আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আগে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী বলতে স্বনির্ভর অর্থনীতি, যার অর্থ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য আভ্যন্তরীণ বিষয়ে উপযুক্ত বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক নিজস্ব প্রযুক্তি সম্বলিত উন্নয়ন আবশ্যক। আর এ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো কারিগরি শিক্ষা। বিশ্বের উন্নত দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় নিজেকে দক্ষভাবে গড়ে তুলতে হলে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করতে হলে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নাই। বিভিন্ন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড দক্ষ জনশক্তি তৈরির দায়িত্ব পালন করে আসছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরিচালিত শিক্ষাক্রমগুলোর মধ্যে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা-ইন-জুট টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-লেদার টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-এগ্রিকালচার, ডিপ্লোমা-ইন-ফরেস্ট্রি টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-মেরিন টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-হেল্থ টেকনোলজি, এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা), এইচএসসি (ভোকেশনাল) ও এসএসসি (ভোকেশনাল) অন্যতম। এছাড়া বিভিন্ন স্বল্প মেয়াদের ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স কারিগরি শিক্ষা বোর্ড পরিচালনা করে আসছে। এসব শিক্ষাক্রম পরিচালনাকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষাক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রত্যেক বছরই বেড়ে চলেছে। মন্ত্রণালয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়েই এতো বিপুল সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব সু-সম্পন্ন করা হয়। সকল বাধা অতিক্রম করে বিশ্বের উন্নত দেশকে অনুসরণ করে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে মানুষকে আত্মনির্ভরশীল জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক বিপ্লব সৃষ্টিকারী দেশ জাপান, চীন, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, কোরিয়াসহ বহুদেশ আছে যাদেরকে দেখে আমরা জানতে পারি কারিগরি শিক্ষার সুফল সম্পর্কে। অধিক জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করার একটাই বড় মাধ্যম কারিগরি শিক্ষা। আর বড় কথা হলো কারিগরিতে পড়ে কোনো শিক্ষার্থীই বেকার থাকে না।উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, কারিগরি শিক্ষায় কেন জনগণকে শিক্ষিত করা জরুরি। এই শিক্ষা দেশের জন্যে যেমন জরুরী, তেমনি জরুরী নিজের জন্যেও। কারিগরি শিক্ষাকে কাজে লাগিয়েই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ সরকারও সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। মহিলা অধিদপ্তরও নারীদের কারিগরি শিক্ষার্জনের উপর জোর দিয়েছেন। মহিলা অধিদপ্তরের মতে, পৃথিবীর যে দেশে যতো বেশি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী আছে সেই দেশ ততো বেশি উন্নত। মানব সম্পদ যদি ব্যবহারযোগ্য না হয় তবে তার কোন মূল্য নেই। কোনো রাষ্ট্রের প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সম্পদ বা খনিজ সম্পদ থাকলেই, সেই রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নতি নিশ্চিত হয় না, যদি না ঐ রাষ্ট্র উপযুক্ত পরিকল্পনায় ঐ সম্পদকে ব্যবহার করতে পারে। একইভাবে রাষ্ট্রে অসংখ্য জনগোষ্ঠী থাকলেই রাষ্ট্রের উন্নতি হবে না। ঐ জনগোষ্ঠীকে উপযুক্ত শিক্ষা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে উৎপাদনমূলক কাজে ব্যবহার করতে পারলে সেই জনগোষ্ঠী রাষ্টের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে।
যে শিক্ষা শিক্ষার্থী তার বাস্তব জীবনে ব্যবহার করে কোনো একটি নির্দিষ্ট পেশায় নিযুক্ত হতে পারে তাই কারিগরি শিক্ষা। আবার উপযুক্ত বৃত্তি বা পেশা নির্বাচনের জন্য দক্ষতামূলক যে শিক্ষা, তাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলে। কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের পর শিক্ষার্থীকে বা ব্যক্তিকে পেশা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। সে নিজেই অর্জিত শিক্ষার সাথে মিল রেখে স্বাধীনভাবে পেশা খুঁজে নিতে পারে। সাধারণ শিক্ষা এর বিপরীত, অর্থাৎ অর্জিত শিক্ষার সাথে কর্মের মিল থাকে না। কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বয়স সম্পর্কে কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করা হয়। সাধারণত ঝরে পড়া শিক্ষার্থী অথবা কোনো কারণে শিক্ষাবঞ্চিত ব্যক্তির জন্য কারিগরি শিক্ষা নানাভাবে সফলতা এনে দিতে পারে। এ ধরনের শিক্ষার প্রধান শর্ত হলো ধৈর্য্য, পরিশ্রম ও অনুশীলন। দক্ষতাই উন্নয়ন-এ কথাটি কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এ শিক্ষার প্রধান সাফল্য ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ। এর উদ্দেশ্য শিক্ষার্থী বা ব্যক্তিকে পরবর্তী জীবনে নির্দিষ্ট কোনো কারিগরি বিষয়ে দক্ষ করে তোলা, নিজ নিজ উদ্যোগে স্থানীয় ছোট ছোট শিল্পের প্রসার ঘটানো, স্বাধীনভাবে পছন্দ অনুযায়ী বৃত্তি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদকে প্রকৃষ্টভাবে কাজে লাগিয়ে কর্মীর হাতে পরিণত করা।
এ সময়ে এসে মানুষ কিছুটা বুঝতে শেখেছে পলিটেকনিকে পড়লে সহজে চাকুরি পাওয়া যাবে। আর এই শিক্ষা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও যথেষ্ট মর্যাদা পায় এবং এ শিক্ষাকে সাধুবাদ জানায়। সরকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ২য় শ্রেণির মর্যাদায় অনেক আগেই অধিষ্ঠিত করেছে।
ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকেই শুরু হয় মানুষের জীবনে গণিতের ব্যবহার। কখন, কোন তারিখে, কোন সালে জন্মেছি—সব ধরনের তথ্য লিপিবদ্ধ করতেই রয়েছে গণিতের প্রয়োগ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যে জাতি গণিতে যত বেশি পারদর্শী, সেই জাতির বিশ্বময় কর্তৃত্ব করার সম্ভাবনাও তত বেশি। বর্তমানে বিশ্বে গণিতে অগ্রসর দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া, চীনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গণিত পারদর্শিতার কারণেই এই দেশগুলো বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশের অন্যতম। কম্পিউটারের ভাইরাস প্রগ্রাম, অ্যান্টি-ভাইরাস প্রোগ্রাম, হ্যাকিং টেকনোলজিতে বিশ্বজুড়ে রাশিয়া বিখ্যাত। চীনও কোনো অংশে কম নয়। সব কিছুর মূলে যে শক্তি কাজ করেছে, তা হলো গণিতের শক্তি। কম্পিউটার প্রোগ্রাম এর অ্যালগরিদমের ভাষা হচ্ছে অঙ্ক। প্রোগ্রাম করার আগে গাণিতিক সমাধানই বলে দেবে প্রোগ্রামটি ফলপ্রসূ হবে কি না। মহাশূন্যে মানুষের পদচারণার প্রথম শর্ত ছিল নির্ভুল গাণিতিক হিসাব। নভোযান চালনায় গণিতের জটিল হিসাবের সঠিক ফলাফলই মানুষকে চাঁদে ও ভিনগ্রহে অবতরণের সার্থকতা দিয়েছে।
Canada’s Most Trusted Casino Ratings Hub: The Authority on Gaming
Welcome to the ultimate guide to Canada’s most trusted casino ratings hub, The Authority on Gaming. In the fast-paced world of online gambling, finding a reliable source for accurate and up-to-date information can be a daunting task. That’s where The Authority on Gaming comes in, offering players in Canada a comprehensive resource for evaluating the best casinos in the country. With a focus on transparency, fairness, and expertise, this ratings hub has become a go-to destination for both seasoned players and newcomers looking to navigate the world of online gaming.
Throughout this article, we will delve into the key features that make The Authority on Gaming stand out from the rest. From its rigorous evaluation process to its commitment to providing unbiased reviews, we will explore how this hub has earned its reputation as a trusted source for casino ratings in Canada. Whether you’re interested in discovering top-rated casinos, learning about the latest trends in the industry, or seeking tips on maximizing your gaming experience, The Authority on Gaming has you covered. Join us on a journey through the world of Canadian online casinos, where trust and expertise converge to offer players a truly exceptional gaming experience.
Unveiling the Top-Rated Casinos: A Comprehensive Analysis
When it comes to finding reliable information on the best casinos in Canada, look no further than betzoid.com/ca/casinos-ratings/. Serving as Canada’s most trusted casino ratings hub, this platform is the go-to source for players seeking the authority on gaming. With in-depth reviews, expert analysis, and up-to-date rankings, betzoid.com/ca/casinos-ratings/ offers a comprehensive guide to help players make informed decisions when choosing their next gaming destination.
Whether you’re a seasoned player or new to the world of online casinos, betzoid.com/ca/casinos-ratings/ provides valuable insights to enhance your gaming experience. By combining meticulous research with a user-friendly interface, this platform sets the standard for transparency and reliability in the industry. Trust betzoid.com/ca/casinos-ratings/ to navigate the diverse landscape of Canadian casinos and discover top-rated establishments that prioritize quality, security, and player satisfaction.
The Criteria for Trust: How Ratings Are Determined
Step into the world of online gaming with Canada’s most trusted casino ratings hub. Our platform is the go-to authority for players seeking reliable and unbiased information on the best online casinos in the industry. With a team of expert reviewers and analysts, we meticulously assess and rank casinos based on key criteria such as game variety, security measures, customer support, and overall user experience.
At our gaming hub, transparency and integrity are at the core of our mission. We strive to provide Canadian players with up-to-date and accurate insights to help them make informed decisions when choosing an online casino. Whether you are a seasoned player or new to the world of online gaming, trust our ratings to guide you to top-rated casinos that offer fair gameplay, secure transactions, and exciting bonuses. Join us on a journey to discover the best that the online casino world has to offer.
Navigating the Gaming Landscape: Finding the Best Casino for You
When it comes to finding the most reliable and accurate casino ratings in Canada, look no further than our trusted hub. We pride ourselves on being the go-to authority on gaming, providing players with comprehensive and unbiased reviews of the top online casinos in the country. Our team of experts meticulously evaluates each casino based on a range of criteria, ensuring that players can make informed decisions about where to play.
What sets us apart is our commitment to transparency and integrity. We understand the importance of trust when it comes to online gaming, which is why we hold ourselves to the highest standards of accuracy and fairness. Our ratings are based on thorough research and analysis, giving players peace of mind knowing that they are accessing information they can rely on. Whether you are a seasoned player or new to the world of online casinos, our hub is your ultimate resource for finding the best gaming experience in Canada.
Join the countless players who have benefited from our expertise and discover the top-rated casinos that Canada has to offer. With our hub as your guide, you can navigate the world of online gaming with confidence and ease. Trust the authority on gaming to lead you to the most reputable and rewarding casinos in Canada, ensuring that your gaming experience is always top-notch.
The Impact of Trusted Ratings on the Gaming Industry
Canada’s most trusted casino ratings hub is the ultimate authority on gaming, providing players with reliable information and reviews to make informed decisions. With a dedicated team of experts, this hub meticulously evaluates online casinos based on criteria such as security, game variety, bonuses, and customer service. By offering transparent and unbiased ratings, players can confidently choose the best casinos that suit their preferences.
Players can rely on this hub to stay updated on the latest trends and developments in the gaming industry. Whether it’s exploring new online casinos, learning about innovative gaming technologies, or understanding regulatory changes, this ratings hub serves as a valuable resource for both novice and experienced players. With comprehensive reviews and detailed comparisons, players can easily navigate the vast landscape of online casinos and find the most reputable and rewarding options.
By prioritizing integrity and accuracy, this casino ratings hub has earned the trust of players across Canada. With a commitment to excellence and a passion for gaming, the hub continues to set the standard for reliable and insightful casino reviews. Whether players are looking for the best welcome bonuses, the most exciting games, or the highest level of security, this hub remains the go-to destination for all their gaming needs.
Elevating Your Gaming Experience: Utilizing Casino Ratings to Your Advantage
Canada’s most trusted casino ratings hub, recognized as the authority on gaming, provides players with invaluable insights and recommendations for the best online casinos in the industry. With a commitment to transparency and accuracy, this ratings hub meticulously evaluates and ranks casinos based on factors such as game variety, bonuses, security, and customer service. Players can rely on the expertise of this hub to make informed decisions and enjoy a safe and rewarding gaming experience.
Whether you are a seasoned player or new to online casinos, this ratings hub is a reliable resource for finding top-rated casinos that meet your preferences and needs. By consulting the comprehensive reviews and ratings provided by this trusted source, players can easily navigate the vast landscape of online casinos and choose reputable platforms that offer fair gameplay and exciting rewards. With a mission to empower players with knowledge and support responsible gaming practices, this ratings hub stands out as a beacon of trust and reliability in the Canadian gaming community.
As Canada’s premier source for unbiased casino ratings and reviews, we take pride in being the go-to authority for all things gaming. Our commitment to transparency and integrity ensures that players can make informed decisions when choosing where to play. Whether you’re a seasoned pro or a casual player, our comprehensive ratings hub offers valuable insights to enhance your gaming experience. Trust us to provide you with the most trusted and up-to-date information on the top casinos in Canada. Join us on our mission to elevate the gaming industry and empower players with the knowledge they need to play confidently and responsibly.
গণিত! ছোটবেলা থেকে এক বিভীষিকার নাম। এর সূত্র ও কড়া কড়া উপপাদ্য মুখস্ত করতে হয় আমাদের কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের । গণিতের সূত্র হয় শত্রু। গণিতের এর তিক্ত বা মিঠা অভিজ্ঞতা নিয়ে এই ব্লগ লেখার আইডিয়াটি মাথায় আসে। তারই উদ্যোগে বিগত ১১ জুলাই একটি জরিপ করা হয়। (লিংক: https://docs.google.com/forms/u/1/d/e/1FAIpQLSc5KNbuUOpeX9qSUdCF9uVqal2Sf4-xA_3uSbI6IcdpJsN28Q/viewform?usp=send_form) এখানে অংশগ্রহণ করে ৭৫ জন যার বেশিরভাগ আমার শিক্ষার্থি, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মি। জরিপের প্রশ্ন ও ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়,
প্রশ্ন – ১
প্রশ্ন – ২
প্রশ্ন – ৩
এছাড়া কোন ক্লাসে পড়া কালীন গণিত কঠিন লাগা শুরু করে? এই প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ নবম শ্রেণির কথা বলেছে। হঠাৎ একেবারে অনেক নতুন নতুন অধ্যায় ত্রিকোনমিতি, পরিমিতি, সম্ভাবনা,স্থানঙ্ক জ্যামিতি সবার কছেই কঠিন লাগতে থাকে।
আপনি কেনো গণিত অপছন্দ/পছন্দ করেন? এবং কেনো?
শিক্ষক এবং ছাত্রদের এ নিয়ে কি করা উচিত বলে মনে করেন? এই বিষয়ে সকলের মতামত নেওয়া হয়।
এই প্রশ্নটি নিয়ে পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
প্রত্যেক মানুষ অল্পবিস্তর গণিত জানে। জীবনকে নিয়মমাফিক পরিচালনার জন্য ন্যুনতম গণিতের জ্ঞান অপরিহার্য। অল্পশিক্ষিত বা অশিক্ষিত যারা তারাও গুণতে জানে। গণিত ছাড়া কোন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। শুধু মানুষ নয় পৃথিবীর সকল প্রাণীর মধ্যে ন্যূনতম গণিতের জ্ঞান রয়েছে। আণুবীক্ষণিক ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে গাছপালা, আকাশ-বাতাশ, গ্রহ-নক্ষত্র সবকিছুতে গণিতের ছোঁয়া রয়েছে। গাণিতিক নিয়ম ছাড়া কোন কিছুই চলমান রাখা সম্ভব নয়। এজন্য বলা হয় “গণিত সকল বিজ্ঞানের জননী”।
গণিত কী, এর কোন সর্বজনগ্রাহ্য সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা এখনও কেউ দিতে পারে নি। কিন্তু প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে গণিতকে ব্যাখ্যা করতে সংজ্ঞায়িত করতে চেয়েছেন।
গ্রিক ‘ম্যাথেমা’ শব্দ থেকে এসেছে ইংরেজি ‘ম্যাথমেটিক্স’ শব্দটি। গ্রিক ম্যাথেমা এর অর্থ জ্ঞান বা শিক্ষা। জ্ঞানের সমার্থক হবার কারণে গ্রিসে জ্ঞানী বা শিক্ষক প্রত্যেককেই গণিতবিদ বা ম্যাথমেটিসিয়ান বলা হত। আর সেজন্য প্রাচীন ও মধ্যযুগের সকল পণ্ডিত – তিনি ধর্মবিদ, ইতিহাসবিদ, ভূগোলবিদ, দার্শনিক, চিকিৎসক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজতাত্ত্বিক যাই হোন না কেন- প্রায় সকলেই গণিতে দক্ষ হতেন। আসলে গণিত ছাড়া কারোই পেশাগত দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব না।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন জীবনের সফলতাকে একটি সমীকরণের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন, ‘সফলতা= ঢ+ণ+ত; যেখানে, ঢ = কাজ, ণ = খেলাধুলা এবং ত = অন্যের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকা’। দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলো গাণিতিক মডেল দ্বারা উপস্থাপন করা যায়। এই উপস্থাপন করার দক্ষতাই কোনো জাতির গাণিতিক জ্ঞানের গভীরতা প্রকাশ করে। আমাদের অঙ্ক অনুধাবন করার ক্ষমতা আশাব্যঞ্জক, তবে অঙ্ক শেখার মধ্যে পদ্ধতিগত ঘাটতি রয়েছে। আমরা অঙ্ক শুধু অনুশীলন করে যাই, কিন্তু ওই অঙ্কের ব্যবহারিক বা ফলিত বিষয়গুলো মোটেও ভেবে দেখি না। এ কারণেই ছাত্রজীবনে অঙ্কে খুব ভালো করার পরেও গণিত ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
কম্পিউটার বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গণিতের ব্যবহার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় কম্পিউটার সায়েন্স হলো গণিত ও কলার সমন্বয়। বিশ্বকে ডিজিটাল করার মূলে যে প্রগ্রাম তার মূল অবকাঠামো কিন্তু গণিতের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। বাস্তব জগতের যেকোনো সমস্যা সমাধানের গাণিতিক মডেল রয়েছে। কোনো সমস্যা সমাধানের গাণিতিক মডেলই হচ্ছে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভাষায় অ্যালগরিদম। একটি প্রণীত অ্যালগরিদম যখন কাগজে-কলমে সঠিক, তখন ওই অ্যালগরিদম অনুসরণ করে প্রগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ দিয়ে নিয়মমাফিক কোড লিখলেই তা প্রগ্রামে রূপ নেয়। অর্থাৎ প্রগ্রাম হচ্ছে কোনো সমস্যার গাণিতিক সমাধানের এমন একটি রূপ, যা কম্পিউটার বুঝতে পারে। সুতরাং ভালো প্রগ্রামার হওয়ার প্রথম শর্ত হলো ভালো গণিতজ্ঞ হওয়া। ভালো গণিতজ্ঞ হলে যেকোনো সমস্যা গাণিতিক মডেলে রূপান্তরিত করে গণিতের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আমাদের দেশের মতো জনবহুল দেশে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে গণিত অনুরাগী এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত গ্র্যাজুয়েটদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে গণিত গ্র্যাজুয়েটদের সম্পৃক্ততা এই ক্ষেত্রকে আরো স্বনির্ভর ও শক্তিশালী করে তুলবে।
আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের পরিকল্পনায় যদি গণিত গ্র্যাজুয়েটদের প্রশিক্ষিত করা যায়, তাহলে পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন অধিকতর ফলপ্রসূ হবে। গণিতজ্ঞ ব্যক্তি প্রগ্রামিংয়ের কলাকৌশলগুলো দ্রুত রপ্ত করতে পারেন। বিশ্বখ্যাত গণিতবিদ ডোনাল্ড নুত অ্যালগরিদমের ওপর যে বই লিখেছেন তা দিয়েই বিশ্বের প্রায় সব প্রগ্রামিং সমস্যার গাণিতিক সমাধান সম্ভব। তাঁর লেখা বইটির নাম বিল গেটস এই বইয়ের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আপনি যদি এই বইটির সব বিষয়বস্তু ভালোভাবে বুঝে থাকেন তাহলে আমাকে আপনার বায়োডাটা পাঠান—কারণ নিঃসন্দেহে আপনি একজন ভালো প্রগ্রামার’। ১৬ কোটি মানুষের দেশে গণিত শেখানোর যে কৌশল, তা মোটেও আনন্দনির্ভর নয়। গণিতের নিগূঢ় অর্থ উপলব্ধি করে গণিত শেখার মধ্যে যে আনন্দ, তা আমাদের দেবে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি।
গণিতের ব্যবহার সর্বজনীন। ন্যাচারাল সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিসিন, ফিন্যান্স, সামাজিক বিজ্ঞান—সব ক্ষেত্রে গণিতের ব্যবহার অপরিহার্য। তাই আমাদের গণিতের ভিত্তিজ্ঞান উন্নয়নের জন্য অনুসরণ করতে হবে সেই দেশগুলোর পাঠ্যক্রম, যেখানে গণিতের উৎকর্ষতা পরীক্ষিত এবং ওই পাঠ্যক্রম ও পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে তৈরি করতে হবে গণিতজ্ঞ মেধাবী মানবসম্পদ, যাদের নেতৃত্বে বিশ্ব দরবারে আমরা নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করব।
গণিতের জাদুকরী শক্তি আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ও প্রতিটি স্তরকে করতে পারে সাফল্যমণ্ডিত। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও আবিষ্কারের উচ্চ শিখরে আরোহণে গণিতের শিক্ষা অপরিহার্য। তাই প্রাথমিক শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত গণিত শিক্ষাকে আরো সুসংহত করে গড়তে হবে, যৌক্তিক জ্ঞানসম্পন্ন মেধাবী জনগোষ্ঠী, যাদের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে।
চাকা শব্দটি অতি পরিচিত আমাদের। চাকা কথাটি আসলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে গাড়ির বড় বড় বৃত্তাকার বস্তু গুলো। সারাদিন ছুটে চলা ঘুরতে থাকা এই ভব ঘুরে চাকা আধুনিক বিজ্ঞান সমাজের প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই ব্যাবহার হয়। কখনো মিল কারখানায়, কখনো ডিভাইসে, কখনো বড় কোন যন্ত্রে আবার কখনোবা যানবাহনে। কিন্তু মজার বিষয় হলো এই চাকার জীবন কিংবা জন্ম টা এই বিষয় গুলোকে নিয়ে শুরু হয়নি। আজ আপনাদের সাথে এই চাকা নিয়ে কিছু মজার কথা শেয়ার করবো। এই যুগান্তকারী আবিষ্কার যা পৃথিবীটাকেই পরিবর্তন করে দিয়েছে।
প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বছর পূর্বে চাকার জন্ম। সে সময় মুলত কুমারেরা ব্যাবহার করতো। কিন্তু ঠিক কিভাবে কার মাথা হতে এই গোল চাকার ধারণা এসেছে তা আজও রহস্য। অনেক ঐতিহাসিক চিন্তাবিদের মতে চাকার ধারনা আসে শ্বিকার করার জন্য উঁচু স্থান থেকে পাথর গড়িয়ে ফেলে প্রানীকে আহত বা হত্যা করা থেকে। সে যাই হোক কখনো টাইম মেশিন পেলে সেই সময়ে গিয়ে দেখে এসে জানাবো।
প্রাথমিক দিকে পাথর কেটে কেটে চাকতি বানিয়ে চাকা বানানো হতো প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায়। পরে পরিশ্রম কমাতে মাটির চাকতির ভার্সনটি প্রচলিত হয়। কিন্তু সেই সময়েও কেউ ভাবতেই পারেনি যে এটা কালজয়ী একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার হবে। অনেকের মতে চাকা আগুন আবিষ্কারের আগে এসেছে যদিওবা এই নিয়ে জোরালো কোন মত নেই। কাঠের চাকতির ধারনা আসে আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৩৭০০ বছর এর শেষে। কাঠের চাকতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পরিবহণ সুবিধার জন্য। এর আগে পাথরের চাকায়
পরিবহণ ছিলো বেশ পরিশ্রমের আর ধীর গতির।
৩৭০০ খ্রিষ্টপূর্বে একটা চিত্রে পাওয়া গেছে ককেশীয়রা তাদের মৃত দেহ ঠেলা গাড়িতে বহন করছে। পোল্যান্ডের একটি অঞ্চলে পাওয়া গিয়েছে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ বছর আগের একটি পাত্র যাতে চাকার গাড়ির নকশা আছে। ইউরোপে ব্যাপক হারে চাকা ব্যাবহার শুরু হয় ৪০০০ খ্রিষ্টপূর্বে আর এশিয়ায় ৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বে। সাধারনত চাকা ব্যাবহার ব্যাপক ভাবে হতো সেইসব অঞ্চলে যেখানে সমতল ভূমির পরিমান বেশি। কারন চাকা চলাচলে সমতল ভূমি জরুরি ছিলো। এই জন্য চীনে চাকার ব্যাবহার শুরু হয় ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বে যখন চাকাতে উন্নত কিছু টেকনিক যুক্ত হতে শুরু করে। প্রায় ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের সমকালীন আন্দ্রোনভ সংস্কৃতিতে স্পোকযুক্ত চাকার ব্যবহার পাওয়া যায়। মজার বিষয় হলো বর্তমান আমেরিকা মহাদেশ দ্বয়ে চাকা খেলনার গাড়ি বা বস্তুতে ব্যাপক ব্যাবহার হলেও বিজ্ঞান বা দৈনন্দিন জীবনে তার ব্যাবহার ছিলো সামান্য।
খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ সালের দিকে কেল্টিকদের মানুষ বুঝতে পারে চাকার ওজন হালকা ও মজবুত হলে বেশি ভালো হয়। তাই তখন থেকে তারা স্পোক যুক্ত চাকায় একটা বেরিয়ার যুক্ত করতো। যার ফলে টেকশই ও হাল্কা হতো। এভাবে ধীরে-ধীরে ছোট খাটো পরিবর্তন হয়ে আসলেও বড় পরিবর্তন হয়নি ১৮৭০ সাল অবদি। ১৮৭০ খ্রিঃ এর দিকে চাকায় নিউম্যাটিক টায়ার ব্যবহার করা শুরু হয়। আর এখন বর্তমান সময়েও সেই টায়ার দিয়েই চলছে গাড়ির চাকা। তবে আগামীতে আরো ব্যাপক ভিত্তিক গবেষণায় বড় কিছু পরিবর্তন আসতে চলেছে। তবে যেই যাই বলুন না কেন চাকা ছিলো থাকবে ,আর তা শুধু গাড়িতে ব্যাবহারের জন্য তা নয়। চাকা শিল্পায়ন এর এই আধুনিক সভ্যতার সব ক্ষেত্রেই আছে এবং থাকবে। আমাদের জীবন সভ্যতা পালটে দিতে আগুন, চাকা, লিভার, ধারালো অস্ত্র বেস্ট আবিষ্কার গুলোর মধ্যে। আগামীতে আরো মজার কিছু সাধারন বিষয় কিন্তু জীবন পালটে দেয়া আবিষ্কার গুলো নিয়ে কথা বলবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন আর চক্রযানে চরে ঘুরে আসুন রহস্যময় পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।
বিজ্ঞান যখন পুণর্বোতন (বিজ্ঞান কল্প কাহিনী) (পর্ব-১)
টিং টিংটিং !!! খুব সকাল সকাল মোবাইলের কলিং রিংটোন টা বেজে উঠায় মাথার ঠিক কোন অংশের ব্যাথা টা শুরু হলো তা বলতে না পারলেও বলতে পারি ব্যাথা টা “সুষুন্মাতে” প্রবেশ করে “ভেন্ট্রাল পোস্টারোল্যাটেরাল” নিউক্লিয়াস এর “থেলামুস” হয়ে “সোমাটোসেন্সোরিতে” টোকা দিয়েছে। চোখটা বহু কষ্টে খুলে হাল্কা ঝাপসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি অপরিচিত এক নাম্বার হোতে কল দিয়েছে। ঘুমু ঘুমু আলাপচারিতায় জানতে পারলাম আমার জন্য আমার ছোট ভাই চীন হতে মোবাইল গিফট পাঠিয়েছে যা ব্যাবহার বিধি অনেক নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। খুশিতে লাফ দিয়ে উঠে দ্রুত গিফট পেতে রেডি হতে লাগলাম। মুখে মাউথ ওয়াশ দিয়ে দু তিনবার কুল কুচি করে পুরাই ফিট। হঠাতই মনে পরলো আরে আমাকে তো অফিস যেতে হবে আর সেই সাথে শপিং, স্পেশাল মানুষটির সাথে ডিনার আর ফ্রেন্ড সার্কেলের সাথে আড্ডা তো আছেই। তবে কি আমি আমার গিফট টি আজ নিয়ে আসতে পারবোনা কুরিয়ার সার্ভিস থেকে? মুহুর্তে মনটা ভীষণ রকমের কষ্টে ভরে উঠলো। ঠিক এই সময় খেয়াল করলাম আমার জানালার পাশে একটা কোয়াড কপ্টার ( ড্রোন) কিছু একটা বক্স নিয়ে আছে যাতে স্পষ্ট ভাবে বুঝা যাচ্ছে চাইনিজ কিছু অক্ষর আর কুরিয়ার সার্ভিস এজেন্সি ফিডেক্স এর নাম। বুঝতে আর বাকি রইলোনা যে এটাই আমার সেই গিফট যা আমার ছোট ভাই চীন হতে পাঠিয়েছে। খুশির মুহুর্ত টা আবার এড্রিনালিন দ্বারা উদ্দীময় হয়ে উঠলো। জানালা খুলে বক্স টি নিতেই আমার আইডেন্টিটি নিশ্চিত এই শিক্ষিত সময়েও আংগুলের ছাপ মিলিয়ে নেয়া হলো ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাশিনে যা ম্যাচ হতেই বক্স টি সুন্দর ভাবে বুঝে পেলাম। বিষয় টা অনেকটা সেই প্রাচীন মিশরীয়ো সভ্যতার পত্রবাহী পাখি কিংবা ছোট খাটো উপহার পাঠানোর জন্য ব্যাবহার করা মঙ্গোলীয় জাতির বাজ পাখির মত আর প্রমান স্বরুপ কাগজে আংগুলের সেই টিপ সই নেয়ার মত।
ওহ হ্যা, বলে রাখি এটা ২০৫০ সাল এর কোন এক শীতের সকাল। বক্স খুলতেই দেখলাম বিশাল এক ফোন যাকে বলে স্যাটেলাইট ফোন। সত্যি বলতে এই ফোনটি দেখতে আহামোরি কিছু না হলেও আমার মত সুনাম ধণ্য ও রাষ্ট্রিয় গুরুত্বপুর্ন পদে চাকুরি করার লোকের জন্য সত্যি অতি প্রয়োজনীয় ছিলো। আজকাল কোন কথায় সাধারন স্মার্ট ফোন এ বলে শান্তি নেই। হ্যাকার জগত বেশ এগিয়ে গিয়েছে এই সময়ে। কেউ কিছু করলে কিংবা গোপনীয়ো কিছু বললে তা আড়ি পেতে কিংবা ফোন ক্লোনিং এর মত বেশ কিছু ভয়ানক কাজের মাধ্যমে সহজেই সকল তথ্য পেয়ে যায়। আর এই সকল তথ্য পেলেই কেল্লাফতে , সাথে সাথে তা ভাইরাল হয়ে উঠে নেটিজেন জগতে।
তাই আমার মত যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে তারা এই স্যাটেলাইট ফোনে নিশ্চিন্তে ভরসা রাখতে পারে। এটা কোন অপারেটর কম্পানির সাথে যুক্ত না। সরাসরি রাষ্ট্রায়ত্ব স্যাটেলাইটের সাথে যুক্ত। এখন এর মাধ্যমে কথা বলাও আগের চেয়ে সাশ্রয়ী ও উন্নত। দেশের যেই প্রান্তেই থাকি কিংবা বিশ্বের যাকেই কল দিতে চাই তা সম্ভব সম্পুর্ন নিজস্ব অপারেটিং নাম্বার ব্যাবহার করে। যাইহোক, সেই ১৯৯০ সালের দিকের মোবাইল গুলোর মতই এই ফোন গুলো বড় আর অ্যান্টেনা যুক্ত যা আগের তুলনায় বেশ জনপ্রিয়। মানুষ এই সময়ে আগের তুলনায় এখন অতি সচেতন তার স্বকিয়তা ও ব্যাক্তি গত বিষয়াদি নিয়ে।
আগের চেয়ে মুটিয়ে যাওয়ায় আর বিজ্ঞান বা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলায় আজকাল আর সেই আগের মত ফাস্ট ফুডে দৌড়াই না। তাই এখন সেই আধা সেদ্ধ সবজি কিংবা সালাদ/ ফলমূলই আমার বিশেষ খাদ্য। খাবার যখন নিয়ন্ত্রিত তখন জীবন টাও আর আগের মত উরাধূরা নেই। প্রতি পদক্ষেপ এখন মেপে চলতে হয়। সুস্থ শরীর চাই কারন আরো অনেক বছর দেশটাকে ভালো কিছু উপহার দিয়ে যেতে চাই।
অফিসে যেতে হবে, ৯টায় এলার্ম দিয়ে রাখা সৌখিন ঘড়িটিতে ডিং! ঢং! করে জানিয়ে দিলো সেই শুরুর দিকের বড় রাজকীয় ঘড়ি গুলোর মত যখন সমস্ত শহরে একটাই বড় ঘড়ি থাকতো আর জনগন সেই শব্দ সংকেত গুণে বুঝতো কয়টা বাজে আর তাদের এখন কি করণীয়।
ঘরে ডিজিটাল পাসওয়ার্ড দেয়া ডোর লক থাকলেও আজও মানুষের সেই আস্থা বড় মেটাল তালা গুলোতে। কারন এখন চোর গুলও বেশ শিক্ষিত আর প্রযুক্তিময়। তাইতো ব্যাংকের লকার গুলো ডাবল সিকিউরিটি বলতে ইলেক্ট্রোনিক তালা আর মেটাল তালা দুটোকেই সম্মানের সাথে ব্যাবহার করে। আমার বাসায় এই সিকিউরিটি থাকলেও আরো একটি বর্তমানে বহুল প্রচলিত নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আছে যা অনেক টা আগের সময়কার পাড়া মহল্লার বা বাসার পাশের আন্টি , দাদী , ভাবীদের মত যারা সর্বোদা নজর রাখতো কার বাসায় কি হলো , কে গেলো কে আসলো। যদিও বর্তমানে এই সিস্টেমটা ডিজিটালাইজড ইলেক্ট্রোনিক সিস্টেম যা বাসার চারিদিকে নাইট ভিশন সহ সেট করা। এখন সেই ফ্রিতে সার্ভিস দেয়া নজর রাখা কুটনি চাচি, দাদী, ভাবী গুলোর বড়ই অভাব। সবাই এখন নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত।
বাসার গ্যারেজ থেকে সাইকেল বের করে সোজা সাইকেল চালিয়ে যাত্রা শুরু করলাম আমার রোজকার অফিস যাওয়ার কিছু বন্ধুদের সাথে। আমরা এই সময়ে এখন আর আগের মত বাস কিংবা ট্যাক্সি/উবার অতি প্রয়োজন ছাড়া ব্যাবহার করি না। এখন সাইকেল চালিয়ে স্কুল-কলেজ কিংবা অফিসে যাওয়াটা একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকালে সাইকেল চালিয়ে কিংবা পায়ে হেঁটে মর্নিং ওয়াকের পাশাপাশি অফিসের উদ্যেশেও রওনা হয়ে যাই। ব্যায়ামও হয় সেই সাথে টাকাও বাঁচে সময়ও বাঁচে আর সকালে হাঁটা কিংবা সাইকেল চালানোর ফলে স্বাস্থ্য উপকারিতা তো বোনাস হিসেবে আছেই। অনেকটা সেই পুরোনো সময়ের হাটুরেদের হাটে যাওয়ার মত। অফিসে পৌঁছিয়ে কেউ এখন আর আগের মত লিফটে উঠা নিয়ে যুদ্ধ করে না। শিক্ষিত সমাজ এখন সবাই চায় বাঁচতে সুস্থ ভাবে। তাই একেবারে অলস কিংবা অসুস্থ বৃদ্ধ না হলে সবাই সিঁড়িঁ বেয়েই উঠে যায় ফ্লোরের পর ফ্লোর। পায়ের ব্যায়াম বিনা জিম এ গিয়েই হয়ে যায় প্রায়। প্রায়সই পরিবেশ সচেতন এই জাতি এখন বাইসাইকেল ব্যাবহার করে এদিক সেদিক যায়।
পেট্রোলিয়াম এর মত মূল্যবান দুষ্প্রাপ্য ফুয়েল পুড়িয়ে এখন যাতায়াত খুব কমই করে। এতে পরিবেশ এ বায়ু দুষণ যেমন কমেছে তেমনি অতিরিক্ত যানজট শব্দ দুষণ কমেছে। রাস্তায় এখন এমার্জেন্সি গাড়ি, আর ধনী বিলাস বহুল অলস ব্যাক্তিদের গাড়ি কিংবা রাষ্ট্রোয়াত্বিত বাস বা ট্যাক্সি ছাড়া তেমন কোন গণ পরিবহন চোখে পরেনা। বাই সাইকেলেই সবাই সুখ খুজে নিয়েছে। ফ্রিতে জিম বলে কথা।
অফিসে বসে কাজের ফাকে-ফাকে চা এ চুমুক দিচ্ছি। কম্পিউটারে একটা জরুরি কাজ করছি তড়িৎ গতিতে। চারি দিকে শুনশান নিরবতা। উহু এখন আর সেই আগের সময়ের মাউস কিংবা কী-বোর্ড ব্যাবহার হয় না। সব চলে হাতের চোখের ইশারায়। আদী যুগে যেমন মৌখিক ভাষাহীন সমাজ ইশারায় কথা বলতো ঠিক তেমনটাই এখন মানুষ কম্পিউটারের সাথে ইশারায় ইংগিতে কাজ করে কথা বলে। সমস্ত নিরবতা ভেংগে ডাক বিভাগের একটা ছোট্ট কোয়াড কপ্টার ড্রোন এসে দাঁড়ালো সামনে লেটার হোল্ডারে রয়েছে একটা চিঠি। হ্যাঁ, সঠিক শুনছেন চিঠি। এই ২০৫০ সালে এসে ডাক বিভাগ আবার সেজে উঠেছে তার নতুন মাত্রার রুপে। এক সময়ে ব্যাপক ভাবে চলা ডাক বিভাগ চলতো চিঠি আদান প্রদান কিংবা জরুরি পত্রাদী নিয়ে। ২১ শতকের শুরুতে মোবাইল ফোন আর বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়া ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠায় তা নিস্তেজ হয়ে যায়। কিন্তু ইদানিং বাংলাদেশ সরকার ডাক বিভাগেও যোগ করেছে ডিজিটালাইজেশন। নতুন সেবায় জেগে উঠেছে ডাক সেবা। ডাক বিভাগের রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট ড্রোন যা এপস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আপনি কাউকে এমন কোন সংবাদ পাঠাতে চান যা কোন ভাবেই মিস যেন না হয়, এমন চাইলে এপস এ গিয়ে চিঠিটি লিখে দিলেই তা কাগজে প্রিন্ট হয়ে নির্দিষ্ট ফি এর মাধ্যমে সেই চিঠি প্রাপক এর ডিজিটাল তথ্য অনুযায়ি তার বরাবর জিপিএস সিস্টেমের দ্বারা ট্র্যাকিং করে চলে যাবে। প্রাপক এর নিকট ড্রোন পৌঁছিয়ে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চিঠি সংগ্রহ না করলে কিংবা ক্যান্সিল অপশনে চেপে দিলে সেই চিঠি প্রেরকের নিকট চলে যায় এবং প্রেরক চাইলে আবার তা প্রেরন করতে পারে এভাবে মোট ৫বার একই ব্যাক্তিকে পর পর পাঠাতে পারবে একই সংবাদ। কিন্তু ৫ বারেও না গ্রহন করলে প্রেরক ১ মাসের জন্য ব্লক হয়ে যায় এই সার্ভিস হতে। এই ব্লক সিস্টেম চালু হওয়ার পিছনে বর্তমান বিভিন্ন ব্যাবসায়িক কম্পানি গুলো দায়ি। তাদের অনিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞাপন এর ম্যাসেজ , সিম কম্পানির বস্তা পচা অফারের ম্যাসেজ আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ( ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটস আপ, ইমো ইত্যাদি) প্রচুর গ্রুপ ম্যাসেজ এর জন্য বিশেষ মানুষদের ম্যাসেজ গুলো বা নোটিশ গুলো মিস হয়ে যায় এই সময়ে তাই এই নতুন উদ্দ্যোগ যার ফলে প্রাপক অবশ্যই গুরুত্ব পূর্ন ম্যাসেজটি কোন ভাবেই মিস করে না। তাছাড়া এই ব্যাস্ত অফিস সময়ে অনেক অফিসেই মোবাইল ব্যাবহার করা তো নিষিদ্ধই সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহার করে সময় নষ্ট করাও কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। যাইহোক, ম্যাসেজ টি ছিলো……………………………………………
মুক্তিযুদ্ধ শুরুই হয়েছিল পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যা দিয়ে।
২৫ শে মার্চ ১৯৭১ সালের মধ্যরাতে শুরু হয় অপারেশন ব্লুস্টার নির্বিচার হত্যা অগ্নিসংযোগ লুটতরাজ দখলদার বাহিনী প্রধান টার্গেট ছিল একদিকে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা অন্যদিকে তখনকার বাঙালি চেতনায় উজ্জীবিত রাজনৈতিক কর্মকা কর্মীগণ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই শহীদ হয়েছেন আর বেশিরভাগ বাঙালি আন্দোলনে শরিক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন দখলদাররা প্রায় পুরো জাতিকে সন্দেহের চোখে দেখেছে সামান্য কিছু দালাল ছাড়া আর সকলেই ছিল তাদের বিরুদ্ধে একটু গুছিয়ে নিয়ে পাকিস্তানীরা যেমন তাবেদার সরকার বানিয়েছে তেমনি অত্যাচার-নির্যাতন বাড়িয়েছে রাজাকার-আলবদর-আলশামস এরকম সব স্থানীয় অনুগত বাহিনী দিয়ে তারা বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা ও সমর্থকদের নিধনের কাজ চালায়।
২৫ শে মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত নয় মাসে যারা দেশে অন্তত 30 লক্ষ মানুষ গণহত্যার শিকার হয়। এত কম সময়ে এত মানুষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছাড়া আর কখনো মারা যায়নি। সারাদেশ বদ্ধভূমি আছে যেখানে নিয়মিত বাঙ্গালীদের হত্যা করা হয়েছে। বহু স্থান আছে যেখানে অকস্মাত্ আক্রমণ চালিয়ে একসাথে বহুৎ লোক হত্যা করা হয়েছে। ওই সময়ে এমন দিন পাওয়া মুশকিল যেদিন কোথাও না কোথাও গণহত্যা চালানো হয়নি।
বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ ছিল এক ঐতিহাসিক ভাষণ। টানটান উত্তেজনার মধ্যে সেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে তিনি পাকিস্তানী সামরিক জান্তাকে হুঁশিয়ার করে দেওয়ার পাশাপাশি কৌশলে স্বাধীনতার ডাক দেয়। টিনের ভাষণের শেষ পর্যায়ে বলেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি অফিসার, বেসামরিক আমলা বৃন্দ, রাজনৈতিক কর্মী, সাধারণ মানুষ সকলেই আসন্ন সংগ্রামের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে থাকেন। পাকিস্তান কৌশলে এগোচ্ছে। আলোচনা চালিয়ে এমনভাবে সময় কাটাচ্ছিল যাতে গোলাবারুদ ও সৈন্য এনে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া যায়। চট্টগ্রাম ইপিআর এর মেজর রফিক প্রথম থেকে রাজনৈতিক নেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছিলেন। ২৫ শে মার্চের পর পর চট্টগ্রামে মেজর জিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেজর খালেদ মোশাররফ, জয়দেবপুরে মেজর শফিউল্লাহ প্রমুখ সৈন্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। এদিকে বেসামরিক ছাত্র-জনতা সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের জন্য তৈরি হতে থাকেন। ছাত্রীরা পর্যন্ত রাইফেল কাঁধে যুদ্ধের মহড়া দিতে থাকে। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সামরিক বাহিনী থেকে অফিসার ও সৈনিকদের নেতৃত্বে বিচ্ছিন্নভাবে প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হয়।
আর নয় মাসে প্রতিদিন ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক দলে দলে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছেন। এমনকি নারী ও শিশুরাও বাদ থাকেনি। হয়ে পড়েছিল জনযুদ্ধ। চট্টগ্রাম বেতার থেকে মেজর জিয়া সাতাশে মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার পর তাতে পাকিস্তানি আক্রমণে হতবিহম্বল মানুষ আশ্বস্ত হয়। তাদের মনোবল বেড়ে যায়। একটা পর্যায়ে পাক বাহিনী ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে প্রায় সমগ্র দেশ দখল করে নেয়। কিন্তু প্রতিরোধ সংগ্রাম কখনো সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি। তারপর ধীরে ধীরে পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। আর দেশবাসী ঝাঁপিয়ে পড়া মুক্তিযুদ্ধ।
তড়িৎ প্রকৌশল বিজ্ঞানের কর্মক্ষেত্র সুবিশাল পরিসরে বিস্তৃত। বিজ্ঞানের এই শাখাটি অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। আধুনিক বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার মুল চাবিকাঠি বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র হতে পারে একটি দেশের উন্নয়নের মুলমন্ত্র।
উপসহকারী প্রকৌশলীরা উৎপাদনকেন্দ্রের বিভিন্ন কার্যক্রমকে দক্ষ হাতে পরিচালনা করে বিদ্যুৎব্যাবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে হতে পারে দেশের সেবক। শিক্ষার উদ্যেশ্যই হওয়া চাই সেবা। ইলেকক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর এই কর্মক্ষেত্রটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং এবং সংবেদনশীল।
পর্যাপ্ত তাত্বিক ও ব্যাবহারিক জ্ঞান, কর্মের প্রতি ভালোবাসা তোমাকে অনেক উচু আসনে বসাতে পারে। এই কর্মক্ষেত্রটি তাদের জন্য হওয়া চাই, যাদের উৎপাদন ব্যাবস্থার প্রতি রয়েছে জানার, শেখার এবং প্রয়োগ করার প্রবল আগ্রহ। বস্তুত তোমার কর্মক্ষেত্র তোমাকেই নির্বাচন করা উচিৎ । আমাদের দেশে অনেকেই আছে কর্ম পেয়েছি বলেই কর্ম করে যাচ্ছি, এমনটা কখনোই হওয়া উচিৎ নয়। এমন কর্মীরা সবসময়ই কাজের প্রতি হয় উদাসীন, আগ্রহ থাকেনা তাদের কাজের প্রতি।
আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আমি জানি তোমরা অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং সৃজনশীল চিন্তার অধিকারী। তোমাদের এই সৃজনশীল চিন্তা আছে বলেই শিক্ষার বিষয়বস্তু হিসেবে পছন্দ করেছ ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। তোমরা যারা উৎপাদনকেন্দ্র নিয়ে প্রবল কৌতুহলী তারা এখন থেকেই একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন উৎপাদনকেন্দ্রগুলোর ওয়েবসাইট নিয়ে মাঝে মাঝে ঘাটাঘাটি করতে পারো যা তোমাকে আরো কৌতুহলী এবং চিন্তাশীল করে তুলবে। আমি মনে করি কৌতুহলই হল জানার এবং শেখার মুল উৎস।
তাছাড়া প্রতিবছর একটি করে পাওয়ার প্লান্ট ভিজিটের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে। এই কাজটি তোমাদের জন্য খুবই সহজ, আমরা শিক্ষকরাই এই পাওয়ার প্লান্ট ভিজিটের ব্যাবস্থা করে থাকি। কোন অবস্থাতেই যেন তোমার শিক্ষাজীবনের কোন একটি ভিজিট মিস না করো সেদিকে খেয়াল রাখবে।
একাডেমিক শিক্ষার মধ্যে, পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে বিশেষ একটি পাঠ্যবই রয়েছে এটি ভালোভাবে অধ্যয়ন করবে। বইটির নাম “জেনারেশন অব ইলেক্ট্রিক্যাল পাওয়ার”। তাছাড়া সুইচগিয়ার এন্ড প্রটেকশন নামের বইটিকেও যথাযথভাবে অধ্যায়ন করবে। এই বইগুলো তোমাকে পাওয়ার প্লান্ট সম্পর্কিত স্বচ্ছ ধারনা দেবে।
শিক্ষক কিছু এসাইনমেন্ট দিয়ে থাকেন, এগুলো যথাযথভাবে সম্পাদন করে শিক্ষকের কাছে সাবমিট করবে। প্রতিটি এসাইনমেন্টকে অনুধাবন করে সম্পাদন করবে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের পাওয়ার প্লান্ট রয়েছে, যেমন কয়লা,গ্যাস, সহ বিশেষ করে বর্তমানে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট। বিভিন্ন ধরনের পাওয়ার প্লান্ট এর অবস্থান, সুবিধা,অসুবিধা পার্থক্য, এগুলো নিয়ে ভাববে। পরিচালনার মূলনীতি নিয়ে নোট করবে।
জ্ঞানের আরেকটি অন্যতম প্লাটফরম হল ইন্টারনেট। ইউটিউবে পাওয়ার প্লান্ট বিষয়ক ভিডিও দেখা ,ব্লগ পড়া এবং বিভিন্ন আর্টিকেল পরে তোমার জ্ঞানভান্ডারকে করতে পারো সমৃদ্ধ।
উপসহাকারী প্রকৌশলীরা পাওয়ার প্লান্ট এর বিভিন্ন অপারেশন ও মেইনটেনেন্স এ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। তোমাদের অর্জিত তাত্বিক ও ব্যাবহারিক জ্ঞান এর মাধ্যমে পাওয়ার প্লান্টে কাজ করে, আমাদেরকে একটি আধুনিক বিদ্যুৎব্যাবস্থাপনা এবং বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশ উপহার দেবে।
তোমাদের মেধা, দেশের সেবায় নিয়জিত হোক, এই প্রত্যাশায়-
খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় তিনশত বছর পূর্বে, তৎকালীন সিসিলিয়ান নগরী সিরাক্যিউজ এর রাজা হাইরন তার সভার প্রধান বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের পান্ডিত্য যাচাই করতে চাইলেন। তিনি হুবহু একই রকম দেখতে দু’টি সোনার মুকুট বানালেন, যেটির একটি ছিলো শুধু খাঁটি সোনায় নির্মিত, অন্যটি ছিলো খাদে পরিপূর্ণ। রাজা হাইরন মুকুট দু’টি আর্কিমিডিসের সামনে পেশ করে হুকুম দিলেন, মুকুট দু’টিকে না ভেঙে বা বাহ্যিক কোনো পরিবর্তন না করে সোনার মুকুটটি বেছে নিতে। আর যদি আর্কিমিডিস তা না পারেন, তবে তার গর্দান যাবে! বেচারা আর্কিমিডিস তখন পড়লেন মহাবিপদে! প্রাণভয়ে তার মুখ শুঁকিয়ে কাঠ হয়ে রইলো
তারপর একদিন দুপুরবেলা উলঙ্গ শরীরে চৌবাচ্চায় গোসল করতে নামতে গিয়ে দেখলেন, চৌবাচ্চাটি পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ, কিন্তু তিনি নামার পরে সেটি থেকে বেশ খানিকটা পানি উপচে পড়েছে।তার মাথায় যেনে ১০০০ ওয়াট এর বাল্ব জ্বলে উঠলো। সেই মুহূর্তেই আর্কিমিডিস প্লবতা আবিষ্কার করলেন, খুঁজে পেলেন তার মুকুট সমস্যার সমাধান।
তিনি যে উলঙ্গ, সে কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে ইউরেকা ইউরেকা ,গ্রীক ভাষায় এর অর্থ হলো,এইতো পেয়ে গেছি বলে চিৎকার দিতে দিতে দিলেন ছুট রাজদরবারে। এসে এক নিশ্বাসে রাজাকে বলতে লাগলেন, ‘ অন্য একটি খাঁটি সোনার মুকুট আমাকে দিলেই আমি এ দু’টোর মধ্যে কোনটি খাদ তা বের করতে পারবো।’কিন্তু প্রশ্ন হলো,আর্কিমিডিস সমস্যার সমাধান কি করে পেলেন?
পানির এই ধর্মকে ঘনত্ব পরিমাপে ব্যবহার করা সম্ভব। যেহেতু ব্যবহারিক কাজের জন্য পানি অ সংকোচনশীল, তাই পানিতে নিমজ্জিত মুকুট তার আয়তনের সমান পরিমাণ পানি স্থানচ্যুত করবে। এই অপসারিত পানির আয়তন দ্বারা মুকুটের ভরকে ভাগ করে মুকুটের ঘনত্ব পরিমাপ করা সম্ভব।যদি সোনার সাথে অন্য কোন ধাতু মিশানো হয়ে থাকে তাহলে তার ঘনত্ব খাঁটি সোনার ঘনত্বের চেয়ে কম হবে।
ব্যাপারটা হলোঃ যদি একটি পাত্র কানায় কানায় পানিভর্তি থাকে, তাহলে তার মধ্যে কোনো কঠিন বস্তু ছেড়ে দিলে পাত্র থেকে কিছুটা পানি উপচে পড়বে। এই উপচে পড়া পানির পরিমাণ ঠিক ততোটাই, কঠিন বস্তুর ঘনফল যতটা। আর পানিতে ডোবানো কঠিন বস্তুটির ওজন ততোটাই কমে যাবে,উপচে পড়া পানির পরিমান যতটা।অতএব,উপচে পড়া পানির ওজন বের করলে, ডোবানো কঠিন বস্তুটির ওজন কতটা কমেছে তা সহজেই বের করা সম্ভব।এভাবেই, আর্কিমিডিস সেদিন রাজার সমস্যার সমাধান করে দিয়েছিলেন।
কিন্তু ঘনত্বের পার্থক্যের কারণে যে পরিমাণ পানি অপসারিত হবে সেটি সঠিকভাবে নির্ণয় করা একটি কষ্টসাধ্য কাজ।এজন্য তাঁকে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।এ সমস্যা সমাধানের জন্য আর্কিমিডিস একটি তত্ত্ব দেন।তার তত্ত্বটি হচ্ছে: “ কোন বস্তুর ওজন এটি দ্বারা অপসারিত তরলের ওজনের সমান”। তার এই তত্ত্বটির উপরই জাহাজ বা অন্যান্য জলযান পানিতে ভেসে থাকে।
এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে।
বর্তমানে মানুষের জীবনকে সহজ ও আনন্দময় করার মূল হল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি (Information and Communication Technology-ICT) । সময়ের সাথে যুগের সাথে তালমিলিয়ে উঠার অন্যতম মাধ্যম হতে পারে “কম্পিউটার টেকনোলজিতে “অধ্যায়ন ।
কম্পিউটার টেকনোলজি শুধু একটা নাম মাএ, কেননা এটি হচ্ছে অনেকগুলো অংশ নিয়ে সমগ্র আধুনিক বিশ্ব সৃষ্টির মূল । অংশসমুহ-
Programming (প্রোগ্রামিং)
Networking (নেটওয়ার্কিং)
Hardware (হার্ডওয়্যার)
Designing (ডিজাইনিং)
Development (ডেভেলপমেন্ট)…………………।
Change is the only constant in life – দার্শনিকদের এই কথাটি প্রযুক্তি বিশ্বের বেলাতে আরো বেশি সত্য। প্রতি বছরেই যেন বিশাল পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে, নতুন প্রোগ্রামিং ভাষা, নতুন ফ্রেমওয়ার্ক, নতুন ডেটাবেজ, ক্লাউড কম্পিউটিং, মেশিন লার্নিংয়ের নতুন নতুন প্রয়োগ, মোবাইল কম্পিউটিং, আইওটি—লিখে শেষ করা যাবে না। এ জন্য দেশের Software Industry Authority-রা প্রায়ই বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাগুলোর সিলেবাস আধুনিক করতে হবে, নতুন নতুন জিনিস শেখাতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু তারা আসলে ভুল বলেন। আগামী দিনের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার জন্য তৈরি হতে হলে, শিক্ষাব্যবস্থায় কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন প্রযুক্তির পেছনে দৌড়ানোটা বোকামি হবে। বরং নিজের ভিত্তিটা অনেক বেশি মজবুত করার পেছনেই জোর দেওয়া উচিত। পাইথন লাইব্রেরি ব্যবহার করে মেশিন লার্নিং করার চেয়ে শিক্ষার্থীদের ডেটা স্ট্রাকচার ও অ্যালগরিদমের ওপর দখল থাকটা বেশি জরুরি। প্রবলেম সলভিং স্কিল থাকাটাও অনেক জরুরি। তবে প্রবলেম সলভিং স্কিল মানে এই নয় যে যেসব প্রবলেম আগে সলভ করা হয়েছে সেগুলো আবার সলভ করতে পারা, বরং নতুন প্রবলেম সলভ করা বা নতুন সমস্যা নিয়ে চিন্তা করার দক্ষতা। সমস্যার সমাধান করতে করতেই এই দক্ষতা তৈরি হবে এবং শিক্ষাপ্রতিস্থানে অধ্যায়ন অবস্থায় এই দক্ষতা তৈরির শ্রেষ্ঠ সময়। তেমনি লেটেস্ট ডেটাবেজ শেখার চেয়ে রিলেশনাল ডেটাবেজের মৌলিক ধারণা আয়ত্বে আনা বেশি জরুরি, নতুন ফ্রেমওয়ার্ক শেখার চেয়ে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং শেখাটা বেশি জরুরি। মোটকথা হচ্ছে, নতুন টেকনোলজির পেছনে না দৌড়ে, কম্পিউটার সায়েন্সের মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর জ্ঞান ও দক্ষতা তৈরি করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কম্পিউটার সায়েন্সের মূল বিষয়গুলো যাদের কাছে পরিষ্কার থাকবে, তাদের পক্ষে যেকোনো সময় নতুন টেকনোলজি আয়ত্বে আনতে বেগ পেতে হবে না। প্রযুক্তি নিয়ে এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জন্য একটি শক্ত ভিত্তির ওপর নিজেকে দাঁড় করানোটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
উন্নয়নের জন্য তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি যেমন কোন বিকল্প নেই, তেমনি শক্ত ভিত্তি অর্জনের জন্য কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।
শিক্ষার প্রতিটি স্থরে কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।কারিগরি শিক্ষায় আগ্রহী করার লক্ষে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে বিভিন্ন সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, গেলটেবিল বৈঠক, আলোচনা সভা করে এর গুরুত্ব গণমাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে তুলে ধরতে হবে।
‘ডিজিটাল যুগে উপযোগী পাঠ্যবিষয় পড়াতে হবে’
—মোস্তফা জব্বার
মন্ত্রী
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এ শিল্পবিপ্লবের ফলে গতানুগতিক অনেক চাকরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।যেখানে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সঙ্গে একান্ত সঙ্গী হয়ে যাবে প্রযুক্তি। তাই বলা যায় “ প্রযুক্তিশিক্ষাইহলদক্ষজনশক্তিরমূল“ আর দক্ষ জনশক্তির গড়াই হল কারিগরি শিক্ষার উদ্দ্যেশ ।
অনেকদিন ধরেই লিখব লিখব করে অবশেষে চলেই এলাম খুব মজার একটা টপিক নিয়ে যার নাম – Digit DP
ডিজিট ডিপির যেকোন প্রব্লেম সলভ করার আগে কয়েকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে…
১) কোন একটা সংখ্যার প্রতিটা পজিশনে কোন কোন digit বসতে পারে, সেটা বসালে সংখ্যার অবস্থাটা কেমন হবে, পরবর্তী স্টেট কেমন হবে, মূল এন্সারে তার কি কি প্রভাব পড়বে, সেগুলো মাথায় রাখতে হবে। সংখ্যার প্রতিটা পজিশন নিয়ে সহজে কাজ করার জন্য সেই সংখ্যার প্রতিটা ডিজিটকে কোন একটা integer array কিংবা stringহিসেবে স্টোর করে রাখতে পারো।
২) সাধারণত ডিজিট ডিপি প্রব্লেমে কোন একটা রেঞ্জের মধ্যে কতগুলো সংখ্যার একটা নির্দিষ্ট প্রোপার্টি আছে, সেটা বের করতে বলা হয়। যেমন ধরো, ৫১০ থেকে ৯১৩১৫ এর মধ্যে কতগুলো সংখ্যায় অন্তত একটা শুন্য আছে, সেটা বের করতে বলা হল। ৫১০,৫২০,৫৩০……৬০০,৬০১ এরা এরকম কয়েকটা সংখ্যা।
এক্ষেত্রে রেঞ্জের মধ্যে সংখ্যাগুলো বের করার চেয়ে ০ থেকে ওই সংখ্যা পর্যন্ত সংখ্যাগুলো বের করার চিন্তা করলে সল্যুশনে পৌঁছাতে ও কোড করতে সহজ হবে। অর্থাৎ 0কে ৯১৩১৫ পর্যন্ত কতগুলো সংখ্যা আছে বের করো, এরপর সেটা থেকে ০ থেকে ৫০৯ পর্যন্ত কতগুলো সংখ্যা আছে সেটা বিয়োগ দাও, তাহলেই কিন্তু সহজেই ৫১০ থেকে ৯১৩১৫ পর্যন্ত কতগুলো সংখ্যা আছে সেটা বের হয়ে গেল!
অর্থাৎ আমাদের প্রব্লেমটা এবার অনেক সহজ হয়ে গেল। আমাদের কাজ হচ্ছে, কোন একটা নির্দিষ্ট প্রোপার্টির জন্যে ০ থেকে কোন একটা সংখ্যা পর্যন্ত কতগুলো সংখ্যা আছে, সেটা বের করা!
৩) এবার দেখি, কোন একটা পজিশনে কোন কোন ডিজিট বসতে পারে। ডিজিট বসানোর সময় মাথায় রাখতে হবে, সংখ্যাটা যেন কোনভাবেই ওই রেঞ্জের বাইরে চলে না যায়। একটা উদাহরণ দিলে সহজ হবে!
57035 (৫৭০৩৫)
এই সংখ্যার প্রথমে আছে ৫, একটু ভাবো তো এখানে আমরা কি কি ডিজিট বসাতে পারব?!
০-৫ সবগুলো ডিজিটই বসাতে পারব। ৬ কি বসাতে পারব?! না, কারণ ৬ বসালে পরের সবগুলো ০ বসালেও সেটা আমাদের সংখ্যার থেকে বড় হয়ে যাবে, অর্থাৎ রেঞ্জের বাইরে চলে যাবে।
৬০০০০ > ৫৭০৩৫
প্রথমে একদম Trivial কেসের কথা ভাবি, ৫ বসাই প্রথম পজিশনে, তাহলে পরের পজিশনে ৭ এর থেকে বেশি কিছু বসাতে পারব না, তাই তো?!
হ্যা, ৫৮০০০ > ৫৭০৩৫, তাই ৭ এর থেকে বেশি কিছু বসাতে পারব না।
তাহলে তো সহজ হয়েই গেল! প্রতিটা পজিশনে যেই ডিজিট আছে, তার থেকে ছোট ডিজিটগুলো বসাতে পারব, তাই তো?! না, ব্যাপারটা এতটাও সহজ না।
এবার প্রথম পজিশনে ৫ এর থেকে ছোট যেকোন সংখ্যা বসিয়ে, ধরলাম ৩. এবার, পরের পজিশনে কি কি সংখ্যা ৭পর্যন্ত তো বসাতেই পারবে – ৮,৯ কি বসানো যায়?
হ্যা, বসানো যায়,৩ এর পর সবগুলো ৯ , তাহলেও সংখ্যাটা ৫৭০৩৫ এর থেকে ছোট হচ্ছে।
৩৯৯৯৯ < ৫৭০৩৫
যদি কোন পজিশনে সেই ডিজিটের থেকে ছোট কোন ডিজিট থাকে তাহলে পরবর্তী যেকোন পজিশনে যেই ডিজিটই ছোট সংখ্যাই হবে।
প্রথম পজিশনে ৫ বসিয়ে ২য় পজিশনে আবার ৫ বসালে, তাহলে পরের সবগুলো পজিশনে সর্বোচ্চ ৯ বস সংখ্যাটা ছোটই থাকছে।
৫৫৯৯৯ < ৫৭০৩৫
এটাই ডিজিট ডিপির মূল রহস্য! প্রতিটা পজিশনে কিছু ডিজিট বসাতে হবে। আরেকটা স্টেটে রেখে দিবে হবে, ডিজিটটা বসানোর পর সংখ্যাটা মূল সংখ্যার থেকে ছোট হয়ে গেল কিনা! যদি ছোট হয়ে যায়, তবে পরের পজিশনগুলোতে যেকোন সংখ্যা বসানো। আর যদি এখনও সমান থাকে, তবে পরবর্তী পজিশনে যেই ডিজিট আছে, সেই ডিজিট ও তার ছোট ডিজিটগুলো বসবে।
জন্মগত ভাবেই মানুষ চিন্তা ও সৃষ্টিশীল। এটা মহান আল্লাহ প্রদত্ত। মানুষের এই সুপ্ত চিন্তা শক্তি ও সৃষ্টিশীলতাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে জ্ঞান , দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা অর্জন করাই হলো শিক্ষা। সাধরণত আমরা শিক্ষার ব্যাপারে সুশিক্ষা, অশিক্ষা বা কুশিক্ষা শব্দগুচ্ছ শুনে থাকি। শিক্ষা বা জ্ঞানার্জনের সাথে নৈতিকতা বা সুচিন্তা না থাকলেই আমরা সেটাকে অশিক্ষা বা কুশিক্ষা বলে থাকি।
শিক্ষা না থাকাকে গুণীজন ”চোখ থাকিতে অন্ধ” এর সাথে তুলনা করেছেন। শিক্ষার অভাবে মানুষ দেখেও অনেক কিছু বুঝে না, পড়তে পারে না, বোধগম্য হয় না ইত্যাদি। অন্যদিকে, কিছু শিক্ষিত মানুষ পড়তে পারলেও বা বোধগম্য হলেও, সুশিক্ষার অভাবে উন্নত চিন্তা চেতনায় নিজেকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে না। ফলে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
জন্মের পর হতেই মানবশিশুর শিক্ষা শুরু হয় তার পরিবার থেকে। সেখানে যে মৌলিক শিক্ষা দেওয়া হয়, সেটাই তার পরবর্তী জীবনের সকল শিক্ষার ভিত্তি। তাই পরিবার হচ্ছে শিশুর প্রধান বিদ্যালয় এবং মা বাবা হচ্ছেন শিক্ষক – শিক্ষিকা। তবে মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য পারিবারিক পরিমন্ডল অত্যন্ত ক্ষুদ্র। কোন একক ব্যক্তি বা পরিবারের পক্ষে একটি শিশুকে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা দিয়ে জীবনের জন্য প্রস্তুত করে তোলা সম্ভব নয়। এ কারনে নির্ভর করতে হয় আত্বীয়-স্বজন, সমাজ, স্কুল, কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তথা রাষ্ট্রের কাছে।
শিশুদের জীবন একটি ছোট বীজের মত। বীজ রোপন করলে উর্বর মাটি, অনুকুল পরিবেশ ও পরিচর্যা পেলে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়। তেমনি মানবশিশু জন্মগ্রহন করে অপার সম্ভাবনা নিয়ে। সেই সম্ভাবনা বাস্তবরূপে পরিণত হয় গুরুজনদের প্রতিপালন, পরিচর্যা আর ব্যক্তির নিজ সাধনার গুণে।
সভ্যতার শুরুতে মানুষ যখন শিক্ষার পথে পা বাড়ায়, তখন থেকে পরবর্তী কাল পর্যন্ত শিক্ষিত লোকজনদের মাঝে সুশিক্ষা বিরাজমান ছিল। তারা আদর্শবাদী ব্যক্তি হিসাবে সমাজে পরিচিত ছিলেন। সে সময় শিক্ষিত মানুষকে ইতিবাচক ভঙ্গিতে দেখা হত এবং সেটা ছিল সার্বজনীন স্বীকৃত। কিন্তু বর্তমান সময়ে শিক্ষিতজনদের মাঝে সেসব গুণাবলী দেখা যায় না। লোভ লালসা, অর্থের কুপ্রবৃত্তি এবং স্বার্থের জন্য অর্জিত শিক্ষাকে ঠেলে দেয় পায়ের নিচে।
শিক্ষার সাথে একটি কথা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত সেটা হচ্ছে নৈতিকতা। নৈতিক গুণাবলী না থাকলে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়, শিক্ষা পরিণত হয় কুশিক্ষায়। প্রকৃত শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন আনা, মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করা। তাই শিক্ষিত হওয়া আর সুশিক্ষিত হওয়া এক কথা নয়।
শিক্ষাকে পর্যবসিত করতে হবে সুশিক্ষায়। সুশিক্ষার অর্থ হচ্ছে শিক্ষার এমন এক অবস্থা, যা শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলে। সুশিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত মানুষ হিসাবে গড়ে ওঠে।
বিশ্বের অনেক দেশ আজ সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত। এসব দেশের নাগরিকেরা যেমন দায়িত্ববান, তেমনি কর্মঠ। লোভ, লালসা তাদেরও আছে, কিন্তু তা চরিতার্থ করার জন্য কখনও অবৈধ পথ অবলম্বন করে না। একমাত্র কঠোর পরিশ্রম আর নীতি নৈতিকতার জন্যই নিজের ও দেশের উন্নতিতে অবদান রাখে এবং নিজের দেশকে উপস্থাপন করে বিশ্বব্যাপী। জীবনকে দক্ষ গতিশীল, আকর্ষণীয়, গ্রহণযোগ্য ও কল্যাণকামী করতে সুশিক্ষার কোন বিকল্প নাই। একটি জাতির অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, গৌরব, আশা আকাঙ্খা, রাজনৈতিক দর্শন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারাকে অক্ষুন্ন রাখতে এবং জাতি গঠনে সামগ্রিক স্বার্থে নিয়োজিত হতে সুশিক্ষা তথা প্রকৃত শিক্ষাই মানুষকে উদ্ধুব্ধ করে। সার্বিক অর্থে একটি সুন্দর জীবন প্রতিষ্ঠার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে সুশিক্ষা।
যেহেতু শিশুর শিক্ষা শুরু হয় পরিবার ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে, তাই শিশুর সুশিক্ষা নিশ্চিতে পরিবার, সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবাইকে সমভাবে ভুমিকা রাখতে হবে। শিশুর শারিরীক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করে তার মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে।
সুতরাং শিক্ষা হতে হবে ভালমন্দ, করণীয়-বর্জনীয়, সঠিক-বেঠিক, লাভ-ক্ষতি ইত্যাদি বোঝা এবং সেভাবে নিজেকে পরিচালিত করা । সচ্ছ চিন্তা করতে পারা এবং সর্বোপরি নিজেকে আলোকিত করা এবং নিজের আলোয় অন্যকে আলোকিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।