দিবে রেগুলেটর তাই পাখা ধীরে ঘুরলে বা দ্রুতগতিতে ঘুরলে বিদ্যুৎ খরচ একই লাগবে।

 

লিখেছেন

মোঃ শফিকুল ইসলাম মিলন

ইন্সট্রাক্টর

ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

 

Database Normalization কি?

 

ডাটাবেস নরমালাইজেশন কী? সর্বপ্রথম আসি, Normalization কি? কোন কিছুকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা। এখন ডাটাবেজের স্বাভাবিক অবস্থা বলতে, ডাটাবেজ থেকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস বাদ দেয়া যাকে ডাটা রিডানডেন্সি বলে এবং ডাটার বিশুদ্ধতা তৈরি করা যাকে ডাটা ইন্টিগ্রিটি ও বলা হয়। এখন Data Redundancy এবং Data Integrity কে উদাহরনসহ বর্ণনা করা যাক।

ডাটা রিডানডেন্সি – আমরা যখন ডাটাবেজ ডিজাইন করি তখন অনেক সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডাটা জমা হয়। যাতে ডাটাবেজের মধ্যে একই ডাটা বার বার জমা হয়। এতে ডাটার রিডানডেন্সি বেড়ে যায়। এখন যদি ডাটাবেজকে নরমালাইজ করা হয় এতে অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীয় ডাটা আর থাতে না।

ডাটা ইন্টিগ্রিটি – Data Integrity বলতে ডাটার বিশুদ্ধতা বুঝানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে ডাটার বিশুদ্ধতা কি? ধরি ডাটাবেজ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে, একজন ছাত্রের পরিক্ষার ফলাফল একেক জায়গায় একেক রকম। এক জায়গায় তার সর্বমোট নাম্বার ৪৭০, অন্য জায়গায় ৪৭৭। যা চুড়ান্ত ফলাফল তৈরিতে সমস্যার সৃষ্টি করবে। এই সমস্যার মাধ্যমে স্পষ্টত ডাটা তার শুদ্ধতা হারিয়েছে। এখন এই সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে ডাটাবেজ নরমালাইজেশন। ডাটাবেজ নরমালাইজেশন করলে এই সমস্যা সমাধান করে একটি শুদ্ধ ডাটাবেজ তৈরি করা সম্ভব।

নিচে একটি টেবিলের মাধ্যমে ডাটাবেজ নরমালাইজেশনের বিষয়টি আরো ভালোভাবে বোঝানেরা চেষ্টা করছি।

StdRoll Name SubjectName Department Semester
40101 Md. Kamrul Islam Bangla, English, Mathematics Computer First
40102 Ruhul Amin Bangla, ICT, Mathematics Electrical Third
40103 Rejaul Karim Bangla, English, ICT Civil Fourth
40104 Fayej Chowdhury Programming in Java, English, Mathematics Textile Seventh
40105 Faria Rahman Bangla, English, DBMS AIDT First

 

উপরের টেবিলটিতে কোন নরমালাইজেশন করা নাই। এখন যদি  এই টেবিলে নতুন কোন ডাটা Insert বা সংযোজন , পরিবর্তন বা Update কিংবা Delete করতে চাই তাহলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। ধরি 40105 ডাটার DBMS বিষয়টি ভুল বসত দেয়া হয়েছে তার স্থানে ICT ও Programming in Java বিষয় সংযুক্ত হবে, সেক্ষেত্রে কিভাবে সংযোজন করবো, আবার প্রত্যেকটি বিষয়কে আলাদা করার জন্য কমা ব্যবহার করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে কমা কিভাবে সংযুক্ত করবো।

এখন যদি আমরা উপরের টেবিলকে নরমালাইজেশন করি তাহলে দেখি সমস্যার সমাধান হয় কিনা।

ডাটাবেজ নরমালাইজেশনের প্রথম ধাপ হচ্ছে First Normal Form (1NF). First Normal Form (1NF) এর শর্ত হচ্ছে প্রত্যেকটি ডাটা আলাদা থাকবে। উপরের টেবিলে আমরা দেখতি পাচ্ছি, SubjectName কলামের একাধিক ডাটা একই ঘরে। সুতরাং প্রত্যেক বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা ঘর নিতে হবে। উপরের টেবিলকে First Normal Form (1NF) এ রূপান্তর করে নিচের টেবিলে দেখানো হলো।

StdRoll Name SubjectName Total Marks GPA
40101 Md. Kamrul Islam Bangla Computer First
40101 Md. Kamrul Islam English Computer First
40101 Md. Kamrul Islam Mathematics Computer First
40102 Ruhul Amin Bangla Electrical Third
40102 Ruhul Amin ICT Electrical Third
40102 Ruhul Amin Mathematics Electrical Third
40103 Rejaul Karim Bangla Civil Fourth
40103 Rejaul Karim English Civil Fourth
40103 Rejaul Karim ICT Civil Fourth
40104 Fayej Chowdhury Programming in Java Textile Seventh
40104 Fayej Chowdhury English Textile Seventh
40104 Fayej Chowdhury Mathematics Textile Seventh
40105 Faria Rahman Bangla AIDT First
40105 Faria Rahman English AIDT First
40105 Faria Rahman DBMS AIDT First

এখন উপরের টেবিলে  ডাটা নরমালাইজেশন করা হয়েছে, যাতে ডাটাগুলোকে আলাদা করা হয়েছে। এখন যদি যে কোন একটি রো এর ডাটা পরিবর্তন করতে চাই কিংবা নতুন একটি ডাটা সংযোজন করতে চাই তা সহজেই করতে পারবো।

পরবর্তী অংশে Second Normal Form (2NF) এবং Third Normal Form (3NF) নিয়ে আলোচনা করবো।

বাংলার নবজাগরণ

 

উনবিংশ থেকে বিংশ শতক পর্যন্ত বাংলায় শিক্ষা-সংস্কৃতির অগ্রগতির ধারা কে বাংলার নবজাগরণ বলে। বাংলার তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার অবস্থা খুবই করুণ ছিল।শিক্ষার অভাবে ও বিভিন্ন কুসংস্কারের কারণে বাংলার মানুষ অনেক পিছিয়ে ছিল।এছাড়া বাংলার মানুষ অশিক্ষিত হওয়ায় ইংরেজি শাসক গোষ্ঠী তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিত। কুসংস্কারের ভেতর সতীদাহ প্রথা ছিল অন্যতম। বাংলার নবজাগরণ প্রধানত কলকাতাতে শুরু হয়, তবুও এর প্রভাব বাংলাতে ছড়িয়ে পড়েছিল।নবজাগরণের কারণে দেশে ছাপাখানা, সংবাদপত্র, কলেজ, মাদ্রাসা, মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাকরণ রচনা প্রতিষ্ঠিত হয়। উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার প্রতিষ্ঠান হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তাছাড়া সতীদাহ রোধ এবং বিধবা বিবাহ চালু করার মত অনেক কাজ নবজাগরণ এর ফলে হয়। এই পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে রাজা রামমোহন রায়, মীর মোশারফ হোসেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমূখ।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ,সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার।বিধবা বিবাহ, স্ত্রীশিক্ষার প্রচলন শুরু এবং বাল্যবিবাহ, সতীদাহ, বহুবিবাহ প্রথা তিনি বন্ধ করেছিলেন। নারী শিক্ষা বিস্তারে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি।তিনিই প্রথম মেয়েদের জন্য বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। নারীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য সুযোগ করে দেন। ব্যাকরণ রচনা, সাহিত্য  শিক্ষায় তার অবদান অনেক।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ইত্যাদি ছিলেন। বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ জনক ছিলেন তিনি। বাংলা শিক্ষা সাহিত্য পাঠ প্রসারে তাঁর গুরুত্ব অনেক। তার লেখা কবিতা গল্পের মাধ্যমে তিনি প্রতিবাদ করেছেন। কুসংস্কার, অত্যাচার, অধিকার আদায় নিয়ে তার লেখা নবজাগরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

কাজী নজরুল ইসলাম একজন বাঙালি কবি সঙ্গীতজ্ঞ, দার্শনিক, ঔপন্যাসিক ছিলেন। তাঁর লেখা, গান, কবিতা, গল্প মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তিনি ছিলেন বিদ্রোহী কবি।ইংরেজদের বিরুদ্ধে শুধু লেখার মাধ্যমে নয় সরাসরিও বিদ্রোহ করেছেন। বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণ প্রসারে তিনি অবদান রাখেন।

 

রাজা রামমোহন রায় প্রথম ভারতীয় ধর্মীয়- সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন, ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাঙালি দার্শনিক।তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্মীয় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। তিনি সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার জন্য।

 

বাংলায় এমন আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনীষী ছিলেন যাদের অবদান ছাড়া নবজাগরণ করা সম্ভব ছিল না তাদের এই অবদানই মানুষ আজ এত এগিয়ে আছেন।

 

সূত্র : গুগল 

শাহনেওয়াজ সেরাজ সুবর্ণা

ইন্সট্রাক্টর অফ আর এস ডিপার্টমেন্ট

ডেফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

 

১৯ শের গল্প, পর্ব -৪

ওয়াহিদা মৌ,  ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ট্যুরিজম  ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় সেমিস্টারের একজন শিক্ষার্থী। তিনি আমাদের সাথে শেয়ার করে তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প। 

“আমার শুরুটা শুরু থেকেই” 

তিনি পড়াশোনার সাথে মিল রেখে  একটা ব্যবসা শুরু করেন। তিনি বলেন তিনি নিজে রান্না করেন এবং  রান্নাকৃত খাবার হোম ডেলিভারি করেন।

তিনি আমাদের সাথে শেয়ার করেন তাঁর ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার কথা। 

তিনি বলেন তিনি মনে মনে এরকম একটা প্রতিষ্ঠানে খুঁজছিল যেখানে ফুড রিলেটেড কোর্স করানো হয়। তিনি আরও বলেন তিনি অন্য একটা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে রাস্তা দিয়ে বাসে যাওয়ার সময় তার চোখে পড়ে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এর সাইনবোর্ড। তিনি যোগাযোগ করেন এডমিশন অফিসে এবং একেবারে শেষ সময়ে ভর্তি হন ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। 

 

তিনি বলেন এখানে ভর্তি হওয়ার পরে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। তিনি জানতেন না কত সময় একটা খাবার কে রান্না করতে হয়। তিনি আরো বলেন আমরা বাঙালিরা বেশিরভাগ সময়ই ওভারকোট রান্না খাই, সে ক্ষেত্রে খাবারের মধ্যে কোন ভিটামিন মিনারেল থাকেনা। সে ড্যাফোডিল পলিটেকনিকে এসে শিখতে পেরেছেন একটা খাবারকে ঠিক কত সময় রান্না করতে হয়। 

তিনি বলেন লকডাউনে সবকিছু যখন থমকে গিয়েছিলো তখন তাদের সমস্ত ক্লাস অনলাইনে হয়েছিল।  

তার কাছে তা ব্যাখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে এসে বলেন, তিনি ছোটবেলা থেকে রান্নাকে অনেক পছন্দ করতেন। তিনি এমন একটা কিছু করতে চেয়ে ছিলেন যেটা রান্না সম্পর্কিত। 

তিনি বলেন অলরেডি তিনি তৃতীয় সেমিষ্টারে অধ্যায়ন করছে ইতিমধ্যে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। ম্যামকে বিভিন্ন রেসিপি করে দেখিয়েছেন এবং তার গাইড আইন অনুযায়ী  কোন ভুল হলে সেটি আবার সংশোধন করে নিয়েছেন। 

তিনি যখন কোথাও যে যেতেন তখন তিনি বাসা থেকে খাবার রান্না করে নিয়ে যেত এবং তারা অনেক উৎসাহিত করতেও জেহেল তুমি একটা কিছু করতে পারবে। তারপর থেকেই তিনি একটু একটু করে তার ব্যবসা শুরু করেন। তিনি নিজে রান্না করেন এবং অনেক সময় নিজেই হোম ডেলিভারি করেন।

তিনি আরও শেয়ার করেন বর্তমানে তিনি নিজের উপার্জনের একটি স্কুটার কিনেছেন।  

 

পরীক্ষার আবিষ্কারক কে জানেন?

পরীক্ষা শব্দটা এমন, যেটা শুনলে বর্তমান অথবা অতীত সকল প্রজন্মই আঁতকে ওঠে। ক্লাস পরীক্ষা, সাপ্তাহিক পরীক্ষা, মাসিক পরীক্ষা, হঠাৎ পরীক্ষা, ষাণ্মাসিক পরীক্ষা, টিউটোরিয়াল পরীক্ষা, প্রস্তুতি পরীক্ষা, অর্ধ বাৎসরিক পরীক্ষা, বাৎসরিক পরীক্ষা, ভর্তি পরীক্ষা, চাকরির পরীক্ষা– পরীক্ষার যেন অভাব নেই! এতসব পরীক্ষার যাঁতাকলে রীতিমত নাভিশ্বাস উঠে যায় ছাত্রদের। ওঠাটাই স্বাভাবিক, কারণ আমাদের আরামপ্রিয় মস্তিষ্ক এত চাপ নিতে চায় না। পরীক্ষার পড়ার জন্য রাতগুলো যখন নির্ঘুম কাটে তখন নিশ্চয় একবার হলেও মাথায় আসে কে আবিষ্কার করেছিল এই পরীক্ষা? একই সাথে তাকে যদি একবার সামনে পেতাম তাহলে তাকে যে কিভাবে শায়েস্তা করতাম সেই নীল নকশাও মনের অজান্তে করে ফেলি। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি যিনি আবিষ্কার করেছেন এই ভয়ানক পরীক্ষা, সেটা জানার আগে আমাদের জানতে হবে কিভাবে এই পরীক্ষা পদ্ধতির সূত্রপাত হয়েছে…

পরীক্ষা পদ্ধতি

পরীক্ষার পদ্ধতির সূত্রপাত হয়েছে প্রাচীন চীনে। জি! এটাও Made in Chaina. চীনে সর্বপ্রথম Standardized Test বা সার্বভৌম পরীক্ষার প্রচলন করা হয়। এই পরীক্ষার ছিল মূলত একটি বাছাই পরীক্ষা। যার মাধ্যমে সরকারি চাকরির জন্য যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা হত। এই পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয় ৬০৫ খ্রিষ্টাব্দে। সুই রাজবংশ (Sui Dynasty) এই পদ্ধতি চালু করে। এর প্রায় ১৩০০ বছর পরে কুইং রাজবংশ (Qing Dynasty) ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে এই পদ্ধতি বাতিল করে। কিন্তু ১৮০৬ সালে ইংল্যান্ড এই পরীক্ষা পদ্ধতি গ্রহণ করে এবং সরকারি বিভিন্ন কাজে প্রার্থী নিয়োগের জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করে। পরবর্তীতে তারা ইংল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থায় পরীক্ষা পদ্ধতির সংযোজন করে। এইভাবে আস্তে আস্তে বিভিন্ন দেশে পরীক্ষা পদ্ধতি ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশে দেশে গ্রহনযোগ্যতাও পেতে থাকে। বিশ্বব্যাপী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরীক্ষা পদ্ধতির সূচনা

পরীক্ষার আবিষ্কারকহয়।

পরীক্ষার আবিষ্কারক লিখে যদি আমরা গুগল বা যেকোন সার্চ মাধ্যমে খোঁজার চেষ্টা করি তাহলে একজন ব্যাক্তির ছবি আমাদের সামনে চলে আসে। তার নাম হল “হেনরি এ ফিশেল”। সাধারনত তাকেই “পরীক্ষার জনক”  হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৩ সালের ২০শে নভেম্বর জার্মানিতে। তিনি ছিলেন ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক। তিনি গ্রীক ও ইহুদি সাহিত্যের উপর বই লিখেছেন। তিনি ২০০৮ সালের মার্চ মাসের ১৮ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি ছিলেন ফরাসি দার্শনিক, যিনি পরীক্ষা এবং পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা করেছেন। পরীক্ষা সম্পর্কে তিনি যে দার্শনিক ধারনা দেন তা হল , “কোন বিষয়ে উপসংহারে পৌছানোর পূর্বে সেই বিষয় নিয়ে খুব বিচক্ষনতার সাথে পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ।” ধারনা করা হয় হেনরি মিশেলই সর্বপ্রথম দার্শনিক যিনি পরীক্ষার দর্শন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনিই বের করেছেন, বছর শেষে একটা পরীক্ষা না নিলেই নয়। কে পড়াশোনা করেছে আর কে করেনি, সেটা যাচাই করার এর চেয়ে ভালো পদ্ধতি নাকি আর নেই।

তাহলে পরীক্ষার জন্ম কি জনকের আগে!!!

আসলে পরীক্ষা পদ্ধতি কবে থেকে প্রচলন হয়েছে সেটা যদি তোমরা খেয়াল কর তাহলে দেখবে, আসলে আমরা যাকে পরীক্ষার জনক বলে আখ্যায়িত করছি তার জন্মের অনেক আগে থেকেই পরীক্ষার প্রচলন হয়েছে। হেনরি এ ফিশেলের ক্ষেত্রে ধারনা করা হয় তিনিই যে পরীক্ষার জনক এটি একটি ভুল ধারনা। মুলত বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ইন্টারনেট ভিত্তিক হাস্যরস সম্পর্কিত প্লাটফর্ম গুলোতে তাকে নিয়ে অনেক বেশি গল্প / আলোচনা শেয়ার করা হয় যার ফলে তাকেই অনেকে পরীক্ষার জনক হিসেবে মেনে নেয়। কিন্তু মজার বিষয় হল যদি আমরা পরীক্ষা পদ্ধতির সূচনার সময়ের কথা চিন্তা করি তাহলে দেখা যাবে হেনরি এ ফিশেল বা হেনরি মিশেল সকলেই পরীক্ষা দেওয়া লেগেছে।

আধুনিক পরীক্ষা পদ্ধতি

পরীক্ষার সাথে এখন অনেক কিছু জড়িত। রুটিন, গ্রেড, জিপিএ কিংবা ফলাফল সবকিছুই পরীক্ষার সাথে সম্পর্কিত। তাই এই বিষয়গুলো কে আরো সহজ করতে দিন দিন নতুন নতুন পরীক্ষা পদ্ধতির সূচনা হচ্ছে। যেমন আগে পরীক্ষা মানেই ছিল বড় বড় করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া অনেকটা রচনার মত। এর পরে শুরু হল Multiple Choice Question(MCQ) পদ্ধতি। যেখানে শুধু টিক দেওয়া লাগে বা বৃত্ত পূরণ করা লাগে। বিজ্ঞান শাখার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে যেটি সবচেয়ে মজার পরীক্ষা সেটি হল ব্যবহারিক পরীক্ষা বা প্র্যাকটিকেল পরীক্ষা। যেখানে সবকিছু হাতে কলমে করতে হয়। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এখন পরীক্ষা অনেকক্ষেত্রে কম্পিউটার নির্ভর হয়ে গেছে। অনেক দেশে বর্তমানে সরাসরি কম্পিউটারের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে পরীক্ষা পদ্ধতিতেও নতুন নতুন পরিবর্তন আসছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই উপকারি।