যান্ত্রিক শব্দ

যান্ত্রিক শব্দ

একদিন হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি তখন আমার কানে একটি গানের শব্দ শুনতে পেলাম, অথচ ওই গানটি আমি আমার বাসায় শুনেছি অনেকবার তবে তখন এতো ভালো লাগেনি, আর ভাবলাম এখন এত ভালো লাগছে কেন? তখন বুঝতে পারলাম, যে ভালো লাগার কারণ হচ্ছে সাউন্ড সিস্টেমের আধুনিকরণ, যার মূল উপকরণ হচ্ছে স্পিকার। স্পিকার বর্তমান বিনোদন জগতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, পিকনিক, বিয়ে এবং জন্মদিনে, যেকোনো উৎসবেই লাউড স্পিকার এর ভূমিকা অনেক।তাই আগ্রহের সাথে জানা উচিত স্পিকার সর্ম্পকে ।

লাউডস্পিকারের পরিচয় :

লাউডস্পিকার একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র,যার সাহায্যে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ থেকে শব্দ তরঙ্গে রূপান্তরিত হয়। ১৯২৫ সালে অ্যাডওয়ার্ড ডাব্লু কেলোগ এবং চেস্টার ডব্লু রাইস লাউডস্পিকার আবিষ্কার করেছিলেন।

 

ক্রমবিকাশ

১৯৩০ এর দশকে শব্দের প্রাবল্য বৃদ্ধি করার জন্য দুই বা তিনটি ব্যান্ডপ্যাসের ড্রাইভার একত্রিত করা হয়। ১৯৩৭ সালে মেট্রো-গোল্ডউইন-মায়ার দ্বারা প্রথম চলচ্চিত্রে থিয়েটারের জন্য শিয়ের হর্ন সিস্টেম” চালু করা হয়েছিল। ১৯৩৯ সালের নিউ ইয়র্ক ওয়ার্ল্ড ফেয়ারে ফ্লাশিং মৃডোয় একটি টাওয়ারে একটি খুব বড় দ্বিমুখী পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম লাগানো হয়েছিল।

১৯৪৫ সালে বাজারে আলটেকের “ভয়েস অফ থিয়েটার” লাউডস্পিকার সিস্টেম পৌঁছেছিল , এটি সিনেমা থিয়েটারগুলিতে প্রয়োজনীয় উচ্চ শব্দ উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল । 1954 সালে, এডগার ভিলচুর ম্যাসাচুসেটস কেমব্রিজে লাউডস্পিকারের নকশার শাব্দিক বিলম্বন (সাসপেনশন)নীতিটি তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীকালে উন্নত স্থায়ী চৌম্বক উপকরণ, উন্নত পরিমাপ কৌশল, উন্নত নকশা প্রয়োগ ফলে শ্রুতিমধুর উন্নতি হয়েছে।

বর্তমান দিনে লাউডস্পিকার গুলির গঠনগত ও আকৃতিগত পরিবর্তন হয়েছে। বৈদ্যুতিক তারের সাহায্যে লাউডস্পিকার গুলি এমপ্লিফায়ার এর সঙ্গে যুক্ত থাকে, তবে বর্তমান দিনে ব্লুটুথ এর মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়।শব্দ দূষণের কথা মাথায় রেখে লাউডস্পিকার গুলির সর্বোচ্চ নিরাপদ শব্দের প্রাবল্যের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

গঠন:

১- স্থায়ী চুম্বক

২- তারের কুন্ডলীর বা ভয়েস কয়েল।

৩- বিলম্বন

৪- মধ্যচ্ছদা পর্দা

৫-  ফ্রেম

বিদ্যুৎ থেকে যেভাবে শব্দ তৈরি:

লাউড স্বীকারে শক্তিশালী স্তায়ী চুম্বক, পোলপিস, পেপার কোণ, ভয়েস কয়েল,এদেরকে আব্ধকরে রাখার জন্য স্পাইডার ও ধাতব ফ্রেম থাকে । ভয়েস কয়েলের মধ্যে চুম্বক অবস্থান করে, তাই কয়েলটা সবসময় চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থান করে।

যখন অ্যামপ্লিফায়ার থেকে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ (অডিও সিগন্যাল) এসে ভয়েস কয়েলে প্রবেশ করে, তখন ভয়েস কয়েল কাঁপতে থাকে। ভয়েস কয়েলের সাথে পেপার কোণ যুক্ত থাকায় পেপার কোণ কাঁপতে থাকে এবং এর সামনের বাতাসও কাঁপতে থাকে। বাতাসের এই কম্পন হচ্ছে মাইক্রোফোনের সামনে সৃষ্ট শব্দের কম্পনের একেবারে অবিকল প্রতিরূপ। অর্থাৎ মাইক্রোফোনের সামনে যে আওয়াজ করা হয়, লাউড স্পীকার থেকে সেই একই আওয়াজ শোনা যায়।

 

রচনায় –

আব্দুল্লহ আল মামুন

ইন্সট্রাক্টর

টেলিকমিউনিকেশন ডির্পাটমেন্ট

ড্যাফডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

Tags: No tags

Comments are closed.