নিউটনের কোয়ারেন্টিনের দিন গুলো

নিউটনের কোয়ারেন্টিনের দিন গুলো

আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে এমন এক পৃথিবীতে বাস করছিলেন বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও। সেসময় ইউরোপ জুড়ে চলছিল বুবোনিক প্লেগের মহামারী। তখনও এমন লকডাউন জারি করা হয়েছিল

নিউটন তখন মাত্র ২৩ বছর বয়স। কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনা করতেন। প্লেগ ছড়াতে শুরু করার পরই অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতোই ট্রিনিটি কলেজ থেকেও সেখানকার ছাত্রদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্যার নিউটনকেও উলস্থর্প ম্যানর নিজের বাড়িতে ফিরে আসতে হয়েছিল। গ্রেট প্লেগএর প্রভাব পুরোপুরি কাটতে সময় লেগেছিল প্রায় একবছর

এই লকডাউনে আটকে থাকা অবস্থায়ই নিউটন তার বিখ্যাত মহাকর্ষ সূত্রটি আবিষ্কার করেছিলেন, যা বিশ্বকে চিরতরে বদলে দিয়েছিল

 

১৬৬৫ সালে যখন বুবোনিক প্লেগের মহামারী শুরু হয়, নিউটন তখন ট্রিনিটি কলেজে তার অনার্স ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করছেন। মহামারী থেকে বাঁচতে সবাই তখন লকডাউনে ঘরে বন্দী

এই লকডাউনে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তরুণ বিজ্ঞানী নিউটন তখন অপটিকস, ক্যালকুলাস মহাকর্ষ নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। আর এই সময়ই তিনি আবিষ্কার করেন মহাকর্ষের বিশ্ববিখ্যাত সূত্র

একদিন আইসোলেশনে থাকা নিউটনের সঙ্গে দেখা করতে যান তার এক বন্ধু। বইটিতে সেদিনের বর্ণনায় নিউটনের বন্ধু বলছেন– “আমি আর নিউটন বাড়ির পেছনে বাগানে গেলাম। আপেল গাছের তলায় বসে চা খেতে খেতে আলোচনা করছিলাম আমরা। নিউটন আমাকে বলছিল গাছ থেকে আপেল মাটিতে পড়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে ও। সেই পুরানো প্রশ্ন বারবার ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, ‘আপেলটি বারবার সমকোণে মাটিতে এসেই পড়ে কেন? ডানে, বামে বা উপরে কেন চলে যায় না? নিশ্চয়ই পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে কিছু একটা টানে আপেলটিকে। তার মানে পদার্থের নিশ্চয়ই আকর্ষণ ক্ষমতা আছে। আর সেটা কত শক্তিশালী হবে তা নির্ভর করে তার ভরের উপর

অর্থাৎ সামান্য একটা আপেলের পতন থেকে দুনিয়া কাঁপানো সূত্র বা তত্ত্ব ভাবিয়েছিল নিউটনকে। প্লেগের মহামারী যখন শেষ হয়, তখন তার আবিষ্কারের কাগজপত্র জমা দেন নিউটন। আর এর ফলেই ট্রিনিটি কলেজের ফেলোশিপের মর্যাদা পান তিনি

মৃত্যুর কিছুকাল পূর্বে তিনি বলেছিলেন:

 

আমি জানিনা বিশ্বের কাছে আমি কিভাবে উপস্থাপিত হয়েছি, কিন্তু আমার কাছে আমার নিজেকে মনে হয় এক ছোট বালক যে কেবল সমুদ্র উপত্যকায় খেলা করছে এবং একটি ক্ষুদ্র নুড়ি বা ক্ষুদ্রতর এবং খুব সাধারণ পাথর সন্ধান করছে, অথচ সত্যের মহাসমুদ্র তার সম্মুখে পড়ে রয়েছে যা অনাবিষ্কৃতই রয়ে গেল।

 

Source : 

নিউটনের জীবনীগ্রন্থমেময়ের অফ স্যার আইজ্যাক নিউটন‘ 

 

Zannatul Ferdous

Instructor

Department of Physics

Daffodil Polytechnic Institute

Comments are closed.