Depression or Stupidity? Think Before You DO

Depression or Stupidity? Think Before You Do

Life is hard to live, but it is harder if you are stupid. Why? There are so many things in your life to do, to entertain yourself, but in spite of those things, if you find your life difficult to live, you are definitely stupid. Yes, there are a lot of ups and downs in our life. But it doesn’t mean that you will lose your heart and give up. Depression may come from various phases. It may come from your family, from your friends, failure, from the person you love, or from inside yourself. 

Source: http://www.ngopulse.org/article/2018/08/23/depression 

Suppose you want something from your father or from any of your family members or your family members are dead against of a decision you have made. What do you do? Will you leave your family? Or will you give up on your decision? I will suggest you to think deeply on your decision and then find out some strong logic with which you can convince your family members. Of course they always will wish for your well-being. So, explain your thought and ideas to them as you understand. If you can, they will appreciate you for sure.

Or maybe you have failed in a work and you can’t take your failure so easily. What will you do then? Yes, depression will surround you with all its effort, but you also have to stand against it. Because there is a proverb, “Failure is the pillar of success”.  That means if you fails in a work, it will definitely help you later to be succeed. There is another proverb, “Man learns from mistakes.” That means when you make mistakes, you come to know that you were wrong and you also can know that where your lacking are. Then you can work hard to overcome those lacking. So, never depression let take over you. 

Another thing is failure in love. You go in a relationship and you are being cheated, what will you do then? Will you become depressed or you will start to ruin your life? You are none but a great fool if you do so. Why? A person or a breakup in your love relation can never decide the fall of your life. In that case, what should you do? Before you go for a relationship, make sure that the person before you is the person you actually want. But remember that no one is 100% perfect. Everyone has flaws. Keeping this in mind choose the right person to carry on. Think before you do. 

Source: https://www.youtube.com/watch?v=LYpdld91bsk 

The result of a public examination is an ideal source of examination. You worked hard, but you did not get what you expected and you get depressed and some people are far better than that and they commit suicide. Seriously? Just a result of an examination can matter to be your dead or alive? Let me share a story of my own. In my higher secondary examination, I made a very poor result and I could not try for admission in most of the public universities. At that time, I should die according to your philosophy. But sorry boss, my way goes otherwise. Yes, people, family members, relatives said so many things. It is hard to bear, but if you can’t you will be stupid. So, then I took an oath that whatever happened has happened, but I will work harder so that it never happens again. Then I got into a university and gave a better effort and then the CGPA of my Grad. And P. Grad is much better than the higher secondary and then people, family, relatives did not remember what I did in the higher secondary exam. So, the cloud is temporary, the sun is waiting to come.

Source: https://iconscout.com/icon/fail-student-1560833 

Depression, it comes; people get depressed, but it can never protest you to go forward. When you will get depressed, let yourself take a break to think of things happening around you and happening with you. Judge yourself and your activities. Never let your mind think something wrong. A human mind is like an infant. An infant understands what you tell or teach him/her. In the same way your mind will also understand what you will want it to think. Never do things which can make you depressed. If you get by chance, do what you need to do. But never do something wrong. Keep it in mind that a decision taken during anger or is always wrong. Keep your mind cool and decide. Again, think before you do. 

Peace. . .

Nahid Hasan

 Instructor (English)

 Daffodil Polytechnic Institute

টেলিকমিউনিকেশন ক্যারিয়ার ভাবনা (পার্ট ০১)

টেলিকমিউনিকেশন ক্যারিয়ার ভাবনা (পার্ট ০১)

আমরা যারা টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হব বা রানিং ছাত্র-ছাত্রী অথবা যারা কমপ্লিট করেছে সকলের জন্যে আজকে আমার এই লেখা। আমি তাদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে তিনটি ভাগে আলোচনা করব।

প্রথমত, টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোন কোন বিষয় নিয়ে পড়ানো হয় এবং এই টেকনোলজিতে অধ্যায়নের মাধ্যমে এক জন শিক্ষার্থী কোন কোন বিষয়ের উপর পড়ালেখা করে যোগ্যতা অর্জন করে। দ্বিতীয়ত, টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর একজন ছাত্র ছাত্রী কোন কোন টেকনিক্যাল সেক্টরে চাকরির সুযোগ সুবিধা থাকে। তৃতীয়ত, টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করার পর টেকনিক্যাল সেক্টর ছাড়াও আরো কোন কোন সেক্টর এ স্টুডেন্ট রা তাদের ক্যারিয়ার বিল্ড আপ করতে পারে। সেইসাথে ধাপে ধাপে উচ্চ শিক্ষা এবং ক্যারিয়ার গাইডেন্স সম্পর্কে আলোচনা করব।

কোন ডিপার্টমেন্ট বা সাবজেক্ট দুটি অংশে তাদের বিষয়গুলো বিভক্ত থাকে। একটি হচ্ছে মেজর আরেকটা হচ্ছে মাইনর। মেজর বলতে আমরা সাধারণত বেশিরভাগ বিষয় যে টপিক রিলেটেড হয় সে টপিকে তাকে মেজর বোঝায় এবং যে রিলেটেড সাবজেক্ট তুলনামূলক কম থাকে তাকে মাইনর বলে।

টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজি বিষয়ের সিলেবাস টি মূলত টেলিকমিউনিকেশন, ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার সাইন্স এর সমন্বয়ে গঠিত। এর পাশাপাশি পিওর সাইন্স (ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি), ম্যাথমেটিক্স, বিজনেস স্টাডিজ (একাউন্টিং, অর্গানাইজেশনাল ম্যানেজমেন্ট, এন্টারপ্রিনিউরশিপ), সোশ্যাল সাইন্স এর মতো বিষয় ও সংযুক্ত থাকে। সাধারণত একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার কে পারিপার্শ্বিক সকল বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং টার্ম এর বিভিন্ন লজিক্যাল সিস্টেম সম্পর্কে বুঝতে ম্যাথমেটিক্স ও পিওর সাইন্স এর বিষয়গুলো, বিজনেস সিস্টেম এবং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বিজনেস স্টাডিজ এর সাবজেক্ট গুলো, এবং সামাজিক এবং আর্থসামাজিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান রাখার জন্য নন টেকনিক্যাল বিষয়গুলো পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেন একজন ছাত্র দক্ষতার সাথে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে যে কোন দিকে তার ক্যারিয়ারকে নির্ধারণ করতে পারে। সেইজন্য ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের পদ্ধতি তাকে চার বছর সময় নিয়ে একজন দক্ষ এবং পেশাদার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ করে দেয়। বলাই বাহুল্য, এর ফলে একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার তার চার বছর মেয়াদি কোর্স শেষ করার পর শিক্ষা, গবেষণা, ব্যবসায় অথবা একজন দক্ষ সহকারি প্রকৌশলী হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে।

টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজি তে মূলত মেজর হিসেবে টেলিকমিউনিকেশন এবং ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক্স এবং মাইনর হিসেবে কম্পিউটার সাইন্স পড়ানো হয়। এটি এমন একটি ডিপার্টমেন্ট যেখান থেকে পরবর্তীতে ই ই ই, টেলিকমিউনিকেশন অথবা কম্পিউটার সাইন্সে ব্যাচেলর করা যায়।

টেলিকমিউনিকেশন রিলেটেড বিষয়গুলোর মধ্যে, মাইক্রোওয়েভ কমিউনিকেশন, অপটিক্যাল ফাইবার কমিউনিকেশন, মোবাইল কমিউনিকেশন, নেটওয়ার্ক প্ল্যানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট, টেলিফোনি এন্ড সুইচিং, রাডার এন্ড নেভিগেশন এইডস, স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন, ওয়ারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম সম্পর্কে পড়ানো হয়। যেন একজন ছাত্র টেলিকমিউনিকেশনের সিস্টেম, কমিউনিকেশন টার্ম, প্রসেস, ফ্রিকোয়েন্সি এন্ড সিগন্যাল মেজারিং, নেটওয়ার্ক ডিজাইন ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারে।

ইলেকট্রনিক্স এর বিষয়গুলোর মধ্যে বেসিক ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস অ্যান্ড সার্কিট, ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স মাইক্রোপ্রসেসর অ্যান্ড মাইক্রোকন্ট্রোলার, ইলেকট্রনিক মেশিন ইত্যাদি বিষয়গুলো পড়ানো হয়। যেন একজন টেলিকমিনেকেশন ইঞ্জিনিয়ার টেলিকমিউনিকেশন ডিভাইস গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে পারে এবং কম্পিউটার সিস্টেমের হার্ডওয়্যার, ফান্ডামেন্টাল অফ ভিএলএসআই ডিজাইন, আরডুইনো এবং নেটওয়ার্কিং ডিভাইসগুলো সম্পর্কে ভালো ভাবে শিখতে পারে।

সেইসাথে বেসিক ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রিক্যাল মেশিন এর মত কিছু সাবজেক্ট এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় যার ফলে একটি কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক সিস্টেম এ পাওয়ার সোর্স ও পাওয়ার সিস্টেম সম্পর্কে জানতে পারে

এর পাশাপাশি কম্পিউটার সাইন্সের কিছু বিষয় সম্পর্কে ছাত্রদের পড়ানো হয় যেমন কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এর ফলে কম্পিউটার সাইন্সের মোটামুটি সব ধরনের বিষয় সম্পর্কে বেসিক ধারণা দিয়ে দেয়া হয়।

সর্বোপরি টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজি র ছাত্র-ছাত্রীদের ইলেকট্রনিক্স কম্পিউটার সায়েন্স এবং টেলিকমিউনিকেশনের সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ করে দেয় যার ফলে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করার পর একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার খুব সহজেই নিজ পছন্দের ট্র্যাক অনুযায়ী ক্যারিয়ার গঠনে নিজেই ভূমিকা রাখতে পারে। পরবর্তী পর্বে ডিপ্লোমা ইন টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে কোন কোন সেক্টরে চাকরির সুযোগ সুবিধা থাকে এবং ক্যারিয়ার গঠন করা যায় তার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানবো । ধন্যবাদ।

 

আতিকুর রহমান

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর, ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশন

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

Lockdown-A Blessings for Learners

Lockdown-A Blessings for Learners

Today in the 21st Century we all are facing a global crisis named COVID-19 where everybody of us has to stay home to keep ourselves safe from this pandemic. My Blog is about to take most of the advantages from lockdown where we can enrich our knowledge from home and to avoid our helplessness. 

Description: Today I am going to share with you some sources of learning where you can enrich your knowledge from home and take the best advantages of time. Today we are equipped with many online learning sources where you can fulfill your thirst. I am going to share some sources now: 

1. edX: edX is an online learning platform where a student can find many courses related to his subjects where the course is conducted by world’s best tutors.Just make a profile in edX website. Then you have to sign up with google and enjoy all the online courses. 

Website:edx.org 

How to enroll: https://www.youtube.com/watch?v=sEeYnsobXIc 

2. Coursera: Coursera is an online learning platform where a student can find many courses related to his subjects where the course is conducted by world’s best tutors. Just make a profile in Coursera website. Then you have to sign up with google and enjoy all the online courses. 

Website: Coursera.org 

How to enroll: https://www.youtube.com/watch?v=bOs4KXZtFDs 

3. Google Digital Unlocked: Here a student can find many online courses video of digital content.A Student have to watch some video and then give answers to some questions of watched video. 

Website: Google unlock courses.com 

Link: https://learndigital.withgoogle.com/digitalunlocked 

4. English Language Learning: We all know that English language is a must to survive now in a competitive world. A student can learn speaking, listening, reading and writing courses in English language from home from different sources. 

Tutorial link: https://www.youtube.com/watch?v=ud3brruUDzg 

5. CV Writing: Now a complete CV Defines one personnel attraction towards his dream job. A cv must be clear, understandable to recruiters and so on. Now we can find many cv writing tips from many renowned tutors around the world. A student should learn from those personnel. 

Video Link: https://www.youtube.com/watch?v=LJkTExR_Wrc 

6. Microsoft Office: Microsoft office is a must for every student to survive in a competitive world.If a student fails to learn it perfectly then it will be considered as his disadvantage. So it is a must. We can find many online video tutorials on different platforms to improve our effectiveness in ms office. 

7. Presentation: A Presentation is a must for every student in their student life. A student should follow some rules and regulations while giving a presentation. We have many sources from online where a student can avoid his/her fair from presentation. 

https://www.youtube.com/watch?v=-BDJUvaZb-A 

 

Writer: K. M. Fahim Istiaque 

Instructor, Textile Engineering 

Daffodil Polytechnic Institute 

লক্ষ্য যদি হয় প্রোগ্রামার

লক্ষ্য যদি হয় প্রোগ্রামার

নতুন যারা প্রোগ্রামিং শুরু করেছে বা শুরু করতে চায় তাদের সবার কিছু কমন প্রশ্ন থাকে, তা হল কি ভাবে প্রোগ্রামিং শুরু করবো এবং  কোথা থেকে কি কি ধাপ ফলো করে সামনের দিকে আগাবো।

ধাপ :

প্রথম ধাপ হল  ল্যাঙ্গুয়েজে (ভাষায়) ঠিক করা।  প্রোগ্রামিং এর অনেক  ল্যাঙ্গুয়েজে (ভাষায়) আছে (যেমন- প্রোগামিং সি , সি++, জাভা, পাইথন, সি# ইত্যাদি ) । আমি মনে করি প্রথমে সি দিয়ে প্রোগ্রামিং শুরু করা ভাল । কারন প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলো বোঝার জন্য সি  অনেক সহায়ক । আর ডাটা স্ট্রাকচার আলগোরিথম বা  অপারেটিং সিস্টেম ভালো বুঝার জন্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ সি টা  খুব কার্যকারী।

ধাপ :

কোথা থেকে শিখব- নতুনদের জন্য বই পড়া , অনলাইন ভিডিও টিউটোরিয়াল এছাড়া অনলাইন কমপ্লিট ভিডিও কোর্স  দেখা কেননা এখানে exercise দেওয়া থাকে।

আমি মনে করি URI OJ দিয় শুরু করা বিগিনারদের জন্য ভাল। এখন URI OJ রেজিস্ট্রেশন করে ওই জাজ এর বিগিনার ক্যাটাগরির যে প্রবলেম গুলা আছে সে গুলা থেকে মোটামোটি ১০০-১২০ টি প্রবলেম এর সমাধান করতে হবে তাহলে আপনার বেসিক জিনিস গুলো ক্লিয়ার হয়ে যাবে। এছাড়া আরও কিছু অনলাইন জাজ আছে সাথে সেগুলার বিগিনার প্রবলেম গুলো সল্ভ করতে পারেন ।

ধাপ — ৩ :

প্রাকটিস প্রাকটিস মোর প্রাকটিস । কোডিং কপি করা যাবে না । প্রোগ্রামিং প্রবলেম স্লভ করতে হবে । খুব অলস হতে হবে তবে সেটা কম্পিউটারের সামনে বসে কোডিং করার জন্য।

প্রাকটিসের মাধ্যমে আপনার প্রোগ্রামিং এর বেসিক জিনিস গুলো জানা হয়ে যাবে এবং আপনি বেসিক প্রবলেম গুলোর সমাধান করতে পারবেন । তাই এখন আপনাকে আরও কিছু অনলাইন জাজ এর সাথে পরিচিত হতে হবে এবং সেগুলোর প্রবলেম আপনাকে অনুশীলন করতে হবে।এছাড়া কিছু জাজে নিয়মিত অনলাইন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় সেগুলাতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতে হবে।

ধাপ — ৪ :

এখন আপনাকে ডেটা স্ট্রাকচার ও অ্যালগরিদম এর বেসিক বিষয়-গুলো জানতে হবে (Sorting, Searching, Array, Linked List, Stack, Queue, Tree, BFS, DFS) । ডেটা স্ট্রাকচার ও অ্যালগরিদম জানার জন্য বাংলায় সব থেকে ভাল টিউটোরিয়াল হল তামিম শাহরিয়ার সুবিন ভাই এর ডেটা স্ট্রাকচার ও অ্যালগরিদম টিউটোরিয়াল সিরিজ ।

আপনি যদি এই পথটুকু পাড়ি দিয়ে আসতে পারেন তাহলে সামনের দিকে যাওয়ার পথ আপনি নিজে নিজে পেয়ে যাবেন । তবে জীবনের যেকোন কিছু করতে চাইলে নিয়মিত লেগে থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। এইটা সবকিছুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আপনি প্রোগ্রামিং শিখতে চান অথবা সিক্স প্যাক বডি বানাতে চান অথবা তূখোড় বক্তা হতে চান কোনটাই আপনি একদিনে হতে পারবেন নাহ অথবা একবেলার চেষ্টায় করতে পারবেন না।
নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে প্রতিদিন অল্প অল্প করে আপনাকে আপনার অভীষ্ঠ লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে আর এই পথ কখনও সুখকর হবেনা। কখনও আপনার বাঁধা হবে অলসতা, কখনও বা পারিবারিক সমস্যা,কখনও বা মানসিক অস্থিরতা অথবা অহেতুক টেনশন আবার কখনও বা আপনার শত্রুদের নিপীড়ণ, এরকম অনেক কিছুই হতে পারে এই পথে। কিন্তু একবার যখন আপনি বের হয়েছেন সুতরাং, দাঁত কাঁমড়ে ধরে আপনাকে নির্ভয়ে লক্ষের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, পথে যাই আসুক না কেন, তবেই আপনি আপনার লক্ষে পৌছতে পারবেন।
জীবন কাঊকে কোন কিছু এমনি এমনি দেয়না, অনেক স্বাধনা, ত্যাগ , তিতিক্ষা আর অধ্যাবসায় দিয়ে জীবনের কাছ থেকে আদায় করে নিতে হয়।

 

নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্নকে আপনার আত্মার সন্তান হিসেবে লালন করুন, এগুলোই আপনার চূড়ান্ত সাফল্যের নকশা হবে ।

– নেপোলিওন হিল

 

 

Mst. Sathi Akter

Instructor of Computer Technology

Daffodil Polytechnic Institute

আমি ওয়েব ডেভেলপার হতে চাই! (পর্ব -১)

আমি ওয়েব ডেভেলপার হতে চাই! (পর্ব -১)

বর্তমান বিশ্ব তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে একটি অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। যার অনেকাংশ জুড়ে রয়েছে ওয়েব ডেভেলপার। আমরা যারা আইটি নিয়ে পড়াশুনা করি অথবা আইটি বিষয়টা পছন্দের তারা একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার স্বপ্ন দেখি। তার বড় কারণ হিসাবে মনে করি এটা একটা স্মার্ট প্রফেশন। তবে মনে রাখতে হবে এই প্রফেশনে নতুন নতুন কনসেপ্ট এবং আইডিয়া নিয়ে কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। আবার অনেকেই ওয়েব ডেভেলপার হতে পারলে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবে এই জন্য এই প্রফেশনে আসতে চান। যা কিছুদিন শেখার পর মনে করেন, এই কাজ আমার দ্বারা হবে না। এই অতি উৎসাহী ব্যক্তিরাই নিজের ভবিষ্যৎকে খুব কাছ থেকে দেখার চেষ্ট করে এবং বার বার বিভিন্ন প্রফেশন পরিবর্তন করে। তাদের জন্য বলছি, আপনার জন্য এই প্রফেশন সঠিক নয়। এটি অনেক ধৈর্য এবং অধ্যবসায়ের ফসল।

এখন আসি, আমরা যারা মনস্থির করে নিয়েছি যে, আমি ওয়েব ডেভেলপারই হবো।  কিভাবে শিখবো এবং কোথা থেকে শিখবো সেটা নিয়ে আলোচনা করি।

HTML(এইচটিএমএল): সর্বপ্রথম শুরু করতে হবে এইচটিএমএল দিয়ে। পৃথিবীতে যত রকমের ওয়েব সাইট আছে সব ওয়েবসাইটেই HTML আছে। HTML হচ্ছে ওযেবসাইটের Structure. আমরা ওয়েবপেইজে যেসকল লেখা দেখতে পাই এগুলোকে বলে Paragraph tag <p></p>. যত ধরনের ছবি আছে এগুলো Image tag <img></img>. আবার যত ধরনের লিঙ্ক আছে যাতে এক পেইজ থেকে অন্য পেইজে যায় এগুলোকে বলে ‍anchor tag<a></a>. এই জিনিসগুলো শিখতে হবে , এগুলো শেখার সবচেয়ে সহজ জায়গা হচ্ছে www.w3schools.com.

CSS(সিএসএস): CSS এর পূর্ণরূপ হলো Cascading Style Sheets. এইচটিএমএল এলিমেন্টকে আকর্ষনীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য সিএসএস ব্যবহার করা হয়। HTML হচ্ছে স্ট্রাকচার আর CSS হচ্ছে সেই স্ট্রাকচারটা কে বিভিন্ন ধরনের কালার এবং বিভিন্ন ধরনের স্টাইল সংযোগ করা।

ধরি আমরা  HTML এবং CSS শিখছি। আসলে কতটুকু শিখতে পেরেছি তা যাচাই করা। HTML এবং CSS এর ব্যবহার করে ২/৩ ওয়েবসাইট তৈরি করা , যা দৈনন্দিন কাজের উপর তৈরি করতে পারো। যেমন আমাদের নিজের স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, মুদি দোকান বা মেসের দৈনন্দিন হিসাব নিকাশের জন্য এবং ফেইসবুক এর মত করে এমন  তিনটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।

Bootstrap(বুটস্ট্রাপ): খুব দ্রুত ও সহজভাবে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের জন্য বুটস্ট্রাপ হচ্ছে একটি ফ্রি Front-End Framework. ইহা জাভাস্ক্রিপ্ট প্লাগ-ইন ব্যবহার করে এইচটিএমএল এবং সিএসএস ভিত্তিক টেমপ্লেট ডিজাইন করে। দ্রুত সময়ে রেসপন্সিভ ডিজাইন করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

এখন আবার বুটস্ট্রাপ ব্যবহার করে আরো ২টা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারি এবং কিছু JQuery Plugin সম্পর্কে জানতে হবে। এটা কিভাবে ব্যবহার করতে হয় এবং চেষ্টা করতে হবে আগে যে ২/৩টা ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলাম ওইগুলোর মধ্যে কিভাবে JQuery Plugin ব্যবহার করে ওয়েবসাইটকে আরো প্রানবন্ত করা যায়। যাদের টাইপিং স্পিড খুব ধীর গতি তারা এই সময়ে এসে টাইপিং স্পিড দ্রুত করে নিতে হবে।

এখন সময় হচ্ছে নিজের পরীক্ষা নেয়া। আমরা অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট দেথতে পাই। চেষ্টা করতে হবে ওই ধরনের ওয়েবসাইটগুলো তৈরি করার অথবা আসে পাশে অনেকে আছে যারা খুব ভাবো ওয়েব ডেভেলপার তাদের কাছে গিয়ে নিজের ওয়েবসাইটগুলোর সমস্যা গুলো খুজে বের করার চেষ্টা করা এমনকি সম্ভব হলে উনার এই রিলেটেড কাজগুলো উৎসাহী হয়ে ফ্রিতে করে দেয়া।……………

Writer:

Johir Ahemmod Chowduri

Instructor, Computer Technology

কারিগরিতে কেন পড়বেন?

কারিগরিতে কেন পড়বেন?

আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আগে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী বলতে স্বনির্ভর অর্থনীতি, যার অর্থ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য আভ্যন্তরীণ বিষয়ে উপযুক্ত বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক নিজস্ব প্রযুক্তি সম্বলিত উন্নয়ন আবশ্যক। আর এ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো কারিগরি শিক্ষা। বিশ্বের উন্নত দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় নিজেকে দক্ষভাবে গড়ে তুলতে হলে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করতে হলে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নাই। বিভিন্ন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড দক্ষ জনশক্তি তৈরির দায়িত্ব পালন করে আসছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন পরিচালিত শিক্ষাক্রমগুলোর মধ্যে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা-ইন-জুট টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-লেদার টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-এগ্রিকালচার, ডিপ্লোমা-ইন-ফরেস্ট্রি টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-মেরিন টেকনোলজি, ডিপ্লোমা-ইন-হেল্থ টেকনোলজি, এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা), এইচএসসি (ভোকেশনাল) ও এসএসসি (ভোকেশনাল) অন্যতম। এছাড়া বিভিন্ন স্বল্প মেয়াদের ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স কারিগরি শিক্ষা বোর্ড পরিচালনা করে আসছে। এসব শিক্ষাক্রম পরিচালনাকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষাক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রত্যেক বছরই বেড়ে চলেছে। মন্ত্রণালয়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়েই এতো বিপুল সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব সু-সম্পন্ন করা হয়। সকল বাধা অতিক্রম করে বিশ্বের উন্নত দেশকে অনুসরণ করে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে মানুষকে আত্মনির্ভরশীল জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক বিপ্লব সৃষ্টিকারী দেশ জাপান, চীন, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, কোরিয়াসহ বহুদেশ আছে যাদেরকে দেখে আমরা জানতে পারি কারিগরি শিক্ষার সুফল সম্পর্কে। অধিক জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করার একটাই বড় মাধ্যম কারিগরি শিক্ষা। আর বড় কথা হলো কারিগরিতে পড়ে কোনো শিক্ষার্থীই বেকার থাকে না।উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, কারিগরি শিক্ষায় কেন জনগণকে শিক্ষিত করা জরুরি। এই শিক্ষা দেশের জন্যে যেমন জরুরী, তেমনি জরুরী নিজের জন্যেও। কারিগরি শিক্ষাকে কাজে লাগিয়েই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ সরকারও সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন। মহিলা অধিদপ্তরও নারীদের কারিগরি শিক্ষার্জনের উপর জোর দিয়েছেন। মহিলা অধিদপ্তরের মতে, পৃথিবীর যে দেশে যতো বেশি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী আছে সেই দেশ ততো বেশি উন্নত। মানব সম্পদ যদি ব্যবহারযোগ্য না হয় তবে তার কোন মূল্য নেই। কোনো রাষ্ট্রের প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সম্পদ বা খনিজ সম্পদ থাকলেই, সেই রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নতি নিশ্চিত হয় না, যদি না ঐ রাষ্ট্র উপযুক্ত পরিকল্পনায় ঐ সম্পদকে ব্যবহার করতে পারে। একইভাবে রাষ্ট্রে অসংখ্য জনগোষ্ঠী থাকলেই রাষ্ট্রের উন্নতি হবে না। ঐ জনগোষ্ঠীকে উপযুক্ত শিক্ষা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে উৎপাদনমূলক কাজে ব্যবহার করতে পারলে সেই জনগোষ্ঠী রাষ্টের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে।

যে শিক্ষা শিক্ষার্থী তার বাস্তব জীবনে ব্যবহার করে কোনো একটি নির্দিষ্ট পেশায় নিযুক্ত হতে পারে তাই কারিগরি শিক্ষা। আবার উপযুক্ত বৃত্তি বা পেশা নির্বাচনের জন্য দক্ষতামূলক যে শিক্ষা, তাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলে। কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের পর শিক্ষার্থীকে বা ব্যক্তিকে পেশা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। সে নিজেই অর্জিত শিক্ষার সাথে মিল রেখে স্বাধীনভাবে পেশা খুঁজে নিতে পারে। সাধারণ শিক্ষা এর বিপরীত, অর্থাৎ অর্জিত শিক্ষার সাথে কর্মের মিল থাকে না। কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বয়স সম্পর্কে কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করা হয়। সাধারণত ঝরে পড়া শিক্ষার্থী অথবা কোনো কারণে শিক্ষাবঞ্চিত ব্যক্তির জন্য কারিগরি শিক্ষা নানাভাবে সফলতা এনে দিতে পারে। এ ধরনের শিক্ষার প্রধান শর্ত হলো ধৈর্য্য, পরিশ্রম ও অনুশীলন। দক্ষতাই উন্নয়ন-এ কথাটি কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এ শিক্ষার প্রধান সাফল্য ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ। এর উদ্দেশ্য শিক্ষার্থী বা ব্যক্তিকে পরবর্তী জীবনে নির্দিষ্ট কোনো কারিগরি বিষয়ে দক্ষ করে তোলা, নিজ নিজ উদ্যোগে স্থানীয় ছোট ছোট শিল্পের প্রসার ঘটানো, স্বাধীনভাবে পছন্দ অনুযায়ী বৃত্তি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদকে প্রকৃষ্টভাবে কাজে লাগিয়ে কর্মীর হাতে পরিণত করা।

এ সময়ে এসে মানুষ কিছুটা বুঝতে শেখেছে পলিটেকনিকে পড়লে সহজে চাকুরি পাওয়া যাবে। আর এই শিক্ষা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও যথেষ্ট মর্যাদা পায় এবং এ শিক্ষাকে সাধুবাদ জানায়। সরকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ২য় শ্রেণির মর্যাদায় অনেক আগেই অধিষ্ঠিত করেছে।

 

লেখক: 

মো: আল মামুন রশিদ

ইন্সট্রাকটর,

ডিপার্টমেন্ট অব ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

গণিত:বিভীষিকা নাকি সম্ভাবনা! (পর্ব-০১)

গণিত:বিভীষিকা নাকি সম্ভাবনা! (পর্ব-০১)

ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকেই শুরু হয় মানুষের জীবনে গণিতের ব্যবহার। কখন, কোন তারিখে, কোন সালে জন্মেছি—সব ধরনের তথ্য লিপিবদ্ধ করতেই রয়েছে গণিতের প্রয়োগ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যে জাতি গণিতে যত বেশি পারদর্শী, সেই জাতির বিশ্বময় কর্তৃত্ব করার সম্ভাবনাও তত বেশি। বর্তমানে বিশ্বে গণিতে অগ্রসর দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়া, চীনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গণিত পারদর্শিতার কারণেই এই দেশগুলো বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশের অন্যতম। কম্পিউটারের ভাইরাস প্রগ্রাম, অ্যান্টি-ভাইরাস প্রোগ্রাম, হ্যাকিং টেকনোলজিতে বিশ্বজুড়ে রাশিয়া বিখ্যাত। চীনও কোনো অংশে কম নয়। সব কিছুর মূলে যে শক্তি কাজ করেছে, তা হলো গণিতের শক্তি। কম্পিউটার প্রোগ্রাম এর অ্যালগরিদমের ভাষা হচ্ছে অঙ্ক। প্রোগ্রাম করার আগে গাণিতিক সমাধানই বলে দেবে প্রোগ্রামটি ফলপ্রসূ হবে কি না। মহাশূন্যে মানুষের পদচারণার প্রথম শর্ত ছিল নির্ভুল গাণিতিক হিসাব। নভোযান চালনায় গণিতের জটিল হিসাবের সঠিক ফলাফলই মানুষকে চাঁদে ও ভিনগ্রহে অবতরণের সার্থকতা দিয়েছে।

গণিত! ছোটবেলা থেকে এক বিভীষিকার নাম। এর সূত্র ও কড়া কড়া উপপাদ্য মুখস্ত করতে হয় আমাদের কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদের । গণিতের সূত্র হয় শত্রু। গণিতের এর তিক্ত বা মিঠা অভিজ্ঞতা নিয়ে এই ব্লগ লেখার আইডিয়াটি মাথায় আসে। তারই উদ্যোগে বিগত ১১ জুলাই একটি জরিপ করা হয়। (লিংক: https://docs.google.com/forms/u/1/d/e/1FAIpQLSc5KNbuUOpeX9qSUdCF9uVqal2Sf4-xA_3uSbI6IcdpJsN28Q/viewform?usp=send_form) এখানে অংশগ্রহণ করে ৭৫ জন যার বেশিরভাগ আমার শিক্ষার্থি, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মি। জরিপের প্রশ্ন ও ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়,

প্রশ্ন – ১

প্রশ্ন – ২

প্রশ্ন – ৩

এছাড়া কোন ক্লাসে পড়া কালীন গণিত কঠিন লাগা শুরু করে? এই প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ নবম শ্রেণির কথা বলেছে। হঠাৎ একেবারে অনেক নতুন নতুন অধ্যায় ত্রিকোনমিতি, পরিমিতি, সম্ভাবনা,স্থানঙ্ক জ্যামিতি সবার কছেই কঠিন লাগতে থাকে।

আপনি কেনো গণিত অপছন্দ/পছন্দ করেন? এবং কেনো?

শিক্ষক এবং ছাত্রদের এ নিয়ে কি করা উচিত বলে মনে করেন? এই বিষয়ে সকলের মতামত নেওয়া হয়।

এই প্রশ্নটি নিয়ে পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

 

প্রত্যেক মানুষ অল্পবিস্তর গণিত জানে। জীবনকে নিয়মমাফিক পরিচালনার জন্য ন্যুনতম গণিতের জ্ঞান অপরিহার্য। অল্পশিক্ষিত বা অশিক্ষিত যারা তারাও গুণতে জানে। গণিত ছাড়া কোন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। শুধু মানুষ নয় পৃথিবীর সকল প্রাণীর মধ্যে ন্যূনতম গণিতের জ্ঞান রয়েছে। আণুবীক্ষণিক ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে গাছপালা, আকাশ-বাতাশ, গ্রহ-নক্ষত্র সবকিছুতে গণিতের ছোঁয়া রয়েছে। গাণিতিক নিয়ম ছাড়া কোন কিছুই চলমান রাখা সম্ভব নয়। এজন্য বলা হয় “গণিত সকল বিজ্ঞানের জননী”।

গণিত কী, এর কোন সর্বজনগ্রাহ্য সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা এখনও কেউ দিতে পারে নি। কিন্তু প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে গণিতকে ব্যাখ্যা করতে সংজ্ঞায়িত করতে চেয়েছেন।

গ্রিক ‘ম্যাথেমা’ শব্দ থেকে এসেছে ইংরেজি ‘ম্যাথমেটিক্স’ শব্দটি। গ্রিক ম্যাথেমা এর অর্থ জ্ঞান বা শিক্ষা। জ্ঞানের সমার্থক হবার কারণে গ্রিসে জ্ঞানী বা শিক্ষক প্রত্যেককেই গণিতবিদ বা ম্যাথমেটিসিয়ান বলা হত। আর সেজন্য প্রাচীন ও মধ্যযুগের সকল পণ্ডিত – তিনি ধর্মবিদ, ইতিহাসবিদ, ভূগোলবিদ, দার্শনিক, চিকিৎসক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজতাত্ত্বিক যাই হোন না কেন- প্রায় সকলেই গণিতে দক্ষ হতেন। আসলে গণিত ছাড়া কারোই পেশাগত দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব না।

বিজ্ঞানী আইনস্টাইন জীবনের সফলতাকে একটি সমীকরণের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন, ‘সফলতা= ঢ+ণ+ত; যেখানে, ঢ = কাজ, ণ = খেলাধুলা এবং  ত = অন্যের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকা’। দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলো গাণিতিক মডেল দ্বারা উপস্থাপন করা যায়। এই উপস্থাপন করার দক্ষতাই কোনো জাতির গাণিতিক জ্ঞানের গভীরতা প্রকাশ করে। আমাদের অঙ্ক অনুধাবন করার ক্ষমতা আশাব্যঞ্জক, তবে অঙ্ক শেখার মধ্যে পদ্ধতিগত ঘাটতি রয়েছে। আমরা অঙ্ক শুধু অনুশীলন করে যাই, কিন্তু ওই অঙ্কের ব্যবহারিক বা ফলিত বিষয়গুলো মোটেও ভেবে দেখি না। এ কারণেই ছাত্রজীবনে অঙ্কে খুব ভালো করার পরেও গণিত ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।

কম্পিউটার বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গণিতের ব্যবহার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় কম্পিউটার সায়েন্স হলো গণিত ও কলার সমন্বয়। বিশ্বকে ডিজিটাল করার মূলে যে প্রগ্রাম তার মূল অবকাঠামো কিন্তু গণিতের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। বাস্তব জগতের যেকোনো সমস্যা সমাধানের গাণিতিক মডেল রয়েছে। কোনো সমস্যা সমাধানের গাণিতিক মডেলই হচ্ছে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভাষায় অ্যালগরিদম। একটি প্রণীত অ্যালগরিদম যখন কাগজে-কলমে সঠিক, তখন ওই অ্যালগরিদম অনুসরণ করে প্রগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ দিয়ে নিয়মমাফিক কোড লিখলেই তা প্রগ্রামে রূপ নেয়। অর্থাৎ প্রগ্রাম হচ্ছে কোনো সমস্যার গাণিতিক সমাধানের এমন একটি রূপ, যা কম্পিউটার বুঝতে পারে। সুতরাং ভালো প্রগ্রামার হওয়ার প্রথম শর্ত হলো ভালো গণিতজ্ঞ হওয়া। ভালো গণিতজ্ঞ হলে যেকোনো সমস্যা গাণিতিক মডেলে রূপান্তরিত করে গণিতের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আমাদের দেশের মতো জনবহুল দেশে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে গণিত অনুরাগী এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত গ্র্যাজুয়েটদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়নে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে গণিত গ্র্যাজুয়েটদের সম্পৃক্ততা এই ক্ষেত্রকে আরো স্বনির্ভর ও শক্তিশালী করে তুলবে।

আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের পরিকল্পনায় যদি গণিত গ্র্যাজুয়েটদের প্রশিক্ষিত করা যায়, তাহলে পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন অধিকতর ফলপ্রসূ হবে। গণিতজ্ঞ ব্যক্তি প্রগ্রামিংয়ের কলাকৌশলগুলো দ্রুত রপ্ত করতে পারেন। বিশ্বখ্যাত গণিতবিদ ডোনাল্ড নুত অ্যালগরিদমের ওপর যে বই লিখেছেন তা দিয়েই বিশ্বের প্রায় সব প্রগ্রামিং সমস্যার গাণিতিক সমাধান সম্ভব। তাঁর লেখা বইটির নাম বিল গেটস এই বইয়ের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আপনি যদি এই বইটির সব বিষয়বস্তু ভালোভাবে বুঝে থাকেন তাহলে আমাকে আপনার বায়োডাটা পাঠান—কারণ নিঃসন্দেহে আপনি একজন ভালো প্রগ্রামার’। ১৬ কোটি মানুষের দেশে গণিত শেখানোর যে কৌশল, তা মোটেও আনন্দনির্ভর নয়। গণিতের নিগূঢ় অর্থ উপলব্ধি করে গণিত শেখার মধ্যে যে আনন্দ, তা আমাদের দেবে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতি।

গণিতের ব্যবহার সর্বজনীন। ন্যাচারাল সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিসিন, ফিন্যান্স, সামাজিক বিজ্ঞান—সব ক্ষেত্রে গণিতের ব্যবহার অপরিহার্য। তাই আমাদের গণিতের ভিত্তিজ্ঞান উন্নয়নের জন্য অনুসরণ করতে হবে সেই দেশগুলোর পাঠ্যক্রম, যেখানে গণিতের উৎকর্ষতা পরীক্ষিত এবং ওই পাঠ্যক্রম ও পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে তৈরি করতে হবে গণিতজ্ঞ মেধাবী মানবসম্পদ, যাদের নেতৃত্বে বিশ্ব দরবারে আমরা নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করব।

গণিতের জাদুকরী শক্তি আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ও প্রতিটি স্তরকে করতে পারে সাফল্যমণ্ডিত। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও আবিষ্কারের উচ্চ শিখরে আরোহণে গণিতের শিক্ষা অপরিহার্য। তাই প্রাথমিক শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত গণিত শিক্ষাকে আরো সুসংহত করে গড়তে হবে, যৌক্তিক জ্ঞানসম্পন্ন মেধাবী জনগোষ্ঠী, যাদের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে।

লেখক:

মো: রেজাউর রহমান, ইন্সট্রাক্টর,

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

মানব সভ্যতায় চাকার আগমন

মানব সভ্যতায় চাকার আগমন

চাকা শব্দটি অতি পরিচিত আমাদের। চাকা কথাটি আসলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে গাড়ির বড় বড় বৃত্তাকার বস্তু গুলো। সারাদিন ছুটে চলা ঘুরতে থাকা এই ভব ঘুরে চাকা আধুনিক বিজ্ঞান সমাজের প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই ব্যাবহার হয়। কখনো মিল কারখানায়, কখনো ডিভাইসে, কখনো বড় কোন যন্ত্রে আবার কখনোবা যানবাহনে। কিন্তু মজার বিষয় হলো এই চাকার জীবন কিংবা জন্ম টা এই বিষয় গুলোকে নিয়ে শুরু হয়নি। আজ আপনাদের সাথে এই চাকা নিয়ে কিছু মজার কথা শেয়ার করবো। এই যুগান্তকারী আবিষ্কার যা পৃথিবীটাকেই পরিবর্তন করে দিয়েছে।

প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বছর পূর্বে চাকার জন্ম। সে সময় মুলত কুমারেরা ব্যাবহার করতো। কিন্তু ঠিক কিভাবে কার মাথা হতে এই গোল চাকার ধারণা এসেছে তা আজও রহস্য। অনেক ঐতিহাসিক চিন্তাবিদের মতে চাকার ধারনা আসে শ্বিকার করার জন্য উঁচু স্থান থেকে পাথর গড়িয়ে ফেলে প্রানীকে আহত বা হত্যা করা থেকে। সে যাই হোক কখনো টাইম মেশিন পেলে সেই সময়ে গিয়ে দেখে এসে জানাবো।

প্রাথমিক দিকে পাথর কেটে কেটে চাকতি বানিয়ে চাকা বানানো হতো প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায়। পরে পরিশ্রম কমাতে মাটির চাকতির ভার্সনটি প্রচলিত হয়। কিন্তু সেই সময়েও কেউ ভাবতেই পারেনি যে এটা কালজয়ী একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার হবে। অনেকের মতে চাকা আগুন আবিষ্কারের আগে এসেছে যদিওবা এই নিয়ে জোরালো কোন মত নেই। কাঠের চাকতির ধারনা আসে আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৩৭০০ বছর এর শেষে। কাঠের চাকতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে পরিবহণ সুবিধার জন্য। এর আগে পাথরের চাকায়

পরিবহণ ছিলো বেশ পরিশ্রমের আর ধীর গতির।

৩৭০০ খ্রিষ্টপূর্বে একটা চিত্রে পাওয়া গেছে ককেশীয়রা তাদের মৃত দেহ ঠেলা গাড়িতে বহন করছে। পোল্যান্ডের একটি অঞ্চলে পাওয়া গিয়েছে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ বছর আগের একটি পাত্র যাতে চাকার গাড়ির নকশা আছে। ইউরোপে ব্যাপক হারে চাকা ব্যাবহার শুরু হয় ৪০০০ খ্রিষ্টপূর্বে আর এশিয়ায় ৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বে। সাধারনত চাকা ব্যাবহার ব্যাপক ভাবে হতো সেইসব অঞ্চলে যেখানে সমতল ভূমির পরিমান বেশি। কারন চাকা চলাচলে সমতল ভূমি জরুরি ছিলো। এই জন্য চীনে চাকার ব্যাবহার শুরু হয় ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বে যখন চাকাতে উন্নত কিছু টেকনিক যুক্ত হতে শুরু করে। প্রায় ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের সমকালীন আন্দ্রোনভ সংস্কৃতিতে স্পোকযুক্ত চাকার ব্যবহার পাওয়া যায়। মজার বিষয় হলো বর্তমান আমেরিকা মহাদেশ দ্বয়ে চাকা খেলনার গাড়ি বা বস্তুতে ব্যাপক ব্যাবহার হলেও বিজ্ঞান বা দৈনন্দিন জীবনে তার ব্যাবহার ছিলো সামান্য।

 

খ্রিষ্টপূর্ব  ১০০০ সালের দিকে কেল্টিকদের মানুষ বুঝতে পারে চাকার ওজন হালকা ও মজবুত হলে বেশি ভালো হয়। তাই তখন থেকে তারা স্পোক যুক্ত চাকায় একটা বেরিয়ার যুক্ত করতো। যার ফলে টেকশই ও হাল্কা হতো। এভাবে ধীরে-ধীরে ছোট খাটো পরিবর্তন হয়ে আসলেও বড় পরিবর্তন হয়নি ১৮৭০ সাল অবদি। ১৮৭০ খ্রিঃ এর দিকে চাকায় নিউম্যাটিক টায়ার ব্যবহার করা শুরু হয়। আর এখন বর্তমান সময়েও সেই টায়ার দিয়েই চলছে গাড়ির চাকা। তবে আগামীতে আরো ব্যাপক ভিত্তিক গবেষণায় বড় কিছু পরিবর্তন আসতে চলেছে। তবে যেই যাই বলুন না কেন চাকা ছিলো থাকবে ,আর তা শুধু গাড়িতে ব্যাবহারের জন্য তা নয়। চাকা শিল্পায়ন এর এই আধুনিক সভ্যতার সব ক্ষেত্রেই আছে এবং থাকবে। আমাদের জীবন সভ্যতা পালটে দিতে আগুন, চাকা, লিভার, ধারালো অস্ত্র বেস্ট আবিষ্কার গুলোর মধ্যে। আগামীতে আরো মজার কিছু সাধারন বিষয় কিন্তু জীবন পালটে দেয়া আবিষ্কার গুলো নিয়ে কথা বলবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন আর চক্রযানে চরে ঘুরে আসুন রহস্যময় পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

 

লেখক: এস. এম. রাজিব আহম্মেদ

ইন্সট্রাকটর, কম্পিউটার টেকনোলজি

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

বিজ্ঞান যখন পুণর্বোতন (বিজ্ঞান কল্প কাহিনী) (পর্ব-১)

বিজ্ঞান যখন পুণর্বোতন (বিজ্ঞান কল্প কাহিনী) (পর্ব-১)

টিং টিংটিং !!! খুব সকাল সকাল মোবাইলের কলিং রিংটোন টা বেজে উঠায় মাথার ঠিক কোন অংশের ব্যাথা টা শুরু হলো তা বলতে না পারলেও বলতে পারি ব্যাথা টা “সুষুন্মাতে” প্রবেশ করে “ভেন্ট্রাল পোস্টারোল্যাটেরাল” নিউক্লিয়াস এর “থেলামুস” হয়ে “সোমাটোসেন্সোরিতে” টোকা দিয়েছে। চোখটা বহু কষ্টে খুলে হাল্কা ঝাপসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি অপরিচিত এক নাম্বার হোতে কল দিয়েছে। ঘুমু ঘুমু আলাপচারিতায় জানতে পারলাম আমার জন্য আমার ছোট ভাই চীন হতে মোবাইল গিফট পাঠিয়েছে যা ব্যাবহার বিধি অনেক নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। খুশিতে লাফ দিয়ে উঠে দ্রুত গিফট পেতে রেডি হতে লাগলাম। মুখে মাউথ ওয়াশ দিয়ে দু তিনবার কুল কুচি করে পুরাই ফিট। হঠাতই মনে পরলো আরে আমাকে তো অফিস যেতে হবে আর সেই সাথে শপিং, স্পেশাল মানুষটির সাথে ডিনার আর ফ্রেন্ড সার্কেলের সাথে আড্ডা তো আছেই। তবে কি আমি আমার গিফট টি আজ নিয়ে আসতে পারবোনা কুরিয়ার সার্ভিস থেকে? মুহুর্তে মনটা ভীষণ রকমের কষ্টে ভরে উঠলো। ঠিক এই সময় খেয়াল করলাম আমার জানালার পাশে একটা কোয়াড কপ্টার ( ড্রোন) কিছু একটা বক্স নিয়ে আছে যাতে স্পষ্ট ভাবে বুঝা যাচ্ছে চাইনিজ কিছু অক্ষর আর কুরিয়ার সার্ভিস এজেন্সি ফিডেক্স এর নাম। বুঝতে আর বাকি রইলোনা যে এটাই আমার সেই গিফট যা আমার ছোট ভাই চীন হতে পাঠিয়েছে। খুশির মুহুর্ত টা আবার এড্রিনালিন দ্বারা উদ্দীময় হয়ে উঠলো। জানালা খুলে বক্স টি নিতেই আমার আইডেন্টিটি নিশ্চিত এই শিক্ষিত সময়েও আংগুলের ছাপ মিলিয়ে নেয়া হলো ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাশিনে যা ম্যাচ হতেই বক্স টি সুন্দর ভাবে বুঝে পেলাম। বিষয় টা অনেকটা সেই প্রাচীন মিশরীয়ো সভ্যতার পত্রবাহী পাখি কিংবা ছোট খাটো উপহার পাঠানোর জন্য ব্যাবহার করা মঙ্গোলীয় জাতির বাজ পাখির মত আর প্রমান স্বরুপ কাগজে আংগুলের সেই টিপ সই নেয়ার মত।

 

 

ওহ হ্যা, বলে রাখি এটা ২০৫০ সাল এর কোন এক শীতের সকাল। বক্স খুলতেই দেখলাম বিশাল এক ফোন যাকে বলে স্যাটেলাইট ফোন। সত্যি বলতে এই ফোনটি দেখতে আহামোরি কিছু না হলেও আমার মত সুনাম ধণ্য ও রাষ্ট্রিয় গুরুত্বপুর্ন পদে চাকুরি করার লোকের জন্য সত্যি অতি প্রয়োজনীয় ছিলো। আজকাল কোন কথায় সাধারন স্মার্ট ফোন এ বলে শান্তি নেই। হ্যাকার জগত বেশ এগিয়ে গিয়েছে এই সময়ে। কেউ কিছু করলে কিংবা গোপনীয়ো কিছু বললে তা আড়ি পেতে কিংবা ফোন ক্লোনিং এর মত বেশ কিছু ভয়ানক কাজের মাধ্যমে সহজেই সকল তথ্য পেয়ে যায়। আর এই সকল তথ্য পেলেই কেল্লাফতে , সাথে সাথে তা ভাইরাল হয়ে উঠে নেটিজেন জগতে।

তাই আমার মত যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে তারা এই স্যাটেলাইট ফোনে নিশ্চিন্তে ভরসা রাখতে পারে। এটা কোন অপারেটর কম্পানির সাথে যুক্ত না। সরাসরি রাষ্ট্রায়ত্ব স্যাটেলাইটের সাথে যুক্ত। এখন এর মাধ্যমে কথা বলাও আগের চেয়ে সাশ্রয়ী ও উন্নত। দেশের যেই প্রান্তেই থাকি কিংবা বিশ্বের যাকেই কল দিতে চাই তা সম্ভব সম্পুর্ন নিজস্ব অপারেটিং নাম্বার ব্যাবহার করে। যাইহোক, সেই ১৯৯০ সালের দিকের মোবাইল গুলোর মতই এই ফোন গুলো বড় আর অ্যান্টেনা যুক্ত যা আগের তুলনায় বেশ জনপ্রিয়। মানুষ এই সময়ে আগের তুলনায় এখন অতি সচেতন তার স্বকিয়তা ও ব্যাক্তি গত বিষয়াদি নিয়ে।

আগের চেয়ে মুটিয়ে যাওয়ায় আর বিজ্ঞান বা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলায় আজকাল আর সেই আগের মত ফাস্ট ফুডে দৌড়াই না। তাই এখন সেই আধা সেদ্ধ সবজি কিংবা সালাদ/ ফলমূলই আমার বিশেষ খাদ্য। খাবার যখন নিয়ন্ত্রিত তখন জীবন টাও আর আগের মত উরাধূরা নেই। প্রতি পদক্ষেপ এখন মেপে চলতে হয়। সুস্থ শরীর চাই কারন আরো অনেক বছর দেশটাকে ভালো কিছু উপহার দিয়ে যেতে চাই।

অফিসে যেতে হবে, ৯টায় এলার্ম দিয়ে রাখা সৌখিন ঘড়িটিতে  ডিং!  ঢং! করে জানিয়ে দিলো সেই শুরুর দিকের বড় রাজকীয় ঘড়ি গুলোর মত যখন সমস্ত শহরে একটাই বড় ঘড়ি থাকতো আর জনগন সেই শব্দ সংকেত গুণে বুঝতো কয়টা বাজে আর তাদের এখন কি করণীয়।

ঘরে ডিজিটাল পাসওয়ার্ড দেয়া ডোর লক থাকলেও আজও মানুষের সেই আস্থা বড় মেটাল তালা গুলোতে। কারন এখন চোর গুলও বেশ শিক্ষিত আর প্রযুক্তিময়। তাইতো ব্যাংকের লকার গুলো ডাবল সিকিউরিটি বলতে ইলেক্ট্রোনিক তালা আর মেটাল তালা দুটোকেই সম্মানের সাথে ব্যাবহার করে। আমার বাসায় এই সিকিউরিটি থাকলেও আরো একটি বর্তমানে বহুল প্রচলিত নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আছে যা অনেক টা আগের সময়কার পাড়া মহল্লার বা বাসার পাশের আন্টি , দাদী , ভাবীদের মত যারা সর্বোদা নজর রাখতো কার বাসায় কি হলো , কে গেলো কে আসলো। যদিও বর্তমানে এই সিস্টেমটা ডিজিটালাইজড ইলেক্ট্রোনিক সিস্টেম যা বাসার চারিদিকে নাইট ভিশন সহ সেট করা। এখন সেই ফ্রিতে সার্ভিস দেয়া নজর রাখা কুটনি চাচি, দাদী, ভাবী গুলোর বড়ই অভাব। সবাই এখন নিজ নিজ কাজে ব্যাস্ত।

বাসার গ্যারেজ থেকে সাইকেল বের করে সোজা সাইকেল চালিয়ে যাত্রা শুরু করলাম আমার রোজকার অফিস যাওয়ার কিছু বন্ধুদের সাথে। আমরা এই সময়ে এখন আর আগের মত বাস কিংবা ট্যাক্সি/উবার অতি প্রয়োজন ছাড়া ব্যাবহার করি না। এখন সাইকেল চালিয়ে  স্কুল-কলেজ কিংবা অফিসে যাওয়াটা একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকালে সাইকেল চালিয়ে কিংবা পায়ে হেঁটে মর্নিং ওয়াকের পাশাপাশি অফিসের উদ্যেশেও রওনা হয়ে যাই। ব্যায়ামও হয় সেই সাথে টাকাও বাঁচে সময়ও বাঁচে আর সকালে হাঁটা কিংবা সাইকেল চালানোর ফলে স্বাস্থ্য উপকারিতা তো বোনাস হিসেবে আছেই। অনেকটা সেই পুরোনো সময়ের হাটুরেদের হাটে যাওয়ার মত। অফিসে পৌঁছিয়ে কেউ এখন আর আগের মত লিফটে উঠা নিয়ে যুদ্ধ করে না। শিক্ষিত সমাজ এখন সবাই চায় বাঁচতে সুস্থ ভাবে। তাই একেবারে অলস কিংবা অসুস্থ বৃদ্ধ না হলে সবাই সিঁড়িঁ বেয়েই উঠে যায় ফ্লোরের পর ফ্লোর। পায়ের ব্যায়াম বিনা জিম এ গিয়েই হয়ে যায় প্রায়। প্রায়সই পরিবেশ সচেতন এই জাতি এখন বাইসাইকেল ব্যাবহার করে এদিক সেদিক যায়।

 

পেট্রোলিয়াম এর মত মূল্যবান দুষ্প্রাপ্য ফুয়েল পুড়িয়ে এখন যাতায়াত খুব কমই করে। এতে পরিবেশ এ বায়ু দুষণ যেমন কমেছে তেমনি অতিরিক্ত যানজট শব্দ দুষণ কমেছে। রাস্তায় এখন এমার্জেন্সি গাড়ি, আর ধনী বিলাস বহুল অলস ব্যাক্তিদের গাড়ি কিংবা রাষ্ট্রোয়াত্বিত বাস বা ট্যাক্সি ছাড়া তেমন কোন গণ পরিবহন চোখে পরেনা। বাই সাইকেলেই সবাই সুখ খুজে নিয়েছে। ফ্রিতে জিম বলে কথা।

অফিসে বসে কাজের ফাকে-ফাকে চা এ চুমুক দিচ্ছি। কম্পিউটারে একটা জরুরি কাজ করছি তড়িৎ গতিতে। চারি দিকে শুনশান নিরবতা। উহু এখন আর সেই আগের সময়ের মাউস কিংবা কী-বোর্ড ব্যাবহার হয় না। সব চলে হাতের চোখের ইশারায়। আদী যুগে যেমন মৌখিক ভাষাহীন সমাজ ইশারায় কথা বলতো ঠিক তেমনটাই এখন মানুষ কম্পিউটারের সাথে ইশারায় ইংগিতে কাজ করে কথা বলে। সমস্ত নিরবতা ভেংগে ডাক বিভাগের একটা ছোট্ট কোয়াড কপ্টার ড্রোন এসে দাঁড়ালো সামনে লেটার হোল্ডারে রয়েছে একটা চিঠি। হ্যাঁ, সঠিক শুনছেন চিঠি। এই ২০৫০ সালে এসে ডাক বিভাগ আবার সেজে উঠেছে তার নতুন মাত্রার রুপে। এক সময়ে ব্যাপক ভাবে চলা ডাক বিভাগ চলতো চিঠি আদান প্রদান কিংবা জরুরি পত্রাদী নিয়ে। ২১ শতকের শুরুতে মোবাইল ফোন আর বিভিন্ন সামাজিক মিডিয়া ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠায় তা নিস্তেজ হয়ে যায়। কিন্তু ইদানিং বাংলাদেশ সরকার ডাক বিভাগেও যোগ করেছে ডিজিটালাইজেশন। নতুন সেবায় জেগে উঠেছে ডাক সেবা। ডাক বিভাগের রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট ড্রোন যা এপস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আপনি কাউকে এমন কোন সংবাদ পাঠাতে চান যা কোন ভাবেই মিস যেন না হয়, এমন চাইলে এপস এ গিয়ে চিঠিটি লিখে দিলেই তা কাগজে প্রিন্ট হয়ে নির্দিষ্ট ফি এর মাধ্যমে সেই চিঠি প্রাপক এর ডিজিটাল তথ্য অনুযায়ি তার বরাবর জিপিএস সিস্টেমের দ্বারা ট্র্যাকিং করে চলে যাবে। প্রাপক এর নিকট ড্রোন পৌঁছিয়ে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চিঠি সংগ্রহ না করলে কিংবা ক্যান্সিল অপশনে চেপে দিলে সেই চিঠি প্রেরকের নিকট চলে যায় এবং প্রেরক চাইলে আবার তা প্রেরন করতে পারে এভাবে মোট ৫বার একই ব্যাক্তিকে পর পর পাঠাতে পারবে একই সংবাদ। কিন্তু ৫ বারেও না গ্রহন করলে প্রেরক ১ মাসের জন্য ব্লক হয়ে যায় এই সার্ভিস হতে। এই ব্লক সিস্টেম চালু হওয়ার পিছনে বর্তমান বিভিন্ন ব্যাবসায়িক কম্পানি গুলো দায়ি। তাদের অনিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞাপন এর ম্যাসেজ , সিম কম্পানির বস্তা পচা অফারের ম্যাসেজ আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ( ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটস আপ, ইমো ইত্যাদি) প্রচুর গ্রুপ ম্যাসেজ এর জন্য বিশেষ মানুষদের ম্যাসেজ গুলো বা নোটিশ গুলো মিস হয়ে যায় এই সময়ে তাই এই নতুন উদ্দ্যোগ যার ফলে প্রাপক অবশ্যই গুরুত্ব পূর্ন ম্যাসেজটি কোন ভাবেই মিস করে না। তাছাড়া এই ব্যাস্ত অফিস সময়ে অনেক অফিসেই মোবাইল ব্যাবহার করা তো নিষিদ্ধই সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহার করে সময় নষ্ট করাও কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। যাইহোক, ম্যাসেজ টি ছিলো……………………………………………

 

আগামি পর্বে সমাপ্তি…………

 

 

লেখক : এস. এম. রাজিব আহম্মেদ

ইন্সট্রাকটর, কম্পিউটার টেকনোলজি

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত

মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত

মুক্তিযুদ্ধ শুরুই হয়েছিল পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যা দিয়ে।

২৫ শে মার্চ ১৯৭১ সালের  মধ্যরাতে শুরু হয় অপারেশন ব্লুস্টার নির্বিচার হত্যা অগ্নিসংযোগ লুটতরাজ দখলদার বাহিনী প্রধান টার্গেট ছিল একদিকে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা অন্যদিকে তখনকার বাঙালি চেতনায় উজ্জীবিত রাজনৈতিক কর্মকা কর্মীগণ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই শহীদ হয়েছেন আর বেশিরভাগ বাঙালি আন্দোলনে শরিক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন দখলদাররা প্রায় পুরো জাতিকে সন্দেহের চোখে দেখেছে সামান্য কিছু দালাল ছাড়া আর সকলেই ছিল তাদের বিরুদ্ধে একটু গুছিয়ে নিয়ে পাকিস্তানীরা যেমন তাবেদার সরকার বানিয়েছে তেমনি অত্যাচার-নির্যাতন বাড়িয়েছে রাজাকার-আলবদর-আলশামস এরকম সব স্থানীয় অনুগত বাহিনী দিয়ে তারা বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা ও সমর্থকদের নিধনের কাজ চালায়।

                             

২৫ শে মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত নয় মাসে যারা দেশে  অন্তত 30 লক্ষ মানুষ গণহত্যার শিকার হয়।  এত কম সময়ে এত মানুষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছাড়া আর কখনো মারা যায়নি।  সারাদেশ   বদ্ধভূমি আছে যেখানে নিয়মিত বাঙ্গালীদের হত্যা করা হয়েছে।  বহু স্থান আছে যেখানে অকস্মাত্ আক্রমণ চালিয়ে একসাথে বহুৎ লোক হত্যা করা হয়েছে। ওই সময়ে এমন দিন পাওয়া মুশকিল যেদিন কোথাও না কোথাও গণহত্যা চালানো হয়নি। 

 বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ ছিল এক ঐতিহাসিক ভাষণ। টানটান উত্তেজনার মধ্যে সেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে তিনি পাকিস্তানী সামরিক জান্তাকে হুঁশিয়ার করে দেওয়ার পাশাপাশি কৌশলে স্বাধীনতার ডাক দেয়। টিনের ভাষণের শেষ পর্যায়ে বলেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি অফিসার, বেসামরিক আমলা বৃন্দ, রাজনৈতিক কর্মী, সাধারণ মানুষ সকলেই আসন্ন সংগ্রামের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে থাকেন। পাকিস্তান কৌশলে এগোচ্ছে। আলোচনা চালিয়ে এমনভাবে সময় কাটাচ্ছিল যাতে গোলাবারুদ ও সৈন্য এনে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া যায়। চট্টগ্রাম ইপিআর এর মেজর রফিক প্রথম থেকে রাজনৈতিক নেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছিলেন। ২৫ শে মার্চের পর পর  চট্টগ্রামে মেজর জিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেজর খালেদ মোশাররফ, জয়দেবপুরে মেজর শফিউল্লাহ প্রমুখ সৈন্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। এদিকে বেসামরিক ছাত্র-জনতা সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের জন্য তৈরি হতে থাকেন। ছাত্রীরা পর্যন্ত রাইফেল কাঁধে যুদ্ধের মহড়া দিতে থাকে। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সামরিক বাহিনী থেকে অফিসার ও সৈনিকদের নেতৃত্বে বিচ্ছিন্নভাবে প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হয়।

 আর  নয় মাসে প্রতিদিন ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক দলে দলে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছেন। এমনকি নারী ও শিশুরাও বাদ থাকেনি। হয়ে পড়েছিল জনযুদ্ধ। চট্টগ্রাম বেতার থেকে মেজর জিয়া সাতাশে মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার পর তাতে পাকিস্তানি আক্রমণে হতবিহম্বল মানুষ আশ্বস্ত হয়। তাদের মনোবল বেড়ে যায়। একটা পর্যায়ে পাক বাহিনী ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে  প্রায় সমগ্র দেশ দখল করে নেয়। কিন্তু প্রতিরোধ সংগ্রাম কখনো সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি। তারপর ধীরে ধীরে পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। আর দেশবাসী ঝাঁপিয়ে পড়া মুক্তিযুদ্ধ। 

সূত্র : কীর্তিকথা

শাহনেওয়াজ সেরাজ সুবর্ণা

ইন্সট্রাক্টর অফ আর এস ডিপার্টমেন্ট 

ডেফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট