মনের মাঝে বিদ্যুৎ নিয়ে যত কৌতুহল

মনের মাঝে বিদ্যুৎ নিয়ে যত কৌতুহল

ভোরের ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতি ক্ষেত্রেই আমরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করি কিন্তু এই বিদ্যুৎ কে আবিষ্কার করেন, বিদ্যুৎ আবিষ্কারের গল্প, বিদ্যুৎ কাকে বলে, বিদ্যুৎ কত প্রকার, বিদ্যুৎ পরিবাহী পদার্থ, এই বিষয়গুলো আসুন আমরা জানি আজকের আলোচনা থেকে।

বিদ্যুৎ কে আবিষ্কার করেন

১৮ শতকের মাঝামাঝি আমেরিকান বিজ্ঞানী বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন প্রথম বিদ্যুতের ওপর ব্যবহারিক গবেষণা শুরু করেন। কিন্তু এসময় নিরবছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যেত না। শুধু সাময়িক সময়ের জন্যই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যেত। ১৮৪০ সালে আবিষ্কৃত টেলিগ্রাফও ব্যাটারির মাধ্যমে চালানো হতো। এরই মাঝে ফ্যারাডের একটি আবিষ্কারের সূত্র ধরেই ১৮৩১ সালে ডায়নামো আবিষ্কার করা হয়। তবে বেনজামিন ফাঙ্কলিন কে বিদ্যুৎ এর আবিষ্কারক হিসাবে ধরা হয়।

বিদ্যুৎ আবিষ্কারের গল্প

বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বিদ্যুৎ আবিষ্কার নিয়ে একটি মজার গল্প আছে। আকাশের চমকানো বিদ্যুৎ আর আমাদের ঘরে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যে একই জিনিস তা জানতেন না তখনকার বিজ্ঞানীরা। বেঞ্জামিন প্রমাণ করে দেখান যে, আকাশের চমকানো বিদ্যুৎ আর ঘরে তৈরি করা বিদ্যুৎ একই জিনিস। ১৭৫২ সালের ১৫ জুন তিনি প্রচণ্ড এক ঝড়ো বাতাসে বিপজ্জনক এক পরীক্ষা করে বসেছিলেন। সে দিন রাতে প্রবল বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে চলছিল বৃষ্টি। তিনি সে দিন উড়িয়ে দিলেন রেশমি কাপড়ের তৈরি এক ঘুড়ি। ঘুড়ির যে সুতা সেখানেও ব্যবহার করলেন রেশমি সুতা। সুতার শেষ মাথায় মানে হাতের কাছে বেঁধে দিলেন ধাতুর তৈরি এক চাবি। আর চাবিটা ছিল এক দম তাঁর হাতের কাছে। রেশমি সুতা নেওয়ার কারণ, রেশমি কাপড় ইলেকট্রন পরিবহন করতে পারে ভালো। রেশমি কাপড়ে কাচের কাঠি ঘষে নিলে তা ছোট ছোট কাগজ টুকরো বা কাঠের টুকরোকে আকর্ষণ করে তা প্রচলিত ছিল অনেক আগেই। তার ওপর ছিল বৃষ্টির জলে ভিজে পরিবহন ক্ষমতা গেল বেড়ে। ফ্রাঙ্কলিন জানতেন না কত বড় বিপদের কাজ করছেন তিনি। আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্গে সঙ্গে সে বিদ্যুৎ ভেজা সুতো বেয়ে নেমে এল চাবির মাঝে। চাবির মধ্যে বয়ে গেল প্রবল বিদ্যুতের ঝলক। বেঞ্জামিনের ভাগ্য যে কী পরিমাণ ভালো ছিল ভাবতেই অবাক লাগে। কারণ এ কাজে দু’জন মারা গিয়েছিল। আকাশে যে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ থাকে! প্রায় আড়াইশো বছর আগে পরীক্ষাটি করেছিলেন বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন।

  বিদ্যুৎ কাকে বলে

বিদ্যুৎ এক প্রকার শক্তি , যা খালি চোখে দেখা যায় না কিন্তু অনুভব করা যায় । পরিবাহির মধ্যে দিয়ে ইলেক্ট্রন প্রবাহের ফলে যে শক্তি সৃস্টি হয় তাকে বিদ্যুৎ বলে ।

বিদ্যুৎ কত প্রকার

বিদ্যুৎ সাধারনত দুই প্রকার

(i) স্থির বিদ্যুৎ
(ii) চল বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ পরিবাহী পদার্থ

যে পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে অর্থাৎ-বিদ্যুৎ প্রবাহে কোন বাঁধা পায় না তাকে পরিবাহী বলে।পরিবাহী তিন প্রকার

1.সু-পরিবাহী: যে পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই বিদ্যুৎ পরিবাহী হতে পারে তাকে সু-পরিবাহী বলে। পরমাণুর শেষ কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা ১,২,৩ টি থাকে। যেমন:-তামা, সোনা, রূপা, এলোমোনিয়াম, দস্তা, পিতল, নিকেল, সীসা, রাং, প্লাটিনাম, ফসফর ব্রোঞ্জ, পারদ ইত্যাদি।

2.অর্ধ-পরিবাহী :যে পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদুৎ প্রবাহিত হওয়ার সময় আংশিক ভাবে বাধাঁ প্রাপ্ত হয় অর্ধ-পরিবাহী বলে। পরমাণুর শেষ ক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা ৪ টি থাকে। যেমন:-কার্বন, সিলিকন, মাইকা, কয়লা, জার্মেনিয়াম, বিজা মাটি, বিজা বাঁশ ইত্যাদি।

  1. কু-পরিবাহী: যে পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদুৎ প্রবাহিত হতে পারেনা তাকে কু-পরিবাহী বলে। পরমাণুর শেষ কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা ৫,৬,৭ টি থাকে।য়েমন:- ব্যকেলাইট, এসবেসটস, মার্বেল, পাথর, রাবার, চিনামাটি, তুলা, শুকনো কাগজ, শুকনো বাঁশ ইত্যাদি।

পরিশেষে বলতে চাই উপরের বিষয়গুলো পাঠ করার পরে সকলের কাছে বিদ্যুৎ কে আবিষ্কার করেন, বিদ্যুৎ আবিষ্কারের গল্প, বিদ্যুৎ কাকে বলে,বিদ্যুৎ কত প্রকার, বিদ্যুৎ পরিবাহী পদার্থ বিষয়ে যত কোশ্চেন ছিল সকল বিষয়গুলো পরিষ্কার ধারণা দিতে পেরেছি । আজকে এতোটুকুই থাক পরবর্তীতে কোন একসময় কোন এক বিষয় নিয়ে আবার হাজির হব।

 

লিখেছেন

মোঃশফিকুল ইসলাম মিলন

ইন্সট্রাক্টর

ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

 

 

 

Tags: No tags

Comments are closed.