১৯ শের গল্প, পর্ব-৫
শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করে দিতে পারলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনেই চমৎকার সব কাজ করতে পারে। ভাবতে পারে তার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে। উদ্ভাবনী মনোভাব, নতুন কিছু শেখার প্রবল আগ্রহ তৈরি করে দিতে পারলে আর তাদের যথাযথ দিকনির্দেশনা দিতে পারলে বাস্তবিক ভাবেই তার চিন্তাগুলো পুর্নরুপ দিতে সক্ষম হয়।
আজ আমার কথা বলব “দুর্জয় সরকার” কে নিয়ে। সে বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল ৫ম পর্বে অধ্যয়নরত। বর্তমানে সে আইপিএস ইউপিএস তৈরি করে সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছে।
পড়াশুনা করার উদ্দেশ্য শুধু চাকুরী এ ভুল ধারনা থেকে বের হয়ে এসে আজ নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। তার এই উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তার এই প্রচেষ্টা অনেক শিক্ষার্থীকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখাবে।
দুর্জয়ের এই স্বপ্ন আর সাফল্যের কিছু কথা শুনে আসি তার কাছে থেকেই
আমি দূর্জয় সরকার , ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনিস্টিউট এর ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ৫ম পর্বের একজন শিক্ষার্থী। আজ আমি আমার জীবনের কিছু স্বপ্ন আর অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে চাই। জীবন আমাকে একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা দিয়েছে,তা হছে, অর্থ ছাড়া পৃথিবীটাই যেন অচল, কাছের মানুষগুলো যেন পিছু ফেলে চলে যায়। পৃথিবীটা গতিশীল। আর গতির সাথে চলতে হলে, আমাকে কিছু করতে হবে। সেখান থেকেই শুরু, তবে এখন ভাবতে শিখেছি শুধু নিজের জন্য নয় দেশের জন্যও কিছু করা উচিৎ। আমার কর্ম বা পেশা হওয়া উচিৎ সম্ভাবনাময়, সময়োপযোগী, কল্যাণকর। আমি যেহেতু একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থী, তাই আমি শুরু থেকেই আমার চিন্তাকে ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ক ক্যারিয়ারকে কেন্দ্র করে ভাবতে শুরু করি। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়তে এসে ইলেকট্রিক্যাল এর বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত ইউটিউব লিংক স্যারেরা উনাদের লেসন প্লান এ দিয়ে দেন। এই লিংকগুলোর মাধ্যমে আমার জন্য ইউটিউব হয়ে উঠে শেখার অন্যতম একটি প্লাটফরম।
সময়টা এপ্রিল 2020, তখন দেশব্যাপী লকডাউন চলতেছিল। আর তখন পারিবারিক অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল। হঠাৎ এর মাঝে আমার এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যাও বেড়ে যায়। এতে করে বাবার ব্যবসায় এক ধরনের প্রভাব পড়ে। তখন আমি চিন্তা করি যে কিভাবে কম খরচে একটা IPS তৈরি করা যায়। এরপর কিছু Equipment নিয়ে দীর্ঘ ৩-৪ মাস গবেষণা করি। আর এর মাঝে আমাকে অনেক রকম সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়, যেমন গবেষণা করতে গিয়ে অনেক সরঞ্জাম পুরে যায়, সার্কিট এবং তার এর অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, এমন কি আমি আমার নিজের নিরাপত্তা সংকটে পড়তে হয়। একেতু অর্থনৈতিক সংকট তার সাথে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এ সব সমস্যা সমাধান জন্য সব চেয়ে সহায়তা করেছে ইন্টারনেট, ইউটিউব, এবং আমার বড় ভাই (কাজিন)।
সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে আমার বাবা, বাবার সহযোগীতায় আমি আজ এ পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি ।
অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার ডিপার্টমেন্টের নাহিদুল ইসলাম (নাহিদ) স্যারকে। স্যারের কাছে অনেক আগেই একবার বলেছিলাম আমি উদ্যোক্তা হতে চাই, স্যার আমার এ আগ্রহকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিলেন, জানতে চাইলেন আমার স্বপ্নের কথা। অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম স্যার এর কিছু কথার দ্বারা, আমার ক্ষুদ্র চিন্তা থেকে অনেক বড় কিছু করা সম্ভব হতে পারে তা ভাবতে শুরু করেছিলাম। পৃথিবীর অনেক বড় বড় সফল মানুষের শুরুটা ক্ষুদ্রই ছিল। যা পরবর্তীতে অনেক বড় সাফল্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে।
যাই হোক, অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়েই অবশেষে আমি এ বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে প্রত্যাশিত ফলাফল পাই, সফল হলাম IPS তৈরিতে, যা 1000w-5000w AC এনার্জি সাপ্লাই দিতে সক্ষম। নিজে ব্যাবহার করেছি আর পাশাপাশি কিছু IPS আমার বাবার সহযোগীতায়, পরিচিতদের কাছে নাম মাত্র দাম নিয়ে বিক্রিও করেছি। বর্তমানে আমি বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদনের জন্য লাইসেন্সের জন্য চেষ্টা করতেছি। আশা করছি আমার তৈরি এসব আইপিএস বাজারের অন্যান্য আইপিএস এর তুলনায় কমদামে গুনগত মানসম্পন্ন হবে। যা ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষন করবে। মার্কেটিং হবে কোয়ালিটি এবং দামের বিষয় মাথায় রেখে। যেহেতু যুগ এখন অনলাইনের তাই ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এর অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমেও।
আর এ সবকিছুর এর জন্য আমার অর্থের প্রয়োজন। তাই পাশাপাশি আমি ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিক একটি গ্রুপ তৈরি করি। সেখানে ট্রেনিং করানো হয়.
All Support.
IP Sell.
$ Buy/Sell.
Any Gift card (Google Play Store /Amazon/ Walmart )
U.S. Bank Support.
Dally Work System update .
এই সোর্স থেকে monthly 200-300$ অর্থ আয় করা সম্ভব।
আমার মুল স্বপ্ন ইলেকট্রিক্যাল রিলেটেড ক্যারিয়ার গঠন। এখান থেকে আমি আমার উৎপাদনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভবিষ্যৎতে আমি ব্যবসার উন্নয়ন ঘটিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাই। নিজে উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে দিতে চাই হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান।
— দূর্জয় সরকার
ছাত্রঃ ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
ইলেকট্রিক্যাল, ৫ম পর্ব