যে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখে
সৌভাগ্য শুধু তার কথা বলে
দিনের বেলায় দোকান পাঠ সব বন্ধ থাকবে-
রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়বে-
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে –
বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে –
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বেকার হয়ে যাবে কোটি কোটি মানুষ –
প্রতিটি দেশ তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিবে –
একটি অদৃশ্য ভাইরাসের আতংকে প্রতিটি মানুষ অন্য মানুষকে এড়িয়ে চলবে, অন্তঃতপক্ষে দশ হাত দুরে থাকবে।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
৬ মাস আগে এই ভবিষ্যতবাণী পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কিন্তু বাস্তবে তাই ঘটেছে। এক অদৃশ্য ভাইরাসের আক্রমনে তছনছ হয়ে গেছে একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বব্যবস্থা। ইতিহাসে এত বেশি সংখ্যক মানুষ একই সময়ে, একটানা এত দীর্ঘসময় ঘরে বন্দী থাকার নজীর আর নাই। এই অবস্থা থেকে কখন মুক্তি মিলবে তার কোন সুস্পষ্ট ধারণা কেউ দিতে পারছে না।
তাই বলে কি আমাদের জীবন ব্যবস্থা থেমে থাকবে?
পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে যখনই কোন মহামারী হয়েছে, ঠিক তখনই নতুন চ্যালেঞ্জসহ নতুন নতুন সম্ভাবনা, সুযোগ ও তৈরি হয়েছে। করোনা ভাইরাস আমাদের শিখিয়েছে, কীভাবে সচল পৃথিবীতে হঠাৎ আসা মহামারীর স্থবিরতা প্রযুক্তির দ্বারা সচল রাখতে হয়, কিভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৈশ্বিক মহামারীর ক্ষয়-ক্ষতি কমানো যায়।
আমি একজন শিক্ষক। তাই শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েই কথা বলব। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি এক ডিজিটাল এডুকেশন সিস্টেম গড়ার প্রচেষ্টায় আছি। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করার উপযুক্ত সময় এখন। সেই পুরানো ধ্যান-ধারণার ক্লাসরুম আর নেই।
অনলাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিও কলে ক্লাস নিচ্ছি , রাখছি শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর। আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল ক্লাস লেকচার রেকর্ড করা থাকে। তাই শিক্ষাদানের পর ছাত্ররা নিজেদের সময়ানুসারে রেকর্ড দেখে সাহায্য নিতে পারে।
কেউ যদি মনে করে এই সব পরিবর্তন সাময়িক এবং করোনা মুক্তির সঙ্গে আবার আমরা পুরনো শিক্ষাপদ্ধতি অবলম্বন করব, তা হলে তারা অন্ধকার জগতে বাস করছে। শিক্ষা চিরতরে পাল্টাচ্ছে এবং যারা এই বদলের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারবে না, তারা নিজেরাই বরং ডাইনোসারের মত বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
করোনা পরিবর্তন করে দিয়েছে জীবনযাত্রার পথ। বদলে দিয়েছে পৃথিবীর আগামী কর্মপরিকল্পনা, ধ্যান–ধারণা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, শিক্ষাব্যবস্থা। আর তাই যে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, আসুন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিবাবক আমরা সবাই মিলে তা সম্পূর্ন ডিজিটাল করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করি, তবেই করোনা মহামারীর এই বৈশ্বিক সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে তোলা সম্ভব।
“নিজেকে বদলাও, ভাগ্য নিজেই বদলে যাবে” – বিখ্যাত পর্তুগীজ প্রবাদ
লেখকঃ
ফারহা দিবা
সিনিয়র ইন্সট্রাকটর
ডিপার্টমেন্ট অফ ম্যাথমেটিকস
ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট