নিজের রুপান্তরের জন্য আত্মমূল্যায়ন কিভাবে করবো ?

নিজের রুপান্তরের জন্য আত্মমূল্যায়ন কিভাবে করবো?

আত্মমূল্যায়ন সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে যার কারণে অফুরন্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত কাজের সুযোগগুলি নষ্ট হয়ে যায়। আমি এই ব্লগের মাধ্যমে বেশ কিছু চেকলিষ্ট তৈরি করেছি। আশাকরি আপনারা যারা এই ব্লগটি পড়তে বসেছেন তারা কষ্ট করে দরজা জানালা বন্ধ করে সততার সাথে প্রত্যেকটি ফর্ম পূরন করবেন এবং খুঁজে দেখবার চেষ্টা করবেন কোন জায়গায় আপনার উন্নতি করতে হবে।

নির্দেশনা: পঠককে তাদের আত্মমূল্যায়ন সততার সাথে করতে হবে এবং এটি অন্যের কাছ থেকে সম্পূর্ণ গোপন রাখবেন। আত্মমূল্যায়ন থেকে যে ফলাফল বের হলো সে অনুযায়ী নিজের দক্ষতা উন্নয়নের পরিকল্পনা করবেন। মনে রাখবেন আত্মমূল্যায়ন সম্পূর্ন নিজের ব্যক্তিউন্নয়ের জন্য অতএব নিজের সাথে প্রতারনা করা উচিৎ হবে না।

 

Please select the following skills you have:

(নীচের ছকটিতে বেশ কিছু দক্ষতা নাম দেওয়া আছে, আপনি যদি মনে করেন সবগুলো আপনার ভেতর আছে তাহলে ”হ্যা” ঘরে টিক দিন অথবা “না” ঘরে।)

Your Skills

Yes

No

 Communication    
 Technical    
 Leadership    
 Organizational    
 Creative & Design    
 People Skills    
 Solving Problems    
 Physical Abilities    

 

Please assess you honestly

নী8চের ছকটিতে বেশ কিছু দক্ষতা নাম দেওয়া আছে, আপনি ১ থেকে ৫ এর ভেতর নিজেকে কত দেবেন? ১ হলো সর্বনিন্ম এবং ৫ হলো সর্বোচ্চ

Category

1

2

3

4

5

 How would you rate your communication skills?          
 How would you rate your leadership skills?          
 How would you rate your organizational skills?          
 How would you rate your creative and design skills?          
 How would you rate your people skills?          
 How would you rate your problem-solving skills?          
 How would you rate your physical abilities skills?          

 

Please rate your skills or qualities below:

নীচের ছকটিতে বেশ কিছু দক্ষতা নাম দেওয়া আছে, আপনি কোনটিতে কেমন সেটি নির্ধারন করুন

 

Excellent

Very Good

Good

Poor

Very Poor

 Team Player skills          
 Able to communicate effectively          
 Excellent writing skills          
 Listening attentively and open for  communication          
 Able to speak and talk to a large audience          
 Help others who are in need          
 Able to influence others          
 Good decision-making skills          
 Ownership and accountability          
 Able to deliver his/her thoughts properly          
 Leadership abilities          
 Commitment to the assigned task          
 Promote a supportive environment          
 Participate in team activities          
 Encourage others if needed          
 Interested in learning new things          
 Open for feedback and suggestions          

 

Please rate your character/nature/trait below:

নীচের ছকটিতে বেশ কিছু দক্ষতা নাম দেওয়া আছে, আপনি মতামত উল্লেখ করুন

 

Strongly Agree

Somewhat Agree

Strongly Disagree

 Analytical and Logical      
 Dependent      
 Initiative      
 Confidence      
 Responsible      
 Persuasive      
 Simple      
 Efficient      
 Humor      
 Punctual      
 Dedicated      
 Never Give up      
 Friendly      
 Empathetic      
 Helping others      
 Know how to delegate      
 Reliable      

 

Assessment for Workplace Reediness

নীচের ছকটিতে বেশ কিছু দক্ষতা নাম দেওয়া আছে, আপনি যদি মনে করেন সবগুলো আপনার ভেতর আছে তাহলে ”হ্যা” ঘরে টিক দিন অথবা “না” ঘরে।

 

Yes

No

The power of interest or will (Passion) Are you really ready to work hard at work? Everyone knows that the workplace means that there is no place for emotions alone. Can you adapt?    
Goal setting Have you completed the overall vision and set clear goals for your career? Are you determined to achieve your goals through all your efforts?    
Decision making When you are faced with a difficult situation, are you able to keep a calm down and make an important decision on your own by gathering enough information without passing the problem or imposing it on someone else?    
Taking Risk There is no work that is completely risk free. There is always the risk of failure in the job market. Are you aware of these risks and do you believe that you too can fail at work? Do you have enough information so that you can accurately estimate how big a risk you are going to take?    
Ability to handle stress Tough decisions, competition in the workplace, bitter experiences in communicating with customers, and long-term work can be stressful. Can you maintain a positive attitude in the face of such pressures? Do you see your potential in the workplace at such a difficult time?    
Saving Habit Do you have a tendency to accumulate money?    
Good Human Relation Do you feel comfortable building relationships with new people? Do you start talking on your own? Do you appreciate the good qualities of others? Can you accept if someone criticizes you? Can you protect the privacy of others?    
Problem Solving If you see a problem, can you solve the problem by finding the right solution without complaining?    
     

 

Take a look at some of the following things you haven’t done yet

নীচের ছকটিতে বেশ কিছু দক্ষতা নাম দেওয়া আছে, আপনি যদি মনে করেন সবগুলো আপনার ভেতর আছে তাহলে ”হ্যা” ঘরে টিক দিন অথবা “না” ঘরে।

Category

Yes

No

Do you have a smart career plan (Specific, Measurable, Actionable, Realistic, Within Timeline)    
You have a full idea of ​​at least the 20 organizations you want to work in    
Do you know job market structure, hierarchy/organogram, company types, business process, employment types, and requirements?    
Have you already met at least 20 famous HR professionals in Bangladesh?    
Can you create a personal website through Google site or Have you already created one?    
Did you manage your LinkedIn profile properly? Did you properly organize your LinkedIn profile (creating headlines, profile photos, experiences, skills, recommendations, etc.)?    
Can you use Google Form, Google Drive, Google Calendar, Google Meet, Zoom?    
Did you upload your video resume to your YouTube channel?    
Do you have a video resume?    
Have you had your CV verified by an experienced professional?    
Can you use your smartphone properly?    
Can you use MS Office properly?    
Do you have full knowledge of Online Meeting Place etiquettes?    
Do you have any light software editing skills (Such as Photo Editing, Video Editing, etc.)?    
Do you have administrative skills such as printer machine, FAX, handling telephone, sending an official email, sending SMS, using WhatsApp, official file management?    
Do you have skills in Business Communication tools like drafting official letters, sending official emails, drafting office memos, preparing meeting agenda and meeting minutes, developing a proposal, preparing financial budgeting?    

 

What were your activities and achievements in the past 1 year?

   

 

What areas of work you think you could improve on?

   

 

What are the skills or knowledge you would like to enhance?

   

 

What are your goals for working in the company as a fresh executive?

   

 

What are your strengths and weaknesses? How will you overcome them?

   

 

What are your Opportunities and Threads? How will you overcome them?

   

লেখক: কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

লক্ষ্য ছাড়া দক্ষতা বিকাশ!

লক্ষ্য ছাড়া দক্ষতা বিকাশ!

আমরা সবাই নিজেদের দক্ষতা বিকাশ করতে চাই। সারাদিন ফেসবুক, ইউটিউভ বা গুগল ঘেটে আমরা অনুপ্রানিত হয়ে সীদ্ধান্ত নেই যে অনেক হয়েছে এবার দক্ষতা বিকাশের পালা। শুরু হয় ভিডিও দেখা। আর মাশাআল্লাহ ফেসবুক, ইউটিউভে ভিডিওর অভাব নেই। কখনো এই ভিডিও কখনো বা সেই ভিডিও। আবার অনলাইন লার্নিং পোর্টাল তো আছেই। আমি একটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে সার্ভে করেছিলাম যেখানে আমি কয়েকটি প্রশ্ন রেখেছিলাম তরুনদের কাছেঃ

  1. আপনি কোর্স শুরু করেছেন কিন্তু শেষ করেন নি? (হ্যা অথবা না)
  2. আপনি কোর্স শুরু করেছেন কোন লক্ষ্য নির্ধারন না করেই? (হ্যা অথবা না)
  3. আপনি কোর্স সম্পন্ন করেছেন কিন্তু কোন রুপান্তর হয়নি? (হ্যা অথবা না)

অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে “না”র সংখ্যা বেশী আসছে কেন? লক্ষ্য ছাড়া কোন কিছুই করা মানে হলো কোন কাজে না আসা। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়। আমি ইংরেজী ভাষা শিখতে ও কাজে লাগাতে চাই। এখন আপনাকে SMART প্ল্যান করতে হবে।

তাহলে আসুন আমরা এই লক্ষ্যটাকে ভেঙে ফেলি।

  • আমার লক্ষ্যঃ আমি ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে চাই
  • কেনঃ আমি যেহেতু মার্কেটিংয়ে কাজ করবো তাই ইংরেজী ভাষা আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
  • কারনঃ অধিকাংশ সময় আমাকে বাইরের দেশের সাথে কথা বলতে হয়, বিভিন্ন জায়গায় প্রেজেন্টেশন দিতে হয় এবং সেখানে ইংরেজী ভাষাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়।
  • কতদিন সময় দেবেন নিজেকে: এটি তিন মাসের (৯০ দিন) জন্য নিজেকে রুপান্তরের একটি কার্যক্রম হবে।
  • কি কি দক্ষতা অর্জন করতে চান?: ইংরেজীতে কথা বলতে চাই, পড়তে চাই, শুনে বুঝতে চাই

আমার ইংরেজী ভাষা শিক্ষার এই লক্ষ্যকে কিভাবে ভাগ করবো?

 পড়ার ক্ষমতা বাড়ানো (টার্গেট এক মাস):

  • আমি প্রতিদিন এক ঘন্টা করে ৩০ দিন বিভিন্ন ইংরেজী সংবাদপত্র/বই/নিবন্ধ/ব্লগ পড়ব।
  • আমি অক্সফোর্ড অ্যাডভান্সড লার্নার্স অভিধান থেকে নতুন শব্দের অর্থ খুঁজে বের করব এবং সেগুলি একটি ডায়েরিতে নোট করব।

শ্রবণ ক্ষমতা বাড়ানো (টার্গেট এক মাস)

  • আমি প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে ৩০ দিন বিবিসি / সিএনএন / অন্যান্য ইংরেজি নিউজ চ্যানেল ইত্যাদি চোখ, কান এবং মন দিয়ে শুনব।
  • আমি গুগল / ইউটিউব ব্যবহার করে নতুন শব্দের উচ্চারণ খুঁজে বের করব।

স্পিকিং সক্ষমতা বাড়ানো (টার্গেট এক মাস)

  • যতটুকু সম্ভব আমি ইংরেজিতে কথা বলবো; এবং পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের সাথে কথা বলার সময় যতটা পারি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করব। লক্ষ্য তিন মাস অনুশীলনটি চর্চা করা।

নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি এবং মেন্টরশিপ সন্ধান করা (টার্গেট তিন মাস)

  • আমি অনুশীলনের জন্য একটি ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাবে যোগদান করব।
  • আমি পরামর্শের জন্য বিশেষজ্ঞ এবং পরামর্শদাতাদের অনুরোধ করব।
  • আমি দরকার হলে কোন সনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে এক মাসব্যাপী ইংরেজী ভাষার উপর একটি কোর্স সম্পূর্ন করব (যদি প্রয়োজন হয়)
  • আমি GoEdu.ac, লিংকডইন, গুগল গ্যারেজ ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মগুলি ভিজিট করে অন্তত ১০ টি অনলাইন কোর্সে যোগদান এবং সম্পূর্ণ করব
আপনাদের জন্য বিশেষ এই ছকটি তৈরি করেছি এবং এটি তৈরি করতে আমাকে বিশেষভাবে পরামর্শ  দিয়েছেন বাংলাদেশের অত্যন্ত দক্ষতা সম্পন্ন প্রশিক্ষক এবং আমার খুব প্রিয় জীশু তরফদার ভাই

শেষ কথা

উপরের যে পরিকল্পনাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম সেটা কিন্তু শুধুমাত্র নিজেকে রুপান্তরের নিমিত্তে করা হয়েছে। লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা ছাড়া হাজার হাজার কোর্স করেও রুপান্তরের দেখা পাওয়া যাবে না। আমি যে ছকটি আকবার চেষ্টা করেছি সেটি আপনারা আপনাদের মতো করে আকবার চেষ্টা করুন। তবে মনে রাখবেন জ্ঞান, দক্ষতা এবং আচরন তখনই প্রয়োজনে আসবে যদি তা আপনার লক্ষ্যে সাথে সামঞ্জস্য হয়।

লেখকঃ 

কে এম হাসান রিপন

নির্বাহী পরিচালক

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

থেমে যাবার তো উপায় নেই, চলতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে

থেমে যাবার তো উপায় নেই,

চলতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে

দিনটি ছিলো ফেব্রুয়ারী মাসের শুরুর দিকের কোন একটি দিন। হঠাৎ করেই জরুরী বৈঠকের নোটিশ। দৌড়াতে দৌড়াতে চলে গেলাম প্রধান কার্যালয়ে। সবার গুরু গম্ভীর মুখ দেখে বোঝা গেল বিষয়টি হয়তো একটু বেশীই জরুরী। সহকর্মীরা সবাই একে একে যোগ দিলেন বৈঠকে। বৈঠক শুরু হলো। বৈঠকের বিষয় স্পষ্ট হলো সম্ভাব্য করোনার মহামারীতে আমাদের প্রস্তুতি। যেহেতু করোনা শব্দটি তখনও ততোটা পরিচিত হয়ে ওঠেনি তাই প্রথমেই বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছিলাম। আমাদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সবুর খান যা বলছিলেন তার সারাংশ হলো সামনে অনেক কঠিন সময় সুতরাং আমাদের নিজস্ব গন্ডির মধ্যে থেকে ক্লাস থেকে শুরু করে যাবতীয় সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে এবং এক্ষেত্রে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার আমাদের শতভাগ নিশ্চিত করতেই হবে। সম্ভব/অসম্ভবের মধ্যে দোদুল্যমান আমার অবস্থান। একই সাথে বোঝার চেষ্টা করছিলাম আমার সহকর্মীদের মনের অবস্থান এবং আমার মনোভাবের সাথে তাদের মনোভাব মেলাবারও চেষ্টায় ছিলাম। এখন বলতে আপত্তি নেই, আমার কাছে অসম্ভবের পাল্লাই বেশী ভারী ছিল। কোথায় চীন দেশ আর কোথায় আমরা। আমাদের সেই শক্তি কোথায়? যা হোক কোন কিছু না ভেবেই মনে মনে ভাবলাম কিছু একটাতো হবেই। বিসমিল্লাহ বলে সহকর্মীদের সাথে নেমে পড়লাম কাজে। একটা বিষয় খেয়াল করলাম নেতৃত্ব যদি হয় শক্তিশালী এবং সুদূর প্রসারী তাহলে তার প্রভাব কর্মীদের উপর পড়বেই। আমি ভেতর থেকে একধরনের শক্তি অনুভব করলাম। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকারকেও ধন্যবাদ দিতে হয় বেশ কিছু ক্ষেত্রে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন কিছু বাস্তবিক স্বীদ্ধান্ত গ্রহন করবার জন্য।

ফেব্রুয়ারী মাস গড়িয়ে মার্চ চলে এলো। করোনা নামক চক্রে আমরাও পড়তে যাচ্ছি বিষয়টি স্পষ্ট হলো। আগে থেকেই নেয়া স্বীদ্ধান্ত মোতাবেক কাজ গোছানো হচ্ছিলো। শুরু হলো অনলাইনের যাত্রা। নির্ধারন করা হলো হাতের কাছে থাকা সহজ কিছু প্রযুক্তি যেমন গুগল মিট, জুম, গুগল ক্লাসরুম, মুডল এবং অনুশীলন করা হচ্ছিল তার ব্যবহার। পুরো ফেব্রুয়ারী মাস জুড়ে চলেছে চার দেয়ালের ক্লাস রুমে ভার্চুয়াল ক্লাস, পাশাপাশি বসে ভার্চুয়াল মিটিং, ফাইল শেয়ারিং, অনলাইন হাজিরা ইত্যাদি। এক বন্ধু আমার অফিসে এসে দ্যাখে আমি ভার্চুয়াল মিটিং করছি আমার পাশের রুমে থাকা সহকর্মীর সাথে। ও কিছু না বলে ভ্রু কুচকে চায়ের কাপে চুমুক ‍দিচ্ছিলো। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেলো লকডাউন। মাথায় সারাদিন দুটি শব্দই ঘুরপাক খেতে লাগলো করোনা এবং লকডাউন। বেড়ে গেলো প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকান্ডের বিশাল দায়িত্ব আমাদের সকল সহকর্মীদের উপর। শক্তি ছিলো নেতৃত্বের আর এতোদিনের আত্মবিশ্বাসের। চিন্তা করলাম একটা কিছুতো হবেই।

শুরু হলো লকডাউনের মধ্যেই প্রতিদিন রুটিন মাফিক অনলাইন ক্লাস, মিটিং, পরীক্ষা, কুইজ, অভিভাবক সম্মেলন, অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ইত্যাদি। অবাক হলাম যাদের নিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশী চিন্তিত ছিলাম আমাদের সেই কোমলমতী ছাত্রছাত্রী যারা লকডাউনের কারনে ফিরে গিয়েছিলো গ্রামে তাদের উৎসাহ এবং সতস্ফুর্ত অংশগ্রহন দেখে। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছে থাকা সীমিত ইন্টারনেট এবং ডিভাইস ব্যবহার করে যুক্ত হচ্ছিলো অনলাইন ক্লাসে। রাতদিন চলেছে বিরতিহীন ক্লাস ও অনলাইনে পড়াশুনার কার্যক্রম। দেখতে বেশ ভালোই লাগছে। মনে মনে ভাবতাম আরে উন্নত বিশ্ব তাহলে এভাবেই আমাদের দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে। একটা সময় দেখলাম ছাত্রছাত্রীতো বটেই বাবা-মা সবাই অংশগ্রহন করছে অনলাইন ক্লাসে। পেছনে ফিরে তাকানোর সময় হয়নি। করোনা তার তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও সবাই সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছি। সমস্যাতো আসবেই। থমকে যাবার অবকাশ নেই। হঠাৎ মনে হলো কর্মের সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। ফলাফল যা বের হলো তাতে আমিও কিছুটা অবাক হলাম। ড্যাফোডিল পরিবারের স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক, বিশ্ববিদ্যালয়ে

  • লকডাউনের প্রথম ৯০ দিনে প্রায় ৬০ হাজার ক্লাস সম্পন্ন হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে
  • গড়ে প্রতি ক্লাসে উপস্থিতি ছিলো ৬৮%
  • এই হিসেবে ড্যাফোডিল পরিবারের ৩০ হাজার ছাত্রছাত্রীর মধ্যে প্রতিদিন ২০ হাজার ছাত্রছাত্রী অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছে।
  • অভিভাবক সম্মেলন হয়েছে প্রায় ৫০টিরও বেশী
  • অনলাইনেই সম্পন্ন হয়ে কুইজ, ক্লাস টেষ্ট, পরীক্ষা, এ্যাসাইমেন্ট,
  • দেশ-বিদেশের বিখ্যাত প্রফেশনালদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০০ অধিক ওয়েবইনার।
  • প্রায় ৩০০ সহকর্মী মিলে যার যার ঘরে অবস্থান করে আমরা আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছি তিনটি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট (হেকাথনের আদলে করোনাথন, অনলাইন লার্নিংকে সবার মাঝে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য অনলাইন লার্নিং সামিট এবং ঘরে বসে মেধাভিত্তিক কাজ করা সম্ভব এই সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরে তরুনদের চাকরির সুযোগ তৈরি করবার জন্য আয়োজন করা হলো ভার্চুয়াল জব ফেস্ট)। এই তিনটি ইভেন্টে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের আরো প্রায় ২০টি দেশের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
  • সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আমরা প্রায় ৩০০০ সহকর্মীরা একে অপরের সাথে মিলে গত ৯০ দিন কাজ দিলাম, কাজ করলাম কিন্তু কারো সাথে সরাসরি দেখা হলো। সবাই যার যার ঘরে বসে যার যার কাজ সম্পাদন করলাম। এটাই একসময় অসম্ভব ছিলো যা বর্তমানে বাস্তব।

এতো বিশাল কর্মযজ্ঞের মাঝে হঠাৎ ড্যাফোডিল পরিবারের মনে হলো কেননা আমরা এমন একটি প্ল্যাটফরম তৈরি করি যার মাধ্যমে অন্যরাও অনায়সে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। সূচনা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য Blended Learning Center, কলেজ-পলিটেকনিকের জন্য college.ac এবং স্কুলের জন্য schoolbd.ac । এই প্ল্যাটফলমগুলো বাংলাদেশের যেকোন স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক, বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করতে পারবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

আসলে পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের যেকোন পরিস্থিতিতে এগিয়ে যাবার এক বিরাট ক্ষমতা দিয়েছেন। আমরা তা বুঝি না। একটা সময় যা ছিলো অসম্ভব তা এখন বাস্তব। সামনের পৃথিবী হয়তো আরো অজানা, দুর্বোধ্য। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে সৃষ্টিকর্তার সেই শক্তিশালী উপমার উপর “মানুষ হলো আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা”। সুতরাং থেমে যাবার তো উপায় নেই। চলতে হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে।

—————————————– X ——————————————

লেখকঃ-

কে এম হাসান রিপন

নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

অফিসের আদলে হোম অফিস

অফিসের আদলে হোম অফিস

ধানমন্ডিতে একটা বড় খেলার মাঠ ছিলো। আমরা সবাই চিনতাম আবহানী মাঠ নামে। সকাল-বিকাল সবসময় আবহানী মাঠে। সবচেয়ে মজার ছিলো বৃষ্টির দিনে। কাদা মাঠে ফুটবল খেলা। ফুটবলতো আর হতো না, কাদা ছিটানো হতো বেশী। আবহানী ক্লাবের সব স্টার ফুটবালার সকাল বিকেল অনুশীলন করতেন। আমরা দাড়িয়ে বা গ্যালারীতে বসে দেখতাম আর অপেক্ষা করতাম কখন তাদের মিস করা বল আমাদের কাছে আসবে আর আমরা নিজেকে ম্যারাডোনা ভেবে শট করবো। এই শট করা নিয়ে বন্ধুদের সাথে প্রায়ই ঝগড়া লেগে যেতো। ৯০ এর বিশ্বকাপের পর অতি উৎসাহিত হয়ে নিজের নাম লেখালাম একটি ক্লাবে। যথারিতি বিকেল ৩টায় নিজের কেডস, ট্রাউজার এবং টি-শার্ট পড়ে প্রাকটিস সেশনে যোগ দিলাম। প্রাকটিস শেষে কোচ ডেকে বললেন কেমন লাগলো? আমি বললাম গলিতে যেভাবে খেলে মজা পাই তেমন পাইনি। তিনি বললেন বাসায় গিয়ে ফুলবলের জন্য নির্ধারিত জার্সি, ‍সর্টস, বুট, শিন গার্ড কিনে তারপর কাল প্রাকটিসে যোগ দেবে। আমি তো বাসায় ফিরেই বাবাকে সাথে নিয়ে স্টেডিয়ামের স্পোর্টস শপে গিয়ে সব গুলো কিনে তারপর প্রাকটিসে যোগ দিলাম। প্রাকটিস শেষে কোচ বললেন নিজেকে ম্যারাডোনার মতো লেগেছে? আসলেই ফুটবল খেলার জন্য নির্ধারিত সাজসজ্জা, পোশাক এবং মানসিক প্রস্তুতি আমার ভেতরের পুরো অনুভুতি পরিবর্তন করে দিয়েছে।

প্রত্যেক পেশার জন্যই রয়েছে নির্ধারিত সাজসজ্জা, পোশাক, পরিবেশ, উপকরণ এবং মানসিক প্রস্তুতি। কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব আমাদের বেশ কিছু শব্দের সাথে পরিচিত করেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী ব্যবহারিত হচ্ছে ভার্চুয়াল অফিস বা হোম অফিস। অফিস বলতেই আমরা বুঝি একটি পরিশীলিত কাজের পরিবেশ যেখানে মানুষ মানুষের সাথে মিলে কাজ করবে। কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারনে আমরা অনেকেই আমাদের সেই চিরাচরিত অফিসে যেতে পারছিনা যার ফলে অনেকেই আজ তার বাড়িকেই অফিস বানিয়ে ফেলেছেন। শুরুতেই যে ভূমিকা দিয়ে শুরু করেছিলাম আমার ফুটবল ক্লাবের সাথে যুক্ত হবার গল্প এবং কিভাবে আমি সঠিক সাজসজ্জা, পোশাক এবং মানসিক প্রস্তুতির পরিবর্তনের মাধ্যমে সঠিকভাবে খেলার মধ্যে ঢুকতে সক্ষম হয়েছিলাম। ঠিক একইভাবে আমরা যারা বাসায় অফিস করছি তারা যদি নির্ধারিত সাজসজ্জা, পোশাক, পরিবেশ, উপকরণ এবং মানসিক প্রস্তুতির মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজে যোগ দিতে পারি তাহলে আমাদের মেধাভিত্তিক কাজের অগ্রগতি অনেক বৃদ্ধি পাবে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অধিকাংশ মেধাভিত্তিক কাজ প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করা সম্ভব এবং এটি আমি দায়িত্ব নিয়েই বলতে চাই। তবে তার জন্য প্রয়োজন উন্নত মানাসিকতা। আমার ব্লগের এ পর্যায়ে আমি মেধা ভিত্তিক কাজের সাথে যারা ইতিমধ্যে জরিত আছেন এবং বাসায় বসে কর্মক্ষেত্রের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছেন তাদের জন্য ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই।

মানসিক প্রস্তুতিঃ

  • এই মুহুর্তে যেহেতু সবাই কোভিড-১৯ নিয়ে চিন্তিত তাই প্রচুর পরিমানে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত খবর মিডিয়ায় উড়ে বেড়াচ্ছে এবং সত্য-মিথ্যা যাচাই করা আমাদের জন্য অনেক সময় কষ্টকর হয়ে যায়। তাই আমি চেষ্টা করি এই সংক্রান্ত খবর বা ব্লগ থেকে নিজেকে দুরে রাখতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি উল্লেখ করে দিয়েছেন। সেগুলো মেনে চলবার চেষ্টা করি। অযথা খবর বা ব্লগের মধ্যে নিজেকে যুক্ত করে উদ্বেগ বাড়াতে চাই না।
  • ইতিবাচক চিন্তা করা অত্যন্ত জরুরী এবং ইতিবাচক চিন্তা করেন যারা তাদের সাথে সম্পর্ক এবং আলাপ আলোচনায় যুক্ত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।
  • দেশ-বিদেশের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন আর্টিক্যাল প্রকাশ করেছে সেগুলো পড়তে পারলে উন্নত মানসিকতার চর্চাটা কিছুটা সহজ হয় এবং গতানুগতিক ধারার বাইরে কিভাবে কাজ করা যায় তার একটি দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়।

PeopleTalk Online What is Mental Fitness and How Does it Work ...

শারীরীক প্রস্তুতিঃ

মানসিক সুস্থতার পাশাপাশি শারীরীক সুস্থতাও অত্যন্ত জরুরী। এই মুহুর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হলো ডিসিপ্লিন। “Early to Bed & Early to Rise” এই উক্তিটি সবচেয়ে মূল্যবান। বাসায় বসেই ঘাম ঝড়াবার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্যালোরিকে বার্ন না করে ঘুমাতে না গেলেই ভালো। ঘরে বসে কিভাবে সহজেই ঘাম ঝড়াতে হয় তার অনেক পরামর্শ ইউটিউবে বা গুগলে আছে। ভালোভাবে দেখে এবং এই বিষয়ে অভিজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে শুরু দেয়া যেতে পারে। আমি যে কাজটি করেছি তা হলো একজন চিকিৎসক বন্ধুর সাথে আলোচনা করে আমার শারীরীক সুস্থতার জন্য একটি চার্ট তৈরি করে নিয়েছি।

Employee Engagement Archives - Gympass | Blog

হোম অফিস স্থাপনঃ

  • আমাদের এখন অনেকেরই বাসায় বসে কাজ করতে হচ্ছে। আমরা বাসার বিভিন্ন জায়গায় বসে কাজ করছি। কেউ বিছানাকেই বানিয়ে ফেলেছেন অফিস। কেউবা লিভিংরুমের সোফাতেই চালাচ্ছেন অফিসের কাজ। শুরুর দিকে আমিও তাই করেছি এবং ধীরে ধীরে যখন বুঝতে শুরু করলাম এটিই হবে নিউ নরমাল যেখানে কিছু কাজ হবে বাড়িতে এবং কিছু কাজ হবে কর্মক্ষেত্রে (হাইব্রিড মডেল), তখন একটি নিদৃষ্ট জায়গা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করলাম। আমার কাছে মনে হয় অফিসের কাজের জন্য কর্মক্ষেত্রের অনুভুতি পাওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। সেজন্য ঘরের যেকোন একটি অংশকে বানিয়ে ফেলতে পারেন আপনার হোম অফিস এবং বাড়ির সবাইকে মনে করিয়ে দিতে পারেন যে বাড়ির এই অংশটি আপনার হোম অফিস। সবাই যেন সতর্ক থাকে আপনার কাজের পরিবেশ ঠিক রাখবার জন্য।

হোম অফিস উপকরণঃ

  • মনে রাখতে হবে আপনার কর্মক্ষেত্রের আদলেই হতে হবে আপনার হোম অফিস (যদি সম্ভব হয়)। তার মানে একটি টেবিল থাকবে যার উপর আপনি আপনার ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ রাখবেন।
  • একটি চেয়ার যেটি আপনার ব্যাক পেইন হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
  • টেবিলের উপর আপনি চাইলে একটি টেবিল ল্যাম্প রাখতে পারেন যেটি আপনার ফেসলাইট হিসেবে ব্যবহারিত হবে। পাশাপাশি পড়তেও আপনাকে সাহায্য করবে। এখন যেহেতু আমাদের প্রায়ই ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নিতে হয় তাই ফেসলাইট অনেক কাজে আসে এবং প্রফেশনালিজম প্রকাশ করে। সাথে একটি ফাইল কেবিনেট থাকলে ভালো হয়।
  • অফিসের প্রয়োজনীয় সকল কিছুই আসলে আপনার টেবিলের উপর থাকবে যেমন মোবাইল, চার্জার, কলম, খাতা ইত্যাদি। টেবিলের উপর আপনি চাইলে একটি মানিপ্ল্যান্ট রাখতে পারেন বা আমি অনেককে দেখেছি ছোট এ্যাকুরিয়াম রাখতে। এটি আপনার মনকে সজীব করতে সাহায্য করবে।
  • মনে রাখতে হবে কর্মক্ষেত্রে নিজের অবস্থানকে মজবুদ করতে উপরের আয়োজনগুলো জরুরী। তাই সম্ভব হলে এই প্রাথমিক বিনিয়োগ করতে হবে। উপরের কোন কিছুই যদি সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত ঘরের টি-টেবিল, একটি চেয়ার এবং ঘরের একটি অংশকে নির্ধারিত করে শুরু দিন আপনার অফিসের আদলে স্থাপিত হোম অফিস।

17 Items You Need to Set up an Efficient Home Office

হোম অফিস সাজসজ্জা ও পোশাকঃ

আমি একদিন আমার হোম অফিসে বসে কাজ করছিলাম এবং বিদেশী একটি প্রতিনিধি দলের সাথে ভার্চুয়াল মিটিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক যথা সময়ে মিটিংয়ে অংশ নিলাম। হঠাৎ মিটিং যিনি হোস্ট করছিলেন তিনি সবাইকে বললেন আপনারা যার যার ওয়েবক্যাম অন করুন এবং পরিচয় দিন। আমিতো একদম অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। আমি অফিসের পোশাকে ছিলাম না। তো আমি বাধ্য হয়েই অফিসের পোশাক (শার্ট এবং প্যান্ট) এবং সাজসজ্জা করে ওয়েবক্যাম অন করে মিটিং সম্পন্ন করলাম। কিন্তু তারপর মনে হলো অন্য ধরনের একটা অনুভুতি পেলাম। সত্যিকারের অফিসে বসলে যেমন মাথায় নতুন নতুন ধারনার জন্ম নেয় ঠিক তেমনই অনুভুতি কাজ করছিল। তারপর থেকে সকালে হোম অফিসে যোগ দেবার আগে আমি আমার পোশাক (শার্ট এবং প্যান্ট) এবং সাজসজ্জার (চুলটা অন্তত ঠিক রাখা) বিষয় নিশ্চিত করি। এটি একধরনের মানসিক সংযোগ আপনার হোম অফিসের সাথে।

Efficient Virtual Collaboration | Smart Meetings

হোম অফিস হার্ডওয়্যার/সফ্টওয়্যার

  • অবশ্যই আপনাকে ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ ব্যবহার করতে হবে কারন অনেক মেধা ভিত্তিক কাজ ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ ছাড়া সহজ হবে না। ল্যাপটপ বা ডেক্সটপে অবশ্যই সাউন্ড এবং ওয়েবক্যাম থাকতে হবে।
  • ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
  • স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ সাথে সংযোগ তৈরি করতে হবে। স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ কিভাবে স্মার্টলী ব্যবহার করা যায় তার অসংখ্য ভিডিও ইউটিউভে আছে, আপনার দেখে নিতে পারেন।
  • কয়েকটি এ্যাপ্লিকেশন অত্যন্ত জরুরী যেমন ক্রোম ব্রাউজার (অনেক এ্যাপ্লিকেশনের চাহিদা গুগল ক্রোম), ওয়াটসএ্যাপ, জুম, বিজয় বা অভ্র (বাংলায় লিখবার জন্য) ইত্যাদি। এছাড়া যার যার পেশা ভিত্তিক সফ্টওয়্যার তো থাকবেই।
  • গুগল আপনার জন্য অনেক বড় একটি রিসোর্স। আপনাকে খুব ভালো জানতে হবে জিমেইলের ব্যবহার, গুগল ড্রাইভের ব্যবহার, গুগলের মাধ্যমে ফরম তৈরি, গুগল ফ্রি ওয়েবসাইট, গুগল ক্যালেন্ডার, গুগল ডক, শীট, এবং স্লাইড ইত্যাদি। মাত্র বছরে ১৬০০ টাকা খরচ করলেই আপনি পেতে পারেন ১০০ জিবি ক্লাউড স্টোরেজ।
  • ফেসবুক বা লিংকডইনের মাধ্যমে আমরা এতোদিন শুধুমাত্র ছবি বা ভিডিও দেখতাম বা আপলোড করতাম। এখন আমাদের এই টুলসগুলোকে ব্যবহার করে মেধাভিত্তিক কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
  • একজন সাধারন প্রফেশনাল হিসেবে আপনাকে অবশ্যই অতিসাধারন কিছু এডিটিং জানাটা অত্যন্ত জরুরী। এটি আপনাকে পরনির্ভশীলতা থেকে পরিত্রান দেবে। সেজন্য ইউটিউভের মাধ্যমে ইলাস্ট্রেটর এবং ফটোশপের কিছু সাধারন কাজ শিখে নিতে পারেন। এছাড়া ভিডিও এডিটিংয়ের উপরও রয়েছে অনেক ভিডিও। আপনাকে শুধু একটি প্রশ্ন করতে হবে ইউটিউভকে।
  • এছাড়া কেউ যদি খুব ভালো করে মাইক্রসফ্ট ওয়ার্ড, এক্সেল এবং পাওয়ারপয়েন্ট এবং গুগলকে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে তার অন্তত ৫০ ভাগ মেধাভিত্তিক কাজ ভার্চুয়ালী করা সম্ভব।

ভার্চুয়ালী মেধাভিত্তিক কাজ করার কথা মাথায় এলেই অনেকেই মনে করেন লক্ষাধিক টাকার বিনিয়োগ। আসলে আমাদের হাতের কাছে থাকা অতি সাধারন এ্যাপ্লিকেশন বা সফ্টওয়্যার দিয়েই আমরা আমাদের দৈনন্দিন কর্মকান্ড খুব সহজেই চালিয়ে নিয়ে যেতে পারি। প্রয়োজন শুধুমাত্র উন্নত মানসিকতার অনুশীলন এবং হাতের কাছে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু অতি সাধারন টুলস যা আমরা অপ্রয়োজনে ব্যবহার করেছি এতোদিন।

ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স

ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

Emotional Intelligence কোনো নতুন ধারণা নয়। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে এর বিকাশ শুরু হয়। সহজ কথায় Emotional Intelligence বলতে বোঝায় নিজের ও অন্যের অনুভূতি জানা ও বোঝার ক্ষমতাকে। নিচের এই কয়েক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে একজনের ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স-

  • নিজের আবেগ, অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়াকে বুঝতে পারা (আত্ম-সচেতনতা)
  • নিজের আবেগ, অনুভূতি, প্রতিক্রিয়া ও মুড নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা করতে পারা (আত্ম-নিয়ন্ত্রণ)
  • নিজের লক্ষ্যের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকা ও যেকোনো বাধায় হার না মানার মনোভাব (মানসিক দৃঢ়তা)
  • অন্যের অনুভূতির প্রতি সচেতনতা ও শ্রদ্ধাবোধ (সহমর্মিতা)
  • সহজেই অন্যের সাথে মিশতে পারা, তাদের প্রভাবিত করা, নেতৃত্ব দেয়া, সমঝোতা ইত্যাদি সামাজিক গুণাবলী (সামাজিক দক্ষতা)

কেন গুরুত্বপূর্ণ ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স:

এক সময় ধরেই নেয়া হতো, উচ্চ আইকিউ সম্পন্ন মানুষ মানেই সফল মানুষ। উচ্চ আইকিউ বা উচ্চ বুদ্ধিমত্তা অবশ্যই সাফল্যের অনেক বড় একটি প্রভাবক। কিন্তু এখন ধারণা করা হয়, আইকিউই সব নয়। সফলতার পেছনে কাজ করে অনেক গুলো জটিল বিষয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল- ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স।

ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স একজন মানুষকে মানসিকভাবে দৃঢ় করে

ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্ব ও প্রভাব লক্ষ্য করা যায় প্রায় সব ক্ষেত্রেই। কর্মক্ষেত্রে যদি আমরা দেখি, অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের উন্নতির জন্য ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করে থাকে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রেও এর ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

গবেষণায় দেখা যায়, নেতৃত্ব দানকারী অধিকাংশ মানুষের ইকিউ অনেক বেশি। ইকিউ তোমাকে সাহায্য করবে অনেক ভালো নেটওয়ার্কিং করতে। বর্তমান সময়ের ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে – “ Your network is your net-worth”। ভালো নেটওয়ার্ক তোমাকে পেশাজীবনে এগিয়ে যেতে করবে সাহায্য।

মনে হতে পারে যাদের কাজ অনেক মানুষকে নিয়ে তাদেরই শুধু ইকিউ নিয়ে চিন্তা করা উচিত। কিন্তু, না! ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স তোমার জীবনকে প্রভাবিত করে আরও অনেক ভাবে।ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স একজন মানুষকে মানসিকভাবে দৃঢ় করে। তাই সে সহজেই স্ট্রেস বা চাপ নিতে পারে। সে দুশ্চিন্তা বা হতাশায় কম ভোগে। মানসিক প্রশান্তি তার শারীরিক সুস্থতায়ও প্রভাব ফেলে এবং সে পায় এক সুখী- সন্তুষ্ট জীবন। এজন্য ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্ব এতোটা বেশি।

 

ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স কীভাবে বাড়াবেন?

ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স কোনো জন্মগত গুণ নয়। যেকোনো বয়সেই একজন পারে তার ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের উন্নতি ঘটাতে। ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্সের উন্নতির অনেক উপায় রয়েছে। এজন্য তোমাকে তোমার মানবিক অংশটির উপর গুরুত্ব দিতে হবে।

তোমার আবেগ, মনোবল ও স্পৃহাকে তোমার জীবনের লক্ষ্যের দিকে চালিত করতে হবে। অন্যের প্রতি হতে হবে সহানুভূতিশীল ও সহমর্মী। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে নিজের প্রতিক্রয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে হবে। এছাড়াও জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি করতে হবে ইতিবাচক। এভাবেই বাড়ানো সম্ভব ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স।

 

সংগ্রহীত

 

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট

প্রোডাক্টিভিটি-বৃদ্ধি-করার-সহজ-উপায়

প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি করার সহজ উপায়

প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি করার সহজ উপায়

একদম সহজ করে বললে প্রোডাক্টিভিটি বলতে বোঝায় কোনো কাজের পেছনে তোমার পরিশ্রমের বদৌলতে তুমি ঠিক কতটুকু ফলাফল পাচ্ছ। মানে তোমার পরিশ্রম আর পরিশ্রমের ফলাফলের অনুপাতকেই আমরা বলছি প্রোডাক্টিভিটি।

এই প্রোডাক্টিভিটি তোমাদের অনেকেরই  উৎসাহ কিংবা হতাশার কারণ। কেননা অনেকেই পরিশ্রম অনুযায়ী অসাধারণ সব সাফল্যের মুখ দেখছো,মানে প্রোডাক্টিভিটি ঠিকঠাক মতোই কাজ করছে। আবার অনেকেই আছো, যারা শ্রম দিয়েও আশানুরূপ কোনো ফলাফল পাচ্ছো না, দিনদিন হতাশ হয়ে পরেছ।

তোমার কাজটির জন্য দিনের সেরা সময় কোনটা নির্বাচন করো

সকালের পড়ালেখা কি তোমার বেশি মনে থাকে? কিংবা ধরো গীটারের প্র্যাকটিসটা বিকেল বেলাইতেই বেশি ফলপ্রসূ মনে হচ্ছে? এক কাজ করো। একটা এক্সপেরিমেন্ট করে ফেলো। ফোনের নোটে বা ডায়েরিতে তোমার দৈনন্দিন টাস্কগুলোর একটি রেকর্ড নাও। এরপরে দেখো দিনের কোন সময়ে কোন কাজটি করলে তুমি সবচেয়ে বেশিক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারছো আর কাজটিও তোমার কাছে ইফেক্টিভ মনে হচ্ছে। এভাবে রেকর্ড নেয়ার ফলে তোমার প্রোডাক্টিভিটি কার্ভ সম্পর্কে তোমার একটি সুস্পষ্ট ধারণা হবে এবং সেই অনুযায়ী তুমি তোমার রুটিন তৈরি করে ফেলতে পারবে।

এভাবে ইফেক্টিভ পদ্ধতিতে প্রোডাক্টিভ রুটিন তৈরি করতে পারলে তোমার প্রোডাক্টিভিটিও বাড়তে শুরু করবে।

  • ৮০/২০ রুল মেনে চলো

১৮৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করা ইতালির  ভিলফ্রেডো ফেডেরিকো দামাসো পারেটো টাইম ম্যানেজম্যান্ট আর প্রোডাক্টিভিটির এক অসাধারণ নিয়ম রেখে গিয়েছেন, যার নাম হচ্ছে ৮০/২০ রুল বা পারেটো প্রিন্সিপাল

পারেটো প্রিন্সিপাল বলছে  যে, শতকরা ৮০ ভাগ ফলাফল আসে শতকরা ২০ ভাগ কাজের জন্য।

আরও সহজভাবে বললে তোমার দৈনন্দিন জীবনের ২০ শতাংশ কাজই তোমাকে ৮০ শতাংশ ফলাফল এনে দেবে। আর এই ব্যাপারটিও মাথায় রেখো- কম কাজ করা মানেই কিন্তু আলসেমি নয়।

৮০/২০ রুল অনুসরণ করার জন্য প্রথমে তুমি প্রতিদিন কী কী কাজ করো তার একটা লিস্ট বানিয়ে ফেলো। এবার খেয়াল করো যে তোমার জীবনের লক্ষ্য পূরণে প্রতিদিনকার কোন কাজগুলো তোমাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে। এবারে তোমার প্রতিদিনকার প্রোডাক্টিভ আওয়ারের জন্য এই কাজগুলো বরাদ্দ রাখো। পারলে সেই কাজগুলোই আগে সেরে ফেলো।

এভাবে ৮০/২০ রুল ফলো করলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নিজের মধ্যে তুমি প্রোডাক্টিভিটি খুঁজে পাবে।

  • ঘুম থেকে উঠে নিজের দিকে ফোকাস করো

আমাদের অনেকের মধ্যে যেই অভ্যাসটি সবচেয়ে বেশি রয়েছে সেটি হচ্ছে ঘুম থেকে উঠেই ই-মেইল, মেসেজ আর নোটিফিকেশন চেক করে দিন শুরু করা।

এই অভ্যাসটির কারণে আপডেটেড থাকা যায় ঠিকই কিন্তু এই অভ্যাসের কারণে আজকের দিনে তুমি কী কী অর্জন করতে যাচ্ছ সেটি ঠিক করে দেয় ই-মেইল, মেসেজ কিংবা নোটিফিকেশন দেখার পর তোমার ভার্চুয়াল মাইন্ড সেট আপ।

কাজেই ই-মেইল আর মেসেজ চেক দিয়ে দিন শুরু করার আগে একটু নিজের দিকে ফোকাস করো। নিজেকে সময় দাও। সকাল বেলায় উঠে হালকা ব্যায়াম কিংবা মেডিটেশন করে নিতে পারো। এরপর খবরের কাগজ পড়তে পড়তে স্বাস্থ্যসমত  একটা ব্রেকফাস্ট তোমার প্রোডাক্টিভিটি বাড়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিবে।

এরপর চাইলে মেসেজ, ইমেইল আর নোটিফিকেশন চেক করে নিতে পারবে, এতে খুব একটা বড় ক্ষতি হবে না, বরং উপকারটাই বেশি হবে তোমার।

  • কাজের সময় সোশ্যাল মিডিয়া নোটিফিকেশন বন্ধ রাখো

আমার মনে হয় প্রোডাক্টিভিটির সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে এই সোশ্যাল মিডিয়া। নোটিফিকেশনের বদৌলতে বার বার ফোন চেক করা, ফোনের স্ক্রিনে ডুবে থাকা এখন একটি মহামারি ব্যাধি। একবার নোটিফিকেশন চেক করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেইসবুকেই কাটিয়ে দিয়েছ এমন উদাহরণ আশা করি কম নেই।

তোমাকে ছোট একটা তথ্য দেই। এই নোটিফিকেশন চেক করতে গিয়ে তোমার কাজে যেই ব্যাঘাত ঘটে আর মনোযোগ হারায় সেই মনোযোগ পুরোপুরি ফিরিয়ে আনতে সময় লাগে ২৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ড। ধরলাম তুমি কোনো কাজের জন্য বরাদ্দ রাখলে  ১ ঘণ্টা। এর মধ্যে মাত্র একবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তথাকথিত ঢুঁ মেরে আসতে গিয়ে তুমি প্রায় ৩০ মিনিটের মতো সময় হারাচ্ছো। যার মানে দাঁড়াচ্ছে তুমি তোমার কাজের জন্য বরাদ্দ এক ঘণ্টার মাত্র অর্ধেক সময় পাচ্ছো। মোট কথা কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া নোটিফিকেশন এভয়েড করা তোমার আমার সবার জন্য খুবই কঠিন একটা কাজ সেটি আমি মানছি। কিন্তু কাজ করার সময় ফোনকে অন্তত  সাইলেন্ট মোডে রাখা যেতেই পারে। এভাবে ২১ দিন পার করলেই তুমি টাস্কটিকে একটি অভ্যাসে পরিণত করতে পারবে। এরপর দেখবে কেমিস্ট্রি কিংবা হায়ার ম্যাথের টপিকটা আরও তাড়াতাড়ি মাথায় ঢুকছে।

  • অযথা মাল্টি টাস্কিংকে না বলো

তুমি প্রতিদিন যেই কাজটি করছো সেটি অবশ্যই তোমার লক্ষ্যের সহায়ক হতে হবে। তোমার অবস্থা যাতে Master of all but jack of none- এই রকমের না হয়ে যায়, প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে হলে এই দিকটায় লক্ষ রাখতে হবে। কাজেই  একসাথে অনেকগুলো কাজ করা আজকে থেকেই থামিয়ে দাও। এতে কাজের কাজ কিছুইতো হয় না উল্টো সময় নষ্ট হয়। একটা তথ্য দেই। তুমি দিনে প্রায় ১০ বারের মতো টাস্ক পরিবর্তন করলে তোমার এভারেজ আই কিউ কমে প্রায় ১০ পয়েন্ট এর মতো।

তাই কম টার্গেট রেখে সেই কাজ গুলোভাবে করতে পারলে তোমার কাঙ্ক্ষিত কাজে দক্ষতা বাড়বে, সেই সাথে প্রোডাক্টিভিটি বাড়লে তোমার কাজ করার স্পৃহা শত গুণে বেড়ে যাবে।

আমি মাল্টিটাস্কিংকে না বলছি না, “অযথা” এক সময় অনেক গুলো কাজ একসাথে করার ব্যাপারটিকে না বলছি কেননা এক্ষেত্রে কম প্রোডাক্টিভিটির সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ।

  • ব্রেক নাও, বড় কাজকে ভেঙে ছোট করে ফেলো

কাজ করতে করতে প্রায় সময়ই আমাদের মাথা ধরে যায়। এর মানে হচ্ছে কাজ করার জন্য আমাদের ব্রেইনের গ্লুকোজ প্রায় ফুরিয়ে গেছে। এই অবস্থায় নিয়ে ফেলো ব্রেক। ব্রেক মানে সোশ্যাল মিডিয়া ব্রেক নয়। কাজ করা ফাঁকে ব্রেক হিসেবে তুমি একটু হাঁটাহাঁটি করে আসতে পারো কিংবা লাঞ্চ বা হালকা জল খাবার অথবা মেডিটেশন দিয়েই ব্রেকের পর্বটা সেরে ফেলতে পারবে। ব্রেকের ফলে তোমার ব্রেইন পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্লুকোজের যোগান পাবে যার ফলে তোমার কাজটাও হবে প্রোডাক্টিভ।

কোনো কাজ কি খুব বেশি বড় কিংবা একঘেয়ে রকমের মনে হচ্ছে? চিন্তা নেই। এই সব কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে কাজগুলোকে ভেঙে ছোট করে ফেলো। ছোট ছোট প্রোডাক্টিভ কাজ তোমাকে দিয়ে বড় কাজটি করিয়ে নেবে।

  • এবার নিজেকে ট্রিট দাও

অনেক কাজ হোল। এবার নিজেকে পুরস্কৃত করো। প্রতিটি কাজের লক্ষ্য পূরণ হলে নিজেকে উপহার দাও। এই সেলফ রিওয়ার্ডের প্র্যাকটিস তোমাকে সেলফ মোটিভেটেড থাকতে সাহায্য করবে অনেক বেশি। আর সব সময় নিজে নিজেই মোটিভেটেড থাকতে পারলে প্রোডাক্টিভিটি হবে তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড।

এগুলো ছাড়াও প্রোডাক্টিভিটির আরও কিছু মন্ত্র আছে। যেমন, তোমার কাছে প্রতিদিনকার যেই কাজগুলো কঠিন মনে হবে সেই কাজগুলো পারলে দুপুরের খাবার অর্থাৎ লাঞ্চের আগেই সেরে ফেলো। টু ডু লিস্টের পাশাপাশি তোমার ডেইলি রুটিনের দিকেও মনোযোগ দাও। তার সাথে রুটিনমাফিক স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার গুরুত্বটাও কম না। সবশেষে, পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমালে প্রোডাক্টিভিটির জন্য যে এতো এতো প্ল্যান, সবই হবে ধূলিসাৎ।

প্রোডাক্টিভিটি ব্যাপারটি চাইলেই তুমি একদিনে অর্জন করতে পারবে না কেননা প্রোডাক্টিভিটির ব্যাপারটি অন্যান্য অনেক কাজের মতোই অনুশীলন নির্ভর। আর প্রোডাক্টিভিটির অনুশীলন করতে হলে তোমাকে  সব সময় উপরের ব্যাপারগুলো মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু এখানেও কিছু সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার তোমাকে বারবার বাধা দিবে। যেমন ধরো আমাদের নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ একটি বিষয়। কাজেই এই বাধা উৎরাতে হলে বেশ শক্তপোক্ত ইচ্ছা শক্তির প্রয়োজন।

আরও আছে এক কাজ করার সময় অন্য কাজ করার প্রবণতা। এতে আমাদের মানসিক শক্তির অপচয় ছাড়া কাজের কাজ আর কিছুই হয় না। বরঞ্চ এর ফলে আমাদের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে প্রোডাক্টিভ হওয়া আর ব্যস্ত থাকা কিন্তু মোটেও এক জিনিস নয়। তাই ব্যস্ত হওয়ার পরিবর্তে প্রোডাক্টিভ হওয়ার পেছনে বেশি মনোযোগ দাও।

প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর প্রায় সব রসদই তোমাকে দিয়ে দিলাম। আজকে থেকেই একটা রুটিন বানিয়ে প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য নেমে পড়। আর নিচের উক্তিটি সব সময় মাথায় রাখবে-

 

সংগ্রহীত

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট

কিভাবে আপনি আপনার পড়াশুনার গতি বাড়াবেন?

কিভাবে আপনি আপনার পড়াশুনার গতি বাড়াবেন?

কিভাবে আপনি আপনার পড়াশুনার গতি বাড়াবেন?

আমার কলেজ বন্ধু মুহিবকে দেখতাম ক্লাস শুরু হওয়ার আগে, টিফিন পিরিয়ডে কিংবা বোরিং কোন ক্লাসের মাঝে শেষের সারিতে বসে বসে গল্পের বই পড়ছে। সব থেকে অবাক করার বিষয় হলো প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন বই পড়ছে সে। কীভাবে এত তাড়াতাড়ি বই শেষ করতে পারে এটা ভেবেই আমি চিন্তিত।

আমার বাসার বুকশেলফে অনেক বই আছে। টুকটাক ভালোই বই পড়া হয়। কিন্তু একটা বইতো এক সপ্তাহের আগে কোনো দিনই শেষ করা যায় না। একদিন মুহিবকে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম। মুহিব হেসে আমাকে চিন্তা করতে মানা করলো আর ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দিলো অনেকগুলো ইউটিউব লিংক।

রিভিউ কিংবা চ্যাপ্টার সামারি আগে পড়ো

প্রথম কাজ হিসেবে তোমারা অনেকেই যে কাজটি করো না, তা হলো বুক রিভিউ কিংবা চ্যাপ্টার সামারি পড়া। একটা বই শুরু করার আগে একটু গুগল করে নাও,ইউটিউবে কিছু রিভিউ দেখে নাও। তাহলে বই সম্পর্কে তোমার ধারণা হবে আর বইয়ের ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্টগুলো তুমি আগে থেকে জানলে তোমার আগ্রহ অনেক বেড়ে যাবে। তুমি সেই ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্টগুলো পাওয়ার জন্যে অধীর আগ্রহ নিয়ে পড়ে যাবে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা!

চ্যাপ্টার সামারি সব থেকে বেশি কাজে আসে তখন যখন তোমার হাতে সময় অনেক কম। তুমি চ্যাপ্টার সামারিগুলো থেকেই বই সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে নিতে পারবে।

মনে মনে পড়ো

ছোট বেলা থেকেই আমরা একটা অভ্যাসের মধ্যে বড় হই, সেটা হলো জোরে জোরে পড়া। একদম ছোটবেলা থেকে ক্লাসরুমে অনেকটা এমন করে পড়ানো হতো, “অ-তে অজগরটি আসছে তেড়ে” সাথে সাথে পুরো ক্লাস জুড়ে “অ-তে অজগরটি আসছে তেড়ে।”

ছোটবেলার এই অভ্যাস হয়তো পাঠ্যবই পড়ার ক্ষেত্রে অনেক কার্যকর, কিন্তু সাধারণ বই পড়ার ক্ষেত্রে তা একদমই না। যখন আমরা প্রতিটা শব্দ উচ্চারণ করে করে পড়ি তখন কথা বলার সাথে সাথে পড়তে যেয়ে পড়ার গতি কমে যায় কয়েক গুণে। তুমি একটু পরীক্ষা করেই দেখতে পারো, দেখবে উচ্চারণ করে করে পড়লে যত গুলো শব্দ এক মিনিটে শেষ করা যায়, মনে মনে পড়লে সেই সময়ে প্রায় দ্বিগুণ শব্দ কভার করা যায়।

আরেকটা বড় সমস্যা হচ্ছে মনে মনে পড়ার সময়ও আমরা পড়াটা মস্তিষ্কের মধ্যে বলতে থাকি অর্থ্যাৎ ঠোঁটে উচ্চারণ করে করে না পড়ে মাথার মধ্যে উচ্চারণ করে করে পড়া! এই সমস্যাটাকে বলা হয় Sub-vocalization. অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন, মানুষের দ্রুত পড়ার ক্ষমতাকে কমানোর অন্যতম প্রধান কারণ এই Sub-vocalization.

তাই পড়ার সময় মুখে কিংবা মস্তিষ্কের ভিতরে কোন জায়গাতেই উচ্চারণ করে করে পড়ার কোন প্রয়োজন নেই। বিনা বাধায় শুধু চোখ বুলিয়ে পড়ে যাও।

 

পয়েন্টার ব্যবহার করো

পড়তে বসার সময় একটা কলম, হাইলাইটার কিংবা একটা সরু কাঠিকে পয়েন্টার হিসেবে ব্যবহার করতে থাকো। যদি কিছুই না পাও হাতের কাছে ব্যবহার করো হাতের আঙ্গুলটাকেই।

পয়েন্টার ব্যবহার করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ একটা বড় প্যারাগ্রাফ পড়ার সময় আমরা বারবার হারিয়ে ফেলি কোন লাইনে ছিলাম। অনেক সময় একবার পড়ে আসা লাইনকেই আবার পড়তে শুরু করি! এই ভুলগুলোর জন্যে পড়ার মাঝে মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে পরবর্তীতে আবার খুঁজে নিয়ে পড়া শুরু করতে হয়। পয়েন্টার ব্যাবহার করলে এরকম ঝামেলার কোন সুযোগই নেই।

পয়েন্টার ব্যবহারের আরেকটা চমৎকার দিক আছে। অনেক সময় এমন হয়, পড়তে পড়তে অন্যদিকে মন চলে যায়। অনেকগুলো লাইন পড়ে ফেলেছি কিন্তু মনোযোগ নেই একদমই! এই হঠাৎ করে অন্যমনস্ক হয়ে যাওয়া সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় পয়েন্টার ব্যবহার করলেই।

তুমি যখন পয়েন্টার ব্যবহার করবে তখন এমনিতেই তোমাকে এক্সট্রা একটা এফোর্ট দিতে হবে, যার ফলে হাত চালানোর জন্যে হলেও তোমাকে মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। যখন তুমি পড়ার সময় পয়েন্টার ব্যবহার করবে, তখন মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হলে দেখবে তোমার পয়েন্টার থেমে আছে। তাই পয়েন্টার বা গাইড ব্যবহার করলে দেখবে তোমার পড়ার মনোযোগ কয়েক গুণে বেড়ে গিয়েছে।

সূত্রঃ https://10minuteschool.com/blog/9-tips-for-speed-reading/

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট

ব্যবসায়িক সচেতনতা সম্পর্কে

জেনে নিন ব্যবসায়িক সচেতনতা সম্পর্কে

জেনে নিন ব্যবসায়িক সচেতনতা সম্পর্কে

ব্যবসায়িক এবং শিল্প ক্ষেত্র কিভাবে কাজ করছে এই বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারাটাই মূলত ব্যবসায়িক অথবা বানিজ্যিক সচেতনতা। ব্যবসায়িক অথবা বানিজ্যিক সচেতনতা হল চাকরীর প্রয়োজনীয়তার জন্য অনেক নিয়োগকারীদের দ্বারা চিহ্নিত একটি অন্যতম মূল বৈশিষ্ট্য।

ব্যবসায়িক বা বানিজ্যিক সচেতনতা, ব্যবসা অথবা বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন স্কিল এবং স্কিলটি থাকা অত্যাবশ্যক । তবে এটি সকল ক্ষেত্রের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথেই সম্পর্কযুক্ত।

বানিজ্যিক সচেতনতা সমস্ত শিল্প জুড়ে সরকারী এবং বেসরকারী গ্রাজুয়েটদের জন্য মূল্যবান একটি স্কিল। ব্যবসায়িক বা বানিজ্যিক সচেতনতা চিন্তা করার উপায় হিসেবে ব্যবহৃত না বরং এটি বিভিন্ন চাকরীর বিজ্ঞাপনে একটি দক্ষতা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ-

  • ব্যবসায়িক চিন্তা-ভাবনা থাকা
  • ব্যবসায়িক ধারনা থাকা
  • ব্যবসায়িক কাজ বোঝার ক্ষমতা থাকা
  • ব্যবসায়িক মনোভাব থাকা
  • ব্যবসায়িক মনের অধিকারী হওয়া।

 

ব্যবসায়িক বা বানিজ্যিক সচেতনতা থাকার প্রয়োজনীয়তা

শীর্ষস্থানীয় নিয়োগকারীরা ব্যবসায়িক সচেতনতা উপরে দক্ষ লোক নিয়ে থাকেন। বিভিন্ন কম্পানি অথবা যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে সে সম্পর্কে জ্ঞান পরীক্ষা করার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একটা চাহিদা থাকে যে , প্রাথীদের একটি স্পষ্ঠ ধারনা থাকবে ব্যবসায়িক পরিবর্তনের উপরে এবং এই ব্যবসায়িক পরিবর্তন কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের উপরে প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কেও একটি সু-স্পষ্ঠ ধারনা থাকবে।

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট

Untitled-3

নেতৃত্বের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

নেতৃত্বের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্বের গুরুত্ব অপরিসীম। নেতৃত্ব ব্যতীত কোন দল বা সংগঠন চলতে পারে না। প্রতিষ্ঠানে নেতাকে কেন্দ্র করে অধীনস্থ কর্মী আবর্তিত হয়। দলের নেতা এবং দলের সকলের  লক্ষ এক থাকতে হবে আর দলীয় প্রচেষ্টাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পরিচালনা করাই নেতার কাজ। এরূপ প্রচেষ্টা বিশেষভাবে নেতার গুণ ও কর্মদক্ষতার উপর নির্ভর করে। ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের মান দুর্বল হলে জনশক্তির মাঝে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং দলবদ্ধ প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়। তাই দলবদ্ধ প্রচেষ্টা সৃষ্টি ও জোরদারকরণের ক্ষেত্রে সুদক্ষ নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই।

যে কোন ব্যবসায় সংগঠনে কর্মীদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া লক্ষ্যার্জন সম্ভব নয় তাই নেতাকে দলের সকলের অনুপ্রেরনা দিতে হয় যাতে করে সকলে উৎসাহী হয়ে দলের উন্নয়নে অংশগ্রহন করে। কার্যকর নেতৃত্ব সংগঠনের অভ্যন্তরে এরূপ সহযোগিতার ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। নেতৃত্বকে ঘিরেই জনশক্তি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং পারস্পরিক সহযোগিতার কার্য সম্পাদন করে। তাই এরূপ নেতৃত্ব কৌশল অবশ্যই ব্যবস্থাপনাকে অবলম্বন করতে হবে।

যোগ্য নেতৃত্ব প্রাতিষ্ঠানিক সকল কাজের ফল প্রদতা বা কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে ও গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা রাখে। নেতৃত্ব একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে জনশক্তির সকল কার্যপ্রয়াসকে কেন্দ্রীভূত করে বিধায় কাজের গতিশীলতা বাড়ে এবং এক লক্ষ এক নীতিতে বিশ্বাস করে। সকল ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবার কারণে ও কার্যক্ষেত্রে উত্তম ফলাফল লাভ করা যায়।

ব্যবস্থাপনার অন্যতম দায়িত্ব হলো প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত জনশক্তিকে সংঘবদ্ধ করে পরিচালনা করা। কারণ সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া কখনও প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জন সম্ভব হয় না। প্রতিষ্ঠানের কার্যকর মানের নেতৃত্ব থাকলে তাকে ঘিরে জনশক্তি সংঘবদ্ধ ও আবর্তিত হয় এবং সবাই নেতৃত্ব যত শক্তিশালী হয় সংগঠন তত শক্তিশালী ও মজবুত হয়ে থাকে। তাকে অনুসরন করে তার নির্দেশে পরিচালিত হয়।

নেতৃত্বের প্রধান ও সর্বধিক গুরুত্বপূর্ন দিক হচ্ছে নেতাকে লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা দান এবং লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে। লক্ষ্য সফলভাবে পৌছাতে সিদ্ধান্ত  নেয়া এবং সে অনুসারে নিজেকে এবং দলের সকলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

কার্যকর নেতৃত্ব প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাখে। কারণ, নেতৃত্ব হল এমন একটি কৌশল যাতে অধীনস্থ কর্মীগণ তাদের সম্ভাব্য সর্বাধিক সামর্থ অনুযায়ী নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে তৎপর হয়। প্রতিষ্ঠানে যোগ্য নেতৃত্বের গুণসম্পন্ন ব্যবস্থাপক থাকলে তার বা তাদের প্রচেষ্টায় জনশক্তির ধ্যান-ধারণা ও কর্ম প্রচেষ্টা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়ে থাকে।

 

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট

কিভাবে সঠিক ক্যারিয়ার নির্বাচন করবেন

কিভাবে সঠিক ক্যারিয়ার নির্বাচন করবেন

ক্যারিয়ার বেশ ভারি আর গাম্ভীর্যপূর্ণ একটি শব্দ। আমাদের প্রায় স্কুল লাইফ থেকেই এ বিষয়টা মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। ক্লাস ফোরে পড়া একটা বাচ্চাও জানে লেখাপড়া শেষ করে তাকে চাকরি করতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হল, এত প্রয়োজনীয় একটা বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেই কোন চিন্তা ভাবনা ছাড়াই। এ বিষয়ে সঠিক পথ দেখানোর জন্যও আমরা কাউকে পাই না। সবাই কিছু ধারণাকে পুঁজি করেই পরামর্শ দেয়, যেমন ‘এখন কম্পিউটার সব জায়গায়, কম্পিউটার নিয়ে পড়লে ভাল চাকরি পাবে’। কিন্তু জীবনের সবচেয়ে বড় এই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য যে অনেক বিষয় বিবেচনা করা উচিত, তা কেউ বলেও না, বা আমরা জানিও না।

আমাদের অনেকের মতেই স্মার্ট ক্যারিয়ার মানেই চাকুরি। এর বাইরে যে সম্মানজনক আরও অনেক ক্যারিয়ার আছে, তা আমরা জানিই না। সবার কথা শুনে যখন একটা ক্যারিয়ার পথ বেছে নেই, দেখা যায় সে কাজ করতে গিয়ে তা আর ভালো লাগছে না, ক্যারিয়ার হয়ে পড়েছে বোঝা। গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকাতে একজন মানুষ গড়ে ৩ বার তার ক্যারিয়ার পথ পালটায়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা চাইলেও সম্ভব হয় না, কারণ আমরা শুধু মাত্র একটা কাজের জন্যই তৈরি হই, আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের এটাই শেখায়। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, নিম্ন আয়ের দেশ গুলোতে ৮৯% মানুষই তাদের চাকরি পছন্দ করে না, এবং তারা পরিবর্তন করতে চায়।

এ সমস্যাগুলোর সমাধান একভাবেই করা যায়- শুরুতেই নিজের ক্যারিয়ার নির্বাচনে সচেতন হওয়া, সে হিসেবে নিজেকে তৈরি করা।

নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে খুব যথাযথ একটি ক্যারিয়ার নির্বাচন করতে পারবেন।

শুরুটা মাধ্যমিক থেকেই:

ক্যারিয়ার প্ল্যানিং শুরু করা উচিত মাধ্যমিক বা তারও আগে থেকে। তখন থেকে রিসার্চ করা উচিত কোন ফিল্ডের ডিমান্ড ৪-৫ বছর পর অনেক ভাল থাকবে। সে ফিল্ডে যে কাজ করতে হবে, সেসব কাজে আগ্রহ আছে কিনা, কাজগুলো পছন্দ কিনা। তারপর ভাবতে হবে সে কাজ করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাতেও কিছু শেখানো হচ্ছে কিনা। সে কাজ করতে হলে কী কী শেখা দরকার তা শিখতে হবে।

আয়টাও জরুরি:

ক্যারিয়ার বলতেই আমরা অর্থ উপার্জনের মাধ্যমকে বুঝি। লেখাপড়া শেষ করে একটা ভাল বেতনের চাকরি পেতে হবে, এটাই অনেকের এক মাত্র ভিশন। যদিও ক্যারিয়ার নির্বাচনে সবচেয়ে জরুরি বিষয় এটি নয়, তবে দায়বদ্ধতার কারণে এটা আগে ভাবতে হয়।  যে ফিল্ডগুলোর ডিমান্ড ৪-৫ বছর পরেও বাড়বে, সেগুলোর দিকে নজর দেয়া উচিত হবে। এটা জানার জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটে বিভিন্ন খবর, প্রতিবেদন পড়তে হবে। বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণগুলো খুঁজে পড়তে হবে।

বিকল্প ক্যারিয়ার:

শিক্ষাজীবনে আমাদেরকে খুব কমই জানানো হয় যে ক্যারিয়ার মাত্রই চাকরি নয়। উদ্যোক্তা হওয়া, ফ্রিল্যান্সার, স্বাধীন-কন্সাল্টেন্ট হওয়া এরকম আরও অনেক ক্যারিয়ার পথ আছে। উদ্যোক্তা হলে নিজের কাজের স্বাধীনতা যেমন থাকে, তেমনি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়। বাংলাদেশের মত দেশ, যেখানে ৪৭% শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বেকার, সেখানে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করাটা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশে তরুণদের প্রতিষ্ঠা করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ’ থেকে হাজার খানেক শিক্ষিত ছেলেমেয়ে কাজ করার সুযোগ পায়।

অপ্রচলিত ক্যারিয়ার:

ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টার এসব ছাড়াও ইদানীং কিছু ক্যারিয়ার পথ তৈরি হয়েছে, যাতে অনেকেই সফল হচ্ছে। যেমন ফটোগ্রাফি, ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, মেক-আপ আর্টিস্ট, স্টাইলিস্ট, ক্যারিয়ার গ্রুমিং, কর্পোরেট ট্রেইনার, পাবলিক স্পিকার, ফ্যাশন ডিজাইনিং, হোটেল ম্যানেজমেন্ট, ফিল্ম মেকিং, ব্লগিং ইত্যাদি। এসব বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার খুব একটা সুযোগ বাংলাদেশে নেই, তবে এসব বিষয়ে তাত্ত্বিক শিক্ষার চেয়েও ব্যবহারিক বা প্র্যাকটিকালি শেখার প্রয়োজন খুব বেশি হয়। এগুলো বাংলাদেশে খুব জনপ্রিয় পেশা হয়ে উঠছে দিন দিন।

কী ভাল লাগে:

ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার পর ‘কাজ ভাল লাগে না’ রোগে ভুগতে না চাইলে প্রথমেই ভাবা উচিত কী ভাল লাগে। ভাবুন কী এমন কাজ যা করতে ভাল লাগে, যা করতে গিয়ে মনে হয় না কাজ করছেন। এবং দেখুন সে কাজটা আসলে সিরিয়াস ক্যারিয়ার হিসেবে করা যায় কিনা, বা এটা প্রচলিত কিনা। ধরুন আপনি আঁকতে পছন্দ করেন। খুব ভাল আঁকেন। তাহলে আপনার জন্য ফ্যাশন ডিজাইনিং বা অন্যান্য ডিজাইনিং এর ক্যারিয়ার ভাল হবে। আবার ধরুন আপনি লেখালেখি ভালবাসেন, তাহলে অবশ্যই আপনার জন্য লেখালেখি করতে হয় এমন কাজ যেমন সংবাদপত্রে চাকরি ভাল হবে। ভুলেও অপছন্দের কোন কাজকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেবেন না, তাহলে ক্যারিয়ার বোঝা বনে যাবে।

চাকরির আগেই অভিজ্ঞতা:

চাকরির আগেই অভিজ্ঞতা অর্জন খুব জরুরি। এতে এক সাথে দু’টো কাজ হয়, একে তো চাকরির জন্য রেজ্যুমে ভারি করার এক্সপেরিয়েন্স পেয়ে যাবেন, সাথে আপনার নির্বাচিত ক্যারিয়ার পথটি আসলেই আপনার জন্য কিনা তা বুঝতে পারবেন। ধরুন আপনি ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিজেকে গড়তে চান। তাহলে

পড়াশোনা চলাকালীন কোন ইলেক্ট্রনিক কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করার চেষ্টা করুন।

অথবা ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন কম্পিটিশন যেখানে ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে কাজ করতে হয় সেখানে অংশগ্রহণ করুন। আবার ধরুন আপনি ম্যানেজমেন্টে ক্যারিয়ার গড়বেন।

তাহলে ইউনিভার্সিটি ক্লাব বা কোন সংগঠনে ম্যানেজমেন্টের কাজ করতে হয় এমন পদে যুক্ত হোন। কাজ করার মাধ্যমে বুঝে ফেলতে পারবেন আপনি এ কাজে আনন্দ পাচ্ছেন কিনা, নাকি পরিবর্তনের সময় এখনই!

 দক্ষতাই চাবিকাঠি:

এখনকার সময়ে ক্যারিয়ারের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর সার্টিফিকেট অনেকটা এন্ট্রি-টিকেট হিসেবে ব্যবহার হয়। বাকি পুরোটাই নির্ভর করে দক্ষতার উপর। দেশের একজন নামকরা সফটওয়্যার প্রোগ্রামার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়েছিলেন, দেশের অনেক বড় বড় ব্যাংকের উচ্চপদস্থ ব্যাংকার  ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করা। তেমনি খোঁজ নিলে দেখা যাবে শুধু ডাক্তাররা ছাড়া অন্য সব একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ফিল্ডে ক্যারিয়ার গড়েছে।

মনে করুন আপনার ফটোগ্রাফি নিয়ে বেশ আগ্রহ আছে। এটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান। তাহলে দেরি না করে একটা ক্যামেরা জোগাড় করুন, ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করুন কিভাবে অনেক সুন্দর ছবি তোলা যায়। ইউটিউবে হাজারো এক্সপার্টদের পরামর্শমূলক টিউটোরিয়াল আছে, হাজার হাজার বই আছে যা পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করা যায়। আর প্র্যাকটিস করুন। একাগ্রতা থাকলে আপনি সফল হবেনই।

তেমনি যদি আপনি বিজনেস ব্যাকগ্রাউন্ডের হয়েও গেইম ডেভেলপমেন্টে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে ধৈর্য্য ধরে নেমে পড়ুন শেখার পেছনে। ইন্টারনেট ঘেঁটে বের করুন গেইম ডেভেলপমেন্ট শিখতে কী কী জানতে হয়, সেই চেকলিস্ট ধরে ইন্টারনেট থেকেই শুরু করুন শেখা।

মেন্টর বানান কাউকে:

মেন্টর এমন একজনকে বানান যিনি আপনার পছন্দের ফিল্ডগুলোতে সফল একজন মানুষ। এবং অবশ্যই অন্যান্য ফিল্ডগুলো সম্পর্কেও ধারণা রাখে। যদি এমন কাউকে মেন্টর বানান যে শুধু একটা ফিল্ডই চেনে, তাহলে তিনি শুধু ঐ ফিল্ডের গুণগান করে যাবেন। মেন্টরের সাথে কথা বলেই আপনার ক্যারিয়ার প্ল্যান তৈরি করুন।

একটা দেশে ৪৭% স্নাতক বেকার, ৮৯% নিজের চাকরিতে অসন্তুষ্ট, এটা বেশ ভয়ংকর তথ্য। নিজেকে এর থেকে বাইরে রাখার জন্য প্ল্যানিং করা শুরু করুন, আর প্ল্যান অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করুন।

 

সংগৃহীতঃ- https://10minuteschool.com/blog/career-choice-advice-01/

 

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট