বাক্সে-জমা শিক্ষা

বাক্সে-জমা শিক্ষা

আজকে আসলে আমি শিক্ষাটাকে আমরা কিভাবে বাক্স বন্ধ করে রাখি, বাক্সের মধ্যে জমা করে রাখি সে ব্যাপার নিয়ে কিছু বলব-

স্কুলের বাইরে বা ভেতরেযেকোনো স্তরে শিক্ষক ছাত্রের সম্পর্ককে খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করলে এর বর্ণনাধর্মিতা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এই সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে বর্ণনাকারী বক্তা ( শিক্ষক) এবং মনোযোগের সাথে শ্রবণকারী শ্রোতা ( ছাত্র) মূল্যবোধ বা বাস্তবতার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান, তা যে বিষয়বস্তুকে ঘিরেই হোক না কেন, বর্ণনার প্রক্রিয়ায় জীবনরিক্ত অসার হয়ে ওঠে। শিক্ষা এখন বর্ণনাত্নক অসুস্থতায় ভুগছে।

শিক্ষক এমনভাবে বাস্তবতার কথা বলেন যেন তা গতিহীন, স্থির, কুঠুরিবদ্ধ এবং তাকে নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়। অথবা, তিনি এমনসব বিষয়ের অবতারনা করেন যা ছাত্রদের অস্থিত্বের অভিজ্ঞতার সাথে পুরোপুরি সম্পর্কহীন। তাঁর কাজ হচ্ছে কোনো কিছু বর্ণনা করে ছাত্রদের মগজ পুরো করে দেওয়া। সেই বর্ণনা বিষয়বস্তু বাস্তবতা হতে বিচ্ছিন্ন, সমগ্রতার সাথে সম্পর্কহিত। যে সমগ্রতা তাদের বিপদাপন্ন করেছে এবং যে সমগ্রতাশিক্ষা সম্পর্কিত তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তার সাথে কোন যোগ নেই এই শিক্ষার। শব্দকে তার যথার্থতা হতে দূরে সরিয়ে তাকে ফাঁপা, বিচ্ছিন্ন এবং খাপছাড়া বকবকানিতে পর্যবসিত করা হয়।

আরো খারাপ ব্যাপার হলো এই যে, ধরনের শিক্ষা ছাত্রদের বাক্সে পরিণত করে; সেই বাক্স পুরো করার দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষকের ।যত সুষ্ঠুভাবে শিক্ষক সেই বাক্স পূর্ণ করতে পারে তত যোগ্য সেই শিক্ষক। যত নিরীহভাবে ছাত্র সেই বাক্স পূর্ণ করতে পারে তত যোগ্য সেই শিক্ষক। যত নিরীহভাবে ছাত্র সেই বাক্স পূর্ণ করার ব্যাপারে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে তত ভালো সেই ছাত্র।

ফলে শিক্ষা হয়ে ওঠে জমা করার বিষয়; যেখানে ছাত্ররা জমা রাখার পাত্র আর শিক্ষকগণ হচ্ছেন জমাকারী। যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার বদলে শিক্ষকগণ ইশতেহার জারি করেন, বিদ্যা জমা রাখেনছাত্ররা তা মুখস্ত করে আর তার পুনরাবৃত্তি করে। এটি হচ্ছে শিক্ষার ব্যাংকিং লেনদেনেরধারণা। এতে ছাত্রদের ভূমিকা হচ্ছে জমা করা জিনিস গ্রহণ করা, নথিবদ্ধ করা আর জমা রাখা। 

এটি সত্যি যে, যেসামগ্রী তারা জমা করে সেগুলোর সংগ্রাহক বা কেটালগার হতে পারে ছাত্ররা। কিন্তু অন্তিম বিশ্লেষণে এই পদ্ধতিতে মানুষ সৃজনশীলতা, পরিবর্তন এবং জ্ঞানের অভাবে যান্ত্রীক হয়ে পড়ে। কারণ, অনুসন্ধিৎসা আর প্র্যাক্সিস ব্যতীত মানুষ সত্যিকার মানবিক হয়ে উঠতে পারে না। আবিষ্কার, পুনরাবিষ্কারের মাধ্যমে, এই বিশ্বে, এই বিশ্বের সাথে, একে অপরের সাথে, মানুষ যে অস্থির, উদ্দাম, অবিরাম আশাপ্রদ অনুসন্ধান চালায়, তাতেই শুধু জ্ঞানের সৃষ্টি হয়।

ব্যাংকিং ধারণায় জ্ঞান হচ্ছে একটি দান সামগ্রীযারা পুরোপুরি অজ্ঞ বলে বিবেচিত তাদেরকে প্রদেয় পন্ডিতমন্যদের দান। অন্যদের ওপর পুরোপুরি অজ্ঞতা আরোপ হচ্ছে অত্যাচারীর আদর্শের চরিত্রলক্ষণ; এই আদর্শ শিক্ষা এবং জ্ঞানকে অনুসন্ধানের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে অগ্রাহ্য করে। শিক্ষক নিজেকে ছাত্রের বিপরীত মেরুতে দাঁড় করান; ছাত্রদের অজ্ঞতা চরম বলে বিবেচনা করে তিনি তাঁর অস্তিস্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। হেগেলীয় দ্বন্দ্বের ক্রীতদাসের মতো বিচ্ছিন্ন থেকে ছাত্ররা শিক্ষকের অস্তিত্বের প্রশ্নে নিজেদের অজ্ঞতা মেনে নেয়। কিন্তু কখনো অনুধাবন করতে পারে না যে, তারাও শিক্ষকদের শিক্ষিত করে তোলে।

অপরপক্ষে মুক্তিদায়ী শিক্ষার যৌক্তিকতা এই যে, এটি সমন্বয় সাধনে প্রবৃত্ত হয়। ছাত্রশিক্ষকের দ্বন্দ্বের সমাধানের মাধ্যমে শিক্ষার যাত্রা শুরু করতে হবে; দুই মেরুর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবেযাতে উভয়েই একই সাথে ছাত্র শিক্ষক হয়ে ওঠে।

ব্যাংকিং ধারণার মধ্যে এর সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না। বরং, উলটো ব্যাংকিং পদ্ধতির শিক্ষা বিরাজমান দ্বন্দ্বকে রক্ষা করবে, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তীব্রতর করবে।অত্যাচারী সমাজের চারিত্রলক্ষণ নিম্নবর্ণিত মনোভাব আচার আচরণের মাধ্যমে তা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠেঃ

১। শিক্ষক শিক্ষা দেন এবং ছাত্ররা শিক্ষা গ্রহণ করে।

২। শিক্ষক সবকিছু জানেন এবং ছাত্ররা শিক্ষার কিছুই জানে না।

৩।শিক্ষক ভাবনাচিন্তা করেন আর ছাত্ররা হচ্ছে তার ভাবনা চিন্তার বিষয়।

৪। শিক্ষক কথা বলেন , ছাত্ররা চুপচাপ শোনে।

৫।শিক্ষক শৃংখলা আনয়ন করেন এবং ছাত্ররা শৃংখলা মেনে চলে।

৬।শিক্ষক নির্বাচন করেন এবং তাঁর পছন্দ প্রতিষ্ঠা করেন, ছাত্ররা তা মেনে চলে।

৭। শিক্ষক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন; শিক্ষকের কর্মের মধ্যদিয়ে ছাত্ররা কাজ করার স্বাদ লাভ করে।

৮। শিক্ষক কর্মসূচির বিষয়বস্তু নির্বাচন করেন, ছাত্ররা তা অনুসরণ করে।

৯। শিক্ষক জ্ঞানের কর্তৃত্বকে তার নিজের পেশাগত কর্তৃত্ব বলে ভুল করেন। ফলে ছাত্রদের স্বাধীনতার বিপরীতে তাঁর কর্তৃত্বই বজায় রাখে।

১০। শিক্ষক হচ্ছেন শিক্ষণ প্রক্রিয়ার বিষয়ী, ছাত্ররা হচ্ছে শুধু বিষয়।

 

 

লেখক,

=====================

সোমা রানী দাস

বিভাগীয় প্রধান 

ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং 

সত্যিকারের প্রচেষ্টা কখনই ব্যর্থ হয় না

সত্যিকারের প্রচেষ্টা কখনই ব্যর্থ হয় না

জীবনে অনুপ্রেরণার গুরুত্ব যে কতটা,তা আমরা হয়তো প্রত্যেকেই জানি প্রত্যেক মানুষই চায় তারা যেন সর্বদা ভিতর ভিতর অনুপ্রাণিত থাকেতে জীবন নামের জার্নিটা খুব সহজ নয়, আর বাস্তব বরাবরই কঠিন যদি আপনি বাস্তবে সত্যিই কিছু করতে চান তাহলে কোনো না কোনো রাস্তা ঠিকই খুঁজে পাবেন, আর না যদি কিছু করতে চান তাহলে আপনি অজুহাতও ঠিকই খুঁজে পাবেন

 

যখন আপনার জন্ম হয়েছিল তখন আপনি কেঁদে ছিলেন আর বাকি মানুষ তা উদযাপন করেছিল নিজের জীবনকে এমনভাবে উপভোগ করুন যাতে আপনার মৃত্যুর সময় সবাই কাঁদলেও আপনি তা হাসি মুখে উদযাপন করতে পারেনআপনি এটা কখনই বলতে পারেন না যে আপনার কাছে পর্যাপ্ত সময় নেই, কারণ আপনি দিনে ঠিক একই পরিমান (২৪ ঘন্টা) সময় পান যা পৃথিবীর মহান আর সফল লোকেরাও পায়

 

বৃষ্টির সময় সমস্ত পাখিরা আশ্রয়ের খোঁজ করতে থাকে কিন্তু ঈগল আকাশের এতই উপর দিয়ে উড়ে যায় যে বৃষ্টি তাকে একফোঁটা ছুঁতেও পারেনাসেইরকমই জীবনে সমস্যা আসা একটি সাধারণ বেপার যেখানে আপনার মনোভাবই  (Attitude) সমস্ত পার্থক্যের সৃষ্টি করতে পারে

আজ যে ছেলে বেকার চাকরী পায়নি, যে ভদ্রলোক জীবনে  সমস্তটা হারিয়েছেন বা ক্লান্ত হয়েছেন তার জন্যেও এসব কথা আর আপনি যদি এমনি মন খারাপের স্টেশনে দাঁড়িয়ে ভাবেনকিছু তো হল না জীবনেতাহলে বলি বাড়ি ফিরে যান, ঘরে বসে  ভাবুন ছেলেবেলাতে ফিরে যান, সেই গল্পগুলোকে মনে করুন যে কলসির তলা থেকে জলটা তুলে এনেছিল, সেই কচ্ছপটাকে মনে করুন যে পিছিয়ে থেকেও রেসটা ছেড়ে চলে যায়নি আর মশাই ওরা পারলে আপনি পারবেন না? আর সেই রাজার কথা মনে আছে যে একটা মাকড়সাকে দেখে শিখেছিল, ওরা পারলে আপনি পারবেন না? পারবেন মশাই পারবেন আর মানুষ চাইলে কি না পারে বলুন তো, চোখ মুছুন উঠে দাঁড়ান

 

একটা লম্বা রাস্তা গাড়ি পারি দিচ্ছে তেল, ইঞ্জিন সব একেবারে সুন্দর এবং ঝক ঝকে চকচকে কিন্তু মাঝপথে গোল বাঁধল, গাড়ি গরম ইঞ্জিন না চাইতেই থেমে গেল এখন চালক মশাই এর হাতে দুটো রাস্তা খোলা, হয় বাড়ি ফিরে যাও,যেটা কিনা কিঞ্চিৎ সহজ উপায় আর একটা পথ খোলা উঠে দাঁড়াও, গাড়ি সারিয়ে পাল্লা দাও রাস্তাতে কিন্তু ভেঙ্গে পড়া মনকে জোড়া দেয়া কি অত সহজ? তার জন্যে  কাঁধের ওপর একটা হাত থাকা জরুরি , আর সে মানুষ খুব ভাগ্যবান যার কাঁধে হাত রাখার মতো মানুষ আছে কিন্তু এজগতে একলা যারা চলেন তাদের কাঁধে হাত না থাকলেও কিছু মানুষ যারা তাদের জীবন দিয়ে বুঝেছেন, জীবন মানে এক লড়াই আর জীবনের চোখে চোখ রেখে বলা, “বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী

গ্রাহাম বেলকেও তো বলেছিলো, বসে বসে এক জায়গা থেকে লক্ষ লক্ষ মাইল দূরে কোন মানুষের সাথে কথা বলা যাবে না রাইট ব্রাদার্সকেও তো বলেছিল, এই মানুষ কখনও আকাশে উড়তে পাড়বে না মানুষের জন্ম শুধু জমিনে চলার জন্য হয়েছে

গান্ধী যি কেউ বলেছিল, একজন একলা মানুষ কখনও পরিবর্তন আনতে পাড়বে না কিন্তু Impossible জিনিসকে Possible  করার জন্য আপনাকেও এই লোকদের মত লড়তে হবে কি জিনিস আপনি এটা দুনিয়াকে বলতে হবে,স্বপ্ন তাদেরই পূরণ হয়, যাদের স্বপ্নতে জীবন থাকে কারণ আপনার নিজের উপর বিশ্বাস আছে নজর আসমানে তো ঠিকই, কিন্তু পায়ের নিচে জমিন আছে একটি সফল জীবনের অর্থই এটা হয়ে থাকে নিজের Limit কে Stages করা দুনিয়ার System-কে Challenge করা সব সময় উপায় গুলোর খোঁজ করা, যার মাধ্যমে নিজেকে আপনি এক ভালো মানুষ বানাতে পারবেন

 

 

জীবনে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নিজেদেরকে উন্নত করা উচিত যদি আমরা নিজেদেরকে উন্নত করা বন্ধ করে ফেলি তাহলে আমরা একই জায়গায় আটকে থাকবো, তাই যে যত নিজেকে উন্নত করবে সে ততই জীবনে এগিয়েও যাবে

আমি মনে করি, এই অনুপ্রেরণা মূলক কথা গুলিকে বাস্তব জীবনে ঠিক মত মেনে চললে যে কোনো মানুষের জীবন অনয়াসেই বদলে যেতে পারে

 

লিখেছেন

মো: শফিকুল ইসলাম (মিলন)

ইন্সট্রাক্টর ইলেকট্রিক্যাল

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

ই-লার্নিং এর আশীর্বাদ। Blessing of E-Learning

ই-লার্নিং এর আশীর্বাদ

Blessing of E-Learning

যেমনটি আমরা সবাই জানি, আমরা কোভিড -১৯ নামক এই মহামারী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যদিও কোভিড -19 আমাদের আরও কয়েক বছর এগিয়ে দিয়েছে। কয়েক বছর পরে আমাদের যে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করার কথা ছিল, আমরা তা এখনই ব্যবহার করছি।  বর্তমানে বেশিরভাগ কাজ অটোমেশনে পরিণত হয়েছে।  শিক্ষাগত অনলাইন সিস্টেমগুলো এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি আমাদের দেশের শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে রয়েছে বর্তমানে ই-লার্নিং(E-Learning) সিস্টেম।

আর তাই আজ আমি আপনাদের সাথে ই-লার্নিং (E-Learning)নিয়ে কিছু মতবাদ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি,আমার সামান্য অভিজ্ঞতা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি এবং চিন্তাভাবনায় অবদান রাখতে পারে।

ই-লার্নিং (E-Learning) বর্তমানে সবচেয়ে বহুল ব্যাবহৃত একটি অনলাইন সেবা প্ল্যাটফর্ম,যা এই আধুনিক যুগে আপনি ই-লার্নিং সেবা নিতে পারেন যে কোন সময়, যে কোন জায়গায়। শুধু মাএ শেখার জন্যে আপনার প্রয়োজন হবে- প্রযুক্তিগত ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সংযোগ।  এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা জ্ঞান এবং দক্ষতা আপগ্রেড করার সাহায্য করে।  ই-লার্নিং এমন একটি ডিজিটাল সিস্টেমের যার মাধ্যম আমরা প্রথাগত শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিক্ষাগত পাঠ্যক্রমটি পরিচালনা করতে পারি। আউট অফ দা বক্স চিন্তার বিকাশ ঘটাতে পারি।

নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলো থেকে আপনি এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উপকার পেতে পারেন। যেমন
০১.যে কোন সময়, যে কোন জায়গায় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
০২. এই প্ল্যাটফর্মটি অর্থ, সময় এবং ব্যয় সাশ্রয় করে।
০৩. অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের যে কোন বিষয় সম্পর্কে জানা যায়।
০ ৪. এতে শেখার সীমান্ত নেই ।
০৫. এটি পেশাগত এবং ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
০৬. উৎপাদনশীলতা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
০৭. শেখার অভিজ্ঞতাটি অন্যের সাথে শেয়ার করা যায়।
০৮. ভার্চুয়াল অধ্যয়ন সেশনে অংশ নিতে সহায়ক।
০৯. সহজ পর্যালোচনা করা, রিভিউ করা, কোর্সের উপকরণগুলিতে কমেন্ট করা যায়।
১০. নতুন যোগ্যতা, অধ্যয়ন এবং প্রশংসাপত্র অর্জন করা যায়।

ইনক্লুসিব ই-লার্নিং অনলাইন ক্লাস, শেখার ব্যাপারে এটি একটি সীমাহীন শিক্ষা ব্যবস্থা,যা বিভিন্ন সাইট বা মিডিয়া ব্যবহার করে প্রত্যেকের সাথে সংযুক্ত হওয়া যায়।  ই-প্ল্যাটফর্মে, কোর্স উপকরণগুলো ২৪ ঘন্টা পাওয়া যায়। যে শিক্ষার্থীরা ক্লাস মিস করে বা যারা ক্লাস করেছে তারা উভয় পক্ষই পুনরায় ক্লাস  পর্যালোচনা, পড়া, আলোচনা, গবেষণা, বিকাশ এবং মন্তব্য করার ক্ষমতা রাখে।  গুগল ক্লাসরুম, গুগল সাইট, গুগল মিট, কাহুট, জুম, হ্যাঙ্গআউট, হোয়াট্স অ্যাপস, স্কিলশেয়ার, স্ট্রিম ইয়ার্ড, লিংকডইন, এডমোডো এবং আরও অনেক সহজ কিছু সাইট  রয়েছে যা থেকে সহজেই শিখা যায়।

ইন্টারেক্টিভ ভাবে লার্নিং অনলাইন সিস্টেম ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীদের মনযোগ বাড়িয়ে তুলতে পারে।  যেমন

খেলার সাথে শেখা
পড়াশোনা যদি হয় খেলার মতো, তবে কে ই বা না চাইবে পড়াশোনার সাথে যুক্ত থাকতে।
শেখার দক্ষতা বাড়াতে মজার সাথে শিখুনি ইনক্লুসিব ই-লার্নিং এর একটি বিশেষ অংশ। গেমস যখন শেখার জন্য ব্যবহৃত হয় তখন এটি শিক্ষার্থীদের আরও বেশি  পড়তে উৎসাহ করতে পারে এবং এনগেইজ স্তরটি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে।  যেমন- কাহুট গেমিং লার্নিং সিস্টেম।

অনলাইন রান্না ক্লাস
একটি দুর্দান্ত রেসিপির মতোই, একটি আকর্ষণীয় ই-লার্নিং কোর্স বেশিরভাগ লোকদের তাদের রান্নার অভিজ্ঞতা এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে একটি দুর্দান্ত উপায়।  আজকাল রান্না করা কেবল গৃহকর্মের অংশ নয়, এটি এখন একটি শেখার ব্যবস্থাও।

যোগাযোগের উপায় শিক্ষা
ইনক্লুসিব ই-লর্নিং শিক্ষায় আলো প্রতিফলিত হয় সকলের ওপর। অনলাইন ক্লাস একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় একটি অন্যতম উপায়।

লার্নিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার দক্ষতা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বাড়াতে পারেন এবং আপনার নিজের মতামত অন্যদের সাথে শেয়ার  করে নিতে পারেন।
আর তাই প্রযুক্তি অবলম্বন করতে ভয় নয়, প্রযুক্তির আশীর্বাদ কে গ্রহণ করায় গ্রহণ করায় বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। জীবনে সফলতা নিয়ে আসতে এর কোন বিকল্প নেই। 

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। 

লেখক, 

আফরোজা শারমিন সুভহা
ইনসট্রাক্টর (বিজনেস স্টাডিস)
ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।

থেমে যাবার তো উপায় নেই, চলতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে

থেমে যাবার তো উপায় নেই,

চলতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে

দিনটি ছিলো ফেব্রুয়ারী মাসের শুরুর দিকের কোন একটি দিন। হঠাৎ করেই জরুরী বৈঠকের নোটিশ। দৌড়াতে দৌড়াতে চলে গেলাম প্রধান কার্যালয়ে। সবার গুরু গম্ভীর মুখ দেখে বোঝা গেল বিষয়টি হয়তো একটু বেশীই জরুরী। সহকর্মীরা সবাই একে একে যোগ দিলেন বৈঠকে। বৈঠক শুরু হলো। বৈঠকের বিষয় স্পষ্ট হলো সম্ভাব্য করোনার মহামারীতে আমাদের প্রস্তুতি। যেহেতু করোনা শব্দটি তখনও ততোটা পরিচিত হয়ে ওঠেনি তাই প্রথমেই বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছিলাম। আমাদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সবুর খান যা বলছিলেন তার সারাংশ হলো সামনে অনেক কঠিন সময় সুতরাং আমাদের নিজস্ব গন্ডির মধ্যে থেকে ক্লাস থেকে শুরু করে যাবতীয় সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে এবং এক্ষেত্রে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার আমাদের শতভাগ নিশ্চিত করতেই হবে। সম্ভব/অসম্ভবের মধ্যে দোদুল্যমান আমার অবস্থান। একই সাথে বোঝার চেষ্টা করছিলাম আমার সহকর্মীদের মনের অবস্থান এবং আমার মনোভাবের সাথে তাদের মনোভাব মেলাবারও চেষ্টায় ছিলাম। এখন বলতে আপত্তি নেই, আমার কাছে অসম্ভবের পাল্লাই বেশী ভারী ছিল। কোথায় চীন দেশ আর কোথায় আমরা। আমাদের সেই শক্তি কোথায়? যা হোক কোন কিছু না ভেবেই মনে মনে ভাবলাম কিছু একটাতো হবেই। বিসমিল্লাহ বলে সহকর্মীদের সাথে নেমে পড়লাম কাজে। একটা বিষয় খেয়াল করলাম নেতৃত্ব যদি হয় শক্তিশালী এবং সুদূর প্রসারী তাহলে তার প্রভাব কর্মীদের উপর পড়বেই। আমি ভেতর থেকে একধরনের শক্তি অনুভব করলাম। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকারকেও ধন্যবাদ দিতে হয় বেশ কিছু ক্ষেত্রে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন কিছু বাস্তবিক স্বীদ্ধান্ত গ্রহন করবার জন্য।

ফেব্রুয়ারী মাস গড়িয়ে মার্চ চলে এলো। করোনা নামক চক্রে আমরাও পড়তে যাচ্ছি বিষয়টি স্পষ্ট হলো। আগে থেকেই নেয়া স্বীদ্ধান্ত মোতাবেক কাজ গোছানো হচ্ছিলো। শুরু হলো অনলাইনের যাত্রা। নির্ধারন করা হলো হাতের কাছে থাকা সহজ কিছু প্রযুক্তি যেমন গুগল মিট, জুম, গুগল ক্লাসরুম, মুডল এবং অনুশীলন করা হচ্ছিল তার ব্যবহার। পুরো ফেব্রুয়ারী মাস জুড়ে চলেছে চার দেয়ালের ক্লাস রুমে ভার্চুয়াল ক্লাস, পাশাপাশি বসে ভার্চুয়াল মিটিং, ফাইল শেয়ারিং, অনলাইন হাজিরা ইত্যাদি। এক বন্ধু আমার অফিসে এসে দ্যাখে আমি ভার্চুয়াল মিটিং করছি আমার পাশের রুমে থাকা সহকর্মীর সাথে। ও কিছু না বলে ভ্রু কুচকে চায়ের কাপে চুমুক ‍দিচ্ছিলো। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেলো লকডাউন। মাথায় সারাদিন দুটি শব্দই ঘুরপাক খেতে লাগলো করোনা এবং লকডাউন। বেড়ে গেলো প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকান্ডের বিশাল দায়িত্ব আমাদের সকল সহকর্মীদের উপর। শক্তি ছিলো নেতৃত্বের আর এতোদিনের আত্মবিশ্বাসের। চিন্তা করলাম একটা কিছুতো হবেই।

শুরু হলো লকডাউনের মধ্যেই প্রতিদিন রুটিন মাফিক অনলাইন ক্লাস, মিটিং, পরীক্ষা, কুইজ, অভিভাবক সম্মেলন, অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ইত্যাদি। অবাক হলাম যাদের নিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশী চিন্তিত ছিলাম আমাদের সেই কোমলমতী ছাত্রছাত্রী যারা লকডাউনের কারনে ফিরে গিয়েছিলো গ্রামে তাদের উৎসাহ এবং সতস্ফুর্ত অংশগ্রহন দেখে। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছে থাকা সীমিত ইন্টারনেট এবং ডিভাইস ব্যবহার করে যুক্ত হচ্ছিলো অনলাইন ক্লাসে। রাতদিন চলেছে বিরতিহীন ক্লাস ও অনলাইনে পড়াশুনার কার্যক্রম। দেখতে বেশ ভালোই লাগছে। মনে মনে ভাবতাম আরে উন্নত বিশ্ব তাহলে এভাবেই আমাদের দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে। একটা সময় দেখলাম ছাত্রছাত্রীতো বটেই বাবা-মা সবাই অংশগ্রহন করছে অনলাইন ক্লাসে। পেছনে ফিরে তাকানোর সময় হয়নি। করোনা তার তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও সবাই সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছি। সমস্যাতো আসবেই। থমকে যাবার অবকাশ নেই। হঠাৎ মনে হলো কর্মের সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। ফলাফল যা বের হলো তাতে আমিও কিছুটা অবাক হলাম। ড্যাফোডিল পরিবারের স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক, বিশ্ববিদ্যালয়ে

  • লকডাউনের প্রথম ৯০ দিনে প্রায় ৬০ হাজার ক্লাস সম্পন্ন হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে
  • গড়ে প্রতি ক্লাসে উপস্থিতি ছিলো ৬৮%
  • এই হিসেবে ড্যাফোডিল পরিবারের ৩০ হাজার ছাত্রছাত্রীর মধ্যে প্রতিদিন ২০ হাজার ছাত্রছাত্রী অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে।
  • অভিভাবক সম্মেলন হয়েছে প্রায় ৫০টিরও বেশী
  • অনলাইনেই সম্পন্ন হয়ে কুইজ, ক্লাস টেষ্ট, পরীক্ষা, এ্যাসাইমেন্ট,
  • দেশ-বিদেশের বিখ্যাত প্রফেশনালদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০০ অধিক ওয়েবইনার।
  • প্রায় ৩০০ সহকর্মী মিলে যার যার ঘরে অবস্থান করে আমরা আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছি তিনটি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট (হেকাথনের আদলে করোনাথন, অনলাইন লার্নিংকে সবার মাঝে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য অনলাইন লার্নিং সামিট এবং ঘরে বসে মেধাভিত্তিক কাজ করা সম্ভব এই সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরে তরুনদের চাকরির সুযোগ তৈরি করবার জন্য আয়োজন করা হলো ভার্চুয়াল জব ফেস্ট)। এই তিনটি ইভেন্টে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের আরো প্রায় ২০টি দেশের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
  • সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আমরা প্রায় ৩০০০ সহকর্মীরা একে অপরের সাথে মিলে গত ৯০ দিন কাজ দিলাম, কাজ করলাম কিন্তু কারো সাথে সরাসরি দেখা হলো। সবাই যার যার ঘরে বসে যার যার কাজ সম্পাদন করলাম। এটাই একসময় অসম্ভব ছিলো যা বর্তমানে বাস্তব।

এতো বিশাল কর্মযজ্ঞের মাঝে হঠাৎ ড্যাফোডিল পরিবারের মনে হলো কেননা আমরা এমন একটি প্ল্যাটফরম তৈরি করি যার মাধ্যমে অন্যরাও অনায়সে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। সূচনা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য Blended Learning Center, কলেজ-পলিটেকনিকের জন্য college.ac এবং স্কুলের জন্য schoolbd.ac । এই প্ল্যাটফলমগুলো বাংলাদেশের যেকোন স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক, বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করতে পারবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

আসলে পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের যেকোন পরিস্থিতিতে এগিয়ে যাবার এক বিরাট ক্ষমতা দিয়েছেন। আমরা তা বুঝি না। একটা সময় যা ছিলো অসম্ভব তা এখন বাস্তব। সামনের পৃথিবী হয়তো আরো অজানা, দুর্বোধ্য। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে সৃষ্টিকর্তার সেই শক্তিশালী উপমার উপর “মানুষ হলো আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা”। সুতরাং থেমে যাবার তো উপায় নেই। চলতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে।

—————————————– X ——————————————

লেখকঃ-

কে এম হাসান রিপন

নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

ভার্চুয়াল ইন্টার্ভিউ এর জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়

ভার্চুয়াল ইন্টার্ভিউ এর জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়

হেনরি ফোর্ড – একটি উক্তিতে বলেছেন, “You can do anything if you have enthusiasm”. Enthusiasm বলতে ব্যাক্তির উদ্যম – কে বুঝানো হয়েছে। যদি কারোর মধ্যে আগ্রহ না থাকে, তাহলে শত চেষ্টা করেও তাকে কোন বিষয়ে পারদর্শী বা অভিজ্ঞ করে তোলা সম্ভব নয়।

হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল ভার্চুয়াল ইন্টার্ভিউ সম্পর্কিত নয়টি টিপস দিয়েছে। চলুন জেনে আসি এই ৯ টি টিপস সম্পর্কে “কে এম হাসান রিপন (নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট)” স্যারের  থেকে-

১। বর্তমানে ভার্চুয়াল ইন্টার্ভিউ বা মিটিং গুলোতে ফিজিক্যাল উপস্থিতির প্রয়োজন পড়ছে না । তাই পরিপূর্ণ ড্রেস আপ এর চাইতে সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ন হলো, সঠিক Facial Expression (চেহারার অভিব্যক্তি) ধরে রাখা। ক্যামেরার অপর পার্শ্বের ব্যক্তি যেন Facial Expression দেখে অনুপ্রাণিত হয়, গোমড়া মুখ বা নার্ভাসনেস বুঝতে না পারে এবং কথা বলার মাঝে arrogant (অহংকারী) ভাব না প্রকাশ পায়।

দৈনন্দিন জীবনে হাসির গুরুত্ব দিয়ে হেনরি ফোর্ড বলেছিলেন, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়য়ে যাওয়ার পূর্বে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখা হাসতে পারছি কিনা, অফিসে যাওয়ার পূর্বে  আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখা হাসতে পারছি কিনা কিংবা দোকান খোলার পূর্বে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখা হাসতে পারছি কিনা। যদি হাসতে না পারি  তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়য়ে যেওনা, অফিসে যেওনা বা দোকান খুলো না।

২। Gesture বা হাতের মুভমেন্ট এর প্রতি নজর দেওয়া। ক্যামেরার সামনে যেহেতু আমাদের ফুল বডী মুভমেন্ট এর প্রয়োজন পড়ে না, তাই সামনের শ্রোতার দৃষ্টি আকর্ষন বা নজর পেতে Gesture বা হাতে মুভমেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। অনেক ক্ষেত্রে কথার সাথে কনফিডেন্স লেভেল বুঝাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

৩। ভয়েজ টোন এর উপর জোড় দেওয়া। কথা বলার সময় কিছু কিছু শব্দের উপর জোর প্রয়োগ করা। Words (শব্দ) সঠিক ব্যবহার করা। কথা বলার সময় মাঝে মাঝে কিছু কিছু পাওয়ারফুল শব্দের ব্যবহার করা।

৪। Technology Awareness (প্রযুক্তিগত সচেতনতা)। প্রযুক্তির ব্যবহার গুলোর প্রতি আপ টু ডেট থাকা। কিভাবে একটি ভার্চুয়াল মিটিং এ  জুম বা গুগল মিট ব্যবহার করে যুক্ত হওয়া যায়, ফাইল শেয়ার করা যায়।

আমাদের অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে প্রতি মিটিং এ যুক্ত হওয়ার জন্য ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ এর মাধ্যেমে যুক্ত হওয়া। কারন এর মাধ্যেমে ফাইল শেয়ারিং করা থেকে শুরু করে অনেক কিছু ম্যানেজ করা সহজ হয়ে যায়। ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ না হলে স্মার্ট ফোনের মাধ্যেমে মিটিং এ জয়েন করা যেতে পারে।

স্মার্ট ফোনের পাশাপশি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ এর সাথে What’s app ইন্সটল করে রাখতে হবে। কারন What’s app যোগাযোগের জন্য বিশ্বব্যাপী খুব জনপ্রিয় এবং লিংক শেয়ারিং, ভয়েজ, টেক্সট দ্রুত এক্সসেস করা যায়।

৫। Set the scene and minimize the distraction- ভার্চুয়াল মিটিং / ইন্টার্ভিউ- এ যুক্ত হওয়ার পূর্বে এমন একটি জায়গা নির্ধারন করে নেওয়া যেখানে Distraction বা side noise নেই। ভার্চুয়াল মিটিং চলাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে বিকল্প হিসেবে মোবাইল ডাটা রাখতে হবে, যেন পুনরায় মিটিং এ জয়েন করা যায়। তবে মধ্যবর্তী এই সময়ের মধ্যে যিনি মিটিং এর আহ্বায়ক তাকে অবশ্যই জানিয়ে রাখতে হবে যে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এর জন্য সংযোগ বিছিন্ন হয়েছে এবং পুনরায় যুক্ত হচ্ছেন।

৬। Sit down preparation – ভার্চুয়াল মিটিং / ইন্টার্ভিউ- এ যুক্ত হওয়ার জন্য মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতির প্রয়োজন । তাই আপনি যখন ভার্চুয়াল মিটিং / ইন্টার্ভিউ তে বসবেন আপনি মানুষিক প্রস্তুতি নিয়ে বসবেন। এই প্রস্তুতিটা হতে পারে শারীরিক বা মানুষিক প্রস্তুতি। এটি একটি মিটিং সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে সহায়ক ভুমিকা রাখে।

৭। Don’t Memorized- চেষ্টা করতে হবে, মুখস্ত করে ইন্টার্ভিউ-তে না যাওয়া। যতটা সম্ভব হয় অনুশীলন করে নেওয়া। এতে করা ভুলে যাওয়ার সম্ভবনা অনেকাংশেই কমে যাবে।

আপনার শারীরিক অঙ্গীভঙ্গী নিরীক্ষণ করতে হবে এবং কথা বলার সময়ে আপনার শারীরিক অঙ্গীভঙ্গী সঠিক হচ্ছে কিনা সেই দিকে খেয়াল রাখা অন্তত জরুরী।

৮। Proper Grooming and Attire মেনে ভার্চুয়াল মিটিং / ইন্টার্ভিউ-তে যুক্ত হওয়া।

নিজের কোন প্রফেশনাল কান্টিভিটি স্টোরি শেয়ার করা, যেন যিনি ইন্টার্ভিউয়ার-এর সাথে কানেক্ট হওয়া যায়।

৯। অন্যকে অনুসরণ না করে নিজে যেমন (Be yourself) ঠিক সেইভাবেই মিটিং এর যুক্ত হওয়া।  মিটিং / ইন্টার্ভিউ- এর পরবর্তী immediately follow up নেওয়া। অবশ্যই সেইটা হতে হবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন টাইপ।

 

কে এম হাসান রিপন

নির্বাহী পরিচালক

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

অফিসের আদলে হোম অফিস

অফিসের আদলে হোম অফিস

ধানমন্ডিতে একটা বড় খেলার মাঠ ছিলো। আমরা সবাই চিনতাম আবহানী মাঠ নামে। সকাল-বিকাল সবসময় আবহানী মাঠে। সবচেয়ে মজার ছিলো বৃষ্টির দিনে। কাদা মাঠে ফুটবল খেলা। ফুটবলতো আর হতো না, কাদা ছিটানো হতো বেশী। আবহানী ক্লাবের সব স্টার ফুটবালার সকাল বিকেল অনুশীলন করতেন। আমরা দাড়িয়ে বা গ্যালারীতে বসে দেখতাম আর অপেক্ষা করতাম কখন তাদের মিস করা বল আমাদের কাছে আসবে আর আমরা নিজেকে ম্যারাডোনা ভেবে শট করবো। এই শট করা নিয়ে বন্ধুদের সাথে প্রায়ই ঝগড়া লেগে যেতো। ৯০ এর বিশ্বকাপের পর অতি উৎসাহিত হয়ে নিজের নাম লেখালাম একটি ক্লাবে। যথারিতি বিকেল ৩টায় নিজের কেডস, ট্রাউজার এবং টি-শার্ট পড়ে প্রাকটিস সেশনে যোগ দিলাম। প্রাকটিস শেষে কোচ ডেকে বললেন কেমন লাগলো? আমি বললাম গলিতে যেভাবে খেলে মজা পাই তেমন পাইনি। তিনি বললেন বাসায় গিয়ে ফুলবলের জন্য নির্ধারিত জার্সি, ‍সর্টস, বুট, শিন গার্ড কিনে তারপর কাল প্রাকটিসে যোগ দেবে। আমি তো বাসায় ফিরেই বাবাকে সাথে নিয়ে স্টেডিয়ামের স্পোর্টস শপে গিয়ে সব গুলো কিনে তারপর প্রাকটিসে যোগ দিলাম। প্রাকটিস শেষে কোচ বললেন নিজেকে ম্যারাডোনার মতো লেগেছে? আসলেই ফুটবল খেলার জন্য নির্ধারিত সাজসজ্জা, পোশাক এবং মানসিক প্রস্তুতি আমার ভেতরের পুরো অনুভুতি পরিবর্তন করে দিয়েছে।

প্রত্যেক পেশার জন্যই রয়েছে নির্ধারিত সাজসজ্জা, পোশাক, পরিবেশ, উপকরণ এবং মানসিক প্রস্তুতি। কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব আমাদের বেশ কিছু শব্দের সাথে পরিচিত করেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী ব্যবহারিত হচ্ছে ভার্চুয়াল অফিস বা হোম অফিস। অফিস বলতেই আমরা বুঝি একটি পরিশীলিত কাজের পরিবেশ যেখানে মানুষ মানুষের সাথে মিলে কাজ করবে। কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারনে আমরা অনেকেই আমাদের সেই চিরাচরিত অফিসে যেতে পারছিনা যার ফলে অনেকেই আজ তার বাড়িকেই অফিস বানিয়ে ফেলেছেন। শুরুতেই যে ভূমিকা দিয়ে শুরু করেছিলাম আমার ফুটবল ক্লাবের সাথে যুক্ত হবার গল্প এবং কিভাবে আমি সঠিক সাজসজ্জা, পোশাক এবং মানসিক প্রস্তুতির পরিবর্তনের মাধ্যমে সঠিকভাবে খেলার মধ্যে ঢুকতে সক্ষম হয়েছিলাম। ঠিক একইভাবে আমরা যারা বাসায় অফিস করছি তারা যদি নির্ধারিত সাজসজ্জা, পোশাক, পরিবেশ, উপকরণ এবং মানসিক প্রস্তুতির মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজে যোগ দিতে পারি তাহলে আমাদের মেধাভিত্তিক কাজের অগ্রগতি অনেক বৃদ্ধি পাবে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অধিকাংশ মেধাভিত্তিক কাজ প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করা সম্ভব এবং এটি আমি দায়িত্ব নিয়েই বলতে চাই। তবে তার জন্য প্রয়োজন উন্নত মানাসিকতা। আমার ব্লগের এ পর্যায়ে আমি মেধা ভিত্তিক কাজের সাথে যারা ইতিমধ্যে জরিত আছেন এবং বাসায় বসে কর্মক্ষেত্রের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন তাদের জন্য ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই।

মানসিক প্রস্তুতিঃ

  • এই মুহুর্তে যেহেতু সবাই কোভিড-১৯ নিয়ে চিন্তিত তাই প্রচুর পরিমানে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত খবর মিডিয়ায় উড়ে বেড়াচ্ছে এবং সত্য-মিথ্যা যাচাই করা আমাদের জন্য অনেক সময় কষ্টকর হয়ে যায়। তাই আমি চেষ্টা করি এই সংক্রান্ত খবর বা ব্লগ থেকে নিজেকে দুরে রাখতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি উল্লেখ করে দিয়েছেন। সেগুলো মেনে চলবার চেষ্টা করি। অযথা খবর বা ব্লগের মধ্যে নিজেকে যুক্ত করে উদ্বেগ বাড়াতে চাই না।
  • ইতিবাচক চিন্তা করা অত্যন্ত জরুরী এবং ইতিবাচক চিন্তা করেন যারা তাদের সাথে সম্পর্ক এবং আলাপ আলোচনায় যুক্ত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।
  • দেশ-বিদেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন আর্টিক্যাল প্রকাশ করেছে সেগুলো পড়তে পারলে উন্নত মানসিকতার চর্চাটা কিছুটা সহজ হয় এবং গতানুগতিক ধারার বাইরে কিভাবে কাজ করা যায় তার একটি দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়।

PeopleTalk Online What is Mental Fitness and How Does it Work ...

শারীরীক প্রস্তুতিঃ

মানসিক সুস্থতার পাশাপাশি শারীরীক সুস্থতাও অত্যন্ত জরুরী। এই মুহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হলো ডিসিপ্লিন। “Early to Bed & Early to Rise” এই উক্তিটি সবচেয়ে মূল্যবান। বাসায় বসেই ঘাম ঝড়াবার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্যালোরিকে বার্ন না করে ঘুমাতে না গেলেই ভালো। ঘরে বসে কিভাবে সহজেই ঘাম ঝড়াতে হয় তার অনেক পরামর্শ ইউটিউবে বা গুগলে আছে। ভালোভাবে দেখে এবং এই বিষয়ে অভিজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে শুরু দেয়া যেতে পারে। আমি যে কাজটি করেছি তা হলো একজন চিকিৎসক বন্ধুর সাথে আলোচনা করে আমার শারীরীক সুস্থতার জন্য একটি চার্ট তৈরি করে নিয়েছি।

Employee Engagement Archives - Gympass | Blog

হোম অফিস স্থাপনঃ

  • আমাদের এখন অনেকেরই বাসায় বসে কাজ করতে হচ্ছে। আমরা বাসার বিভিন্ন জায়গায় বসে কাজ করছি। কেউ বিছানাকেই বানিয়ে ফেলেছেন অফিস। কেউবা লিভিংরুমের সোফাতেই চালাচ্ছেন অফিসের কাজ। শুরুর দিকে আমিও তাই করেছি এবং ধীরে ধীরে যখন বুঝতে শুরু করলাম এটিই হবে নিউ নরমাল যেখানে কিছু কাজ হবে বাড়িতে এবং কিছু কাজ হবে কর্মক্ষেত্রে (হাইব্রিড মডেল), তখন একটি নিদৃষ্ট জায়গা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করলাম। আমার কাছে মনে হয় অফিসের কাজের জন্য কর্মক্ষেত্রের অনুভুতি পাওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। সেজন্য ঘরের যেকোন একটি অংশকে বানিয়ে ফেলতে পারেন আপনার হোম অফিস এবং বাড়ির সবাইকে মনে করিয়ে দিতে পারেন যে বাড়ির এই অংশটি আপনার হোম অফিস। সবাই যেন সতর্ক থাকে আপনার কাজের পরিবেশ ঠিক রাখবার জন্য।

হোম অফিস উপকরণঃ

  • মনে রাখতে হবে আপনার কর্মক্ষেত্রের আদলেই হতে হবে আপনার হোম অফিস (যদি সম্ভব হয়)। তার মানে একটি টেবিল থাকবে যার উপর আপনি আপনার ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ রাখবেন।
  • একটি চেয়ার যেটি আপনার ব্যাক পেইন হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
  • টেবিলের উপর আপনি চাইলে একটি টেবিল ল্যাম্প রাখতে পারেন যেটি আপনার ফেসলাইট হিসেবে ব্যবহারিত হবে। পাশাপাশি পড়তেও আপনাকে সাহায্য করবে। এখন যেহেতু আমাদের প্রায়ই ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নিতে হয় তাই ফেসলাইট অনেক কাজে আসে এবং প্রফেশনালিজম প্রকাশ করে। সাথে একটি ফাইল কেবিনেট থাকলে ভালো হয়।
  • অফিসের প্রয়োজনীয় সকল কিছুই আসলে আপনার টেবিলের উপর থাকবে যেমন মোবাইল, চার্জার, কলম, খাতা ইত্যাদি। টেবিলের উপর আপনি চাইলে একটি মানিপ্ল্যান্ট রাখতে পারেন বা আমি অনেককে দেখেছি ছোট এ্যাকুরিয়াম রাখতে। এটি আপনার মনকে সজীব করতে সাহায্য করবে।
  • মনে রাখতে হবে কর্মক্ষেত্রে নিজের অবস্থানকে মজবুদ করতে উপরের আয়োজনগুলো জরুরী। তাই সম্ভব হলে এই প্রাথমিক বিনিয়োগ করতে হবে। উপরের কোন কিছুই যদি সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত ঘরের টি-টেবিল, একটি চেয়ার এবং ঘরের একটি অংশকে নির্ধারিত করে শুরু দিন আপনার অফিসের আদলে স্থাপিত হোম অফিস।

17 Items You Need to Set up an Efficient Home Office

হোম অফিস সাজসজ্জা ও পোশাকঃ

আমি একদিন আমার হোম অফিসে বসে কাজ করছিলাম এবং বিদেশী একটি প্রতিনিধি দলের সাথে ভার্চুয়াল মিটিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক যথা সময়ে মিটিংয়ে অংশ নিলাম। হঠাৎ মিটিং যিনি হোস্ট করছিলেন তিনি সবাইকে বললেন আপনারা যার যার ওয়েবক্যাম অন করুন এবং পরিচয় দিন। আমিতো একদম অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। আমি অফিসের পোশাকে ছিলাম না। তো আমি বাধ্য হয়েই অফিসের পোশাক (শার্ট এবং প্যান্ট) এবং সাজসজ্জা করে ওয়েবক্যাম অন করে মিটিং সম্পন্ন করলাম। কিন্তু তারপর মনে হলো অন্য ধরনের একটা অনুভুতি পেলাম। সত্যিকারের অফিসে বসলে যেমন মাথায় নতুন নতুন ধারনার জন্ম নেয় ঠিক তেমনই অনুভুতি কাজ করছিল। তারপর থেকে সকালে হোম অফিসে যোগ দেবার আগে আমি আমার পোশাক (শার্ট এবং প্যান্ট) এবং সাজসজ্জার (চুলটা অন্তত ঠিক রাখা) বিষয় নিশ্চিত করি। এটি একধরনের মানসিক সংযোগ আপনার হোম অফিসের সাথে।

Efficient Virtual Collaboration | Smart Meetings

হোম অফিস হার্ডওয়্যার/সফ্টওয়্যার

  • অবশ্যই আপনাকে ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ ব্যবহার করতে হবে কারন অনেক মেধা ভিত্তিক কাজ ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ ছাড়া সহজ হবে না। ল্যাপটপ বা ডেক্সটপে অবশ্যই সাউন্ড এবং ওয়েবক্যাম থাকতে হবে।
  • ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
  • স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ সাথে সংযোগ তৈরি করতে হবে। স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ কিভাবে স্মার্টলী ব্যবহার করা যায় তার অসংখ্য ভিডিও ইউটিউভে আছে, আপনার দেখে নিতে পারেন।
  • কয়েকটি এ্যাপ্লিকেশন অত্যন্ত জরুরী যেমন ক্রোম ব্রাউজার (অনেক এ্যাপ্লিকেশনের চাহিদা গুগল ক্রোম), ওয়াটসএ্যাপ, জুম, বিজয় বা অভ্র (বাংলায় লিখবার জন্য) ইত্যাদি। এছাড়া যার যার পেশা ভিত্তিক সফ্টওয়্যার তো থাকবেই।
  • গুগল আপনার জন্য অনেক বড় একটি রিসোর্স। আপনাকে খুব ভালো জানতে হবে জিমেইলের ব্যবহার, গুগল ড্রাইভের ব্যবহার, গুগলের মাধ্যমে ফরম তৈরি, গুগল ফ্রি ওয়েবসাইট, গুগল ক্যালেন্ডার, গুগল ডক, শীট, এবং স্লাইড ইত্যাদি। মাত্র বছরে ১৬০০ টাকা খরচ করলেই আপনি পেতে পারেন ১০০ জিবি ক্লাউড স্টোরেজ।
  • ফেসবুক বা লিংকডইনের মাধ্যমে আমরা এতোদিন শুধুমাত্র ছবি বা ভিডিও দেখতাম বা আপলোড করতাম। এখন আমাদের এই টুলসগুলোকে ব্যবহার করে মেধাভিত্তিক কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
  • একজন সাধারন প্রফেশনাল হিসেবে আপনাকে অবশ্যই অতিসাধারন কিছু এডিটিং জানাটা অত্যন্ত জরুরী। এটি আপনাকে পরনির্ভশীলতা থেকে পরিত্রান দেবে। সেজন্য ইউটিউভের মাধ্যমে ইলাস্ট্রেটর এবং ফটোশপের কিছু সাধারন কাজ শিখে নিতে পারেন। এছাড়া ভিডিও এডিটিংয়ের উপরও রয়েছে অনেক ভিডিও। আপনাকে শুধু একটি প্রশ্ন করতে হবে ইউটিউভকে।
  • এছাড়া কেউ যদি খুব ভালো করে মাইক্রসফ্ট ওয়ার্ড, এক্সেল এবং পাওয়ারপয়েন্ট এবং গুগলকে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে তার অন্তত ৫০ ভাগ মেধাভিত্তিক কাজ ভার্চুয়ালী করা সম্ভব।

ভার্চুয়ালী মেধাভিত্তিক কাজ করার কথা মাথায় এলেই অনেকেই মনে করেন লক্ষাধিক টাকার বিনিয়োগ। আসলে আমাদের হাতের কাছে থাকা অতি সাধারন এ্যাপ্লিকেশন বা সফ্টওয়্যার দিয়েই আমরা আমাদের দৈনন্দিন কর্মকান্ড খুব সহজেই চালিয়ে নিয়ে যেতে পারি। প্রয়োজন শুধুমাত্র উন্নত মানসিকতার অনুশীলন এবং হাতের কাছে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু অতি সাধারন টুলস যা আমরা অপ্রয়োজনে ব্যবহার করেছি এতোদিন।

জেনে নিন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট শেখার পাঁচটি সহজ উপায়

জেনে নিন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট শেখার

পাঁচটি সহজ উপায়

বিদ্যার কায়দা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েছে, হচ্ছে। সক্রেটিস এবং প্লেটোর সময়ে পেরিপেটেটিক দার্শনিকরা হেঁটে হেঁটে দর্শনের আলোচনা করতেন শিষ্যদের সঙ্গে। মহাভারতের একলব্য দ্রোণকে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি সমর্পণ করেছিলেন যুদ্ধশাস্ত্র শেখার গুরুদক্ষিণা হিসেবে।

সময়ের পেন্ডুলাম এগিয়ে চলল, গুরু গেল পাল্টে। দেয়াল হল চারটে। দেখতে দেখতেই ঔপনিবেশিক শিক্ষাকে সাদরে গ্রহণ করলাম আমরা। আবার সেই ঔপনিবেশিক শিক্ষাকেই ছুঁড়ে ফেলে, চার দেয়ালের শিক্ষাকে ধীরে ধীরে বর্জন করছে জ্ঞানপিপাসুরা। তাই আজ খোলা প্রাঙ্গণে এক বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা পাল্লা দিচ্ছে অন্যান্য বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। উদ্দেশ্য- নতুনত্বের খোঁজে সবরকমের ব্যারিকেড ভেঙে জ্ঞান আহরণকারীদের প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎ করানো। স্কুল-কলেজের ইভেন্ট তেমনই একটি প্রয়াস। যেখানে যৎসামান্য সিলেবাসের বাইরে এসে নিজের যোগ্যতার অগ্নিপরীক্ষার মাধ্যমে সবাই ঝুলি ভরে নিয়ে যায় অনেক অভিজ্ঞতা, কিছু ব্যর্থতা, কিংবা জয়ের গল্প।

তবে ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা বাদেও সরাসরি একটি ইভেন্ট পরিচালনা করা কারিগরি, অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষার একটি বড় অংশ। আমি যখন তৃতীয়-কি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র, তখন দেখতাম স্কুলের বড় ভাইদের কালো টি-শার্ট, গলায় আইডি কার্ড এবং হাতে ওয়াকি-টকি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন এবং চিন্তিত থেকে সম্ভবত সাত-আটটি কাজ একসাথে সামলাচ্ছেন। সেই থেকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের প্রতি আমার প্রথম আগ্রহ জেগে ওঠে। বাংলাদেশে স্কুল-কলেজ পর্যায়ের ইভেন্টেগুলোকে গোটাকয়েক বছর আগেও বেশিরভাগ কোম্পানি, ব্যাংক গুরুত্বের চোখে দেখেনি। তবে ইদানীং বেশ বড় বাজেটে, অনেক মানুষের উপস্থিতি প্রত্যাশা করে বিশ্বমানের ইভেন্ট চলছে দেশের- বিশেষ করে ঢাকার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠগুলোতে।

একটি ইভেন্ট সাজানো এবং পরিশেষে পরিচালনা করা চাট্টিখানি কথা নয়। অবিরাম পরিশ্রম, বিনিদ্র সময় এবং বেশ কিছু পরিচালকদের দ্বারা পরিচালিত একটি ইভেন্টে অনেকসময় কিছু ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে। প্রায় তিন বছরে আটটি ইভেন্ট প্রতক্ষ্যভাবে পরিচালনা করার পর আমি কিছু ভুলভ্রান্তি ও অবজ্ঞার বিষয়গুলির ইন্টারেস্টিং প্যাটার্ন পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছি। এখন যা বলব, ধরে নেবে এই ভুলগুলো আমি ও আমার সহপাঠীরা বেশ কয়েকবার করেছি এবং সত্য বলতে বেশ সময় লেগেছে আমাদের এ নিয়ে টনক নড়তে।

দলগঠনের কিছু বিবেচ্য দিক

হুম, ইভেন্ট পরিচালনা করা একটি দলগত কাজ। আর এই সহজ ব্যাপারটিকে ঘিরেই যত বাজে প্রস্তুতি হয়ে থাকে। তুমি যদি দলনেতা হও, প্রথমত একজন-কি দুইজন সাথে রাখবে যাদেরকে তুমি যেকোনও কাজ দিয়ে ভরসা করতে পারো। এটা প্রথম পদক্ষেপ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্বজনপ্রীতি বেশ ভয়ংকর। অতএব বলে রাখি, ইভেন্ট পরিচালনা করা মাত্রই বন্ধুত্বকে সরিয়ে রাখতে হবে। কারণ, তুমি তখন একটি বড় উদ্দেশ্য হাতে রেখে কাজে নামছো যেখানে প্রত্যেককেই যার যার কাজে পারদর্শী হতে হবে।

আমি যখন সর্বপ্রথম ইভেন্টটি আয়োজন করি তখন আমার দলে প্রত্যেকেই ছিল আমার অত্যন্ত কাছের বন্ধু। তারা কেউ আদৌ কাজ করতে পারবে কিনা, পারলেও কতটুকু করতে পারবে, কীভাবে করবে- এগুলো নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আমি দল গঠন করেই যাচ্ছিলাম। যার প্রতিফলন হয় ভয়াবহ। মোদ্দা কথা, ওই ইভেন্টটি ছিল রীতিমতো যাচ্ছেতাই। কয়েকদিন কী ভুলগুলো করেছি ভাবতে ভাবতে বুঝে যাই ভুলটি সমানতালে প্রত্যেকেরই ছিল যারা নিজেদের কাজ নিয়েই বিশেষ কিছু জানত না।

এমন একটি দল গঠন করো যেখানে সবাই আত্মবিশ্বাসী এবং দলগত কাজে বিশ্বাসী। দলগঠন ইভেন্টের তারিখ থেকে কমপক্ষে ৬-৭ মাস আগে হতে হবে। দলগঠনের জন্য অবশ্যই, অবশ্যই উক্ত ক্লাবের মডারেটরকে সাথে রাখবে। নতুবা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আমি আমার ব্যক্তিগত জায়গা ছাড়াও অনেক ইভেন্ট দেখেছি যেখানে অসংখ্য ভলান্টিয়ার, ইভেন্ট পরিচালকরা কাজ করছে। তারা সংখ্যায় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় দায়িত্ব পালন করছে এবং বাকিরা আনন্দ করছে দর্শকদের মতো। হাস্যকর, তবে সত্যি।

ইন্টারভিউ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ এই অর্থে, যে একটি দলের বিভিন্ন কাজ, যেমন পাবলিকেশন, ভবনের ফ্লোর-ইনচার্জ, প্রশ্নপত্র তৈরি, ফলাফল লিপিবদ্ধকরণ, আইটি দল ইত্যাদি সার্কাসের দড়িতে ভারসাম্যের খেলা দেখানো লোকটির মতো। একটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেললেই খেলার সমাপ্তি। কাজেই অনভিজ্ঞ মানুষের একটি দলে কোনও স্থান নেই। প্রত্যেককে হতে হবে অভিজ্ঞ, আগ্রহী এবং দলনেতা হিসেবে সবার ভেতরে ক্রিয়েটিভ জিনিয়াস অত্যবশ্যক একটি খোঁজ হবে তোমার জন্য।

কমিউনিকেশন গ্যাপ

ভেবে দেখ, একটি দলের সবাই যখন চারিদিকে মাথার ভেতরে অনেকগুলো উদ্দেশ্য, কাজ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে, তখন একে-অপরকে দেখার সুযোগ খুব সামান্যই। ইভেন্টে অনেকসময় ভুল হয়, সবকিছু সবসময় আশানুরূপ হয় না। ফলে ব্যাক-আপের প্রয়োজন হতেই পারে। ফলে ইভেন্ট পরিচালনার সর্বক্ষণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে কমিউনিকেশন। আর এখানেই নির্ভর করে একটি ইভেন্ট সফল হবে কি হবে না।

প্রত্যক ডিপার্টমেন্ট বা সেক্টর অন্য সব সেক্টরের সাথে ইন্টারকানেক্টেড। যেকোনও সময় এক ডিপার্টমেন্টের পরিচালকের অন্য ডিপার্টমেন্টের পরিচালককে দরকার হতে পারে। যেমন- যে প্রশ্নপত্রের ব্যাপারটি দেখছে, তার সাথে সব ফ্লোর ইনচার্জের যোগাযোগ থাকা প্রয়োজন হতে পারে।

আমার প্রথম ইভেন্ট ছাড়াও অধিকাংশ ইভেন্টে আমি দেখেছি একেকজন ম্যানেজারদের মধ্যে একপ্রকার অস্থিরতা, অসংলগ্নতা কাজ করে যেন অনুষ্ঠানের সবকিছু তছনছ করে ভেঙে পড়েছে। কেউ কেউ একে-অপরকে খুঁজে বেড়াচ্ছে আসল কাজটি নিজ অজান্তেই ফেলে রেখে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ রিপোর্ট করতে পারছে না। একজন বলছে অমুককে খুঁজে দাও, আবার তমুক বলছে ওই মানুষটিকে আমার অমুক বার্তা দিয়ে এসো। এভাবে দেখা যায় একটি বিরাট কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়ে দাঁড়ায়। সমাধান- ওয়াকি টকি। তবে এখানেও কিছু ব্যাপার আছে। ওয়াকি-টকিতে কথা বলারও একটি নির্দিষ্ট ভাষা আছে। ভঙ্গি আছে। কিছু নিয়ম আছে যা আমরা অনেকেই জানি না। একে রেডিও কমিউনিকেশন (Radio Communication) বলা হয়।

ওয়াকি-টকি এখন বেশ অল্প অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করা যায়। আগের মতো এগুলো এতটা ব্যয়বহুল নয়। আমি প্রায়ই লক্ষ করি স্কুল-কলেজ পর্যায়ে যারা ইভেন্ট চলাকালীন ওয়াকি-টকি ব্যবহার করে, তারা একদমই প্রফেশনাল রীতিতে তা ব্যবহার করে না। এতে অবশ্য তাদের কোনও দোষ নেই। একজন দলনেতা হিসেবে তোমাকে অবশ্যই ওয়াকি-টকিতে যোগাযোগ করার পন্থাগুলো, নিয়ম বা রীতিগুলো সবার সামনে খোলাসা করতে হবে। এজন্য ইভেন্ট শুরু হবার ২-৪ দিন আগে ম্যানেজিং দলের জন্য রেডিও কমিউনিকেশন ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করতে হবে।

ওয়াকি-টকি ব্যবহারের একটি অসুবিধা হল যখন একজন এতে কথা বলে, বাকি সব ওয়াকি-টকিতে তখন কথা বলা যায় না। অর্থাৎ একবারে শুধু একজনই কথা বলতে পারে আর তখন বাকিরা কেবল শুনতে পায়। কিন্তু ঠিক ঐ মুহূর্তে যদি মাইক্রোফোন বোতামে কেউ চাপ দিয়ে বসে, এতে তখন যে কথা বলছে তার লাইনটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। কাজেই রেডিও কমিউনিকেশন ফোনের মতো নয়। এর যোগাযোগ করার নিয়ম সম্পূর্ণ আলাদা। একটা ধারণা দিই। ওয়াকি-টকিতে শব্দ ফোনের তুলনায় কিঞ্চিৎ অস্পষ্ট। ফলে বিস্তারিতভাবে কথা বলার সুযোগ নেই। এখানে অল্প শব্দ এবং কিছু কোড ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে কথা বলতে হয়। সাধরণত রেডিও কমিউনিকেশন হয় ইংরেজি ভাষায়।

10–20: এর অর্থ “তুমি এখন কোথায়?’। এক্ষেত্রে বার্তাটি হবে ‘What’s your 10-20?’
10-1: এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে ‘আমি তোমার কথা বুঝতে পারছিনা।’
10-27: এর মাধ্যমে তুমি তোমার দলকে জানাচ্ছো যে তুমি তোমার স্থান পরিবর্তন করছো বা এক স্থান হতে আরেকটি স্থানে যাচ্ছো।
Affirmative/Negative: ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ এর রেডিও কোড।
Do you copy? অথবা ‘copy that’ এর মানে অনেকেই জানো। এর অর্থ ‘তুমি কি আমার কথা ঠিকঠাক বুঝতে পারছো?
Roger: এটি হল ‘copy that’ এর উত্তর। যার অর্থ ‘হ্যাঁ, আমি বুঝতে পেরেছি।’
Over এবং Over and out: কাছাকাছি হলেও দু’টির অর্থ কিছুটা ভিন্ন। ‘Over’ অর্থ তোমার কথা সাময়িকের জন্য শেষ এবং তুমি অপরের রিসপন্ড পাওয়ার জন্য তৈরি। ‘Over and out’ অর্থ তোমার কথা বলা শেষ এবং তুমি কাজে লেগে পড়েছো। এখন তুমি ওয়াকি-টকির সংস্পর্শে নেই।
এছাড়াও অসংখ্য কিছু কোড আছে যেগুলো তোমাদের কমিউনিকেশন গ্যাপের ফাঁদ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। মনে রাখা জরুরি, Communication is the key.

ইভেন্টের বিজ্ঞাপন দেয়া

একবার ঢাকার একটি স্বনামধন্য কলেজের ইভেন্টে গিয়ে চমৎকার অভিজ্ঞতা হয় আমার। জীবনে এই প্রথম এমন একটি ইভেন্টে গিয়েছিলাম যেখানে আমি দেখি কেবল কিছু ইভেন্ট পরিচালকদের ও একজন জেনিটরকে, তিনি কাজ না পেয়ে রাগ ভৈরবে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। দর্শনার্থী ছিলেন বড়জোর দশ থেকে বিশজন- বিরাট ক্যাম্পাসে খালি চেয়ারের সারির কয়েকটিতে বসে আছেন আর সময় গুনছেন। হ্যাঁ, রীতিমতো টর্চার।

পরে জানা যায় এই ইভেন্ট সবদিক দিয়ে সুন্দর হতে পারতো। কিন্তু মিস্টেক হয়ে গেছে! কেউ এই ইভেন্টটি মার্কেট করেনি। বিজ্ঞাপন দেয়নি। ফলে কেউ জানেই না এখানে একটি ইভেন্ট চলছে। আসল কথা হল একটি কোম্পানি তোমার এই ইভেন্টের ওপর তাদের অর্থ বিনিয়োগ করেছে। নিজেদের বিজ্ঞাপন দেখানোর একটি পথ হিসেবে তারা তোমার অনুষ্ঠানটিকে বেছে নিয়েছে। ফলে সেই কোম্পানির কাছে তুমি দায়বদ্ধ। তাদের টার্গেট মার্কেটের কাছে পৌঁছানো তোমার কর্তব্য। এজন্য তোমাকে অবশ্যই অনেক, অনেক বেশি মানুষ জড়ো করতে হবে তোমার অনুষ্ঠানে।

আজকাল ইভেন্ট মার্কেট করার কিছু ধ্রুপদী পন্থা; যেমন: পোস্টার, ব্যানার ইত্যাদি বাদেও সোশাল মিডিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে ইভেন্ট ব্র্যান্ডিং এর সবচেয়ে কার্যকরী পথ। তাও অনেকে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক মানুষের কাছে তাদের ইভেন্টের বার্তা পাঠাতে অক্ষম হয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজন মিডিয়া পার্টনারের। কোনও পত্রিকা বা রেডিও চ্যানেল এবং সবচেয়ে ভাল হয় টেলিভিশনে নিজেদের ইভেন্টের সবকিছু আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরা। এছাড়াও বেশ সৃজনশীল কিছু উপায়ে তুমি বিজ্ঞাপন চালিয়ে যেতে পারো।

  • ফেসবুকে এখন ইভেন্ট পেইজ খোলা হয়। সবচেয়ে গতানুগতিকভাবে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় শেয়ার করার মাধ্যমে। এর প্রয়োজন আছে। তবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে এই ইভেন্ট পেইজটি মনেটাইজ করা। অর্থাৎ অর্থ দিয়ে বিজ্ঞাপনের দায়ভারটি ফেইসবুকের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া। অর্থের বিনিময়ে যেকোনও পেইজের বিজ্ঞাপন দেয়া যায়। ইভেন্ট বাজেটের একটি অংশ এই বিজ্ঞাপনের জন্য বরাদ্দ থাকবে। ফেসবুক তোমার ইভেন্টের টার্গেট মার্কেটের কাছে অতি অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে পারবে।
  • যেমন: তুমি চাও ‘Dhaka, Bangladesh’ এর অমুক ২৫টি স্কুল থেকে মানুষ আসুক তোমার ইভেন্টে। ফেইসবুকে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ প্রদানের ফলে উক্ত ২৫টি স্কুল যাদের ফেইসবুক টাইমলাইনে, education-এ দেয়া আছে, তাদের সকলের নিউজ ফিডে চলে যাবে। তারা সবাই তোমার ইভেন্ট পেইজটি দেখতে পারবে। এছাড়া নিজস্ব হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে পারো।
  • ব্যান্ড পারফরম্যান্স সবাইকে একটিইভেন্টে আসতে অনেকাংশেই বাধ্য করে। ফলে কনসার্ট আয়োজন করে দেখতে পারো। যদিও এটি বেশ ব্যয়বহুল। তবুও ব্র্যান্ডিং-এর জন্য এর থেকে ভাল কোন পথ ভাবা যায় না। যেসকল পাবলিক স্পিকাররা বা প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ সেখানে থাকবেন, তাদের উপস্থিতি ইভেন্ট পেইজে জানিয়ে দাও। এছাড়াও উক্ত ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত সোশাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকেও তা জানিয়ে দিতে বলো। এতে সবাই আরো আগ্রহী হবে।
  • প্রোমো ভিডিও তৈরি করো। ভিডিও এর একটি সুবিধা হলো এটি সবখানেই শেয়ার করা যায়। প্রোমো ভিডিও অনেকটা একটি ছবির ট্রেইলারের মতো। কী হতে যাচ্ছে তার একটি ঝলক, একটি ধারণা দেয়ার জন্যে। অবশ্যই, ভিডিওটি ইন্টারেস্টিং হতে হবে।

ভিজিটরদের জন্য একটি সহজবোধ্য অনুষ্ঠান

তোমার ইভেন্ট পেইজে তুমি আগেই সব জরুরি তথ্য দিয়ে রেখেছো। সবাই তা করে বটে। তবে যারা আসে, তারা প্রত্যেকেই এই তথ্যের ব্যপারে ওয়াকিবহাল নয়। ফলে এটি প্রায় প্রত্যেকটি ইভেন্টেই দেখা যায়, যে ভিজিটররা এসে ভলান্টিয়ারদেরকে, অথবা ম্যানেজারদেরকে এটা-ওটা জিজ্ঞেস করছে। কিন্তু সমস্যাটা এখানেই, তখন অনেক ভলান্টিয়াররা ইভেন্ট সম্পর্কে সবকিছু জানে না। আমতা আমতা করে তারা ভিজিটরদের এড়িয়ে যায়। এটাও এক ধরনের কমিউনিকেশন গ্যাপ।

ইভেন্টে একটি বা কয়েকটি রেজিস্ট্রেশন বুথ থাকে। সাধারণত দুইজন প্রতিটি টেবিলে রেজিস্টারের কাজ করেন। কিন্তু তুমি সেখানে একজন বেশি বসিয়ে রাখতে পারো যে কোন ইভেন্ট কখন হবে, কত নম্বর ফ্লোরে, কত নম্বর রুমে হবে, কোথায় রেস্টরুম, যাবতীয় তথ্য প্রদান ছাড়াও ভিজিটরদের অনুষ্ঠান বিষয়ক যেকোনও সমস্যা সমাধান করে দেবে। এবং প্রয়োজনে উক্ত ভিজিটরকে সাহায্য করার জন্য ভলান্টিয়ার পাঠিয়ে দিবে। অতএব, যে এই তথ্যগুলো প্রদান করবে, তার অধীনে কমপক্ষে তিনজন ভলান্টিয়ার থাকবে যারা সময়ের সাথে সাথে প্রদত্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা রিপোর্ট করবে।

তার মানে এই নয় যে সবাই রেজিস্ট্রেশন বুথেই আসবে তাদের নানারকমের প্রশ্ন নিয়ে। ভেন্যুর দেয়ালে দেয়ালে সব তথ্য বাদেও প্রত্যেক ম্যানেজার ও ভলান্টিয়ারের সেদিনের অনুষ্ঠানে কী কী হচ্ছে, সেই স্পষ্ট ধারণা থাকা চাই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভিজিটরদের একটি সহজবোধ্য, সংশয়হীন অনুষ্ঠান উপভোগ করার সুযোগ দেয়া।

প্ল্যান B

ওপেনিং সেরেমনি চালু হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীতদল জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে শুরু করবে অনুষ্ঠান। কিন্তু কে তোমাকে আশ্বাস দেবে যে সঙ্গীতদলের হারমোনিয়াম বাদক ইভেন্টের দিন অসুস্থ হয়ে পড়বে না? কে অভয় দিয়ে বলবে যে ঐদিন ৪টি মাইকের ৩টিই নষ্ট থাকবে না? আমি মোটেও তোমাকে ভয় দেখাচ্ছি না বা ভয়ে ভয়ে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করতে বলছি না। আমরা ভাল করেই জানি যেকোনও সময় যেকোনও কিছু পরিকল্পনার বাইরে হয়ে যেতে পারে। তখন যদি একটি প্ল্যান B না থাকে তবে মুশকিলে তোমাকে পড়তেই হবে।

চল, ধরে নিই সত্যি সত্যিই হারমোনিয়াম বাদক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কিংবা মাইক নষ্ট। তোমার কাছে কি একটি প্রি-রেকর্ডেড জাতীয় সঙ্গীতের অডিও আছে, যা তুমি ঐ অবস্থাতে স্পিকারে শোনাতে পারবে? কারোর কারোর ক্ষেত্রে থাকতে পারে। তবে আমি দাবি করে বলতে পারি অধিকাংশ ইভেন্ট তাড়াহুড়া করে পরিকল্পনা করা হয় বলে অনেক পরিচালকরাই সবকিছুর জন্য প্ল্যান B রাখে না। কোনও ভুল হলে যেখানে তাদের সাথে সাথে একটি সমাধানে পৌঁছানো কথা, সেখানে সমগ্র ইভেন্টটি হয়ে যাচ্ছে বিশৃঙ্খলাপূর্ণ।

আগেই বলেছি, কাজের সব ক্ষেত্রে বা ডিপার্টমেন্ট একটি অপরটির সাথে ইন্টারকানেক্টেড। ডিপার্টমেন্ট প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যকের দু’টি জায়গায় পারদর্শিতা থাকতে হবে। একটি প্রাইমারি এবং পরেরটি সাবসিডারি। অর্থাৎ, প্রথমত তাকে ভাল করে জানতে হবে তার নিজস্ব ক্ষেত্রটি, কাজটি সম্পর্কে। দ্বিতীয়ত তাকে বিকল্প একটি কাজও জানা চাই। সম্ভাবনা আছে, যে ইভেন্টে কোনও এক ডিপার্টমেন্ট এর পরিচালক তার কাজের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে এবং এখন তার ব্যাক-আপ প্রয়োজন যা কেবল ভলান্টিয়ার দিয়ে সম্ভব না। ফলে তার প্রাইমারি কাজের সাথে অন্য যে পরিচালকের সাবসিডারি কাজ মিলে যাবে, সে এগিয়ে আসবে অনুষ্ঠানটিকে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচিয়ে তোলার জন্য।

জরুরিভিত্তিতে বাহির হবার পথ নিশ্চিত করা

এমনটি না হোক, তাই কাম্য। তবুও বিবেচনায় রাখবে সেই সকল বিপদের আশঙ্কাগুলো এবং তখন তোমার পদক্ষেপগুলো। দুর্ঘটনাবশত ইভেন্টে অগ্নিকান্ড হতে পারে, ভুমিকম্প হতে পারে, ঘূর্ণিঝড় ছাড়াও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে ইভেন্টে একটি বীভৎস পরিস্থিতি হয়ে যেতে পারে। তাই এই ধরণের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সকল ভিজিটরের সেইফটি। দেয়ালে দেয়ালে জরুরিভিত্তিক বাহির হবার পথ দেখানো থাকা চাই যাতে প্রত্যকেই নিজ নিজ দায়িত্বে তাদের প্রাণ রক্ষা করতে পারেন। এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি অনেক বেশি অবহেলিত।

ভিজিটরদের মূল আকাঙ্ক্ষা একটি ইন্টারেস্টিং ইভেন্ট যেখানে তারা কিছু সময় উপভোগ করতে পারে। ভিজিটরদের আনন্দ উদ্ভাসিত না হলে ঐ ইভেন্টের এককভাবে কোনও গুরুত্ব নেই।

Reference

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

ডিজিটাল মার্কেটার হতে চাইলে যা যা করণীয়

ডিজিটাল মার্কেটার হতে চাইলে যা যা করণীয়

ব্যবসায় সাফল্য লাভের মূল একটি মন্ত্র হলো ঠিকভাবে ব্যবসার প্রচারণা করা। কথায় আছে না, প্রচারেই প্রসার। ব্যবসার প্রসার তখনই হবে যখন এর প্রচারণা ঠিকমতো হবে। ব্যবসা বাণিজ্যের শুরু থেকেই প্রচারণার ব্যাপারটি সাথে জড়িত আছে। তবে আধুনিকতার জুগে এই প্রচারণার ব্যবস্থাটিও হয়ে উঠেছে আধুনিক। আধুনিক তো হতেই হবে। পুরনো জিনিস জনসাধারণ আর কতো দেখবে? প্রচারণার এই আধুনিকতার নাম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।

এর মানে হলো যোগাযোগ মাধ্যমের সকল প্রকার আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে ইন্টারনেটের সুবিধা নিয়ে কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা চালানো। এখানে আধুনিক প্রযুক্তির মধ্যে মোবাইল ফোন, রেডিও, টেলিভিশন কিংবা ডিসপ্লে আছে এমন যেকোনো কিছুই অন্তর্ভুক্ত। ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক ধরণ ও প্রকারভেদ রয়েছে এবং তা নির্ভর করে কোন ধরণের প্রচারণার জন্য এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। উপরের কথা মতো যে কেবল ব্যবসার প্রসারের জন্যই মার্কেটিং করতে হয় তা কিন্তু না।

এই ২০১৯ সালে যেকোনো ধরণের সেবা প্রদান কিংবা নতুন কিছু শুরু করার জন্য চাই এর ভালোমতো প্রচারণা করা। হোক সেটি কোনো অনুষ্ঠান কিংবা প্রতিযোগিতার প্রচারণা অথবা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা। আর যেহেতু সময়টি এখন ডিজিটাল, তাই প্রচারণার মাধ্যমটিও হওয়া চাই ডিজিটাল। আমরা টেলিভিশনে যতো অ্যাড দেখি, সোশ্যাল মিডিয়াতে যতো অ্যাড দেখি, মোবাইলে গেইম খেলার সময় যতো অ্যাড দেখি তার সবই ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধারণাটিকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য একজন মার্কেটারকে অবশ্যই বেশ কিছু ব্যাপারে দক্ষ হতে হবে। তার আগে ডিজিটাল মার্কেটিং এর পূর্বসূরি অ্যানালগ মার্কেটিং এর ব্যাপারে একটু জেনে নেই। ডিজিটাল মার্কেটিং এ আমরা ঘরে বসেই নতুন কোনো পণ্যের ব্যাপারে বা কোনো সংগঠনের ব্যাপারে জানতে পারছি। কিন্তু অ্যানালগ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি ততো সহজ ছিলো না। বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানোর বদলে তখন বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারণা চালাতে হতো। বর্তমানে নির্বাচনের সময় যেমন আমরা দেখি প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট চাচ্ছে ব্যাপারটা অনেকটা সেরকম।

এখানে প্রার্থীরা নিজে উপস্থিত থেকে তার সংগঠনের ব্যাপারে সবাইকে জানান দেয়। এখানে তারা চায় ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটাকে গড়ে তুলতে। অ্যানালগ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে দিলেই একসাথে কয়েক হাজার কিংবা কয়েক লাখ মানুষ জেনে যাচ্ছে। কিন্তু অ্যানালগ মার্কেটিং এ এক জনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে সেই একজনের মাধ্যমে আরো ১০ জনের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। এজন্য এখানে ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পর্ক ধরে নিজের প্রচারণার জন্য একটি কার্ড বা লিফলেট সবাইকে দেয়া হয়, যেখানে ব্যক্তির পরিচয় এবং তার ঠিকানা দেয়া থাকে। নতুন কোনো সিনেমা বের হলে দেখা যায় এলাকায় এলাকায় পোস্টারিং করা হচ্ছে এবং খবরের কাগজেও এর পোস্টার ছাপা হচ্ছে। এগুলো সবই অ্যানালগ মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত।

মার্কেটিং এর জন্য ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ –

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, ডিজিটাল মার্কেটিং এসে কি অ্যানালগ মার্কেটিং কে সরিয়ে দিয়েছে? উত্তর হলো, না। ডিজিটাল মার্কেটিং এসে অ্যানালগ মার্কেটিং এর কাজটি আরও সহজ করে দিয়েছে। আগে যেখানে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিজের প্রচারণা চালাতে হতো কিংবা লোকজনের কাছে নিজের পরিচয়ের একটি কার্ড বিলি করতে হতো প্রচারণার জন্য, সেখানে আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো একটি পোস্ট কিংবা কোনো প্রকার অ্যাডভার্টাইজম্যান্টের মাধ্যমেই নিজের পরিচয় জানান দেয়া যায়।

বাংলাদেশে এখনও অনেক জায়গায় সাধারণ বিলবোর্ডের মাধ্যমে মার্কেটিং করতে দেখা যায়। এটি কিন্তু এক প্রকার অ্যানালগ মার্কেটিং। কিন্তু নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে কিংবা জাপানের টোকিও শহরে তো বিলবোর্ডের ছড়াছড়ি। এতো আধুনিক দেশ কিন্তু এতো পুরনো পদ্ধতিতে মার্কেটিং করছে কেনো? আসলে তাদের সবকটি বিলবোর্ডে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া। তারা তাদের প্রায় সবকটি বিলবোর্ডে ডিসপ্লে স্ক্রিন ব্যবহার করে। মার্কেটিং সফল হওয়ার পিছনে মূলমন্ত্র হলো তুমি দর্শককে কতটুকু আকৃষ্ট করতে পারছেন। তোমার অ্যাডভার্টাইজিং যতো বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হবে, দর্শক ততো বেশি আকৃষ্ট হবে।

এখন কথা হলো ডিজিটাল মার্কেটিং কি আমরা সবজায়গায় করে বেড়াবো? উত্তর হলো, সব প্রযুক্তি হাতে থাকলেই কি তা ব্যবহার করতে হবে? আগেই বলেছি মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্য হল দর্শককে আকৃষ্ট করা। দর্শকের চোখ যদি একবার তোমার অ্যাডের দিকে ঘুরানো যায়, তাহলে তুমি কী লিখেছ তা সে পড়ে দেখবেই। ধরো তুমি মরুভূমির মাঝে কোনো এক রাস্তার পাশে একটি বিলবোর্ড বসিয়ে তোমার কোম্পানির প্রচারণা করতে চাচ্ছো। এখন মরুভূমিতে মানুষজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কি তুমি ডিসপ্লে বিলবোর্ড বসাবে? মরুভূমির রাস্তা দিয়ে যারা চলে তারা আশেপাশে মরুভূমি ছাড়া আর তেমন কিছুই লক্ষ্য করে না। তাই তুমি যদি খুবই সাধারণ ধরণের একটি বিলবোর্ড বসিয়ে দাও, তাহলে সেটিও মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। অর্থাৎ বর্তমান সময়ে মার্কেটিং বলতে যে তা ডিজিটালই হওয়া লাগবে এমন কোনো কথা নেই। অবস্থান ও পরিস্থিতি ভেদে তা পুরাতন নিয়মেও কার্যকরী করে তোলা যায়।

এবার এক নজরে দেখে নেয়া যাক ডিজিটাল মার্কেটিং কতো প্রকারের হতে পারে এবং সেগুলোর ব্যাপারে একটু বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)

ধরো তুমি একটি অনলাইন বইয়ের দোকান চালু করতে চাচ্ছো। মানুষজন বই অর্ডার করলে তোমার দোকান থেকে সেটি হোম ডেলিভারি দেয়া হবে। এখন কেউ তোমার দোকানের ব্যাপারে জানে না। কারো যদি অনলাইনে বই কিনার দরকার পরে, তখন সে গুগল মামাকে জিজ্ঞাসা করবে “Online Book Shops in Bangladesh”। গুগল মামাও সুন্দর মতো বর্তমান বুকশপগুলোর ব্যাপারে তাকে বলে দিবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ভদ্রলোক সেই শপগুলোর ব্যাপারেই জানবে যেগুলো গুগলের প্রথম পেইজে আছে।

নতুন দোকানের মালিক হিসেবে গুগল তোমাকে চিনতে নাও পারে। তাই গুগল হয়তো তোমাকে প্রথম পেইজে দেখালো না। এখন SEO হলো এমন জিনিস যা গুগলকে বাধ্য করবে তোমাকে সার্চের প্রথম পেইজে নিয়ে আসতে। এজন্য ওয়েব সাইট ডেভলপ করার সময় বেশ কিছু কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়। আবার গুগলকে পে করলে সে নিজেই তোমাকে প্রথম পেইজে নিয়ে আসবে। সেটিকে আবার বলে SEM বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। এছাড়াও SEO এর ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে গেলে অনেক মজার মজার তথ্য পাবে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং

এখন প্রায়ই দেখা যায় যে, বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো অনলাইন পত্রিকায় কিংবা ব্লগ সাইটে প্রোমোশনাল ব্লগ লেখা হচ্ছে। সেই ব্লগ পড়ে মানুষজন সেই প্রতিষ্ঠানে কী রকম সেবা দেয় তা জানতে পারছে। এগুলো হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং। মার্কেটিং এর জগতে নিজের ঢোল নিজে পিটানো তো লাগবেই, সেই সাথে অন্যদের হাতেও ঢোল দিতে হবে একটু পিটিয়ে দেয়ার জন্য। নিজের প্রতিষ্ঠানের সেবার ব্যাপারে মানুষজনকে জানানোর জন্য এরকম মার্কেটিং এখন বেশ কার্যকরী। নিজে লিখতে না পারলে কোনো পেশাদারী ব্লগ লেখককে দিয়েও নিজেদের ব্যাপারে কন্টেন্ট লিখিয়ে নেয়া যায়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

বড় রকমের সম্ভাবনা আছে যে, তুমি এই লেখার লিঙ্কটি প্রথম দেখেছ ফেইসবুকে টেন মিনিট স্কুলের ব্লগ পেইজে। কারণ দিনের একটা বড় অংশ তুমি, আমি এবং অন্য সকলেই সোশ্যাল মিডিয়াতে কাটিয়ে দেই। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান সমাজে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি বড় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে, তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য এটি একটি বড় মঞ্চ সকলের কাছে। কোনো ইভেন্ট কিংবা কোনো পণ্য বিক্রির প্রচারণার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া এখন সকলেই ব্যবহার করছে। এছাড়াও দেখা যায় কোনো ইভেন্টের প্রচারণার জন্য অনেকে এখন প্রোফাইল পিকচারে ফিল্টার হিসেবে ফ্রেম ব্যবহার করে। এগুলোর মাধ্যমেও ইভেন্টের মার্কেটিং করা যায়। পোস্ট শেয়ারিং এবং বুস্টিং এর মাধ্যমে সহজেই মানুষের দ্বারে দ্বারে তোমার প্রচারণা চালাতে পারো।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এ ধরণের মার্কেটিং। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর মূল বিষয় হলো, জনসাধারণের কাছে পরিচিত এবং জনপ্রিয় এমন কাউকে দিয়ে পণ্যের প্রচারণা চালানো। হতে পারে তিনি কোনো বিখ্যাত খেলোয়াড়, সেরা কোনো অভিনেতা কিংবা জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী। মূল কথা হলো এমন কাউকে দিয়ে প্রচারণা করা যার কথা সবাই শুনে এবং বিশ্বাস করে। তখন অনেকের মনে এই ধারণা জন্ম নেয় যে, “আমার প্রিয় তারকা এই পণ্যটি ব্যবহার করে। তাহলে আমিও এই পণ্যই কিনবো।” মূলত এই ধরণের মানসিকতা তৈরি লক্ষ্যই হলো ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং।

ডিসপ্লে অ্যাডভার্টাইজিং

সহজ কথায় এটি হলো বিলবোর্ডের আপগ্রেডেড ভার্সন। আগে বিলবোর্ডে একটি বিশাল বড় ব্যানার টাঙিয়ে প্রচারণা চালানো হতো। আর এখন তা করা হয় ডিজিটাল বিলবোর্ডের মাধ্যমে। বিশাল বড় একটি পর্দায় চাইলে একই সাথে একাধিক পণ্যের প্রচারণা চালানো যায়। বড় বড় শপিং মলগুলোতে এধরণের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। ঢাকা সহ এখন প্রায় সব শহরেই পুরনো বিলবোর্ডের বদলে আধুনিক ডিসপ্লে বিলবোর্ড জায়গা করে নিচ্ছে। দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় সহজেই এটির প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকৃষ্ট করা যায়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

এটি অনেকটা ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর অনুরূপ। তবে এখানে জনসাধারণের পরিচিত মুখ থাকাটা তেমন জরুরি না। ধরো তোমার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে। সেখানে তুমি যা কিছু করো না কেনো, তার জন্য সবসময় নির্দিষ্ট একটি ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহারের কথা উল্লেখ করো। তোমার যদি একটি রান্নার চ্যানেল থাকে, তাহলে সেখানে একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের পণ্য সামগ্রীর ব্যাপারে সবাইকে বলতে পারো। এর বিনিময়ে সেই ব্র্যান্ড তোমাকে একটি সম্মানি প্রদান করে থাকে। এখানে তুমি সেই ব্র্যান্ডের অ্যাফিলিয়েট হিসেবে কাজ করছো। অর্থাৎ, তুমি তোমার কাজের মাধ্যমে সবাইকে সেই ব্র্যান্ডের ব্যাপারে বলছো। অনেক সময় অ্যাফিলিয়েটদের জন্য আলাদা প্রোমো কোড দেয়া হয়, যার মাধ্যমে ক্রেতারা কোনো পণ্যের উপর বিশেষ ছাড় পেতে পারে।

পেপারক্লিক (PPC)

কোনো লিঙ্কে প্রবেশ করলে দেখা যায় পেইজের উপরে, মাঝে এবং নীচে অনেকগুলো অ্যাড থাকে। এগুলোকে বলে Google AdWords। কেউ যদি এসব অ্যাডে ক্লিক করে, তাহলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সেই অ্যাডের মালিকের পক্ষ থেকে পেইজের মালিককে দেয়া হয়। এটির মাধ্যমেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালানো যায়। এক পক্ষের আয় হলো এবং অন্য পক্ষের প্রচারণা হলো।

ভিডিও গেইমস

অনেকেই পড়ে অবাক হতে পারে যে, ভিডিও গেইমস কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অংশ হতে পারে! যদি একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করো, তাহলে খেয়াল করে দেখবে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে আজকাল আলাদা গেইমিং জোন থাকে। মানুষজন সে সব রেস্টুরেন্টে যায় গেইম খেলার আশায়। সেই সাথে সেখানে কিছু খেয়েও আসে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রচারণার জন্য ভিডিও গেইমের আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন বড় বড় শপিং মলগুলোতে এগুলো বেশ লক্ষ্য করা যায়। তাই আজকাল ভিডিও গেইমসও ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশে পরিণত হয়েছে।

সূত্রঃ  https://10minuteschool.com/blog/%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%9a%e0%a6%be/

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

নিউ নরমাল কর্ম বা কর্মক্ষেত্রের রুপ কেমন হতে পারে!

নিউ নরমাল কর্ম বা কর্মক্ষেত্রের রুপ কেমন হতে পারে!

গত দু-মাস ধরে দুটি শব্দ বার বার শুনছি ”নিউ নরমাল”। গুগলকে প্রশ্ন করতেই সে জানালো এর আগেও এই শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয়েছে ২০০৭-২০০৮ সালে যখন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা গ্রাস করেছিল প্রায় পুরো বিশ্বকে। তখন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা ”নিউ নরমাল” শব্দ দুটি সংযুক্ত করেছিলেন মন্দা পরতর্তী ব্যবস্থাপনা নির্ধারন করতে গিয়ে। বর্তমানের এই কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট মহামারীতে যখন সমগ্র বিশ্ব আক্রান্ত তখন আরেকবার আমাদের সামনে এসে দাড়িয়েছে ”নিউ নরমাল“। অতীতে যে বিষয়গুলো অস্বাভাবিক বলে বিবেচিত হতো সেটাই যখন দৈনন্দিন কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে নিয়মে পরিনত হয় তখনই সেটাকে বলা যায় ”নিউ নরমান”। তবে সময় যত সামনের দিকে এগিয়ে যায় ”নিউ নরমাল” তত দ্রুত “নরমালে” পরিনত হয়। এক সময় মা’র কাছে শুনেছি আমার বাবা কোথাও বেশী দিনের জন্য গেলে চিঠি লিখে জানাতেন ”আমি ঠিক মতো পৌছেছি”। তারপর চিঠির পরিবর্তে এলো ল্যান্ডফোন, পুরো সিস্টেম পাল্টে গেলো। তখন বাড়িতে ফোন করে জানাতেন ”আমি ঠিক মতো পৌছেছি”। এখন কোথাও গেলে বাসা থেকে কিছুক্ষন পর পর ফোন আসে “এখন কোথায়”। এর মাঝে আবার টেলিগ্রামের সাথে মানুষের পরিচয় হয়। যেহেতু চিঠি পৌছুতে সময় নিতো প্রায় একমাস (কখনো কখনো), তাই অতি প্রয়োজনীয় বিষয়ে টেলিগ্রাম আসতো “Father Sick, Come Early”। পরবর্তীতে যার রুপান্তর আমরা দেখতে পাই এসএমএস (Short Message Service)

শুনেছি প্রথম শিল্প বিপ্লবের পর যখন শিল্পায়নের যুগ শুরু হলো তখন কারখানা থেকে একদল কর্মী নিয়োগ দেয়া হতো শ্রমিকদের ঘুম থেকে উঠাবার জন্য। পরবর্তীতে অ্যালার্মঘড়ি আসার পর তখনকার নরমাল হয়ে গেলো নিউ নরমাল এবং কিছু মানুষ হয়ে গেলো বেকার আর কিছু মানুষের হলো কর্ম পরিবর্তন। মানুষের মধ্যে একটি দল আছে যাদের সমগ্র জীবনের প্রচেষ্টাই হলো যে কোনভাবেই হোক নরমালকে চ্যালেঞ্জ করা। আবার অন্যদলের কাজ হচ্ছে যেকোন ভাবেই হোক নরমাল কে আকড়ে ধরে থাকা এবং স্বাভাবিকভাবে নরমাল কে আকড়ে ধরে থাকা মানুষদেরই বিজয় হয় (কিছুদিনের জন্য) যদি না প্রাকৃতিকভাবে কোন বিপর্যয় এসে উপস্থিত না হয়। একটি আর্টিক্যালে পড়েছি একসময় প্লেগের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবে বিজ্ঞানী নিউটন কোয়ারেন্টিনে চলে যান তার গ্রামের বাড়িতে এবং কোন একদিন দুপুরের খাবারের পর বিশ্রাম নিচ্ছিলেন আপেল গাছের নিচে আর তখনই তার মাথার উপর পড়ে একটি বড় আপেল এবং আমরা পেয়ে যাই নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ সূত্র (সঠিক কিনা জানি না তাও উল্লেখ করলাম, আপনারা গুগল ঘেটে বের করতে পারেন চাইলে)।

What's Ecommerce's New Normal? Become a Future Leader

বর্তমানে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারনে আমাদের সামনে আবার উপস্থিত হয়েছে ”নিউ নরমান” যার মানে হচ্ছে স্বাভাবিক বা গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচলনা করা (সেটা মন থেকে হোক বা মনের বিরুদ্ধে গিয়ে হোক)। আমাদের সবারই প্রয়োজনের স্বার্থে মেনে নিতে হচ্ছে। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় একবার যেটি অভ্যাসে পরিনত হয় তা পুনরায় না করাটা কষ্টের। মানে হচ্ছে নতুন নিয়মে যা করে আসছি সেটা হয়তো সম্পূর্ন পরিবর্তন নাও হতে পারে।

মার্চের শুরুর দিকে আমরা বুঝতে শুরু করি এতোদিন যেভাবে স্বাভাবিক নিয়মে কাজ করে এসেছি সেটা পাল্টে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন বিভিন্ন দেশের প্রফেশনালদের দ্বারা আয়োজিত বিভিন্ন ওয়েবইনারে আমরা অংশ নিয়েছি কিন্তু সেই ওয়েবইনার যখন আমাদেরই করতে হচ্ছে এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশ নিচ্ছেন অনেকেই তখন ব্যাপারটি প্রথম দিকে ছিল অবাক করার মতো। তার চেয়ে বড় কথা যারা ”পারি না” বা ”হবে না” বলে নিশ্চিত ছিলেন তাদেরও দেখতে পাচ্ছি স্বাচ্ছ্যন্দে অনলাইনের সাথে মিশে গেছেন। এরই মধ্যে আমরা বিভিন্ন অনলাইন ইন্টারেক্টিভ মিটিং টুলস যেমন গুগল মিট, জুম, গো-টু-মিটিং, গো-টু-ওয়েবইনার, ওয়েবএক্স, মাইক্রসফ্ট মিটিং, স্ট্রিমইয়ার্ড, বি-স্ট্রিম, বি-লাইভ বা বিগ-ব্লু-বাটন ইত্যাদি ভার্চৃয়াল মিটিং প্লেসের সাথে পরিচিত হয়ে গিয়েছি। জব বা প্রজেক্ট ট্রাকিং হচ্ছে প্রযুক্তি ব্যবহার করে, কাস্টমার ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে ভার্চুয়ালী, এইচআর ব্যবস্থাপনা হচ্ছে প্রযুক্তিকে সাথে নিয়ে। এ সকল অনলাইন ইন্টারেক্টিভ টুলসগুলোই আসলে নিউ নরমাল টুলস হিসেবে আমাদের সামনের দিনে দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য বিষয় হয়ে দাড়াবে।

How to run a productive virtual meeting - Ideas

৪ মাস আগেও বাংলাদেশে ই-কমার্স বা ই-বিজনেস ছিল সৌখিনতা আজ তা বাস্তবতা। ৪ মাসে আগেও ভার্চুয়ার অফিস বা হোম অফিস ছিলো ”ভালো একটি ব্লগ পড়বার জন্য” কিন্তু এখন তা বাস্তবতা। অনেকে ইতিমধ্যেই চিন্তা করা শুরু করেছেন কি দরকার এতো টাকা খরচ করে অফিস ভাড়া নেবার। প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে শেয়ারিং অফিস বা শেয়ারিং ওয়ার্কস্টেশন হতে পারে একটি কার্যকরি সল্যুশন। হয়তো এমন হবে পাঁচতলা ভবনে ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা যেখানে শুধুমাত্র জরুরী কিছু কাজের জন্য আসা হবে।

আমি চিন্তা করছিলাম যে কি কি কারনে আমরা অফিসে একসাথে বসে কাজ করি। বড় একটি লিষ্ট আমার সামনে চলে আসলো। আমরা সাধারনত অফিসে যে কাজগুলো করি তা হলোঃ

  • রেজিস্ট্রি খাতায় নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করি যার ভিত্তিতে বেতন নির্ধারিত হয়।
  • অফিসিয়াল ইমেল করি অফিসে বসে
  • সভা বা আলোচনায় অংশ নেই
  • নথিপত্র ঠিক করি এবং সংরক্ষণ করি
  • কাজের ট্র্যাকিং করি
  • চাকরীর জন্য সাক্ষাৎকার নেই বা দেই
  • কর্মীদের বার্ষিক মূল্যায়ন করি
  • গ্রাহক সম্পর্ক উন্নয়ন করি
  • কাজের প্রতিবেদন তৈরি করি এবং জমা দেই
  • আর্থিক হিসাব-নিকাশ করি
  • প্রস্তাবনা খসড়া তৈরি করি এবং প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেই
  • প্রচারমূলক কনটেন্ট তৈরি করি
  • সোস্যাল মিডিয়া পরিচালনা করি
  • অনুষ্ঠান আয়োজন করি
  • এইচআর ক্রিয়াকলাপ করি
  • পণ্য / পরিষেবা সমীক্ষা করি ইত্যাদি।

এর বাইরেও আরো অনেক কিছু তালিকায় আসতে পারে। গতানুগতিকভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে উপরের কাজগুলো ম্যানুয়ালি করতে হবে কারন অনলাইনে সবগুলোকে নিয়ে আসতে গেলে প্রয়োজন হবে সফ্টওয়্যার, হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্ক, নিরাপত্তা, স্টোরেজ সহ বিভিন্ন কিছুর। আমার নিজের বিশ্বাসও ছিল তাই। আমি এই বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেছি এবং বিভিন্ন উন্নত দেশে এর প্রয়োগও দেখেছি কিন্তু এই প্যান্ডেমিকের ভেতর আমি এবং আমার পুরো টিম ব্যবহার করলাম “ক্লাউড ভিত্তিক অনলাইন অফিস”। আপনারা যারা আমার আর্টিক্যাল পড়ছেন তারা চাইলেই ক্লাউড সার্ভিস প্রোভাইডারদের সম্পর্কে গুগলের মাধ্যমে ধারনা নিতে পারেন।

Virtual meetings: TrueConf -

একটা সময় ধারনা করা হতো যে আপনার পুরো অফিসের কার্যক্রম প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করতে গেলে সম্ভবত অনেক বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে এবং যেটি একটি সময় পর্যন্ত বাস্তবতা ছিল। যাকে আমরা বলতাম On Premises Software (On Prem)” মানে সফ্টওয়্যার যার সাথে আপনার ম্যানেজ করতে হবে হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্ক, ডাটা ম্যানেজমেন্ট, নিরাপত্তা, স্টোরেজ সবকিছু। প্রয়োজন হতো মোটা অংকের বিনিয়োগ, লোকবল এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তার। সাধারন ভাষায় বললে আপনার বাড়িতে আপনিই খাবার তৈরি করে খাবেন তার পর নিজেই সংরক্ষন করবেন। তখন আমরা ভাবলাম এতো ঝামেলাতে না গিয়ে ম্যানুয়ালী অপারেশনই ভালো। গ্লোবালী বিশেষজ্ঞরা চিন্তা করলেন “Infrastructure As A Service (IAAS)” যার মানে হলো সফ্টওয়্যার আপনার, হার্ডওয়্যার অন্যের। এখানে কিছু মানুষ আগ্রহী হলেন কারন বিনিয়োগের পরিমান কমে গেলো এবং নিরাপত্তা কিছুটা নিশ্চিত হলো। সহজভাবে বললে বাইরে থেকে রেডী ফুড এনে ঘরে গরম করে খাওয়া। এরপরও পরোপুরী ম্যানুয়াল অপারেশন থেকে বের হতে পারিনি। এবার বিশেষজ্ঞরা চিন্তা করে বের করলেন “Platform as a Service (PAAS)” মানে হলো আপনার বাড়িতে শুধু ডাইনিং টেবিল এবং পানি থাকলেই হলো, বাকিটা সব ভেন্ডরের (ফুডপান্ডা থেকে বার্গার চলে আসার মতো বিষয়)। চতুর্থ শিপ্ল বিপ্লবের অন্যতম একটি বড় বিষয় হচ্ছে অগ্রগামীতা। মানুষ প্রতিনিয়ত চিন্তা করে বের করছেন আরো কিভাবে সহজ করা যায় ব্যবসায়িক এবং ব্যক্তিগত দৈনন্দিন কার্যক্রম। কারন আমাদের সামনে আছে প্রযুক্তি। আমাদের সামনে চলে আসলো “Software As A Service (SAAS পদ্ধতি)” যেটি সত্যিকার অর্থে আমাদের অনলাইন বা ভার্চুয়াল অফিসের স্বাদ দিচ্ছে। সহজ ভাষায় খাবার খাচ্ছি কিন্তু লোকেশন মূখ্য নয়। উদাহরন স্বরুপ ISP (Internet Service Provider), ব্যবহারের উপর ব্যান্ডউইথ চার্য দিচ্চেন।

 

ক্লাউড ভিত্তিক অনলাইন অফিসের স্বাদ আমরা যারা অগ্রগামীতাকে অনুশীলন করছি তারা সত্যিকার অর্থে পেতে শুরু করেছি। যেখানে কর্মীরা তাদের ঘরে বসেই নিশ্চিত করছেন টিমওর্য়াকের মাধ্যমে কোয়ালিটি ওয়ার্কস। টিম লীডার জানতে পারছেন প্রতিষ্ঠানে কার অবস্থান কোন পর্যায় এবং কর্মী তার নিজের মাসিক আমলনামা নিজেই বিবেচনা করতে পারছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাচ্ছে।

Cloud Solutions - InBuilding

আগামী ‍দিনের ব্যবসা হবে আরো গতিসম্পন্ন যেখানে দৈহিক উপস্থিতি মূখ্য হবে না। অধিকাংশ পদ বা পদবীর সাথে যুক্ত হবে ভার্চুয়াল শব্দটি। বেকারত্বের হার হ্রাস পাবে কারন ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে যে কেউ যেকোন জায়গা থেকে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন। হয়তো একজন মানুষ দৈনিক একাধিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করবেন। মেধা ভিত্তিক কাজ বৃদ্ধি পাবে, শ্রমের মূল্য বেড়ে যাবে এবং প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। আমার ব্যক্তিগত মতামত যদি তুলে ধরি তাহলে বলবো নিউ নরমালে এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে কারা টিকে থাকবে এবং কারা ঝড়ে পড়বে। নিঃসন্দেহে ”হবে না’র তালিকা বড় কিন্তু অগ্রগামী ব্যবসা বা মানুষের কাছে হবে’র তালিকা তার চেয়েও বড়। তবে এখানে ইমোশনের জায়গাটা কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সেটি নিয়ে ভাবতে হবে যেহেতু দৈহিক উপস্থিতি হচ্ছে না। তাই বাস্তবতা এবং আবেগের মধ্যে ব্যবধান কিছুটা বাড়তে থাকবে।

সবশেষে বলবো নিউ নরমাল অনিবার্যই ছিল তবে কোভিড-১৯ এর গতি বৃদ্ধি করেছে। তাই নিউ নরমাল কে নিয়ে ট্রল নয় বরং বাস্তবতার আলোকে আমি কিভাবে আলিঙ্গন করবো তা নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। হতে পারে আগামীকালই আমার অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জকে আমাকে মোকাবেলা করতে হবে।

(বি:দ্রঃ ক্লাউড ভিত্তিক অনলাইন অফিস বিষয়ে আরো অনেক বিষয় উল্লেখ করা যায় তবে আর বাড়াতে চাচ্ছি না। যদি কারো আগ্রহ থাকে আমার সাথে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগ করতে পারেন। আমি বিনামূল্যে সহযোগীতা করবো।)

 

সংগ্রহীত,

লেখকঃ কে এম হাসান রিপন,

Link:   https://kmhasanripon.info

Bangladesh Skill Development Institute (BSDI)

মাইন্ডসেট এবং সফট স্কিল

মাইন্ডসেট এবং সফট স্কিল

মাইন্ডসেট এবং সফট স্কিল

সফলতা মূলত দুইটি কারনে আসে, একটা হচ্ছে মাইন্ডসেট এবং আর একটা হচ্ছে সফট স্কিল।

১. মাইন্ডসেট

২.সফট স্কিল

মাইন্ডসেটঃ

মানুষের মাইন্ডসেট করা না থাকে কোন কাজে আসলে সফলতা আসে না। তাই আমাদের একটা নির্দিষ্ট মাইন্সের থাকতে হবে। মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় –

১. গ্রোথ মাইন্ডসেট

২. ফিক্স মাইন্ডসেট

গ্রোথ মাইন্ড সেট এ মানুষরা মনে করে আমি যদি চেষ্টা করি, আমি যদি শিখতে চাই তাহলে আমার অনেক কিছুই শেখা সম্ভব। ফিক্স মাইন্ডসেটের মানুষকে মনে করে যে না এটা আমার দ্বারা হবে না, এইটা তে আমি ভালো না, ওইটা আমি করবো না, এটা করাই আমার জন্য সময় নষ্ট ইত্যাদি তাদের মানুষের টা আসলে ফিক্স করা থাকে যে আমার এই জায়গাতে ডেভলপ হয় সম্ভব না। গুদমারা সেটা মনে করে যে না বেইন হচ্ছে গাছের মত এটাও হবে,  পিকস মানুষের মনে করে এত দেয়ালের মত এটাকে আর গ্রো করা সম্ভব না।

মানুষের ব্রেইন কে আমরা প্লাস্টিক বলতে পারে কারণ এটা আস্তে আস্তে বড় হয়। যত বেশি মানুষ প্র্যাকটিস করবেন ততবেশি সে লার্ন করবে এবং যত বেশি সে লার্ন করবে তত বেশি তার ব্রেইন টা গ্রো করবে।

সফট স্কিলঃ

হার্বাট ইউনিভার্সিটি একটা রিসার্চ পাওয়া গেছে, “যেসব মানুষ চাকরি জীবনে সফল হয়, সেই সমস্ত মানুষের সফট স্কিল তাকে ৮৫% সহযোগিতা করে এবং টেকনিক্যাল স্কিল বা হার্ড স্কিল ১৫% সহযোগিতা করে।“

সফট স্কিল কেন গুরুত্বপূর্ণঃ

আমরা যদি উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকায় তাহলে আমরা দেখতে পাব ৮৫% চাকরির সফলতা আসে সফট স্কিল দিয়ে।  যেমনঃ যারা এইআর প্রফেশনাল আছেন তারা যখন কোন ইন্টারভিউ নেন সেখানে তারা বেশি গুরুত্ব দেয় সফট স্কিল বা ইন্টার পার্সোনাল স্কিলের উপরে। তবে সে ক্ষেত্রে হার্ডস্কিলের বা টেকনিক্যাল স্কিলেরও গুরুত্ব আছে কারণ টেকনিক্যাল স্কিল বা হার্ড স্কিল ছাড়া কর্ম ক্ষেত্রে কাজ করা সম্ভব না।

এবং যারা জব সিকার তাদেরকে নিয়ে রিসার্চ করা হয়েছে সেখানে দেখা গেছে তারা বেশিরভাগই বলেছে যে চাকরির ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল স্কিল বা হার্ড স্কিলের গুরুত্ব বেশি।

তারমানে দেখা যাচ্ছে যে যারা জব দিচ্ছেন এবং যারা জব খুজছেন তাদের মধ্যে একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে সবাইকে তা বুঝতে হবে এবং সব স্কিনের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ যারা এই জিনিসটা বুঝবেন না এবং মনে করবেন যে তাদের একাডেমিক রেজাল্ট  ভালো হলেই আমি জব পেয়ে যাব তারা আসলে আপনি পাবেন না আপনার যদি সফট স্কিল ডেভলপ না করেন। কারণ যারা আপনাকে চাকরি দিবেন তারা আপনার ইন্টার পার্সোনাল স্কিল বাস্তব স্কিলের উপরে প্রাধান্য দেন।

৫ ধরনের সফট স্কিন যা বর্তমানের থাকা অত্যাবশ্যকঃ

অনেকগুলো সফট স্কিন আছে যার মধ্যে যদি জানতে চাওয়া হয় কোন ধরনের সংস্কৃতি গুলো বেশী গুরুত্বপূর্ন তাহলে আমরা বলতে পারি-

১. প্রবলেম সলভিং

২. ক্রিটিকাল থিংকিং

৩. ক্রিয়েটিভিটি

৪. পিপল ম্যানেজমেন্ট এবং

৫. কলাবরেশন

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক রিপোর্ট অনুযায়ী এই পাঁচ ধরনের সফট স্কিল টপ লিস্টে আছে।

 

. প্রবলেম সলভিং

প্রবলেম সলভিং মানে হচ্ছে যার প্রবলেম সলভ করার এবিলিটি আছে। সে খেতে অনেকেই বলে থাকেন কিভাবে প্রবলেম সলভ করবেন। আসলে প্রবলেম সলভিং এর কিছু মেথড আছে। যেমন

  • প্রবলেম আইডেন্টিফাই করা
  • প্রবলেমের কারণে খুজে বের করা
  • প্রবলেম এনালাইসিস করা
  • সলিউশন খুঁজে বের করা
  • সলিউশন গুলোকে অ্যানালাইসিস করা
  • সলিউশন নিয়ে প্ল্যানিং করা
  • ইমপ্লিমেন্ট করা

 

. ক্রিটিকাল থিংকিং

ক্রিটিকাল থিংকিং হচ্ছে আপনারা যখন কোন ইনফর্মেশন পান তখন তাকে কিভাবে রেশনালি যাচাই বাছাই বা মূল্যায়ন করবেন। আপনার মধ্যে এই যাচাই বাছাই বা মূল্যায়ন করার ক্ষমতা টা আছে কিনা। ক্রিটিক্যাল থিংকিং বলতে এখানে মানুষের এনালাইসিস সিং এর কথা বুঝানো হয়েছে।

আসলে ক্রিটিকাল থিংকিং হচ্ছে অনেক কিছু নিয়ে তৈরি করা একটা জিনিস যেমন এখানে এনালাইসিস আসবেন ইমপ্লিমেন্ট আসবেন, ইভালুয়েশন আসবেন।

. ক্রিয়েটিভিটি

ক্রিটিভিটি হচ্ছে সৃজনশীলতা। কোন কিছু নতুন ভাবে তৈরি করা, কোন কিছু ডিফারেন্ট ভাবে বা ভিন্ন ভাবে  তৈরি করা।

. পিপল ম্যানেজমেন্ট

পিপল ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে আপনি কিভাবে মানুষকে ম্যানেজ করছেন। কিভাবে আপনি মানুষের সাথে মিশবেন, কিভাবে আপনি মানুষের সাথে কথা বলবেন, কীভাবে আপনি মানুষের সাথে একটা সম্পর্ক স্থাপন করবেন, এবং কিভাবে আপনি মানুষকে ম্যানেজ করবেন এটাই হচ্ছে মূলত পিপল ম্যানেজমেন্ট।

. কলাবরেশন

পিপল ম্যানেজমেন্ট এবং কলাবরেশন প্রায় কাছা-কাছি। কিন্ত টিপল ম্যানেজমেন্ট বলতে লিডারশীপ কোয়ালিটি কে বোঝায় আর  কলাবরেশন হচ্ছে টিমওয়ার্ক কোয়ালিটি।  আপনি কিভাবে একটা টিমের সাথে কাজ করছেন, কিভাবে টিম গঠন করছেন, কিভাবে একটা টিমকে নির্দেশনা দিচ্ছেন এটাই মূলত কলাবরেশন।