রসায়নে ইলেকট্রন শেয়ার
পৃথিবীতে অনেক কিছুই আমরা শেয়ার করে থাকি | সুতরাং শেয়ার সম্পর্কে আমাদের যথেষ্ট ধারণা আছে | শেয়ার বলতে মূলত বোঝায় ভাগাভাগি করা | শেয়ার তখনই করতে হয় যখন কোন কিছু একেবারেই দিয়ে দেওয়া যায় না অথবা কারো কাছ থেকে কোন কিছুই একেবারে নেওয়া যায় না|
রাজিব ও রতন দুই বন্ধু| একদিন তারা একটি রেস্টুরেন্টে গেল| তারা পিজ্জা খাবার ইচ্ছা পোষণ করল| পিৎজার দাম ছিল আটশত টাকা| এদিকে রাজীবের কাছে ছিল পাঁচশত টাকা এবং রতনের কাছে ছিল 400 টাকা| রাজিব 400 টাকা এবং রতন 400 টাকা পরস্পরের সাথে শেয়ার করে 800 টাকা দিয়ে পিজ্জা খেয়ে খুব আনন্দের সাথেই বাড়িতে ফিরলো| অর্থাৎ তারা নিজেদের টাকা শেয়ার করে খাবারটি কিনে খেলো|
ঠিক রসায়নে বেশ কিছু যৌগ গঠন করার ক্ষেত্রে এভাবে ইলেকট্রন শেয়ার করতে হয়| আর এই ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে সমযোজী বা সহযোজী বন্ধন বলা হয়| এই বন্ধন কে ইংরেজিতে বলা হয় Covalent Bonding.
আমরা যে পানি গ্রহণ করে থাকি সেই পানিতে সমযোজী বন্ধন বিদ্যমান| পানির সংকেত H2O. এক অনু পানিতে একটি অক্সিজেনের পরমাণু এবং দুটি হাইড্রোজেনের পরমাণু বিদ্যমান থাকে | নিচে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন এদের ইলেকট্রন বিন্যাস দেখানো হলো:-
H(1)- 1s1
O(8)- 1s2 2s2 2p4
এই পৃথিবীতে সর্বমোট 118 টি মৌল রয়েছে| এদের মধ্যে 6 টি মৌল রয়েছে নিষ্ক্রিয়| বাকি 112 টি মৌল রয়েছে সেগুলো নিষ্ক্রিয় 6 টি মৌলের ইলেকট্রন কাঠামো লাভ করার উদ্দেশ্যে কখনো ইলেকট্রন দান করে, গ্রহণ করে অথবা শেয়ার করে থাকে|
হাইড্রোজেন এর নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় মৌলটি হল হিলিয়াম যার ইলেকট্রন সংখ্যা হল 2. অপরদিকে অক্সিজেন মৌলটি নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় মৌল নিয়ন, যার ইলেকট্রন সংখ্যা 10. যখন 1 অনু পানি তৈরি হয় তখন একটি অক্সিজেন পরমাণু দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর দুটি ইলেকট্রন তার সাথে শেয়ার করে থাকে| এক্ষেত্রে হাইড্রোজেন হিলিয়ামের ইলেকট্রন কাঠামো লাভ করে এবং অক্সিজেন নিয়ন এর ইলেকট্রন কাঠামো লাভ করে যৌগ গঠিত হয়| নিচে বিক্রিয়াটির কৌশল দেখানো হলো:-
2H* + : O : H*.O.*H H O H