Emotional Intelligence কোনো নতুন ধারণা নয়। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে এর বিকাশ শুরু হয়। সহজ কথায় Emotional Intelligence বলতে বোঝায় নিজের ও অন্যের অনুভূতি জানা ও বোঝার ক্ষমতাকে। নিচের এই কয়েক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে একজনের ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স-
নিজের আবেগ, অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়াকে বুঝতে পারা (আত্ম-সচেতনতা)
নিজের আবেগ, অনুভূতি, প্রতিক্রিয়া ও মুড নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা করতে পারা (আত্ম-নিয়ন্ত্রণ)
নিজের লক্ষ্যের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকা ও যেকোনো বাধায় হার না মানার মনোভাব (মানসিক দৃঢ়তা)
অন্যের অনুভূতির প্রতি সচেতনতা ও শ্রদ্ধাবোধ (সহমর্মিতা)
সহজেই অন্যের সাথে মিশতে পারা, তাদের প্রভাবিত করা, নেতৃত্ব দেয়া, সমঝোতা ইত্যাদি সামাজিক গুণাবলী (সামাজিক দক্ষতা)
কেন গুরুত্বপূর্ণ ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স:
এক সময় ধরেই নেয়া হতো, উচ্চ আইকিউ সম্পন্ন মানুষ মানেই সফল মানুষ। উচ্চ আইকিউ বা উচ্চ বুদ্ধিমত্তা অবশ্যই সাফল্যের অনেক বড় একটি প্রভাবক। কিন্তু এখন ধারণা করা হয়, আইকিউই সব নয়। সফলতার পেছনে কাজ করে অনেক গুলো জটিল বিষয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল- ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স।
ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স একজন মানুষকে মানসিকভাবে দৃঢ় করে
ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্ব ও প্রভাব লক্ষ্য করা যায় প্রায় সব ক্ষেত্রেই। কর্মক্ষেত্রে যদি আমরা দেখি, অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের উন্নতির জন্য ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করে থাকে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রেও এর ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
গবেষণায় দেখা যায়, নেতৃত্ব দানকারী অধিকাংশ মানুষের ইকিউ অনেক বেশি। ইকিউ তোমাকে সাহায্য করবে অনেক ভালো নেটওয়ার্কিং করতে। বর্তমান সময়ের ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে – “ Your network is your net-worth”। ভালো নেটওয়ার্ক তোমাকে পেশাজীবনে এগিয়ে যেতে করবে সাহায্য।
মনে হতে পারে যাদের কাজ অনেক মানুষকে নিয়ে তাদেরই শুধু ইকিউ নিয়ে চিন্তা করা উচিত। কিন্তু, না! ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স তোমার জীবনকে প্রভাবিত করে আরও অনেক ভাবে।ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স একজন মানুষকে মানসিকভাবে দৃঢ় করে। তাই সে সহজেই স্ট্রেস বা চাপ নিতে পারে। সে দুশ্চিন্তা বা হতাশায় কম ভোগে। মানসিক প্রশান্তি তার শারীরিক সুস্থতায়ও প্রভাব ফেলে এবং সে পায় এক সুখী- সন্তুষ্ট জীবন। এজন্য ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্ব এতোটা বেশি।
ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স কীভাবে বাড়াবেন?
ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স কোনো জন্মগত গুণ নয়। যেকোনো বয়সেই একজন পারে তার ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের উন্নতি ঘটাতে। ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের উন্নতির অনেক উপায় রয়েছে। এজন্য তোমাকে তোমার মানবিক অংশটির উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
তোমার আবেগ, মনোবল ও স্পৃহাকে তোমার জীবনের লক্ষ্যের দিকে চালিত করতে হবে। অন্যের প্রতি হতে হবে সহানুভূতিশীল ও সহমর্মী। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে নিজের প্রতিক্রয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে হবে। এছাড়াও জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি করতে হবে ইতিবাচক। এভাবেই বাড়ানো সম্ভব ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স।
জেনে নিন “ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বা আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা” সম্পর্কে
“ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বা আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা” হচ্ছে এমন আমাদের মনের মধ্যে তৈরি হওয়া ইমোশন যেগুলো আমাদের আসে পাশের পরিস্থিতি, আমরা কি দেখছি, কি শুনছি বা কেমন বোধ করছি ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে তৈরি হয়। এই ইমোশন গুলোই হয়তো পরবর্তী সময়ে আমাদের ব্যবহারে কিছু পরিবর্তন আনছে এবং এই পরিবর্তিত ইমোশনে নিয়ন্ত্রন রেখে সামনে দিকে এগিয়ে চলা।
ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বুঝতে গেলে আগে নিজেকে বুঝতে হবে। এক কথায় ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স হচ্ছে নিজের ইমোশন গুলোকে বোঝা, পাশাপাশি অন্যের ইমোশন গুলোও বোঝা। ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স বলে, আগে নিজেকে খুশি রাখতে হবে আমাদের প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য।
ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সে মূলত চার টি সচেতনতার গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয়। যেমনঃ-
১। নিজেকে বোঝা বা আত্ম-সচেতনতা
২। অন্যদেরকে বা সমাজকে বোঝা
৩। নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা বা ম্যানেজ করা
৪। সম্পর্ক বা সমাজকে ম্যানেজ করা
আমাদের নিজেকে আগে –সচেতন করতে হবে এবং নিজেক্ব –সচেতন করার পাশাপাশি আমাদের চারপাশে যারা রয়েছে তাদেরকেও সচেতন করতে হবে। আমাদের ব্যবহার অন্য একজন ব্যাক্তির উপর কীভাবে প্রভাব ফেলছে টা আমাদের বুঝতে হবে এবং তাদের উপর কীভাবে প্রভাবে ফেলছে টা নিয়ন্ত্রন করাই হচ্ছে আবেগ নিয়ন্ত্রন করা।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাবো,স্কুল থেকেই বাচ্চাদের সফট স্কিলের ধারণা দেওয়া শুরু হয়। যেমন শিক্ষক বাচ্চাদের কে শেখানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গায় খেলতে নিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের খেলতে দিচ্ছে, যেখানে অনেক বাচ্চা একসাথে খেলাধুলা করে এতে বাচ্চাদের মধ্যে একটা কনফ্লিকট বাধার প্রবনতা থাকে যেমন কথা কাটাকাটি হয় বা মন মালিন্য হয় ইত্যাদি, সেখানে বাচ্চারা কীভাবে ব্যাপারটাকে হ্যান্ডেল করছে বা কীভাবে কনফ্লিকট টার সমাধান করছে তা অবজার্ভ করেন এবং পড়ে তাদেরকে ইনডোর কাউন্সেলিং করা হয়। যা আমাদের দেশের থেকে অনেক ভিন্ন, যার ফলে তাদের ফলাফল ও আমাদের দেশের থেকে অনেক ভিন্ন ও ভাল হয়। তারা সহজেই দলবদ্ধ ভাবে কাজ করতে পারে, নেতৃত্ব দিতে পারে এবং যে কোনো সমস্যার সহজেই সমাধান করতে পারে।
প্রফেশনাল ক্ষেত্রে সফট স্কিল এবং হার্ড স্কিল, এই দুই স্কিল সম্পর্কেই ধারণা থাকতে হবে। প্রোফেসনাল সম্পর্ক গুলো মূলত অনেক সেনসিটিভ হয়, একবার যদি এখানে একটা ফাটল ধরে, অই জিনিসটাকে ঠিক করা খুব কথিন হয়ে দাড়ায়। তাই আমরা যত বার প্রোফেসনাল আচারনের কথা বলি আমরা সবার আগে বলি, “ Prevention is always better than cure.”
প্রফেশনাল ক্ষেত্রে সফট স্কিল এবং হার্ড স্কিল দুইটার গুরুত্বই অপরিসীম। হার্ড স্কিল বলতে মূলত টেকনিক্যাল বা ফাংশনাল স্কিলকে বোঝায়। যেমন আপনি একজন মার্কেটিং স্পেশালিষ্ট আপনার মার্কেটিং এ নলেজ লাগবে যখনই আপনি এটিকে সেলসে কনভার্ট করতে যাবেন তখনই আপনাকে প্রোডাক্ট প্লানিং, প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হবে, আর এগুলই মূলত আপনার ফাংশনাল স্কিল।
আর সফট স্কিল হল আপনি কাজটা করতে গিয়ে কত সৃজনশীল ভাবে চিন্তা করতে পেরেছেন, একটি দল থেকে কীভাবে দলবদ্ধ হয়ে কাজটি করছেন বা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন , আপনি কীভাবে প্রবলেম সল্ভ করেছেন, আপনি কীভাবে অন্য টিম মেম্বারদের মতামত গ্রহন করছেন ইত্যাদি।
কর্মজীবনে যে কোনো পজিশনেই আপনি থাকেন না কেন, সফট স্কিল আপনার সব ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হবে। এমন কি একজন ফ্রেশার তারও সফট স্কিলের প্রয়োজন আছে কারন যখন সে কোনো ইন্টার্ভিউয়ের জন্য যাবে এবং তাকে যখন স্যালারি অফার করবে তখন তাকে জানতে হবে কীভাবে নেগোশিয়েট করতে হয়।
একদম সহজ করে বললে প্রোডাক্টিভিটি বলতে বোঝায় কোনো কাজের পেছনে তোমার পরিশ্রমের বদৌলতে তুমি ঠিক কতটুকু ফলাফল পাচ্ছ। মানে তোমার পরিশ্রম আর পরিশ্রমের ফলাফলের অনুপাতকেই আমরা বলছি প্রোডাক্টিভিটি।
এই প্রোডাক্টিভিটি তোমাদের অনেকেরই উৎসাহ কিংবা হতাশার কারণ। কেননা অনেকেই পরিশ্রম অনুযায়ী অসাধারণ সব সাফল্যের মুখ দেখছো,মানে প্রোডাক্টিভিটি ঠিকঠাক মতোই কাজ করছে। আবার অনেকেই আছো, যারা শ্রম দিয়েও আশানুরূপ কোনো ফলাফল পাচ্ছো না, দিনদিন হতাশ হয়ে পরেছ।
তোমার কাজটির জন্য দিনের সেরা সময় কোনটা নির্বাচন করো
সকালের পড়ালেখা কি তোমার বেশি মনে থাকে? কিংবা ধরো গীটারের প্র্যাকটিসটা বিকেল বেলাইতেই বেশি ফলপ্রসূ মনে হচ্ছে? এক কাজ করো। একটা এক্সপেরিমেন্ট করে ফেলো। ফোনের নোটে বা ডায়েরিতে তোমার দৈনন্দিন টাস্কগুলোর একটি রেকর্ড নাও। এরপরে দেখো দিনের কোন সময়ে কোন কাজটি করলে তুমি সবচেয়ে বেশিক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারছো আর কাজটিও তোমার কাছে ইফেক্টিভ মনে হচ্ছে। এভাবে রেকর্ড নেয়ার ফলে তোমার প্রোডাক্টিভিটি কার্ভ সম্পর্কে তোমার একটি সুস্পষ্ট ধারণা হবে এবং সেই অনুযায়ী তুমি তোমার রুটিন তৈরি করে ফেলতে পারবে।
এভাবে ইফেক্টিভ পদ্ধতিতে প্রোডাক্টিভ রুটিন তৈরি করতে পারলে তোমার প্রোডাক্টিভিটিও বাড়তে শুরু করবে।
৮০/২০ রুল মেনে চলো
১৮৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করা ইতালির ভিলফ্রেডো ফেডেরিকো দামাসো পারেটো টাইম ম্যানেজম্যান্ট আর প্রোডাক্টিভিটির এক অসাধারণ নিয়ম রেখে গিয়েছেন, যার নাম হচ্ছে ৮০/২০ রুল বা পারেটো প্রিন্সিপাল।
পারেটো প্রিন্সিপাল বলছে যে, শতকরা ৮০ ভাগ ফলাফল আসে শতকরা ২০ ভাগ কাজের জন্য।
আরও সহজভাবে বললে তোমার দৈনন্দিন জীবনের ২০ শতাংশ কাজই তোমাকে ৮০ শতাংশ ফলাফল এনে দেবে। আর এই ব্যাপারটিও মাথায় রেখো- কম কাজ করা মানেই কিন্তু আলসেমি নয়।
৮০/২০ রুল অনুসরণ করার জন্য প্রথমে তুমি প্রতিদিন কী কী কাজ করো তার একটা লিস্ট বানিয়ে ফেলো। এবার খেয়াল করো যে তোমার জীবনের লক্ষ্য পূরণে প্রতিদিনকার কোন কাজগুলো তোমাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে। এবারে তোমার প্রতিদিনকার প্রোডাক্টিভ আওয়ারের জন্য এই কাজগুলো বরাদ্দ রাখো। পারলে সেই কাজগুলোই আগে সেরে ফেলো।
এভাবে ৮০/২০ রুল ফলো করলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নিজের মধ্যে তুমি প্রোডাক্টিভিটি খুঁজে পাবে।
ঘুম থেকে উঠে নিজের দিকে ফোকাস করো
আমাদের অনেকের মধ্যে যেই অভ্যাসটি সবচেয়ে বেশি রয়েছে সেটি হচ্ছে ঘুম থেকে উঠেই ই-মেইল, মেসেজ আর নোটিফিকেশন চেক করে দিন শুরু করা।
এই অভ্যাসটির কারণে আপডেটেড থাকা যায় ঠিকই কিন্তু এই অভ্যাসের কারণে আজকের দিনে তুমি কী কী অর্জন করতে যাচ্ছ সেটি ঠিক করে দেয় ই-মেইল, মেসেজ কিংবা নোটিফিকেশন দেখার পর তোমার ভার্চুয়াল মাইন্ড সেট আপ।
কাজেই ই-মেইল আর মেসেজ চেক দিয়ে দিন শুরু করার আগে একটু নিজের দিকে ফোকাস করো। নিজেকে সময় দাও। সকাল বেলায় উঠে হালকা ব্যায়াম কিংবা মেডিটেশন করে নিতে পারো। এরপর খবরের কাগজ পড়তে পড়তে স্বাস্থ্যসমত একটা ব্রেকফাস্ট তোমার প্রোডাক্টিভিটি বাড়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিবে।
এরপর চাইলে মেসেজ, ইমেইল আর নোটিফিকেশন চেক করে নিতে পারবে, এতে খুব একটা বড় ক্ষতি হবে না, বরং উপকারটাই বেশি হবে তোমার।
কাজের সময় সোশ্যাল মিডিয়া নোটিফিকেশন বন্ধ রাখো
আমার মনে হয় প্রোডাক্টিভিটির সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে এই সোশ্যাল মিডিয়া। নোটিফিকেশনের বদৌলতে বার বার ফোন চেক করা, ফোনের স্ক্রিনে ডুবে থাকা এখন একটি মহামারি ব্যাধি। একবার নোটিফিকেশন চেক করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেইসবুকেই কাটিয়ে দিয়েছ এমন উদাহরণ আশা করি কম নেই।
তোমাকে ছোট একটা তথ্য দেই। এই নোটিফিকেশন চেক করতে গিয়ে তোমার কাজে যেই ব্যাঘাত ঘটে আর মনোযোগ হারায় সেই মনোযোগ পুরোপুরি ফিরিয়ে আনতে সময় লাগে ২৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ড। ধরলাম তুমি কোনো কাজের জন্য বরাদ্দ রাখলে ১ ঘণ্টা। এর মধ্যে মাত্র একবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তথাকথিত ঢুঁ মেরে আসতে গিয়ে তুমি প্রায় ৩০ মিনিটের মতো সময় হারাচ্ছো। যার মানে দাঁড়াচ্ছে তুমি তোমার কাজের জন্য বরাদ্দ এক ঘণ্টার মাত্র অর্ধেক সময় পাচ্ছো। মোট কথা কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন হবে না।
সোশ্যাল মিডিয়া নোটিফিকেশন এভয়েড করা তোমার আমার সবার জন্য খুবই কঠিন একটা কাজ সেটি আমি মানছি। কিন্তু কাজ করার সময় ফোনকে অন্তত সাইলেন্ট মোডে রাখা যেতেই পারে। এভাবে ২১ দিন পার করলেই তুমি টাস্কটিকে একটি অভ্যাসে পরিণত করতে পারবে। এরপর দেখবে কেমিস্ট্রি কিংবা হায়ার ম্যাথের টপিকটা আরও তাড়াতাড়ি মাথায় ঢুকছে।
অযথা মাল্টি টাস্কিংকে না বলো
তুমি প্রতিদিন যেই কাজটি করছো সেটি অবশ্যই তোমার লক্ষ্যের সহায়ক হতে হবে। তোমার অবস্থা যাতে Master of all but jack of none- এই রকমের না হয়ে যায়, প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে হলে এই দিকটায় লক্ষ রাখতে হবে। কাজেই একসাথে অনেকগুলো কাজ করা আজকে থেকেই থামিয়ে দাও। এতে কাজের কাজ কিছুইতো হয় না উল্টো সময় নষ্ট হয়। একটা তথ্য দেই। তুমি দিনে প্রায় ১০ বারের মতো টাস্ক পরিবর্তন করলে তোমার এভারেজ আই কিউ কমে প্রায় ১০ পয়েন্ট এর মতো।
তাই কম টার্গেট রেখে সেই কাজ গুলোভাবে করতে পারলে তোমার কাঙ্ক্ষিত কাজে দক্ষতা বাড়বে, সেই সাথে প্রোডাক্টিভিটি বাড়লে তোমার কাজ করার স্পৃহা শত গুণে বেড়ে যাবে।
আমি মাল্টিটাস্কিংকে না বলছি না, “অযথা” এক সময় অনেক গুলো কাজ একসাথে করার ব্যাপারটিকে না বলছি কেননা এক্ষেত্রে কম প্রোডাক্টিভিটির সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ।
ব্রেক নাও, বড় কাজকে ভেঙে ছোট করে ফেলো
কাজ করতে করতে প্রায় সময়ই আমাদের মাথা ধরে যায়। এর মানে হচ্ছে কাজ করার জন্য আমাদের ব্রেইনের গ্লুকোজ প্রায় ফুরিয়ে গেছে। এই অবস্থায় নিয়ে ফেলো ব্রেক। ব্রেক মানে সোশ্যাল মিডিয়া ব্রেক নয়। কাজ করা ফাঁকে ব্রেক হিসেবে তুমি একটু হাঁটাহাঁটি করে আসতে পারো কিংবা লাঞ্চ বা হালকা জল খাবার অথবা মেডিটেশন দিয়েই ব্রেকের পর্বটা সেরে ফেলতে পারবে। ব্রেকের ফলে তোমার ব্রেইন পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্লুকোজের যোগান পাবে যার ফলে তোমার কাজটাও হবে প্রোডাক্টিভ।
কোনো কাজ কি খুব বেশি বড় কিংবা একঘেয়ে রকমের মনে হচ্ছে? চিন্তা নেই। এই সব কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে কাজগুলোকে ভেঙে ছোট করে ফেলো। ছোট ছোট প্রোডাক্টিভ কাজ তোমাকে দিয়ে বড় কাজটি করিয়ে নেবে।
এবার নিজেকে ট্রিট দাও
অনেক কাজ হোল। এবার নিজেকে পুরস্কৃত করো। প্রতিটি কাজের লক্ষ্য পূরণ হলে নিজেকে উপহার দাও। এই সেলফ রিওয়ার্ডের প্র্যাকটিস তোমাকে সেলফ মোটিভেটেড থাকতে সাহায্য করবে অনেক বেশি। আর সব সময় নিজে নিজেই মোটিভেটেড থাকতে পারলে প্রোডাক্টিভিটি হবে তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড।
এগুলো ছাড়াও প্রোডাক্টিভিটির আরও কিছু মন্ত্র আছে। যেমন, তোমার কাছে প্রতিদিনকার যেই কাজগুলো কঠিন মনে হবে সেই কাজগুলো পারলে দুপুরের খাবার অর্থাৎ লাঞ্চের আগেই সেরে ফেলো। টু ডু লিস্টের পাশাপাশি তোমার ডেইলি রুটিনের দিকেও মনোযোগ দাও। তার সাথে রুটিনমাফিক স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার গুরুত্বটাও কম না। সবশেষে, পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমালে প্রোডাক্টিভিটির জন্য যে এতো এতো প্ল্যান, সবই হবে ধূলিসাৎ।
প্রোডাক্টিভিটি ব্যাপারটি চাইলেই তুমি একদিনে অর্জন করতে পারবে না কেননা প্রোডাক্টিভিটির ব্যাপারটি অন্যান্য অনেক কাজের মতোই অনুশীলন নির্ভর। আর প্রোডাক্টিভিটির অনুশীলন করতে হলে তোমাকে সব সময় উপরের ব্যাপারগুলো মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু এখানেও কিছু সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার তোমাকে বারবার বাধা দিবে। যেমন ধরো আমাদের নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ একটি বিষয়। কাজেই এই বাধা উৎরাতে হলে বেশ শক্তপোক্ত ইচ্ছা শক্তির প্রয়োজন।
আরও আছে এক কাজ করার সময় অন্য কাজ করার প্রবণতা। এতে আমাদের মানসিক শক্তির অপচয় ছাড়া কাজের কাজ আর কিছুই হয় না। বরঞ্চ এর ফলে আমাদের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে প্রোডাক্টিভ হওয়া আর ব্যস্ত থাকা কিন্তু মোটেও এক জিনিস নয়। তাই ব্যস্ত হওয়ার পরিবর্তে প্রোডাক্টিভ হওয়ার পেছনে বেশি মনোযোগ দাও।
প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর প্রায় সব রসদই তোমাকে দিয়ে দিলাম। আজকে থেকেই একটা রুটিন বানিয়ে প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য নেমে পড়। আর নিচের উক্তিটি সব সময় মাথায় রাখবে-
যখনি আমাদের কাছে নেগোসিয়েশন (Negotiation) ওয়ার্ড টি আসে তখনই আমাদের মধ্যে কেমন যেন একটা যুদ্ধে নামার মত মানসিকতা তৈরি হয়। তাই বেশির ভাগ এক্সপার্টরাই বলেন, যে এই মাইন্ড সেট বা এই মানসিকতা-টাকে যদি একটু শিফট করে যদি উইন উইন করা যায় বা কোন একটা প্রবলেমের ক্রিয়েটিভ সল্যুশন বের করার জন্য নেগোসিয়েশনে নেমেছি এই মানসিকতা যদি আনা যায় তাহলে “Why I fail in negotiation” এর উত্তর পাওয়া যাবে।
নেগোসিয়েশন ফেইল করার একটি বড় কারন হচ্ছে Rush বা তাড়াহুড়া করা। এই Rush বা তাড়াহুড়া করার একটা কারন হতে পারে আমার কাছে পর্যাপ্ত পরিমান রিসার্চ নেই, নেগোসিয়েশন পার্টনারের সম্পর্কে আমরা পর্যাপ্ত পরিমান রিসার্চ নাই অথবা প্রবলেম সম্পর্কে আমরা রিসার্চ নাই।
আর দ্বিতীয়ত আমার টাইম ম্যানেজমেন্টের প্রবলেম। আমার এই টাইম ম্যানেজমেন্ট প্রবলেমের কারনে আমি তাড়াহুড়া করছি, রিসার্চ কম থাকার কারনে আমি তাড়াহুড়া করছি এবং যার কারনে আমি নেগোসিয়েশনে ফেইল করছি।
তাই আমরাদের Rush বা তাড়াহুড়াকে এভয়েড করতে হবে। Rush বা তাড়াহুড়াকে যদি এভয়েড করা যায় তাহলে তিনটা জিনিস গুরুত্বপূর্ণ, যেমন –
আমার যে নেগসিয়েশন পার্টনার তার সম্পূর্ণ এটেনশন আমি পাচ্ছি কিনা
তার সাথে আমর কানেক্টিভিটি তৈরি হয়েছে কিনা এবং
কানেক্টিভিটি তৈরি করার জন্য আমাকে কিছু ডায়াগনস্টিক কোশ্চেন করতে হবে। ডায়াগনস্টিক কোশ্চেনের আরেকটি ফর্ম হচ্ছে 5W1H যা আমরা প্রায় সবাই জানি।
নেগোসিয়েশন সব সময়ই সাক্সেস নাও হতে পারে, নেগোসিয়েশন তখনই সাক্সেস হয় যখন কোন কনফ্লিক্ট আসে বা কোন সমস্যার সম্মুখীন হই অথবা সিদ্ধান্ত গ্রহনের সময় কোন জায়গায় ন না মিলে। সেই জায়গাতেই নেগোসিয়েশন করা হয়। তারমানে নেগোসিয়েশন কিন্তু যুদ্ধ নয়! নেগোসিয়েশন মানে তাড়াহুড়া নয়! যদি এই তিনটা জিনিস ফলো করা যায় আর যদি তাড়াহুড়াটাকে দূর করা যায় তাহলে আপনি কখনোই নেগোসিয়েশন ফেইল করবেন না।
আজ ইলেট্রিক্যাল, টেলিকম ও ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে শেষ হল অভিভাবক সম্মেলনের ৩য় দিন। বাংলাদেশে প্রথম বারের মত ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের নিয়ে ৩ দিন ব্যাপি ভিন্ন রকম একটি অনলাইন স্টুডেন্টস-প্যারেন্টস-টিচার্স-কংগ্রেসের আয়োজন করে। এর মাধ্যমে মোট ৮ টি ডিপার্টমেন্টের ৯০০ অভিভাবকের সাথে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক যুক্ত হয়।
তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানটিও অন্যান্য দিন গুলোর মত শুরু করা হয় সকাল ১১:৪০ মিনিটে টেলিকমিউনিকেশন,ইলেকট্রিকাল ও ট্যুরিজম এন্ড হসপিটলিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার কারণে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যার ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা ইত্যাদি কার্যক্রম চলমান থাকে,এই অভিনব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গত ২২ শে মার্চ থেকে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারাও নিয়মিত ভাবে রুটিন অনুযায়ী অনলাইনে ক্লাস পতিচালনা করে যাচ্ছে।
তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানটিতে ১৩০ জনের অধিক অভিভাবকরা যুক্ত হন এবং করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারনে এই অভিনব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। প্রত্যেক অভিভাবকরাই ভিন্ন ভিন্ন মতামত প্রদান করেন।
জনাব ………বলেনঃ ভাইরাসের কারনে দেশের এই পরিস্থিতিতেও অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে বিষয় টি তার কাছে খুব ভাল লেগেছে। যদি অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা করা না হতো তাহলে বাচ্চারা বাহিরে যেত, বন্ধুদের সাথে মেলা-মেশা করতো, একটা বিপদে পরার সম্ভাবনা থাকতো। কিন্তু অনলাইনের ক্লাস পরিচালনা করার মাধ্যমে বাচ্চাদের পড়াশুনাও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিপদে পরার ঝুঁকিও অনেকটা কমে গেছে।
আরেকজন অভিভাবক তিনি মতামতের পাশাপাশি ফিটব্যাকও প্রদান করেন, তিনি বলেনঃ………., যেহেতু অনলাইনের ক্লাস পরিচালনা করার মাধ্যমে বাচ্চারা বেশির ভাগ সময় ক্লাস করে এবং বাসায় থাকে। সেক্ষেত্রে ক্লাসের সময় টা যদি একটু বাড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে বাচ্চারা ক্লাস ও বেশির ভাগ সময় বাসায়ই থাকবে এবং দেশের এই পরিস্থিতি তিনি দেখেন তার ছেলে রুটিন অনুযায়ী প্রতিদিন ক্লাস করছে এবং তিনি তার ছেলের পড়াশুনার প্রতি নজর রাখতে পারছেন।
ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অনলাইন স্টুডেন্টস-প্যারেন্টস-টিচার্স-কংগ্রেসের তৃতীয় দিনে শুধুমাত্র অভিভাবকরাই নয়, আজ আমরা মতামত নিয়েছি কিছু শিক্ষার্থীদেরও।
যেমন জয় চন্দ্র দাস ইলেকট্রিকাল ডিপার্টমেন্ট থেকে ,
তিনি জানানঃ ………… তার অনেক বন্ধু আছেন যারা অন্য পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে পড়াশুনা করছে, তাদের পড়াশুনা সম্পূর্ণ স্থগিত রাখা হয়েছে সেদিক থেকে আমরা অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে পড়াশুনায় অনেক এগিয়ে যাচ্ছি এবং আমাদের পড়াশুনা করোনা ভাইরাসের কারনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে না। তিনি তার বন্ধুদেরকেও পরামর্শ দেন যে তারাও যেন অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করেন তিনি আরো জানান অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা বিভিন্ন সমস্যার কারনে রেগুলার ক্লাস করতে পারে না, অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে তারাও এখন ক্লাস করতে পারছে এবং তাদের ক্লাসের উপস্থিতিও আগের থেকে বেশি।
বিগত ২ দিনের মত আজকেও অনলাইন স্টুডেন্টস-প্যারেন্টস-টিচার্স-কংগ্রেসের তৃতীয় দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সম্মানিত সিইও জনাব মোঃ নুরুজ্জামান, স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সম্মানিত অধ্যক্ষ জনাব কে এম হাসান রিপন এবং কংগ্রেসটি মোডারেট করেন ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জনাব কে এম পারভেজ ববি।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জনাব আব্দুল হাকিম, জনাব জহিরুল ইসলাম ফরহাদ এবং ইলেট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে নাহিদুল ইসলাম, টেলিকম ডিপার্টমেন্ট থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্ট থেকে মমতা হেনা সিদ্দিকা।
ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অনলাইন ভিত্তিক ছাত্র-শিক্ষক- অভিভাবক কংগ্রেস অনুষ্ঠিত
আজ থেকে শুরু হল ৩ দিন ব্যাপি ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অনলাইন ভিত্তিক ছাত্র-শিক্ষক- অভিভাবক কংগ্রেস।
প্রথম দিনে সকাল ১১:৪০ মিনিটে ১৫০ জন কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী অভিভাবকদের নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম বারের মত ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের নিয়ে ভিন্ন রকম একটি অনলাইন স্টুডেন্টস-প্যারেন্টস-টিচার্স কংগ্রেসের আয়োজন করেন। ১৫০ জন অভিভাবক যুক্ত হন এই কনফারেন্সে।
প্রযুক্তির মাধ্যমে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক সকল ক্লাস পরিচালনা করছে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনায় কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে সে বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের মতামত সহ পলিটেকনিকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান ও প্রশংসা করেন ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের এই অভিনব প্রযুক্তি ব্যাবহারের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনার বিষয় টিকে ।
এখানে উল্লেখ্য যে, ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডঃ মোঃ সবুর খান স্যারের নির্দেশক্রমে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকেই গত ২২ শে মার্চ থেকে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের ক্লাস অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছে এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকগনও নিয়মিত ভাবে রুটিন অনুযায়ী অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস এবং পরীক্ষা পরিচালনা করে আসছে।
অনলাইন স্টুডেন্টস-প্যারেন্টস-টিচার্স কংগ্রেস-এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ফ্যামিলির সম্মানিত সিইও জনাব মোঃ নুরুজ্জামান, স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সম্মানিত অধ্যক্ষ জনাব কে এম হাসান রিপন।
অনলাইন কংগ্রেসটি মোডারেট করেন পলিটেকনিকের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জনাব কে এম পারভেজ ববি।ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জনাব আব্দুল হাকিম, জনাব জহিরুল ইসলাম ফরহাদ এবং কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে হেড সোমা রানী দাস।
৩ দিন ব্যাপি এই কংগ্রেসেে পর্যায়ক্রমে পরবর্তীতে অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের ৯০০ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সাথে আয়োজন করা হবে।
আমার কলেজ বন্ধু মুহিবকে দেখতাম ক্লাস শুরু হওয়ার আগে, টিফিন পিরিয়ডে কিংবা বোরিং কোন ক্লাসের মাঝে শেষের সারিতে বসে বসে গল্পের বই পড়ছে। সব থেকে অবাক করার বিষয় হলো প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন বই পড়ছে সে। কীভাবে এত তাড়াতাড়ি বই শেষ করতে পারে এটা ভেবেই আমি চিন্তিত।
আমার বাসার বুকশেলফে অনেক বই আছে। টুকটাক ভালোই বই পড়া হয়। কিন্তু একটা বইতো এক সপ্তাহের আগে কোনো দিনই শেষ করা যায় না। একদিন মুহিবকে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম। মুহিব হেসে আমাকে চিন্তা করতে মানা করলো আর ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিলো অনেকগুলো ইউটিউব লিংক।
রিভিউ কিংবা চ্যাপ্টার সামারি আগে পড়ো
প্রথম কাজ হিসেবে তোমারা অনেকেই যে কাজটি করো না, তা হলো বুক রিভিউ কিংবা চ্যাপ্টার সামারি পড়া। একটা বই শুরু করার আগে একটু গুগল করে নাও,ইউটিউবে কিছু রিভিউ দেখে নাও। তাহলে বই সম্পর্কে তোমার ধারণা হবে আর বইয়ের ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্টগুলো তুমি আগে থেকে জানলে তোমার আগ্রহ অনেক বেড়ে যাবে। তুমি সেই ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্টগুলো পাওয়ার জন্যে অধীর আগ্রহ নিয়ে পড়ে যাবে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা!
চ্যাপ্টার সামারি সব থেকে বেশি কাজে আসে তখন যখন তোমার হাতে সময় অনেক কম। তুমি চ্যাপ্টার সামারিগুলো থেকেই বই সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে নিতে পারবে।
মনে মনে পড়ো
ছোট বেলা থেকেই আমরা একটা অভ্যাসের মধ্যে বড় হই, সেটা হলো জোরে জোরে পড়া। একদম ছোটবেলা থেকে ক্লাসরুমে অনেকটা এমন করে পড়ানো হতো, “অ-তে অজগরটি আসছে তেড়ে” সাথে সাথে পুরো ক্লাস জুড়ে “অ-তে অজগরটি আসছে তেড়ে।”
ছোটবেলার এই অভ্যাস হয়তো পাঠ্যবই পড়ার ক্ষেত্রে অনেক কার্যকর, কিন্তু সাধারণ বই পড়ার ক্ষেত্রে তা একদমই না। যখন আমরা প্রতিটা শব্দ উচ্চারণ করে করে পড়ি তখন কথা বলার সাথে সাথে পড়তে যেয়ে পড়ার গতি কমে যায় কয়েক গুণে। তুমি একটু পরীক্ষা করেই দেখতে পারো, দেখবে উচ্চারণ করে করে পড়লে যত গুলো শব্দ এক মিনিটে শেষ করা যায়, মনে মনে পড়লে সেই সময়ে প্রায় দ্বিগুণ শব্দ কভার করা যায়।
আরেকটা বড় সমস্যা হচ্ছে মনে মনে পড়ার সময়ও আমরা পড়াটা মস্তিষ্কের মধ্যে বলতে থাকি অর্থ্যাৎ ঠোঁটে উচ্চারণ করে করে না পড়ে মাথার মধ্যে উচ্চারণ করে করে পড়া! এই সমস্যাটাকে বলা হয় Sub-vocalization. অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন, মানুষের দ্রুত পড়ার ক্ষমতাকে কমানোর অন্যতম প্রধান কারণ এই Sub-vocalization.
তাই পড়ার সময় মুখে কিংবা মস্তিষ্কের ভিতরে কোন জায়গাতেই উচ্চারণ করে করে পড়ার কোন প্রয়োজন নেই। বিনা বাধায় শুধু চোখ বুলিয়ে পড়ে যাও।
পয়েন্টার ব্যবহার করো
পড়তে বসার সময় একটা কলম, হাইলাইটার কিংবা একটা সরু কাঠিকে পয়েন্টার হিসেবে ব্যবহার করতে থাকো। যদি কিছুই না পাও হাতের কাছে ব্যবহার করো হাতের আঙ্গুলটাকেই।
পয়েন্টার ব্যবহার করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ একটা বড় প্যারাগ্রাফ পড়ার সময় আমরা বারবার হারিয়ে ফেলি কোন লাইনে ছিলাম। অনেক সময় একবার পড়ে আসা লাইনকেই আবার পড়তে শুরু করি! এই ভুলগুলোর জন্যে পড়ার মাঝে মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে পরবর্তীতে আবার খুঁজে নিয়ে পড়া শুরু করতে হয়। পয়েন্টার ব্যাবহার করলে এরকম ঝামেলার কোন সুযোগই নেই।
পয়েন্টার ব্যবহারের আরেকটা চমৎকার দিক আছে। অনেক সময় এমন হয়, পড়তে পড়তে অন্যদিকে মন চলে যায়। অনেকগুলো লাইন পড়ে ফেলেছি কিন্তু মনোযোগ নেই একদমই! এই হঠাৎ করে অন্যমনস্ক হয়ে যাওয়া সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় পয়েন্টার ব্যবহার করলেই।
তুমি যখন পয়েন্টার ব্যবহার করবে তখন এমনিতেই তোমাকে এক্সট্রা একটা এফোর্ট দিতে হবে, যার ফলে হাত চালানোর জন্যে হলেও তোমাকে মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। যখন তুমি পড়ার সময় পয়েন্টার ব্যবহার করবে, তখন মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হলে দেখবে তোমার পয়েন্টার থেমে আছে। তাই পয়েন্টার বা গাইড ব্যবহার করলে দেখবে তোমার পড়ার মনোযোগ কয়েক গুণে বেড়ে গিয়েছে।
#WebinarsForBangladesh আমরা বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য কনসার্ট আয়োজন করতে দেখেছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে দুর্গত মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। আজকে আমরা একটু অন্যভাবে দুস্থ দিন মজুর মানুষদের সাহায্য করতে চেষ্টা করেছি।
আমরা সবাই জানি সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশে এই মুহুর্তে ১০ দিনের সাধারন ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে যার কারনে সবচেয়ে বিশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন দিনমজুর মানুষ। তাদেরকে একটু সাহায্য করবার জন্য আমরা আয়োজন করেছিলাম বিশেষ একটি Webinar যেখানে আমরা বলেছিলাম ২০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে যে যা পারেন দিনমজুর মানুষদেরকে সাহায্যের জন্য রেজিষ্ট্রেশন ফি বাবদ বিকাশ করুন এবং বিনিময়ে ১.৫ ঘন্টার একটি Webinar এ অংশ নিয়ে নিজের দক্ষতা উন্নয়ন করুন এবং একজন সাহসী ডোনার হয়ে দিনমজুর মানুষদের পাশে দাড়ান।
অতি সল্প সময়ে প্রায় ২৭ জন তরুন অংশগ্রহন করেন এবং প্রত্যেকেই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী রেজিষ্ট্রেশন ফি আমাদেরকে বিকাশ করেন। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত প্রায় ১০০০ টাকা আজ আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি বিদ্যানন্দ – Bidyanondo বিকাশ একাউন্টে। Bangladesh Skill Development Institute (BSDI) এই বিশেষ আয়োজনে যৌথ আয়োজক হিসেবে পাশে ছিল DEC – D Engineers’ Club। তরুনদের সতস্ফুর্ত অংশগ্রহনে অনুপ্রানিত হয়ে আমরা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি #WebinarsForBangladesh. বিস্তারিত আসছে শিঘ্রই।
কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ প্রায় সবাই এই বিষয় নিয়ে চিন্তিত কারন অধিকাংশ মানুষই এই জায়গাতে ফেইলার হয়। আমাদের জীবনের শতভাগ নির্ভরশীল হচ্ছে যোগাযোগে। এই যোগাযোগ হতে পারে লিখে, বলে, শুনে অথবা ইশারায়। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় এই কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ আমাদের অসচেতনাতার কারনে ফেইল হচ্ছে এবং কেন ফেইল হচ্ছে আমরা যদি এটা নিয়ে গুগল, টুইটার, লিংকইড ইনে অভিজ্ঞ বাক্তিদের সাথে কথা বলি, দেখবেন বেশির ভাগ সময় অভিজ্ঞ বাক্তিরাই বলবেন ‘’কমিউনিকেশন ফেইলার হয় কারন আমরা সবাই তৎপর থাকি উত্তর দেওয়ার জন্য।“
আমাদের কাছে কোনো সময় থাকে না অন্য বাক্তির কথা শোনার জন্য, আমাদের কাছে সময় থাকে না অন্য বাক্তি কোনো প্রশ্ন করার জন্য এবং আমরা জানিওনা কিভাবে একটাকোয়ালিটি কোশ্চেন করতে হয়। কারন কমিউনিকেশনের বড় দুটি অংশ এক হল প্রশ্ন করা এবং অপরটি হল উত্তর দেওয়া। এখন আমরা যদি প্রশ্ন না করে সব সময় উত্তর দেওয়ার জন্য তৈরি থাকি বা কমিউনিকেশনের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে শুনতে হবে।
কমিউনিকেশনের এই যে প্রিন্সিপাল বেশির ভাগ এক্সপার্টরাই বলেন ৮০% শুনতে হবে এবং ২০% বলতে হবে । কিন্তু আমরা তো তৎপর ৮০ ভাগ বলবো এবং ২০ ভাগ শুনবো। অনেক ক্ষেত্রে ২০% এর রুল ও আমরা মানি না, মানে আমরা ২০% ও শুনি না । তারমানে আমরা যদি সমগ্র কমিউনিকেশনের ১০০% এর ১০০% ই বলার পিছনে সময় দেই তাহলে কিন্তু আমরা যে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য শুনতে বলে সেইতা কিন্তু অর্জন করা সম্ভব হবে না এবং অর্জন না হওয়ার কারনে কখনই কানেক্টিং পয়েন্ট এ যাওয়া যাবে না । তারমানে আমরা যদি ওয়ান টু ওয়ান , ওয়ান টু ম্যানি , ম্যানি টু ম্যানি কমিউনিকেশন করি, সে ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই একটা কমন প্লেসের দরকার হয় , যে জায়গাটাতে এসেই সবাই মিট করবে এবং এগ্রী করবে, যেহেতু আমাদের কাছে সময় নেই এবং আমরা উত্তর দেওয়ার জন্য তৈরি থাকি তাই আমাদের কমিউনিকেশন ফেইল হয়।
আমরা যদি আমদের কমিউনিকেশনে উন্নত করতে চাই চাকরী ক্ষেত্রে অথবা ব্যবসা ক্ষেত্রে তাহলে আমাদের প্রাকটিস করতে হবে-
শুনতে হবে
প্রশ্ন করতে হবে
যদি আমরা বিশ্বাস করে থাকি “practice makes a man perfect বা অনুশীলনে সবই সম্ভব” তাহলে আমাদের কমিউনিকেশন সফল হবে কারণ আমরা প্রশ্ন করতে পারব এবং শুনতে পারব। আর আমরা যত বেশি শুনব তত বেশি কমন পয়েন্ট আসবে এবং কানেক্ট করতে পারব।